ইউজার লগইন

সংস্কারবিহীন জনির সংস্কার

মসজিদের মোয়াজ্জেমের ছেলে হয়ে আশরাফ সাহেব যখন লেখাপড়া শিখে নাস্তিক আর্মি অফিসারের ছোটো মেয়েকে বিয়ে করে গ্রামের বাড়ির সম্পর্ক ছেড়ে শহরে এসে স্যুটেড বুটেড হয়ে উঠলেন, তখনই অনেকেই বুঝে নিলো, এই পরিবারের ছেলেদের মাঝে, জগৎ এর প্রচলিত নিয়ম কানুনের প্রতি আকর্ষন কমই হবে।

জনি আমাদের বন্ধু হওয়ায়, আমরা আশরাফ সাহেবের পরিবারের অনেক গুঢ় খবর পেতে থাকতাম সেই ছোটো বেলা থেকেই। যেমন আশরাফ সাহেব নামাজ রোজা করেন, ওনার স্ত্রী করেন না, এমন কি সেই বিষয়ে কিছু বলেনও না। ছেলে কি করবে, সেটাও ছেলের উপর। সেই সময় আমরা আমাদের মা দের দেখেছি, আমাদের বাবাদের ডাকতো আমাদের নামের বাবা বলে, তাই শুনে জনির কি হাসি। ওর বাবা মা দুজনেই নাকি দুজনকে নাম ধরে ডাকা ডাকি করে। ইদানীং অবশ্য এসব কোনো বিষয় না, কিন্তু সেই ছোটো বেলায় আমরা আমাদের শিক্ষা অনুযায়ী, জনির মা'কে ভাবতাম, কি বেয়েদপ মহিলা!! অবশ্য জনিকে বলতাম না।

তা, একই পরিবারের ছেলে জনিও যে কালে কিছু বিদঘুটে কান্ডের দিকে যাবে, সেটা আমরা জানতাম। আজকের গল্পটা মূলত জনিকে নিয়েই।

ছোটোকাল থেকেই জনির যেই জিনিষটা আমাদের সাথে একদমই মিলতো না, আর সেই একই জিনিষ ছিলো আমাদের জনির প্রতি দুর্দমনীয় আকর্ষন, সেটা হলো, জনির যেকোনো রকম সংস্কার বিবর্জন।
আমরা তো অনেক সময় বুঝতেই পারতাম না, কোনো একটা কাজ আমরা করি শুধুই সংস্কার বসত। যেমন ঈদের দিন আমরা মুরুব্বীদের পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে সেলামী নিয়ে অভ্যস্ত, কিন্তু জনি কাউকে পায়ে ধরে সালাম করতো না।
আমরা তো বলতাম,
:ওরে, এইটা মুসলমানের কর্তব্য, তুই কি মুসলমান না?(এইখানে আমাদের সূক্ষ ইঙ্গিৎ ছিলো, বুঝতেই পারছেন)
সে বলতো, পায়ে হাত দিয়ে সালাম করা নাকি মোটেও মুসলমানের ধর্মীয় কাজ না...ঐটা নাকি এককালীন হিন্দু মুসলিম মিলিত সংস্কৃতির ফসল...
বুঝুন অবস্থা, এই কথার মানে আমাদের মাথায় ঢুকতো না।

এইরকম আরো নানা সংস্কার পরিপন্থী ধ্যান ধারনা। সব কিছু আমাদের মাথায় না ধরলেও, তার সাথে সাথে থাকার মজাটা কিন্তু কমতো না একদমই।

ওর সাথে এখনো আমাদের যোগাযোগ আছে, তাই এখনো মাঝে মাঝে দেখা হয় আর আগের দিনের মতই মজার কাজকারবার দেখি। যেমন গত মাসের কথাই বলি। জনি একটা বেশ ভালো চাকরী পেয়েছে, যাকে বলে কর্পোরেট জব এক্কেবারে। তো, সেই খবর পাড়ায় জানাজানি হয়ে গেলো, আর জনির বেতনের অঙ্ক নিয়ে জল্পনা- কল্পনা। মসজিদ কমিটির লোকগুলো যখন একত্রে হয়, তখন মনে হয় এমন কোনো আলাপ নেই যে হয়না। অনেকটা, আমি তো নিরালা বল সাবান ব্যাবহার করি টাইপ আড্ডা। তো সেই মুরুব্বীদের কয়েকজন একদিন দোকান করা অবস্থায় পেলো জনিকে। আমিও কাছাকাছি থাকায় যা দেখলাম...

মুরুব্বী জনি কে জিজ্ঞেস করলো,

:কি জনি, শুনলাম ভালো একটা চাকরী পাইছো?

জনির উত্তর অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত

: জি আঙ্কেল।

মুরুব্বী চালিয়ে যাচ্ছেন..

:আলহাম্দুলিল্লাহ বাবা, খুব খুশি হৈলাম, দোয়া করি, কাজে উন্নতি হোক।

জনির মুখে স্মিত হাসি।

:কত স্যালারী পাও?
:জি, মোটামুটি ভালোই।
:যাক যাক, ভালো হৈলেও ভালো, পরিবারের দেখাশুনা ভালো ভাবে হবে। তা, কত পাও জানি?

মুরুব্বী চালিয়েই যাচ্ছেন আর স্মিত হাসি দিয়ে জনি এড়িয়েই যাচ্ছে। আমি জানি, কিছু প্রশ্ন জনি ব্যাক্তিগত মনে করে, উত্তর দিতে কোনো সমস্যা না থাকলেও, জনি কখনি কারো অজাচিত আগ্রহ কে প্রশ্রয় দেয়না। এইবেলাও যে সে মুরুব্বীর প্রশ্নের উত্তর দিবেনা, সেটা জানি, আবার মুরুব্বীও যে সহজে ছাড়বেনা, সেটাও জানি। কারন বেতনের অঙ্ক জানতে চাওয়ার মাঝে কিছু অভদ্রতা আছে, সেরকম কোনো জ্ঞ্যান আমাদের যুগেই পাইনি, আর মুরু্ব্বীদের তো কথাই নেই।

এক পর্যায়ে মুরুব্বী প্রায় ক্ষেপেই উঠলেন,

:কি মিয়া, বেতন কৈতে তোমার সমস্যাডা কি? তোমার টেকা কি আমরা লৈয়া যামু নাকি?

