গল্প : কোয়ান্দ এল এতে সিউল
রাত্রি দ্বিপ্রহর। পাশের ঘরে ঘুমিয়ে আছে আমার স্ত্রী, নীলা। ও ঘুমের সময় নৈঃশব্দ চায়। নাহলে ঘুমুতে পারে না। যে কারণে আমি কখনো শোবার ঘরে বসে অফিসের কাজ করি না। অবশ্য এমনিও রাতে আমার তেমন কোনো কাজ করা হয় না। কাজের বাহানায় নিজের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটানো হয় বড়জোর। হয়তো প্রথমে মিনিট পাচেঁক বা কোনো কোনো দিন আরেকটু বেশি সময় ওয়ার্ড আর এক্সেলে ডেটাশীট তৈরি করি। তখন কী-বোর্ডে একটু খুটুর-খাটুর শব্দ হয়। এরপরে ‘ধ্যূৎ কালকেরটা কালকে দেখা যাবে’ বলে একটা শ্রাগ করে ফাইলগুলো বন্ধ করে দিই। রাতের সুনসান ভাবটা আমার কাছেও বেশ প্রিয়। তবে আমি সেটা ঘুমিয়ে উপভোগের পক্ষপাতি নই। অবশ্য আমার একটা সুবিধে আছে। সকালে অফিসে যেতে হয় না। যদি সেটা করা লাগতো, তাহলে আমিও হয়তো দ্রুত ঘুমিয়ে পড়ায় অভ্যস্ত হয়ে যেতাম।
শিশুকাল থেকে কোনোকিছুতে অভ্যস্ত না হওয়ায় অভ্যস্ত হয়ে বেড়ে উঠেছি বলেই হয়তো, নিজের ঝামেলাপূর্ণ কিঞ্চিত জীবনটাকে নিজের কাছে অমূল্যই লাগে। বিশ্ববিদ্যালয় পার হওয়ার পর নিয়ম করে সহপাঠীদের খোঁজ নিতাম, একটা বিশেষ কারণে। যখনই কাউকে আমার চেয়ে অল্প বেতনের কিংবা ছোট মর্যাদার চাকুরী-ব্যবসা বা যেকোন কিছু করতে দেখতাম, তখন এক ধরনের শ্লাঘা অনুভব করতাম মনে মনে। সেটা কখনো কারো কাছে প্রকাশ করি নি। কিন্তু নিজের কাছে অস্বীকারও করি না। মানুষের নাকি অনেক রকম গোপন অসুখ থাকে। যেগুলো মানুষ নিজের মধ্যে লুকিয়ে রাখে, কখনো কাউকে বলে না। আমি এই অসুখ থেকে কবে মুক্তি পেয়েছিলাম জানি না। তবে একদিন হঠাৎ করে মনে হয়েছিলো, অনেকদিন কারো কোনো খোঁজখবর নিই না। এরপরে কয়েকজনের খোঁজ নিতে গিয়ে রীতিমতো ভিমড়ি খেতে হয়েছিলো। একেকজন কোথায় পৌঁছে গেছে, আর আমি পড়ে আছি সেই আগের জায়গাতেই! সেদিন যখন বন্ধুদের খবরাখবর পেয়ে আমার খারাপ না লেগে একটা অকারণ শান্তি শান্তি ভাব হচ্ছিলো তখন বুঝেছিলাম, যাক্ একটা রোগ থেকে অন্তত এ জীবনে মুক্তি মিললো।
যদিও জীবনে নিজের ইচ্ছেগুলোকে প্রাধান্য দেয়ার এন্তার সুযোগ ছিলো, তবুও আমি দুঃখবিলাসী ছিলাম। দীর্ঘদিনের প্রেমিকাকে বিয়ে করে সংসার শুরু করেছি। বছর ঘুরে গেলেও বাবার বাড়ি, শ্বশুর বাড়ি কোথাও আমার চাহিদা কমে নি। নীলারও আমার বাবা-মাএর সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক রয়েছে। তারপরেও নিজেকে নিয়ে সুখী ছিলাম না।
