ইউজার লগইন

বৃন্দাবনে কৃষ্ণের সাথে রাসলীলা।

সর্বত্র মন বলো রাধে বিনোদিনী রাই/
বিন্দাবনে বংশীধারী ঠাকুর ও কানাই।
একলা রাধে জল ভরিতে যমুনাতে যায়/
পিছন থেকে কৃষ্ণ তখন আড়ে আড়ে চায়।
জল ভর জল ভর রাধেও গোয়ালের ঝি/
কলস আমার পূর্ন কর আমি করব কি? --------------

এই গান শুনে পাগল হয়ে গেলাম বৃন্দাবন/
খুজি রাধা এদিক ওদিক বড়ই অবুঝ মন।
সাথের সাথী বামুন দাদা ভক্তিতে বিলীন/
প্রবেশিলেন মন্দিরেতে হয়ে চরনাশীন।
আমি যবন ঘুরি পথে দেখি বৃন্দাবন/
আমার জন্য অপেক্ষায় নেই কোন রাধার মন। ---------অতএব একা ঘুরি। ঘুরতে ঘুরতে
দরজা খোলা পেয়ে ঢুকে গেলাম বাগানে। আহা কি শোভা চারিদিকে। ক্যামেরা চোখে লাগাই আর ক্লিক করি। এই ফুল , এই মানুষ ,এই নালা, এই ঝরনা ,এই খাল ,এই গাছ, এই পাখি, এই গরু (যার গলায় কোন দড়ি নাই), এই বানর, এই কাঠবিড়ালি আহা আহা কত মনরম দৃশ্য। যতই দেখি ততই মুগ্ধ আর ছবি তুলি ক্লিক ক্লিক। সব তোলা শেষ। পূজারীর পূজা শেষ হয় না। ক্যামেরা কাধে নয়ে ঘুরি আর ফুটানি মারি।

হটাত কাধে একটি হালকা ধাক্কা। ফাকা জায়গায় ধাক্কা। পিছন ফিরে দেখতে দেখতেই দেখি ক্যামেরা আমার হাত সরি সরি কাধ ছাড়া। আরে আরে কেরে বলতেই দেখি ক্যামেরাম্যান ক্যামেরা হাতে নিয়ে তরতর করে গাছে উঠে গেলেন। আবার ও থুক্কু ক্যামেরাম্যান নয় উনি ক্যামেরা মানকি। সোজা ক্যামেরা নিয়ে উনি গাছের মগ ডালে। আমি তার কাছে চাই ক্যামেরা, সে মুখ ভেংচায়। আমি বলি-- এই হুশ ফেল দে। ও বলে ------কি কিউ কিউ হুহ কুহ।
আমি বলি -------ফেল, দে , মারবো কিন্তু। ও হাসে ফু ফু ফু। কি আজব বিপদ। এক লোককে পেলাম। বললাম---- ভাই দেখেন আমার ক্যামেরা কই? কি করবো বলেন, দয়া করেন। ফেরত দেন আমার ডি এস এল আর।

লোকটা দেখি বান্দরের ও বারা , ক্ষেপে গিয়ে বলে-- অনন্দরমে আইয়ে কেয়সে। বলি দরজা খোলা। খোলা দুয়ার দিয়ে। আমার মাথা থেকে পা দেখে নিয়ে বলে ---- পাসপোর্ট ভিসা ঠিক আছে তো?
ব্যাটা আবার কোন কাস্টমস। বলি আছে' এই যে বলে যেই পকেটে হাত দিতে যাব বলে পকেটে হাত মাত দে না। কারন টের পেলে ও আমার পার্সপোট ও নিয়ে নেবে। বাপরে!।

উনি বলে গেলেন হাত জোর করে নমস্কারের ভঙীতে ওর দিকে তাকিয়ে ফিরিয়ে দাও, ফিরিয়ে দাও , মন্ত্রের মত উচ্চারণ করতে আর দাঁড়িয়ে থাকতে, তাতে যদি তার দয়া হয়। কি আর করা তাই শুরু করে দিলাম। কিন্তু বান্দর ফিরেও চায় না। শালা বাঙালী পেয়ে কি মফিজ বানায় গেল নাকি? প্রায় দশ মিনিট গেল । মিনতির হাত জোড় করে দাঁড়িয়েই আছি।

হঠাত শুনি বান্দরদের কোলাহল। চেয়ে দেখি আসছেন এক বড় সড় বান্দর। ক্যামেরা বান্দরের কাছে ---কেও মেও -----করে কি জিজ্ঞাসা করলেন। ক্যামেরা বান্দর ----- কিউ কু ---- করে আমাকে দেখিয়ে দেখিয়ে কি কি বলল। আর ক্যামেরাটা তাকে দিল। বুঝলাম ইনিই দল নেতা। আমার দিকে তাকিয়ে দিল এক ধমক। ধমকে উঠলাম চমকে। ভাগ্যিস জোড় করা হাত সরাইনি।
এর পর শুরু করলেন বকা। সেকি খিস্তিখেউর। গিজরে গিজরে উঠেন আর আমার দিকে তেড়ে আসার ভংগি করেন। পিছন ফিরে দৌড় দেব নাকি?