এইবার জনির পালা, আর আমার খেলা দেখার পালা।

:না, এটাতো ব্যাক্তিগত প্রশ্ন করলেন আঙ্কেল, এটার উত্তর আমার ইচ্ছে হলে দেবো, না হলে নেই। আপনি তো জোড়াজুড়ি করতে পারেন না, ঠিক না?

এইবার রসিক মাঝবয়সি দোকানদার এগিয়ে আসলো মুরুব্বীর সহায়তায়, ৪৬-৪৮ বছর বয়স হবে দোকানদারের।
উনি বলে উঠলেন,

:আরে মিয়া এলাকার মানুষের সাথে আবার ব্যাক্তিগত কোনো প্রশ্ন আছে নাকি? তুমি তো মিয়া মুরুব্বীর সাথে বেয়াদপি করতাছো।

এইবার ভড়কে গেলাম আমি, জানতাম, বেয়াদপ গালিটা সহ্য করতে পারেনা জনি..
হঠাৎ সে দোকানদারের দিকে ঘুরেই প্রশ্ন করলো

:আপনার স্ত্রীর সাথে শেষবার সঙ্গমের সময় আপনি কোন্‌ কনডম ইউজ করেছেন?
:এ্য?

--দোকানদার প্রশ্নটা শুনে ভ্যাবাচ্যাকা খেলো কিনা, সেটাও বুঝতে পারলাম না। মানুষের ফ্যাসিয়াল এক্সপ্রেশন কত রকম হতে পারে? আমি জানিনা, কিন্তু দোকানদারের ফ্যাসিয়াল এক্সপ্রেশনটা আমার জীবনে দেখা ইউনিক।

এহেন জনির সাথে একবার আমাদের কে বিদেশ ভ্রমন করতে হয়েছিলো, জনিকে একটা কিছু থেকে ফেরাতে, বিশ্বাস হয়?

আজকের মূল গল্পটা আসলে সেটাই।

আচ্ছা, বললাম আমাদেরকে ভ্রমন করতে হয়েছিলো জনির সাথে। এখানে "আমাদের" এর দ্বিতীয় সদস্য হচ্ছে এনাম। স্কুলে আমাদের এক বছরের জুনিয়র ছিলো, কিন্তু ওর আড্ডা বদমাইশি সব ছিলো আমাদের সাথেই, এখন ব্যাবসায়ী।
কথা হলো, আমি আর জনি ছিলাম একই ক্লাসের আর এনাম এক ক্লাস জুনিয়র, কিন্তু যাকে বলে ঐ, হরিহর আত্মা।
তিনজনে সবসময় একই সাথে ঘুরতাম।

আমি টের পেতাম, জনি এনাম কে আমার চাইতেও বেশি পছন্দ করে। অথচ সেটাও আমার কাছে স্বাভাবিক মনে হতোনা। কারন, এনাম জনির বেশির ভাগ কথার বিরোধিতা করতো, আর ছিলো যথেষ্ট সংস্কারবাদী। জনির মাথায় কোনো সংস্কার বিরোধি আইডিয়া উঠলেই তার প্রতিবাদ করা চাইই চাই। এমন ও হয়েছে, জনির বিরোধিতা করতে এনাম যা বলতো, তা সে নিজেও মানতো না, কিন্তু তর্ক তার করা লাগবেই।

একসাথে তিনজন হলে আমাকে একটু চুপসে থাকতে হতো। আমি গেরস্থ টাইপ মানুষ। বন্ধু বান্ধব অনেক বড় ব্যাপার, তাই বন্ধুর কাঁধে হাত রাখতে গিয়ে অপমানিত হলে, গায়ে একটু লাগতো বৈকি। কিন্তু জনিরে বুঝাবে কে?
কলেজে উঠার পর তার গে, লেসবিয়ান এই সংক্রান্ত জ্ঞ্যান বেড়ে যায় আর যারাই তার কাঁধে হাত বা গা ঘেসে বসতে চাইতো, সবাই কে গে মানসিকতার সন্দেহ করতো।

ওরে অনেক বার বলেছি, আরে, বাংলাদেশে গে সম্প্রদায় নেই, কিন্তু ওর কথা হলো অবশ্যই ঐ মনোভাব সম্পন্ন লোক আছে, কিন্তু সংস্কৃতির কারনে প্রকাশিত হতে পারে না, অবদমিত হয়। কি বিচিত্র কারনে জনি গে না দেখেই ঘৃনা করা শিখলো। সেইবার মজাটাও হয়েছিলো বেশ, কারন প্রথমবারের মত এনাম জনিকে বাগে পেয়েছিলো,

:কেন, গে যারা, তাদের অসুবিধা কি? এইটা তো তোমার একটা সংস্কার, নাকি?

জনি যদিও উত্তর দেয়ার চেষ্টা করেছিলো

:এটা সংস্কার নয়, বলতে পারিস বিকৃতির বিপক্ষে সচেতনতা।

অবশ্য এনাম আর জনি দুজনেই বুঝতে পেরেছিলো, জনির উত্তরটা, শুধুই উত্তর ছিলো, সচেতনতা ছিলোনা।
ইশ, শীবের গীতই হচ্ছে কেবল, মূল ঘটনাতে যাওয়াই হচ্ছেনা।

মূল ঘটনায় আসি:

এহেন জনির একবার বিকার উঠলো, সে ভারতীয় চিত্রনায়িকার সাথে দেখা করবে, পারলে বিয়ে করবে!!!!
৯৯ সালের দিকের ঘটনা, কাজল অভিনিত হিন্দি সিনেমা দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে আর কুচ কুচ হোতা হ্যায় দেখে আমরা কয়েকবন্ধু তখন কম বেশি কাজলের প্রেমে পড়েছি, যা আমরা প্রতিবছরই কোনো না কোনো নায়িকার ক্ষেত্রে ঘটাই। কিন্তু জনি যখন বলে, কথাটার ওজন আলাদা হয়।

আমরা প্রথমে হেসে উড়িয়ে দিলেও জনির সিরিয়াস মুখ দেখে ভড়কে গেলাম, আর যখন দেখলাম জনি প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত যাবার, আমাদের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো।
আমরা বাঙ্গালীর ছেলেরা, কাজলকে পছন্দ করতে পারি, মেগ রায়ান কেও পছন্দ করতে পারি, তাদের কে বিয়ের ইচ্ছাও পোষন করতে পারি। কিন্তু জনি এমন ইচ্ছে পোষন করলে যে সমূহ বিপদ, টের পেলাম সেবার।
আমরা অনেক বুঝালাম,

:আরে, কাজল তো হিন্দু, আর তুই মুসলমান।

জনির উত্তর,

:জানিসইতো, যার যার ধর্ম তার তার, লাকুম দীন ও কুম, ওয়াল ইয়াদিন।

ব্যাটা একটা আয়াতকে নিজের স্বার্থে এমন ভাবে ব্যাবহার করায় জিদ গেলো আরো চেপে।
বললাম,

:বিদেশি মেয়ে, ভাষা সমস্যা?
:তুই ভালো করেই জানিষ, আমরা সবাই কাজ চালানোর মত হিন্দি পারি, আর কাজলও বাঙ্গালী মেয়ে।
:আরে সে হলো স্টার, তুই কোথাকার কে? তোরে বিয়ে করতে রাজী হবে কেন?
:সেটা তো তুই চেষ্টা না করলে জানছিস না, নাকি?