জানি না এই অসুখটা কবে থেকে শুরু হয়েছিলো। কেবল মনে আছে, আমি আমার ফেলে আসা একলা জীবনটার কথা ভাবতাম প্রায়শই। নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়তাম ভাবতে ভাবতে- একসময় আমি একা ছিলাম। তখন রাতে আড্ডা-বন্ধুবান্ধব সেরে বাসায় ফিরতাম ইচ্ছেমতো সময়ে। আমি না ফেরা পর্যন্ত মা জেগে থাকতেন। আমাকে দরোজা খুলে দিয়ে তিনি ঘুমুতে যেতেন। ডাইনিং টেবিলে ঢাকা থাকতো আমার রাতের খাবার। যতটুকু খাওয়ার খেয়ে বাকীটুকু ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখতে হতো। আমি চেষ্টা করতাম, যা কিছু থাকতো সব খেয়ে ফেলার। তাহলে আর ফ্রিজ খোলার দরকার পড়তো না। কমে যেতো একটা কাজ। খাওয়া সেরে মুখ ধুয়ে কম্পিউটার টেবিলটায় গিয়ে বসতাম। পিসিতে গান ছেড়ে দিয়ে বসে বসে নিপুণ হাতে একটা স্টিক বানাতাম। কিছু সিগারেট থাকতো। একেকদিন তো শুধু গানের সুরেই হারিয়ে থাকতাম তিনটা-চারটা পর্যন্ত। কোনোদিন গান শুনতে ইচ্ছে না করলে সিনেমা দেখতাম। অজস্র সিনেমা থাকতো পিসিতে কিংবা পেনড্রাইভ, এক্সটার্নাল হার্ডডিস্ক, ব্রডব্যান্ডের সার্ভার এবং আরো অনেক জায়গায়। শুধু দেখে-শুনে যেকোন একটা চালিয়ে দেয়া। গাঁজার একটা সুবিধে হচ্ছে, এটা আপনার বিক্ষিপ্ত চিন্তারাজিকে কেন্দ্রীভূত করে দেয়। সিনেমা দেখা, সিগারেট খাওয়া, মাঝে মাঝে ফ্লাস্ক থেকে পানি খাওয়া- এইসব করতে করতে কোনদিক দিয়ে যে রাত পার হয়ে যেতো টেরই পেতাম না। কোনোদিন হয়তো রাত কাটাতাম অন্তর্জালে বিচরণ করে করে। নিজের ব্লগ, ফেসবুক, মেইল আইডিগুলো সচল হয়ে থাকতো কটকটে আলো ফুটে যাওয়ার আগ পর্যন্ত। কখনো নিজে লিখতাম, কখনো অন্যের লেখা পড়তাম, কখনো লম্বা কমেন্ট থ্রেড দেখতে দেখতে সময় কেটে যেতো। রাতগুলোকে ওস্তাদের কাছ থেকে পাওয়া উপহারের মতো লাগতো আমার কাছে।
বিয়ের পরে প্রথম দুই-তিন মাস পর্যন্ত এ সুযোগটা বেশ ভালোভাবেই ছিলো। আমরা দু’জনে একসঙ্গে মজাগুলো করতাম। সিনেমা দেখা, গান শোনা, মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করা- কোনোকিছুই বাদ থাকতো না। গাঁজাটাকে আজো আমার নেশা বলে মনে হয় না। যদিও এখন আর ঘরে বসে জিনিসটা গ্রহণের সুযোগ পাই না। বাইরেও তাই খুব বেশি খাই না। একটা কাজ প্যাশন নিয়ে না করা গেলে, সেটা করা নিরর্থক। যাক্ সে কথা; আমাদের কোনোকিছু বুঝে উঠতে না পারার সুখের সেসব দিন নিষ্ক্রান্ত হবার পর দেখা গেল, চাইলেও আর একসঙ্গে সময় কাটাতে পারছি না। সংকটাপন্ন নাগরিক বন্দোবস্ত চায় না মানুষ আনন্দে থাকুক। নীলাকে তাই সকাল সাতটায় ঘুম থেকে উঠতে হয়। আটটার ভেতরে বাসা ছেড়ে বেরিয়ে পড়তে হয়। নয়টার ভেতরে হাজির থাকতে হয় অফিসে। তখন আমার হয়তো ঘুমটা গভীর হতে শুরু করে। একজনের সঙ্গে আরেকজনের স্কেজ্যুল মেলে না কোনোভাবেই।
