we all live in a yellow submarine!
শরীরটা ভালো না নিয়ম করেই। ব্যাকপেইনে প্রচন্ড যন্ত্রনায় আছি আর তার সাথে আছে এসিডিটি। তবে তাতে আমার খুব একটা সমস্যা নাই। শরীর ভালো মন্দ যা খুশী থাকুক, আমার চলে যাচ্ছে দিন সব সময়ের মতো। খালি ডেইলি বেসিসে ব্লগ লেখা হচ্ছে না, এই যা। সময়ের স্বল্পতা না, এমনিতেই কেন জানি লেখা হচ্ছে না। প্রতিদিন রাতে নিয়ম করে বসি কিন্তু লেখা আর হয় না। এই ফেসবুক এই ইউটিউব এই নিউজ সাইট এইসব করে করেই দুটো তিনটা বাজাই। মাথাভর্তি খালি তথ্য গিজগিজ করে ঢুকাই, কিন্তু বেলা শেষে কিছুই মনে থাকে না। যে স্মরনশক্তি নিয়ে আমার অহমবোধের শেষ নেই তাই কেমন জানি মার খেয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন। কাল জেমসের সাথে লাকী আখন্দের গান নিয়ে কথা হচ্ছিলো। কিছুতেই মনে আসছিল না 'আগে যদি জানিতাম' এই সামান্য তিনটে শব্দের কথা। বাসায় এসে মনে পড়লো, নিজেকে নিজেই গালি দিলাম, ধুরো এইটা একটা কথা হলো?
টিভি স্টার মাওলানা ফারুকীকে গলা কেটে হত্যা করলো কিছুদিন আগে। মনটা একটু খারাপ হয়েছিল। পরে ভাবলাম মন খারাপ করে কিছুই হবে না। নিজের গলা যেন কেউ না কাটে, যা কোনো বাস ট্রেনের তলাতে যেন গলাটা না যায় তাই নিয়ে ভাবা উচিত। ফারুকীর গলা কাটছে তার দল হরতাল ডাকছে। শোকের বহরে অনেকেই আসক্ত। আমার জন্য কেউ তেমন কিছু করবে না। খালি কিছু মানুষের একটা বেলা কিংবা গোটা একটা দিন কষ্টে যাবে এতটুকুই। তাই তাঁদের জন্যে হলেও নিজের গলাটা সাবধানে সুরক্ষায় রাখতে হবে। দ্বায়িত্ব কর্তব্য পালন এখনো অনেক বাকী। আগেও বলেছি এখনও বলি, পারিবারিক কারনেই আমি খুব নামায কালাম কিংবা ধার্মিক পরিবেশে বেড়ে উঠা মানুষ। তাই ধর্মের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হওয়া আমার পক্ষে অসম্ভবই। তবে এইসব ঘটনা আমাকে নিরাসক্ত করে দেয় ধর্ম পালনের ব্যাপারে। এক লোক মাজার ও মিলাদের পক্ষে কথা বলে টিভিতে, তাই তাকে গলা কাটতে হবে এইটা কেমন ধর্ম পালন তা আমার মাথায় ঢুকে না। সবাই বলবেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম এইসব পারমিট করে না। কিন্তু ইসলামের নামেই তো এইটা পারমিট হয়। মহাত্মা আহমদ ছফা বলেছিলেন, 'দুনিয়ার প্রত্যেক মানুষ যদি একটা অন্যায়কে ন্যায় বলে প্রশ্রয় দেয় তাহলে সেটা শেষমেষ অন্যায়ই থাকে, ন্যায় আর হয় না'। আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, আগামী দিনের আলোকিত প্রজন্মের নাগরিকরা আমাদের এই দুই যুগের তথাকথিত গনতান্ত্রিক সময়কে বলবে- বর্বরতার এক সময়। যখন খালি কিছু হলেই খুন হতো মানুষ, পানির দরে। আর তখন সবাই নিজেকে বাচাতে সব ভুলে ফেসবুকে প্রিয় দশটা বইয়ের নাম, প্রিয় দশটা কবিতার কথা আওড়াতো। এইসব দেখে আমার শুধু ছোটবেলায় সমবয়সী বালিকাদের হাত নাড়িয়ে ও তালি দিতে দিতে খেলাটার কথা মনে পড়ে, যেখানে দলবেঁধে বলতো- 'তোমরা কি ভাই বলতে পারো তিনটি করে ফুলের নাম/ যেমন ধরো শাপলা/ বিকুইক! যেমন ধরো গোলাপ, বিকুইক!'