বুঝলাম, কোনভাবেই নিরস্থ করা যাবেনা জনিকে। গেলাম এনামের কাছে, সে যদি কিছু করতে পারে।
ওমা, শুনে দেখি সে খুব খুশি।
আমি অবাক হয়ে জানতে চাইলাম,

:এটা কি তোর কাছে খুশির খবর মনে হচ্ছে?
:কেন, খুশির না কেন?
:আজব, আমাদের বন্ধু ভারতীয় নায়িকা কাজল কে বিয়ে করতে যাচ্ছে, বিষয়টা কি ছেলেখেলা? আর তুই তো জনিকে জানিসই, সে তো চেষ্টা না করে ছাড়বে না।

আমার কথায় নিশ্চিৎ করেই বিরক্ত হলো এনাম।

:হারু ভাই, তুমি কি সারাজীবনই গরুই থাইকা যাবা?

এমনই কথা বার্তার ধারা এনামের, তাই কিছু মনে করিনা আমি। আমার পরিবারের দেয়া হারুন নামটা রে গরুর সাথে ছন্দ মেলানোর সুবিধার জন্য বন্ধু বান্ধব ছোটো বেলা থেকেই হারু ডাকে, এটা শুধুই ছন্দ মেলাবার জন্যই আমি মনে করি। আমার বুদ্ধিবৃত্তির সাথে এর কোনো সংযোগ নেই বলেই মনে করি আমি। যাই হোক, এনামকে তার বক্তব্য কনটিনিউ করতে দিলাম..

: আরে হারু ভাই, তুমি জীবনে শুনছো, বাংলাদেশের কোনো চ্যাংড়া গিয়া ভারতীয় প্রথমসারির নায়িকা বিয়া কৈরা আসছে কোনো দিন?
:না, তা করে নাই..আমতা আমতা করে বলেছিলাম আমি।
:তাইলে, টেনশনের কিছু আছে? নাই।

তবু আমি তর্ক করি,

:কিন্তু খুশি হবার কি পাইলি তুই?
:আরে এইটাও বুঝোনা? জনি'র যখন বিগার উঠছে, তখন সে তো বোম্বে পর্যন্ত যাবেই, আর সে গেলে কি আর আমাদের না নিয়া যাবে? যাবেনা!!

এইবার এনামের খুশির কারন টা ধরতে পারলাম।
এনাম যখন বলছে, এইরকম উদ্ভট ঘটনা ঘটেনা, তখন ভরসা করা যায়। আমি আবার সবার কথাতেই ভরসা পেয়ে ফেলি।
যখন জনি বললো সে কাজল কে বিয়ে করবে, তখন যেমন ভয় পেয়েছিলাম, আবার এনাম যখন বললো এমন বাস্তবে হয়না, তখনও ভরসা করে ফেললাম।

আমরা তিনজন ২০০০'র অগাস্টে ভারত গেলাম। যাত্রার বিবরন দিয়ে বিরক্ত করবো না খুব একটা। শুধু বলি, যেমন ভাবা গিয়েছিলো জনির ঘাড়ে পা দিয়া বেশ ফ্রীতে ঘুরে আসবো, ঠিক তেমনটা হয়নি, নিজেদের বেশ কিছু খরচ হয়েছে, কিন্তু সেটা মূল খরচের চাইতে অবশ্যই অনেক কম।

আমরা দক্ষিন-মধ্য বোম্বের আর্টিস্ট কলোনী নামক জায়গায় ছিলাম, ঐখানে জনির পরিচিত কারো থাকার সুবাদে।
আর্টিস্ট কোলোনীর ঠিক দক্ষিনেই বেলাপুর আর খড়গপুর।
যাই হোক, আমরা ঘুরি ফিরি, আর জনি খোজ করে, কিভাবে কাজলের সাথে দেখা করা যায়।
প্রতিদিন সকালে বের হয়, দুপুরে কোনোদিন ফেরে, কোনোদিন বিকেলে। ফিল্ম লাইনের লোকেদের নাকি সকালের দিকে বেশি পাওয়া যায় নিরালা, দুপুরের পর থেকে তাদের ব্যাস্ত সময়।
আমি আর এনাম ঘুরি, এনাম মাঝে মাঝে জনির সাথে সঙ্গ দেয়, আমি সেদিন ঘুমাই।
প্রায় এক সপ্তাহ হতে চললো, কোনো ফলাফল পায়নি জনি। ততদিনে টাকার চিন্তা শুরু হয়ে গেছে আমাদের।
আমি ততদিনে নিশ্চিৎ, জনির এবারের অভিযান শেষের পথে। যদি ঘুনাক্ষরেও জানতাম, পরে কি হতে চলেছে!!!!

এনাম মাঝে মাঝেই আ:শ্বাস দিচ্ছে আমাকে, বলে,

:আর সম্ভব না, বুঝলা? এত কিছু করেও, সাক্ষাৎ পর্যন্ত পাইলোনা, বিয়ার প্রস্তাব কি দিবো আর? হাহাহা..

আমিও খুশি হয়ে উঠি---

নবম দিনের দিন এনাম কে একটু টেনসড দেখলাম, আর জনিকে খুশি খুশি।
আমি তো ভেবেই পাইনা, কাহিনি কি?
আমি এনামকে প্রশ্ন কি,

:কিরে টাকা পয়সার অবস্থা কি খারাপ?
:নাহ, টাকা পয়সার সমস্যা নাই, জনি বাড়ি থেকে টাকা আনিয়েছে।

সন্দেহ করলাম, জনি লেগেই থাকবে, সেই দুশ্চিনতায় এনামের মুখচোখ শুকনো।
আরে, ব্যাটা ভুলেই বসে আছে, সে নিজেই বলেছে, এমনটা যে হয়না? হা হা হা..(ঢোক গিললাম, নাকি?)