ছোট্ট অমিল। কিন্তু দিনে দিনে সেটা বড় হতে থাকে। কোনো বিশেষ কারণ ছাড়াই। হয়তো আমি যেমন বিষয়টা অনুভব করি, সেও করে। তারও হয়তো দুঃখ হয় আমারই মতো। হয়তো সেও নিজের আগের জীবনটার সঙ্গে এখনকার জীবনকে মিলিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। হারানোর বেদনায় বিদ্ধ হয়। সেই বেদনা বেড়ে দুঃখে রূপান্তরিত হয়, যখন দেখে আমি তার কোনো কাজেই আসতে পারি না। কোনো একটা দিন একটু তাড়াতাড়ি ঘুমাতে আসি না, অফিসটা দ্রুত সেরে সোজা বাসায় ফিরি না, ফিরলেও তার কোনো খবর জানতে চাই না। সবকিছু হয়তো খেয়াল করতো সেও। যেমন খেয়াল করতাম আমি। কোনোদিন সে আমার সঙ্গে একটা মুভি দেখতে বসে না, কখনো বলে না ছাড় দেয়ার কাজটা শুধুই আমার নয়, কখনো জানতেও চায় না কেমন কাটলো আমার সারাটা দিন। দু’জনের ছিলো দু’জনের বিরুদ্ধে প্রচুর অভিযোগ, বকেয়ার খাতায় জমছিলো অভিমানে আক্রান্ত হওয়ার অসংখ্য সুযোগ। কিন্তু অভিমান করতাম না কেউই। এমনকি অভিযোগও না।
তাই আস্তে আস্তে ছোট্ট ছিদ্রটা বড় হতে থাকে। ফাটলে রূপ নেয়। আজকাল তো সপ্তাহের পর সপ্তাহ পার হয়ে যায়, দু’জনের কোনো কথাই হয় না। আজো যদি হিসেব করি তাহলে বলতে পারবো, গত একমাসে আমরা দু’জনের সঙ্গে খুব প্রয়োজনীয় কিছু কথা ছাড়া আর কিছু বলি নি। কথা না হওয়াটা এত বেশি স্বাভাবিক যে, অনেকদিন পর একটা জরুরি কথা বলে আবার অনেকদিন কথা না বলে থাকতেও আমাদের কারো খারাপ লাগে না আজকাল। আর প্রেম? সে তো দূরে পরাস্ত। শেষ কবে প্রেম করেছি, জানি না। শুধু মনে আছে, সেদিন আমরা শপিং করতে গিয়েছিলাম। সে আমাকে একটা ঘড়ি কিনে দিয়েছিলো। বোধহয় একটা ব্রিগোয়েত। আমি কখনো পড়ি নি। কারণ আমার ঘড়ি পড়ার অভ্যাস নেই। আগেই বলেছি অভ্যাস নেই আসলে কোনোকিছুরই। সেদিন ওকে মার্কেটের লিফটেই জড়িয়ে ধরেছিলাম। ভেজা ঠোঁট আরো ভিজিয়ে দিয়েছিলাম গভীর চুমুতে। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের দিনগুলোর মতো, যখন নির্জন দুপুরে আমরা অপার তৃষ্ণা নিয়ে দু’জন লুকিয়ে লুকিয়ে চুমু খেতাম, তেমন করে। ক্যাম্পাসের আমি নাকি অনেক বেশি ওয়াইল্ড ছিলাম। এটা নীলা বলতো একসময়।
