আমার পিচ্চিবেলা : Part1
তখন ছোট ছিলাম, কতটুকু ছোট মনে নেই তবে খুবই ছোট্র। ঘুম থেকে উটতাম সকাল ছয়টায় তারপরে কয়দা নিয়া বসতাম মায়ের কাছে। ঘন্টা খানেক চলত তারপর ছোট ছোট জামা গুলা গায়ে দিয়া স্কুলে ছোট দেয়া। মাঝে নাস্তা আর গোসল করার ধাপটাও থাকত আর এটা বাংলার ছয় ঋতু জুড়েই। গোসলের জন্য মার খাওয়াটা ছিল তখনখার নিত্য নৈমন্তিক ব্যাপার।
কী লিখছি জানি না, তবে আমার ছেলে বেলা আজো আমায় টানে তার নিজস্ব শক্তিতে। হু, তখন হয়ত জীবনের এত রং, ইচ্ছা, ভালবাসা, দুংখ কিংবা বন্ধু ছিল না তারপরেও জীবনটা যেন ছিল একান্তই আমার মত। আমার জেগে জেগে দেখা স্বপ্নগুলোর মত। সত্যি, এখন ভাবতেও কষ্ট লাগে যে, আমি বড় হয়ে গেছি।
দিনগুলো ছিল গ্রীষ্মকাল, দবদাহ রোদের তীব্রতা তুঙ্গে ! ফসলের মাঠে বৃষ্টির হাহাকার, কাকের কন্ঠে আর্তনাদ আর রিক্সাওয়ালার গলায় থাকত পিপাসা মেটানোর আকুতি। তবু ত থেমে থাকে নি আমার র্দাশনিক যাত্রা, বাড়ির পাশের ডোবায় পানি সেঁচে মাছ ধরা, অসহ্য রোদে ক্রিকেট ব্যাট নিয়ে দৌড়াদোড়ি করা। ছেলে ছিল কয়েটকা বড্ড বাউন্ডুলে, আমার তখনকার প্রিয় বন্ধু। ওদের জন্যও কম মার খেতে হয় নি। কোন গাছে কোন পাখির বাসা, আম গাছের আম চুরি করে ভর্তা খাওয়ার প্রোগাম করাও বাদ যায় নি। মনে আছে, গাছ থেকে লুকিয়ে জাম পাড়তে গিয়ে একবার মালিকের প্যাদানি খেয়েছিলাম। দিনগুলো এখনো আমার স্মৃতির জন্য বড়ো উষ্ণ।
বর্ষা নিয়ে আমার আকুতি কোন সময়ই ছিল না। বাউন্ডুলে ছেলে ঘরে বসে বর্ষা উপভোগ করবে এটা হওয়ার নাহ্ ! তবু বছরের প্রতিটা ক্ষণ মিস করতাম কলাগাছ কেঠে খুটি গেড়ে ভেলা ভাসানোর প্রতীক্ষায়। এর যে কী আজব মজা তা সেই বুঝে যে, সাতার না জেনেও ভেলা থেকে পুকুরের মাঝে পতিত হয়। মনে রাখার মত ঘটনা বটে !
তখন আমার দুনিয়াটা ছিল অনেক ছোট। দৈনন্দিন রুটিনটাও ছিল অসম্ভব অদ্ভুত ! প্রতি শুক্রবারে পাড়ার ছেলেদের নিয়ে রেল লাইনে যাওয়া, উদ্দেশ্য ছিল পাথর চুরি তবে রাস্তায় ফুলের গাছ থাকলে তাও ছাড় পেত না। বড়শি নিয়া সারাদিন ডোবায় বসে থাকতেও বিরক্ত লাগত না। সারাদিন শেষে মগে দুই একটা টেংরা পুটি ছাড়া আর কিছু জোটাতে পেরেছি বলে মনে নেই কিন্তু মনে হত যে যুদ্ধ করে জিতলাম।
তখন অবশ্য আমার সাইজটা অসম্ভব ধরণের হাপটিকেট আর টিনটিনে ছিল। এখন অবশ্য বহু কষ্টে হরলিক্স, কমপ্লেইন ছাড়ায় পাঁচ ফুট পাচঁ ইঞ্চি ! মনে আছে, একবার ক্লাসে প্রথম হয়ছিলাম তখন আমার ডাকা হয়েছিল পুঁচকে জাকির ! মনে করতেই হাসি পায়।
বাকি জীবন হেসে কাঠানোর জন্য পিচ্চিকালের এই পুচকে স্মৃতিগুলোই যথেষ্ট !
বসন্তের দিনগুলো কাটত মহা সমারোহে। গরম হাওয়া, নতুন ক্লাস, শিমুলের ফুল সব মিলে খারাপ না। বেচারা গো বত্স এই ফুল গলাঃধরণ করে মনে হয় আমায় গালিই দিত তাই এখন আর শিমুল ফুল আমায় টানে না।
আর লিখতে ইচ্ছে করছে না কিচ্ছু তবে একটা কথা বলা দরকার যে, পিচ্চিকালে আমি যথেষ্ট পরিমাণ ভদ্র ছিলাম।।
ভালো লাগছে পিচ্চি বেলার গপ্পো!
গপ্পো করতে পয়সা লাগে না তাই একটু করলাম আর কী !
মন্তব্য করুন