:কিরে, তাইলে টেনশন করস কি নিয়া?
:হারু ভাই, জনি যে ইদানীং বিকাল পার কইরা স্বন্ধ্যার পর পর ফিরে, খেয়াল করছো?

স্বন্ধ্যার পরে ফেরাতে কোনো সমস্যা আমি দেখলাম না, কিন্তু আমি ভয় পেলাম এনামের বলার সিরিয়াস ভঙ্গিতে। বললাম,

:খেয়াল করছি, কিন্তু তাতে কি?
:হারু ভাই, এনাম ভাই তিলক কলেজের ঐদিকে যায় প্রতিদিন, এইখান থেইকা বেশ দূর।
:আরে, দূর হৈছে দেইখাই তো দেরী কৈরা ফিরে, এইটাতে তুই ভরকাইতাছিস কেন?
:উহু হারু ভাই, গরু গিরি একটু কমাও। জনি হঠাৎ কোনো একটা কিছুতে আগ্রহী হৈয়া উঠছে, সেইটা কি না জানলে পরে শান্তি আছে? সেইখানে সে কাজলরে পাইলো, নাকি তার কোনো ক্লোজ কাউরে পাইলো, তাই বা কে জানে?
:আরে, তুই না বললি, নায়িকার সাথে জনির বিয়ে সম্ভব না?

এনাম বিরক্ত হয়ে একটা মুখ ঝামটা দিয়ে উঠে চলে গেলো সারাদিনের বরাদ্ধকৃত সময় ব্যাবহারের জন্য টয়লেটে।
ও, আমরা যার এখানে থাকছি, পরিচিত হবার পরও, তাকে বাজার থেকে শুরু করে, সব কিছুই আমরা পে করছি। ভদ্রলোক একদিন বেশ আয়েশ করে টয়লেট ব্যাবহারের উপরও কর বসিয়ে গেছেন হাসতে হাসতে। যাক সে কথা...

পর দিন থেকে এনাম লেগে রৈলো জনির পিছে। আমি গেলে তালগোল পাকিয়ে ফেলবো, তাই আমাকে নিজের মত ঘুরে বেড়াতে বললো এনাম।

জনি ইদানীং রাতে আমাদের সাথে ভারতীয় সংস্কৃতি নিয়ে আলাপে বসে। আমি গভীর মনোযোগে শুনি, এনাম ভ্রু কুঁচকে থাকে।

আরে সিনেমার লোকের সাথে খাতির করতে চাইলে তো সংস্কৃতি নিয়েই মেতে থাকবে, না? এই জিনিষটা কেনো এনাম বুঝেনা, জানিনা।

৩ দিনের মাথায় জনি দু:সংবাদ টা নিয়ে এলো, আমাদের ভারত বাসের ১৩ তম দিনে। জনির সাথে চলতে চলতে আমি কিন্তু ১৩ কে আনলাকী মনে করিনা।

:হারু ভাই, সমস্যা তো একদম পুরাই তালগোল পাকাইয়া গেলো।

আমি ভয়ে কাঠ কাঠ হয়ে বললাম,

:কাজল কি জনির সাথে বিয়েতে রাজী হৈয়া গেছে?
:আরে ধুর, কিছু না বুঝলে, চুপ কৈরা শুনো। হারু ভাই প্রেম করতাছে।

আমার কষে একটা চটকনা দিতে মন চাইলো এনাম কে। এত বার গরু গরু করিস, আর এই খবরটা দিতে আসলি? আমি কি আর জানিনা, জনি কাজলের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে?
কিন্তু এনামের মুড খারাপ আজকে। কিছু বললাম না। আমিও যেনো অনেক বুঝি, এমন একটা ভাব নিয়া বললাম

:ও, আচ্ছা!!

এনাম তখন যা শুনালো, আমার কলিজার পানি বাষ্পীভুত হয়ে গেলো।

:জনি এক ভারতীয় কলেজ মেয়ের প্রেমে পড়ছে, যারে দেখতে কাজলের মত। কাজলের ব্যাপারে খোঁজাখুঁজি করতে গিয়াই সে একই রকম দেখতে তিলক কলেজের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের মেয়ের খবর পায়। ইন্ডিয়া আসার ৫/৬ দিনের মাথার থেইকা সে ঐদিকে টার্ন করছে।

আমার তখনও ক্ষীন আশা ছিলো, হয়তো ভারতীয় স্বাভাবিক এক পরিবার, বাংলাদেশী মুসলমান পাত্রের কাছে মেয়ে দিবেনা। কিন্তু এনামের পরের কথা শুনে সেই আশাও পানিতে গেলো..

:আর ঐ পরিবারও জনিরে খুবই সাদরে গ্রহন করছে।

আমরা শেষ। এই যাত্রা বন্ধুকে আর বাঁচাইতে পারবো না।
জানি, জনির বাসায় খবর দিয়ে কোনো লাভ নেই, ওনারা নেভার মাইন্ড ফ্যামিলী।
কিন্তু বাংলাদেশি বন্ধু হয়ে আমরা সাথে এসেও কি কিছুই করতে পারবো না?

সেদিন রাতে জনি ফিরতেই আগুন মূর্তি নিলাম আমি।

:কিরে জনি? তোর না কাজলের পিছনে ঘুরার কথা?
:হুম, কথা?
:তাইলে তিলক কলেজের মেয়ের পিছনে ঘুরস কেন?