সেদিন শপিং শেষে আমাদের বাইরে খেতে যাওয়ার প্লান ছিলো, সিনেমা দেখার প্লান ছিলো, রাতে হাইওয়েতে ঘুরতে যাওয়ার কথা ছিলো; কিন্তু সবকিছু বাদ দিয়ে দু’জনে ঊর্ধ্বশ্বাসে বাসায় ছুটে এসেছিলাম। ঘরের দরোজা ঠিকমতো লাগানোর আগেই আমি ওর উন্মুক্ত কোমরটা দখল করে নিয়েছিলাম। ওর ব্লাউজে অনাবৃত পিঠ আর ঘাড়ে চুমু দিয়েছিলাম, দরোজার সঙ্গে ঠেসে ধরে রেখেই।
তারপর বহুদিন আমি আর ওকে ছুঁই নি। ও’ও আমাকে ছোঁয় নি। কেটে গেছে নিরাসক্ত-ঝামেলাবিহীন সময়। নিরাসক্তি যখন ঝামেলায় রূপান্তরিত হওযার ক্ষমতা হারায়, তখন তা বোঝা হয়ে যায়। আজ অনেক দিন হলো আমরা দু'জন একই ছাদের নিচে পাশাপাশি থেকে সেই বোঝা বয়ে চলছি।
সেদিন রাতে বসে বসে যে সিনেমাটা দেখলাম, সেটা একটা বিয়োগান্তক সিনেমা ছিলো। নায়কের স্ত্রী’কে ধর্ষন করে মেরে ফেলা হয়েছিলো। স্বামী দুর্বত্তটাকে গুলি করে মেরে প্রতিশোধ নিয়েছিলো কোর্টের মধ্যেই। কারণ কোর্ট যথাযথ প্রমাণের অভাবে তাকে বেকসুর খালাস দিয়ে দিচ্ছিলো। তারপর স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়ে যায়। কারাগারে অন্যান্য বন্দীদের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে তাকে শেষ পর্যন্ত মৃত্যূ বরণ করে নিতে হয়। মারা যাবার সময় সে নিজের কাছে সযতনে সংরক্ষিত স্ত্রী’র ছবিটি বের করে। প্রিয়তমা স্ত্রী’র দিকে তাকিয়ে একটু হাসে। তারপর শেষবারের মতো তার চোখ দু'টো বন্ধ হয়ে যায়। আমি সিনেমাটা দেখে আপনমনে খানিকক্ষণ হাসি। এসব কেবল সিনেমাতেই সম্ভব। বাস্তবে দু’জন মানুষ খুব কাছাকাছি খুব অল্প দিনই সুখে থাকে। এরপরে শুরু হয়ে যায় অভ্যস্ততা আর ছাড় দিয়ে দিয়ে চলার অপতন্ত্র।
তবুও সিনেমাটা দেখে বুকে কেমন যেন মোচড় দিচ্ছিলো। বহুদিন পর বাসায় একটা স্টিক বানিয়েছিলাম। বারান্দায় দাঁড়িয়ে সন্তপর্ণেই সেটা খাচ্ছিলাম, কিন্তু নীলা টের পেয়ে গেলো। সে যে কখন বিছানা থেকে উঠে এসেছে, আমি টের পাই নি। পাশে এসে বলেছিলো, তোমাকে না মানা করেছি- শুধু এটুকুই। তারপর দু’জনে বেশ খানিকক্ষণ পাশাপাশি দাঁড়িয়ে ছিলাম। এক সময় আমি ওকে বলেছিলাম, চলো ঘুমুতে যাই। বলার মতো আর কোনো কথাই ছিলো না আমাদের। ধীরে ধীরে দু’জনে একই খাটে গিয়ে শুয়ে পড়ি। হাত বাড়িয়ে বেডলাইটটা নিভিয়ে দিই। আমার ইচ্ছে করছিলো ঘুমুনোর আগে ঠান্ডা আঙ্গুলে ওর গালটা শুধু একটু ছুঁয়ে দিতে। ওরও হয়তো মনের ভেতর এরকম কোনো ইচ্ছে কাজ করছিলো। কিন্তু কেউ কারো দিকে হাত বাড়াই নি। দু’জন আসলে তখন এক বিশাল ফাটলের দু’প্রান্তে দাঁড়িয়ে ছিলাম।
---
চমৎকার গল্প। শিরোনামটা কি ফরাসী? অর্থ কি?