তবে এখনকার বড় বড় হুজুরদের অনেক টাকা পয়সা। তাঁদের বিত্ত বৈভব দেখলে হিংসা হয়, কি লাকী এরা। দুনিয়ায় এলিয়ন গাড়ী, মরলে বেহেশতে হুর পরী সব পাবে এরা। আমরা পাবো ঘন্টা। দুনিয়াতেও কিছু নাই,আখিরাতেও কিছু নাই। ফারুকী সাব নাকি হত্যাকারীদের ৫০ লাখ টাকা দিতে চাইছিলো। আমি পত্রিকায় দেখে হলাম অবাক। সারাজীবন চেষ্টা তদবীর করলেও তো আমি ৫০ লাখ টাকা কাউকে দিয়ে দেয়ার ক্ষমতা অর্জন করতে পারবো না। তাই ভালো এইসব না ভাবা। যে আছে যার মতো তাই থাকুক। আমাদের বাসার সামনেই কাল তিনটা ফার্মেসীতে চুরি হয়েছে। তিনটার তালা ভেঙ্গে চোর টাকা তো নিয়ে গেছেই, সাথে দামী দামী মেডিসিনও নিয়েছে। আজকাল ফার্মেসী মালিকদেরও অনেক পাওয়ার, তারা কোথেকে জানি এক এএসপিকে আনছে, আরেকজন পাল্লা দিয়ে আদাবর থানার ওসিকে আনছে। সকাল থেকেই লোকে লোকারন্য। আদাবর থানার এক সাব ইনষ্পেক্টর আমার পরিচিত। তাকেই জিগেষ করলাম, ভাই কিছুর হদীস পাইলেন? তিনি হেসে জবাব দিলেন, 'এদেশে বঊ থাকলে মা পাওয়া যায় না, আবার মা পেলে বউ পাওয়া যায় না, আর সেইদেশে কি চুরি করা জিনিস পাওয়া যায় তাও আবার পুলিশকে দিয়ে? এইসব রুটিন কাজ তাই আসতে হয়।' আমি অবাক হলাম, মেইনরোডে রাতের বেলা তিন দোকান থেকে সব নিয়ে গেল। তাহলে গলির ভিতরে তো যে কেউ চাইলেই সাড়ম্বরে ডাকাতি করতে পারে। নিতান্তই ডাকাতদের অনিচ্ছায় এখন আর এইসব মামুলি কাজ হয় না। নয়তো আটকাচ্ছে কে তাঁদের?
বাংলাদেশে এখন একটা কথারই সিজন। 'যার যার বুঝ তার তার তরমুজ নিয়ে সুখে থাকো'। তাই কম বেশী সবাই ভালোই আছি। একটু অবস্থাপন্ন মানুষ যারা তাঁদের সবারই এখন একটা হলুদ সাবমেরিন আছে। যেখানে নিজেদের- 'সুখ শান্তি বিলাস ভ্রমন আনন্দ আড্ডা হ্যাং আউট' এসব নিয়ে ভালো আছে। বিটলস এই গান লিখছিলো, এলএসডি ড্রাগ নেয়ার পরে সেই সময়কার মানসিক অবস্থা নিয়ে। এলএসডি ছাড়াই আমাদের অবস্থা এই। নিজেকে নিয়ে ডুবে থাকা আর ফেসবুকে লাইকের বন্যায় ভাসার জন্য সামাজিক সচেতনতা মুলক ডায়লগবাজি ও এটেনশন সিকিং ছাড়া আমাদের আর কোনো কাজ নাই। আমিও তার ভেতরেই পড়ি। এক লোক ঘুষ খায় তাকে জিগেষ করছিল কেন খান? সে উত্তর দিল, মাঝে মাঝে আপনি গুয়ে পারা দেন না- ধরেন সেরকমই। আমাদের মাথাভর্তি এখন এইসব কুযুক্তিতে ঠাসা। আগে ক্রিকেট ছিল সান্তনা, এখন ক্রিকেট আমাদের জাতীয় জীবনের ব্যর্থতার আরেকটা স্মারক। তবুও চলছে দিন সাবমেরিনে দারুন। যে যার মতো টেনে নিয়ে যাচ্ছি, গলা বাঁচিয়ে ও গলাবাজি করে!
শান্ত, তুমি [বয়সে অনেক ছোট বলে আদর করে তুমি বললাম] কিন্তু আমাকে নাড়িয়ে দিলে ভাই ! আহা যদি এমন হত, তোমার বয়সী সব ছেলে মেয়ে তোমার মতো করে ভাবতে শিখছে !
তবে একটা কথা চুপি চুপি বলছি, আর বেশী আগিওনা । রাজাকার, দালাল, কোলাবোরেটর তমঘা জুটে যাবে !
আ লীগ সরকারতো ! যা করে তাই ঠিক ! অনিয়ম/অগণতান্ত্রিক/প্রহসনের নির্বাচন হোক, দিনে ১৩/১৪ টা খুন হোক, মা বোন সন্মান হারাক, নেতারা লুটে খা'ক রাষ্টীয় তাবত সম্পদ, কল্পনার পদ্মা সেতু কল্পনায় ভেসে থাক, শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস ষোলকলায় পূর্ণতা পাক--------------------- কার কি এসে যায় !
ধন্যবাদ ভাইয়া অনেক অনেক। আপনার অনুপ্রেরনা আমাকে মুগ্ধ করে সবসময়!
কি বলবো? যত বলবো তত বলাই হবে।:)
বলেই ফেলি, কারন না বললে কিছুই বলা হয় না তো
বিকুইক খেলাটার সাথে সাথে ছোটবেলায় আরো কয়েকটা খেলা খেলতাম। যেমনঃ ফুল- টোকা, বরফ- পানি, ছোঁয়া- ছুয়ি, আমি যা দেখি তুমি তা দেখ ইত্যাদি।
আমি যা দেখি তুমি তা দেখো ছাড়া সব খেলাই খেলছি। সব খেলাতেই আমি ছোটবেলাতে নিপীড়িত জনগন, খালি দৌড়ে মরতাম!
মন্তব্য করুন