জনি বসে থাকা এনামের দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দেয়

:তিলক কলেজের না, তিলক কলেজের কাছেই ওদের বাড়ি, নাম সুপর্না।
:ওমা, হিন্দু মাইয়া?
:হুম
:তুই হিন্দু মাইয়া বিয়া করবি?
:হাহা
:তুই একটা বিদেশি বিজাতীয় মাইয়া বিয়া করবি?
:বিদেশি বিজাতীয় শব্দগুলারে এমন গালির মত ইউজ করতাছিস কেন হারু গরু? এগুলা আসলে গালি না, সংস্কার ত্যাগ কর, একদিন মানুষ হবি।

আমি বুঝলাম, ফেরানের কোনো পথ নেই, রাগ মাথায় উঠলো।

:আমার সংস্কার ত্যাগের কোনো দরকার নাই, তোর মত ভিনদেশে বেজাইত্যা মাইয়া বিয়া কৈরা নিজের পরিবার থেইকা আলাদা হৈতে পারুম না, আমি সমাজ মানি, ধর্ম মানি, তোর তো কোনো জাত ধর্ম, মা-বাপ, সমাজ জ্ঞ্যন নাই..তুই সংস্কার ত্যাগ কর গিয়া, আমি মল মূত্র ছাড়া আর কিছু ত্যাগ করিনা।

আমার রাগ দেইখা জনি হাসতে হাসতে শেষ।

এই পুরোটা সময় এনাম মোটামুটি চুপচাপ ছিলো। ঐ হারামজাদার উপরও রাগ হচ্ছিলো খুব, ব্যাটা, নিজের টেনশন আমার ঘাড়ে দিছিস, তুই না বললে কি এইগুলা এমন টেনশনের ব্যাপার, সেটা মাথায় আসতো নাকি?
আবার এখন চুপ কেন?

কেনো চুপ, সেটা বুঝলাম পরদিন থেকে। এনাম পরদিন থেকে লেগে গেলো ঐ পরিবারে খুঁত বের করতে, খোজখবর নিতে, এমন কিছু বের করতে, যেনো বিয়ে পর্যন্ত না গড়ায় বিষয় টা।
প্রতিদিন ফিরে আসে হতাশ মুখে, আর জনি আসে প্রেম করে হাসি মুখে।

প্রায় মাস হতে চললো, আমার আর ঘুরাঘুরি করতে ভালো লাগেনা, এখন নিজে কিছু না বলা - না করার স্বার্থে আমিও যাই এনামের সাথে। এনাম এখনো লেগে আছে, কারন, তার মনে খটকা লেগেছে, কেনো ঐ পরিবার এত সহজে মেনে নিলো জনিকে?
মেয়ের কি কোনো সমস্যা আছে? নানা চিন্তা খেলে এনামের মাথায়?
মেয়ের কি কোনো গোপোন ভিডিও আছে?
আগে কি বিয়ে হয়েছিলো কিংবা কোনো সণ্ত্রাসীর সাথে সম্পর্ক ছিলো?
মেয়ে কি কোনোদিন মা হতে পারবেনা?

যদিও জানে, এইসকল কোনো কারনই জনিকে পেছাতে পারবেনা। তবুও চেষ্টা করে যায় এনাম।
আমি এক সময় হাল ছেড়ে দিয়ে নিজের মত ঘুরতে থাকি, এমন কি কপাল গুনে একজন মিউজিক ভিডিওর সহকারী ক্যামেরা ম্যানের সাথে দেখা করার ও চান্স পেয়ে যাই। আমার নাক জনির মত উঁচু না, আমি ঐ টুকুতেই খুশি।

ভাবছি, যা হয় হবে, জনি বিয়ে করে থেকে যাক, বাড়ি গেলে যাক, আমরা চলে যাই। সেইদিনই এনাম হাজির, একশ ওয়াট বাল্বের মত উজ্জ্বল মুখ নিয়ে।

:মার দিয়া কেল্লা!!

আমি ভড়কে গেলাম, এনামও কেনো হিন্দিতে বাৎচিৎ শুরু করলো?

:কিরে, কি হৈলো?
:আর বৈলো না, মিশন মারদাঙ্গা স্টাইলে সাকসেস ফুল।
:কুন মিশন?
:আরে হারু ভাই, অপারেশন জনি'র বিয়া ভাঙ্গতি।
:সত্য? জনি বিয়া করবোনা? রাজি হৈছে?
:আরে নাহ, এত তাড়াতাড়ি নাকি?

:তাইলে?
:যে খবর আনছি, তাতে জনি আর জীবনেও বিয়াতে রাজী হয় কিনা সন্দেহ।
আমি জিজ্ঞাস করলাম, কেন?

এনাম তবু নাচে, হাত পা নাড়ায়।
বুঝলাম, জনির দিন শেষ।

এর পরের ঘটনা সংক্ষিপ্ত করি।

জনি রাত্রে আসলে এনাম খবর দেয়

:জনি, তুমি জাইনা শুইনা এই মাইয়া বিয়া করবা?

জনি মনে হয় আসল ঘটনা জানতো না, তাই মন করলো এনাম কোনো নড়বড়ে অষ্ত্র বের করবে, হাসি মুখেই বললো,

:হুমম, করবো।
:তাইলে তুমি শেষ পর্যন্ত গে হৈতে রাজী হৈলা?

আমি ভড়কাইয়া গেলাম, জনির পছন্দ করা মেয়েটা আসলে ছেলে নাকি? কিন্তু আমি তো দেখছি দূর থেইকা, ইয়ে দেইখা তো মনে হয়নাই!!!!

জনি সতর্ক হয়ে উঠলো।

:মানে কি?

তখন এনাম রসানো শুরু করলো,

:ও, তাইলে তুমি জানোনা?
:কি জানিনা?
:তোমার ডার্লিং সুপর্না'র আগের নাম যে সুপন?
:আগের নাম সুপন মানে কি?

আমি ভাবলাম, ছেলে মানুষ নাম পাল্টাইয়া মেয়ের নাম রাখলেই কি মেয়ে হয় নাকি? এনামের মাথা গেছে!!
তখন এনাম বলে

:জি হে জনি ভাইয়া, তোমার ডার্লিং একজন ট্রান্স সেক্সুয়াল!!

আমি দেখলাম জনির ঘাড়ের চুল দাড়িয়ে গেছে। সেটা দেখে আমার ঘাড়ের চুলও দাড়িয়ে গেলো। কিন্তু তখন ও আমার জানার বাকী, ট্রান্স সেক্সুয়াল জিনিষটা কি? যেহেতু সেক্স শব্দটা আছে, নিশ্চই খারাপ কিছু, হয়তো আকর্ষন বেশি টাইপ কিছু।
তবুও জিজ্ঞেস করে ফেললাম,

:ওই ট্রান্স ইয়েটা কি জিনিষ?