আরে আপনারে তো -ই জানানো হয় নাই এখনো। তাড়াতাড়ি একটা পোস্ট দ্যান। আমাদের কত সুন্দর স্বাগতম জানানোর ইমো আছে দেখছেন? ওইটা তো ব্যবহারের সুযোগ দিতে হবে নাকি?
হ্যাঁ ফরাসী। অর্থ হচ্ছে গিয়ে ধরেন, যখন তিনি একা। এইরকম একটা কিছু আরকি। অর্থ নিয়ে কে অতো মাথা ঘামায় বলেন
নিয়মিত পাঠক/মন্তব্যকারীরা পড়েন নাই এখনো?
৬৭ বার পঠিত, কিন্তু মন্তব্য মাত্র একটা!
হিহি, লেখা ভালো না হইলে মানুষ পড়বে কেন বলেন?
ভাইজান আপনে আছেন কেমন? কোনোকিছু লেখেন না কেন? এইটা কি ঠিক?
শুধু ভালো বলবো না। । অসম্ভব রকমের ভালো লাগছে। ।
শুধু ধন্যবাদ দেবো না। প্রচুর পরিমাণে ধন্যবাদ দেবো বলে ঠিক করেছি।
কঠিন বাস্তব ......
গল্প ভাল্লাগছে মীর ভাইজান ......
ভাইজান।
ইয়ে একটা কথা আছে, আমারও আপনের লেখা পড়তে মুঞ্চায়। অধমের এই আব্দারটা যদি একটু বিবেচনা করে দেখতেন।
আপ্নার আবদার বিবেচনাধীন থাকলো ......
কর্মক্ষেত্র থেকে অবসরগ্রহনের পর একবার চেষ্টা-চরিত কইরা দেখমুনে
আহা শুনে দিলখুশ হয়ে গেল। আমি অপেক্ষায় থাকলাম।
আরেক্টা কথা ............ ডাবল সেঞ্চুরী পোষ্টের জন্য অভিনন্দন .....
আরেক্টা কথা ........... আমার ডাবল সেঞ্চুরি এখনো দূরে পরাস্ত ....
বিয়েটা একটা চরম বাজে জিনিস। কেনো যে বিয়ে প্রথাটা আবিস্কৃত হয়েছে... চরম ফালতু। সংসারের তেলে-ঝোলে ভালোবাসার অনুভূতিগুলো হারিয়ে যায়, তলিয়ে যায়। তখন বিবাহিত সম্পর্কটা নিতান্তই একটা ভেঁতো অভ্যেস হয়ে দাঁড়ায়।
বিখ্যাত এবং বড় লেখকরা নাকি কোনো কিছু না দেখলে লিখতে পারেন না। আমি বেশ কয়েকজন লেখককে বলতে শুনেছি যারা না দেখে একলাইনও লিখতে পারেন না। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যাতিক্রম, তিনি 'পদ্মা নদীর মাঝি' লিখেছেন জেলেদের জীবন না দেখেই। তাই মানিককে আমার বেশী মহান লাগে।
মীর বেশী বেশী লেখেন, অনেক লেখেন। মুক্তগদ্য তো অবশ্যই, গল্পে আপনাকে প্রিন্ট মিডিয়ায় দেখতে চাই।
মানিক কি জেলেজীবন না দেখেই পদ্মা নদীর মাঝি লিখেছিলেন নাকি? বাপ্রে! চূড়ান্তমাত্রার নমস্য ব্যক্তি দেখা যায়।
গল্পে আমাকে প্রিন্ট মিডিয়ায় দেখতে চান কেন? ইলেকট্রনিক মিডিয়া কি দোষ করলো? কত সুন্দর যা খুশি তাই কাকের ঠ্যাং-বকের ঠ্যাং লিখে যাই মনের আনন্দে। এই তো ভালো।
ব্যস্ততা আমাকে দেয়না অবসর
তাই বলে ভেবোনা আমায় স্বার্থপর।
ব্যস্ততা থাকবেই। দুজনের মিল- অমিল, পছন্দ- অপছন্দও থাকবে। তাই বলে দুরত্ব তৈরী করা যাবেনা। অমিলগুলোকেও ভালোবাসায় রূপান্তরিত করতে হবে। কারন ভালোবাসা সহজে পাওয়া যায়না আর সেটা একবার পেলে কখনোই হারানো উচিত না। চাইলেই দুরত্ব খুব সচেতনভাবেই কমানো যায়। শুধু দরকার একটু সদিচ্ছার এবং কোন একজনের এগিয়ে আসার।
ভালো থাকবেন।
আচ্ছা, ভালো থাকবো।
সদিচ্ছা দরকার না? ওকে দেখা যাক। সদিচ্ছা জোগাড় করা যায় কিনা।
আপনিও ভালো থাকেন। সবসময়।
সেদিন বিকালে হাঁটতে বের হয়েছি। একটা ছেলে আর একটা মেয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। ওদের ক্রস করার সময় শুনতে পেলাম মেয়েটা মোটামুটি চিৎকার করে বলছে 'কিন্তু তুমি তো বলসিলা তুমি আর কখনো খাবা না! ছেলেটা বলল হ্যা বলসিলাম, তো?'