পিছনে তাকিয়ে দেখি আমার পিছনে পাঁচটি বান্দর বসে আছে। পিছন ফেরার মূহুর্তেই দলনেতা আমার সমুখে। কিছু বোঝার আগেই এক চড়। গালে হাত দিয়ে ভয়ে ভয়ে তাকিয়ে দেখি ক্যামেরা নিয়ে চলে যাচ্ছেন গজেন্দ্রগমনে। কিছুদূরে গিয়ে আবারও----- খিস খুসছ --- করে গালি দিয়ে ক্যামেরা ছুড়ে ফেলে দিল আমার পায়ের কাছে। তারপর ওরা চলে গেল। যাবার সময় আবার খিসসসসস করে উঠল। যার সোজা অর্থ ----- যা ভাগ। ক্যামেরা হাতে নিয়ে দে ছুট।একেবারে বাগানের বাইরে। সাথীর মন্দিরের সামনে এসে দাঁড়ালাম। দেখি সেই ছিনতাই কারী কেমন দাত বেড় করে হাসছে। তার পাশে ওর চেলা ভেঙচি কাটছে।

এই অপমান ভুলতেই আজ হাতে মদের পাত্র চাই কিন্তু ভোলা কি যায়----- ভোলা মন ওওওওওওওওওওও ভোলা মন , পথ ভুলে তুই কোথায় এসেছিস।?

পোস্টটি ১৪ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

মীর's picture


এ তো সত্য ঘটনা!

সামছা আকিদা জাহান's picture


সত্যি ঘটনা।

জ্যোতি's picture


Smile

সামছা আকিদা জাহান's picture


তুমি কি বোবা?

মীর's picture


সামছা আকিদা জাহান বলেছেন,

তুমি কি বোবা?

সামছা আকিদা জাহান's picture


জ্যোতি কে বলেছি, দেখুন কেমন এসে হাসি মুখে বসে আছে কিন্তু কোন কথা নেই।

দূরতম গর্জন's picture


ভালোই তো!

সামছা আকিদা জাহান's picture


কি ভাল! লেখা নাকি ঘটনা?

আরাফাত শান্ত's picture


মজার ঘটনা!

১০

সামছা আকিদা জাহান's picture


শুধু মজার নয় ভয়ানক অপমান ও ভয়ঙ্কর ঘটনাও বটে।

১১

রায়েহাত শুভ's picture


রিয়েল্লাইফ ঘটনা? Shock

১২

সামছা আকিদা জাহান's picture


ইয়েস রিয়েল্লাইফ ঘটনা।

১৩

নিভৃত স্বপ্নচারী's picture


শেষ পর্যন্ত বান্দর ছিনতাইকারীর কবলে! Laughing out loud

১৪

সামছা আকিদা জাহান's picture


বান্দর ছিনতাইকারী নয় বান্দর সন্ত্রাসী। আমার অনধিকার প্রবেশ ছিল কিনা জানি না।

১৫

তানবীরা's picture


পাইলা?

১৬

সামছা আকিদা জাহান's picture


শেষ পর্যন্ত হনুমান পূজা থুক্কু বান্দর পূজা করিলাম।

১৭

তানবীরা's picture


পাইলা ...... এটাই বড় কথা

১৮

সামছা আকিদা জাহান's picture


কোন পাওয়াটা বড় কথা Sad বানর পূজা শিক্ষা পাওয়া,/চপেটাঘাত পাওয়া/অপমান/ গালাগালি / নাকি জীবন :(।

১৯

তানবীরা's picture


ক্যামেরা ফিরে পাওয়াটা Big smile

২০

সামছা আকিদা জাহান's picture


Big smile

২১

টোকাই's picture


বান্দর বান্দ্রামি করসে, Laughing out loud

২২

সামছা আকিদা জাহান's picture


Big smile

২৩

সামছা আকিদা জাহান's picture


কেউ দেখল না আমার গিতী প্রতিভা। গানের পরের প্যারার চরন গুলি যে এই অধমের। কেউ দেখলনা দেখে মন খারাপ Sad

২৪

সাঈদ's picture


নিদারুণ অভিজ্ঞতা Big smile

২৫

সামছা আকিদা জাহান's picture


Big smile

২৬

দূরতম গর্জন's picture


দুটোই

২৭

বিষণ্ণ বাউন্ডুলে's picture


বান্দর সন্ত্রাসী! Big smile

গান ভালো হইছে। Smile

২৮

জেবীন's picture


আপ্নের তো ভালো সাহস!! চেচাঁমেচি এট্টুও করেন নাই!! Shock

কি মজার করা গুছিয়ে লেখছেন আ্পু, পড়তে ভাল্লাগছে

২৯

নাজনীন খলিল's picture


ভয়াবহ সুন্দর। Laughing out loud

৩০

এ. আর. টুটুল's picture


সুন্দর Smile

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.

বন্ধুর কথা

সামছা আকিদা জাহান's picture

নিজের সম্পর্কে

যতবার আলো জ্বালাতে চাই নিভে যায় বারেবারে,
আমার জীবনে তোমার আসন গভীর আন্ধকারে।
যে লতাটি আছে শুকায়েছে মূল
কূড়ি ধরে শুধু নাহি ফোটে ফুল
আমার জীবনে তব সেবা তাই বেদনার উপহারে।
পূজা গৌরব পূর্ন বিভব কিছু নাহি নাহি লেশ
কে তুমি পূজারী পরিয়া এসেছ লজ্জার দীনবেশ।
উৎসবে তার আসে নাই কেহ
বাজে নাই বাঁশি সাজে নাই গেহ
কাঁদিয়া তোমারে এনেছে ডাকিয়া ভাঙ্গা মন্দির দ্বারে।
যতবার আলো জ্বালাতে চাই নিভে যায় বারে বারে।