তখন এনাম জানালো,

:ট্রান্স সেক্সুয়াল হচ্ছে সেইসব মানুষ, যারা এক রকম লিঙ্গ নিয়ে জন্মায় কিন্তু হরমোনাল ইম্ব্যালেন্স বা যার জন্যই হোক, অন্যে লিঙ্গে রুপান্তরিত হয়। একটা ট্রান্জিশন পিরিয়ড যায়, রোগী খুব কষ্ট পায়, তাই ডায়াগনসিস করে লিঙ্গ পরিবর্তন করতে হয়।

ইয়াক ইয়াক, ইয়া মাবুদ, এ তুমি কি শুনাইলা? আল্লাহ'র দুনিয়াও এও সম্ভব? এটাতো আল্লাহ'র আরশ কাঁপানো ঘটনা।

আমার অবশ্য খুবই জানতে ইচ্ছে করছিলো, ওরা ঐসব কাজ কি ঠিকঠাক মত করে, নাকি কোনো সমস্যা হয়, ইত্যাদি। কিন্তু জনির চেহারা দেখে ভয়ে মুখ বন্ধ করে রইলাম।

এর পরের ঘটনা আসলেই সংক্ষিপ্ত। আমরা দেশে ফেরৎ আসি, কারন এনামের কথা সত্য ছিলো। মেয়ায়েটার ঘটনা টা কি করে এনাম জানলো বা মেয়েটার ছেলে অবস্থার পূর্ব ইতিহাস অন্য আরেক কাহিনি, এখানে দরকার নেই, তাই বললাম না।

ফেরার পথে এনাম অবশ্য ক্ষেপাতে ছাড়েনি,

:কিও জনি, তুমি নাকি সংস্কার বিরোধী? সুপর্না তো আর সত্যই ছেলে না, নিসন্দেহে মেয়ে, তাইলে তো অফিসিয়ালি তুমি গে হওনা, নাকি?

জনি উত্তর করে নি।

বিষয় টা নিয়ে এনাম দেশেও একটু বাড়াবাড়ি করেছিলো, এসে মজা করে প্রচার করে, ভারতে গিয়ে জনি এক ছেলেকে পছন্দ করেছে। কেউ আমার কাছে জানতে চাইলে বলতাম, না, মেয়েই পছন্দ করেছে, কিন্তু এনাম বলতো ছেলে। জনি এই বিষয়টাকে ব্যাক্তিগত মনে করতো, তাই উত্তর দিতো না। এতে কিন্তু আমাদের সম্পর্কের কোনো সমস্যা হয়নি।

পোস্টটি ১৭ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

ভাঙ্গা পেন্সিল's picture


জনির সাথে কয়েক জায়গায় আমার মিল আছে। Shock
১. আমার বন্ধুর হলের জুনিয়র রুমমেটের নাম এনাম। খুবই মাইডিয়ার পাবলিক, সেইরকম বান্দর।
২. আমি কারও পা ছুঁয়ে সালাম করি না। আমাদের স্কুলে কড়া ধর্মীয় অনুশাসন ছিল, সেখানেই এটা শিখছি।
৩. আমি স্যালারি(মানে টিউশনির বেতন Tongue ) ঘনিষ্ঠ বন্ধু বাদে কাউকে বলি না

মুক্ত বয়ান's picture


তাইলে, তুমি ইন্ডিয়া যাইবা কবে?? Wink

ভাঙ্গা পেন্সিল's picture


অমিলগুলা বলি নাই দেইখা যে অমিল নাই, তা না Wink
১. আমি কোন কিছুর পিছেই কচ্ছপ-কামড় দিয়া লাগি না। "হইলে হবে নাইলে নাই" টাইপ।
২. আমি জনির মতো চাছাছোলা না, উচিৎ কথা মনে মনে বললেও মুখে চুপচাপ থাকি Stare
৩. সবচাইতে বড় কথা, যেটারে বলা যায় "বারুদ ভেজা ছিল" কারণ... আমি কাজলরে ভাল পাই না। Big smile

শাওন৩৫০৪'s picture


জনির মত ক্যারেক্টার প্রায়ই একটা দুইটা পাওয়া যায়, কিন্তু তারপরও এইটারে একটু এক্সট্রীম বানাইলাম আরকি, অনেকেই যেমন বলতে চায়, কিন্তু ভদ্রতার খাতিরে বলেনা, সেরম কথা বলে জনি---
(তা, হ, ভারত যাবা কবে ভাইডি?Wink)

মুক্ত বয়ান's picture


আপনে মিঞা একখান সলিড জিনিস আছেন!!! Wink
কুরিয়া ঘুইরা আসার অভিজ্ঞতা মনে হয় এখন কাজে লাগতেছে গপ্প লেখায়!!! Wink

মজা পাইলাম। Smile

শাওন৩৫০৪'s picture


আরে নাহ, কুরিয়া'র প্রভাব এখনো কোনোটাতে পড়ে নাই, সত্য, এইগুলা আস্তে আস্তে গ্রো আপ হবার, সাহস পাইয়া একটা দুইটা লেখা হৈতাছে, এই যে তোমরা উৎসাহ দেও, এর জন্যই আরকি। Tongue

টুটুল's picture


আচ্ছা... শাওনের গল্প নিয়ে আগামী বই মেলায় বই বের করা যায় না?

নুশেরা's picture


কঠিন সহমত। বস্তাবন্দী, থুক্কু, মলাটবন্দী বিলাই দেখতে চাই।
অট- টুটুলদা আপনেরে মেইল করছি, দেইখেন এট্টু।

শাওন, মসজিদের মোয়াজ্জেম না মুয়াজ্জিন? Thinking
চোখ উঠছে, আলিঝালি দেখতেছি তাই আপাতত পয়লা প্যারার বেশি পড়তে পারলাম না Sad

জ্যোতি's picture


নুশেরাপু, আপনাদের আড্ডার পোষ্ট দিয়েন, ফটুক দিয়েন। আমরা তো আড্ডাইতে পারি না তাই আপনাদের আড্ডার ফটুক দেইখা মন ভরাব।

১০

শাওন৩৫০৪'s picture


অবশ্যই অবশ্যই ফডুক দিয়েন আপু, আমরা তো গরীব, হাতের লেখা খারাপ, আমরা আড্ডাইতে পারিনা।
অপনা কেমন আছে আপু?