এরপর হাঁটতে হাঁটতে আপনার আগের গল্পটার কথা ভাবছিলাম। হৃদয়ের মতো কি পারবে ছেলেটা ফিরে আসতে? মেয়েটাকে দেয়া কথা রাখতে? মেয়েটার প্রশ্নের উত্তরে ছেলেটার 'তো' বলা থেকে মনে হয় নাই ছেলেটার কোনো ইচ্ছা আছে তার কথা রাখার।
কি জানি মেয়েটা এখন কি করবে। বিশাল ফাটলের অপর প্রান্তে দাঁড়ানোর যদিও তার দরকার নাই। আর এখনের মেয়েরাও তো এত বোকা না।
গল্প সব সময়ের মতোই ভালো লাগলো।
ওয়েল লেখা সব সময়ের মতোই ভালো লাগসে, জেনে ভালো লাগলো। আমার লেখালেখির অপচেষ্টা যে খুব একটা সফল হয় না, সেইটা আমি জানি। নিম্নমানের এইসব লেখা সব সময় আপনার ভালো লাগে জেনে ফিলিং রিয়েলি হ্যাপী
আর আমার মোট প্রকাশিত পোস্টের সংখ্যা ১৫৭। অনেক লেখা অসমাপ্ত অবস্থায় ড্রাফট করা আছে। আবার অনেক লেখা খসড়া-ফাইনাল ইত্যাদির চক্করে একাধিকবার পোস্ট করা হয়েছে। সেগুলোরও একটা কপি ছাড়া অন্যগুলো উন্মুক্ত করে রাখা হয় নি। এসব কারণে ব্লগের হিসাবে আমার পোস্টসংখ্যা ২০০ দেখায়। সেইটা আসলে প্রকৃত সংখ্যা না। তারপরেও অভিনন্দনের জন্য
ভাস্করদা' কিছুদিন আগে সত্যিকারের ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন। উনার এখন পর্যন্ত মোট প্রকাশিত পোস্টের সংখ্যা ২০৬।
আমাদের সময়ে জীবন সরল ও সাধাসিধে ছিল । ক'টা বছরের মধ্যে কি বিপুল পরিবর্তন হয়ে গেছে, ভাবলে আশ্চর্য লাগে ! সব পরিবর্তনের সাথে নব প্রজন্ম নিজেদের মানিয়ে নিতে পারুক, কামনা করি । গল্প ভাল লাগলো ।
আপনার কামনা পূর্ণ হোক। গল্প ভালো লেগেছে বলে যে উৎসাহ দিলেন, সেজন্য
সবকিছুতেই এত বিরহ, বিষন্নতা কেন? তবে খুব ভালো লেগেছে।
হ সবকিছুতেই বিরহ। কি করি কন তো?
কি জানি! আমি যদি জানতাম তাইলে তো......
গল্পটা আরোবড় হতে পারত। দূরত্বটা এত বড় হওয়ার পেছনের গল্প আরো থাকতে পারত।
তাতো পারতোই। কিন্তু আমার যে অতো ভালো লেখার ক্ষমতা নেই রায়হান ভাই। তাইতো এত বাজে হয়ে গেছে জিনিসটা।
মন্তব্য করুন