১১

শাওন৩৫০৪'s picture


মুয়াজ্জিন হবে। প্রথমে মাথায় ছিলোনা যে, শুদ্ধ ভাষায় লিখবো, নিজের অশুদ্ধ স্টাইলটাতে বেশি আরাম পাই, সেই জন্য মাঝখানে বেশ কিছু শব্দই উল্টা পাল্টা থাকতে পারে।
এখন এই বয়সে আপু চোখ উঠাইলেন, কেমনে? আবার জয় বাংলা? তাইলে তো বাসার অনেকের পালা ক্রমে হবে..
আহারে ছোটোবেলায় সানগ্লাস পড়ার এক রেয়ার সুযোগ ঘটতো শুধু এই চোখ উঠার বদৈলতে, আপনিও পড়তাছেন?
সান গ্লাস পৈড়া রান্নাঘরে যান? পাশের বাড়ীতে এখন আর রং করেনা... Crazy Crazy Crazy
তাড়াতাড়ি ভালো হন আপু!!

১২

শাওন৩৫০৪'s picture


ধুরু, কি সব কথা? মানুষের বই ই হয়না, আবার বিলাই লিখবে বই? হাহাহা, শুইনাই তো সব হাইসা খুন...
টুটুল ভাইয়ের খবর কি?
নুশেরা আপু, দুয়া দিয়েন, সেইডাই যথেষ.. Glasses

১৩

জ্যোতি's picture


পড়তে পড়তে পড়তে...পইড়া গেছি।বিলাই অনেকদিন পর পর কই থেইকা বাইর হয়? বিলাই এর গল্প ভালু পাই। টুটুলের সাথে একমত।

১৪

শাওন৩৫০৪'s picture


পড়তে পড়তে পড়তে----দাড়াও, মুভ নিয়া আসতাছি, কারন বিলাই ও তো তোমারে ভালো পায় বটে!! Big smile

১৫

রাসেল আশরাফ's picture


শাওনের গল্পটা পড়ে আমার কলকাতার ঋতুপর্ন ঘোষের কথা মনে পরলো।

খুব ভালো হয়ছে গল্পটা।অবশ্য শাওন গল্পটল্প ভালই লিখে.।.।।।

১৬

হাসান রায়হান's picture


ঋতুপর্ন ঘোষ মেয়ে থেকে ছেয়ে হয়েছিল নাকি? আমার এক বন্ধুর ভাগনি মেয়ে থেকে ছেলে হয়েছে ১৮ বছর বয়সে। ওর মজাই এখন প্রচুর বান্ধবী।

১৭

শাওন৩৫০৪'s picture


ঋতুপর্নরে দেখতে একটু ক্যামন, আবার তার কাহিনিতে এইরকম বিষয় গুলাও আসে মনে হয়, না?
আপনাকে ধন্যবাদ, কেমন আছেন, সেডা কন? Smile

১৮

হাসান রায়হান's picture


শাওনের এক একটা গল্প পড়ার পর যে আনন্দে মনে ভরে যায়, সেটা কীভাবে বললে উপযুক্ত প্রকাশ হবে সে ভাষাজ্ঞান আমার নাই। ভাস্কর বলছিল উদরাজির মত জ্ঞানশূন্য হে প্রণাম করতে ইচ্ছা করে। আমি জানিনা কীভাবে সাধুবাদ জানাব। আমার সৌভাগ্য অদূর ভবিষ্যতের বাংলাদেশের সেরা গল্পকারে টাটকা লেখা ব্লগে পড়তে পারছি। অসংখ্য ধন্যবাদ শাওন।

ভক্ত হিসাবে বানানের দিকে আরেকটু খেয়াল করতে অনুরোধ রাখলাম। , এগুলির পর সব সময় হয়।

১৯

শাওন৩৫০৪'s picture


এরম প্রসংসা করলে অনেক ভালো লাগেই, মিছা কমুনা, আবার শরম ও করে। কথা হৈলো ভাইয়া, ভবিষ্যতে লেখক হওয়ার কথা কখনো মাথায়ই আসেনাই, এখন যে একে একে এতগুলা লেইখা ফেললাম, সেইগুলাও সবই এবি বন্ধুদের থেইকা অনুপ্রেরনা, উৎসাহ নিয়া। আপনাদের ভালো লাগে, এরকম পড়তেই আমার কাছে অনেক প্রাপ্তি মনে হয়, এমনকি কোনো কোনো কমেন্ট ও বার বার পড়ি খুশির চোটে, হাহাহা।
দোয়া কৈরেন, এবিতে এরম লেখতেই থাকতে পারি যেনো।

২০

রাফি's picture


আপনের যত গুলা গল্প পড়ছি তার মধ্যে এইটা বেষ্ট। অসাধারন।

২১

শাওন৩৫০৪'s picture


বলেন কি? এইটা নিয়া একটু টেনশনে ছিলাম আমি, খুব একটা ভালো হৈছে বৈলা মনে হয়নাই আরকি, আপনের কথায় টেনশন গেলো Cool

২২

সাঈদ's picture


দারুন্স এন্ড দারুন্স ।

২৩

শাওন৩৫০৪'s picture


আব্দুল্লাহ এন্ড সন্স!!
হাহাহা, ধন্যবাদ!!

২৪

রায়েহাত শুভ's picture


এত আইডিয়া কৈ পাও Shock Shock Shock

আমি হালায় আইডিয়ার অভাবে কিছু নামাইতে পার্তেছি না Sad Sad

২৫

শাওন৩৫০৪'s picture


আইডিয়া তো সব জীবন থেকে নেয়া, নিদেন পক্ষে বাংলা সিনেমা দেখলেও পারো? সেদিন আমাগো চ্যানেলে মুনমুনের রানী কেনো ডাকাইত ছিনেমাডা দেখাইছে!!

২৬

মেসবাহ য়াযাদ's picture


বিলাই, কিরাম আছো ? তোমার বন্ধুরা বিশেষ কৈরা জনি কিরাম আছে ? Wink

২৭

শাওন৩৫০৪'s picture


আমি ভালাছি বস, জনির খবর নিয়া পরে জানাইতে হবে।
আপনি কিরামাছেন? আপনার ল্যাব এইডের জান্লার গ্লাস এলা ঠিক মত লাগাইছে তো? Crazy

২৮

মীর's picture


Beer Beer Beer Beer

চূড়ান্ত মজা পাইলাম। নিজস্ব বানানরীতির পক্ষেও সমর্থন জ্ঞাপন করলাম।

ক্রিয়েটিভ রাইটিং'র ব্যপারে একটা লেখায় পড়েছিলাম, একজন ভালো লেখক তার আইডিয়াটিকে প্রস্ফুটিত হয়ে ওঠার সময় দেন। তার আগ পর্যন্ত তিনি আইডিয়াটা মাথায় রাখেন, সেটার বেড়ে ওঠা খেয়াল করেন। অনেকটা নিজের সন্তান পালন করার মতো।

এই কথাগুলো মনে হয় আপনাকে চিন্তা করেই লেখা হয়েছিলো। কারণ এরকম সুখপাঠ্য লেখা আজ-কাল কমই পাই। পাই না বললেও চলে। কেউ সংশয়বাদী বলে তেড়ে আসবে না।

বলতে চাচ্ছিলাম, এরকম আরো চাই।

২৯

শাওন৩৫০৪'s picture


নিজস্ব ভাষারীতি ঠিক আছে, কিন্তু বানান রীতিতে তো আর নিজস্বতা নাই, মনে হয় সেডা ঠিক করাই লাগবে, কিন্তু আমার আবার ভানাম ভুল হয় ব্যাপক, টেনশনে আছি।
যে কথাটা কৈলেন, সেইটা মনে হয় সবার জন্যই প্রযোজ্য, একটা আইডিয়া মাথায় আসার পর, সাথে সাথেই না লিখলে, ঐটার সাথে অনেক কিছু যোগ হৈতে পারে, যে কারো ক্ষেত্রে, কেবল আমার বেলায় সমস্যা হয়, আমি খেই হারাইয়া ফেলি, কোনো একটা আইডিয়া নিয়া, পরে সেইটার উপর আগ্রহ হারাইয়া ফেলি বা যেমনে লেখতে চাই, সেম্নে আর পারিনা।

কিন্তু সবার আইডিয়া নেয়ার একটা বিষয় আছে। যেমন আপনার লেখার সাবলীন ব্যাপারটা, একদম গড় গড় কৈরা পড়তে পারার মত বিষয়টা আমারে অনেক টানে, সেরম লেখতেও মন্চায়।

৩০

মীর's picture


দিয়া দিলেন তো একটা লজ্জা। খেলুম না মিয়া যান

৩১

শওকত মাসুম's picture


বহুদিন পর পর বিলাই গল্প দেয়। আরও বেশি চাই।

৩২

শাওন৩৫০৪'s picture


জি বস, চেষ্টায় আছি, অনেক দিন পর পর দিতে পাইরাও অবশ্য খুশি। ভালো আছেন?

৩৩

তানবীরা's picture


দারুন গল্প হারু Big smile

৩৪

শাওন৩৫০৪'s picture


ভাগ্যিস হারু পর্যন্ত আছেন, গরু পর্য্ন্ত যান নাই।
কাকীঈঈঈঈঈঈঈঈঈঈঈঈঈঈঈঈঈ, দেশে আসবেন কবেএএএএএএএএএএএএএএ?

৩৫

বাফড়া's picture


জনি কি তাইলে কাডলের প্রেমে পড়ছিল??!! Wink

৩৬

শাওন৩৫০৪'s picture


নাহে, জনির প্রেম দিলে সাচ্চা ছিলো....কিন্তু যার যেইখানে আটকা..হে!!

৩৭

নজরুল ইসলাম's picture


এইটাও জমাইলাম। কালকা পড়ুম সময় নিয়া

৩৮

শাওন৩৫০৪'s picture


আছেন কৈ? আপনারে দেখিনা কেন?

৩৯

আসিফ's picture


শাওনের গল্প ভাল্লাগছে।

আপনার পুরাতন গল্পগুলি ঘাঁটতে হবে!

৪০

শাওন৩৫০৪'s picture


অনেক ধন্যবাদ আসিফ, ভালো থাকবেন....
আর আমার গল্পগুলো পড়ার জন্য অবশ্যই স্বাগতম আপনাকে আমার পাতায়। Smile

৪১

ভাস্কর's picture


শাওনের এই গল্পটা পড়া হইলেও কমেন্ট করা হয় নাই...বরাবরের মতোই শাওনীয় গল্প হইছে, তয় গল্পের ভাষারীতি দেইখা মজা পাইছি বেশি...

৪২

শাওন৩৫০৪'s picture


কমেন্ট না করলে হবে নাকি দাদা?
আপনার কমন্টের জন্য অতি অবশ্যই অপেক্ষায় থাকি।
এইদিকে আবার আপনার কমেন্ট দেখতে দেরী হওয়ায় উত্তর দিতে দেরী হৈলো--মাই ব্যাড। Sad
ভাষারীতিতে এক্সপেরিমেন্ট করতে ইচ্ছা করে, সাহস পাইনা বস।

৪৩

নুশেরা's picture


গল্প নিয়ে কিছু বলার নাই, শাওনীয় টার্মটা পাক্কা।

মূলত উত্তরবঙ্গ থেকে কাজ শুরু করে দেশের অনেক জায়গাতে ছড়িয়েছে এমন একটা এনজিও চালান এক ভদ্রমহিলা। তার সাথে দেখা হতো, কথা হতো, বেশ শক্তিমতী শারীরিক-মানসিক গড়নে বোঝাই যায়। পরে শুনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেটেও পুরুষ-নাম তার। ছাত্র হলে থাকতেন, ভূতপূর্ব রুমমেটকে বিয়ে করেছেন অস্ত্রোপচারের পরে। বায়োলজিকাল সন্তান নেই তাদের থাকার কথাও না বোধহয়।

৪৪

শাওন৩৫০৪'s picture


আগে কানে ধৈরা উঠবস কৈরা নেই আপু, আপনের কমেন্টের উত্তর সময়মত না দেয়ার জন্য!!
আমার নিজের পোষ্টে ঢুকাই হয়নাই। Stare
আপনার এই অভিজ্ঞ্যাতা টা থাকলে মনে হয় কাজে দিতো।
আমি শুধু নেট থেকে কিছু দেখছিলাম।
অনেক ধন্যবাদ আপু, আপনার কমেন্ট... Big smile

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.

বন্ধুর কথা

শাওন৩৫০৪'s picture

নিজের সম্পর্কে

অনেক সময় নিয়া শিখতে পারছি, ক্যাম্নে শিখতে হয়....
এখন এইজন্য খালি শিখতেই আছি,
তাই বৈলা কেউ আইসা ভুজুং বুঝাইয়া দিয়া যাবেন, সেইটা আবার মানতে পারুমনা.....
আড্ডা ফূর্তি, মাস্তির সাথে সুযোগ পাইলে শিখাশিখি..

কিন্তু বটম লাইন হৈলো, "শেখার কোনো শেষ নাই, শেখার চেষ্টা বৃথা তাই"