জাতে উঠা হৈল না আমার - ১
জাতে উঠিবার শখ লৈয়া বিলাত যাত্রা করিয়াছিলাম। মনে মনে দিবা স্বপ্ন দেখিতেছিলাম জাতে উঠিব, পাতে উঠিব। সাধারনে আমাকে দেখিয়া বলিবে দেখ বিলাত ফেরতা ছেলে। স্বপ্ন লৈয়া বিলাত যাত্রাই হৈল শুধু জাতে আর উঠিলাম না।
বিলাত গমনের পরে আমার কুঠিতে এক ভদ্রলোক উঠিলেন। প্রথমে তাহাকে দেখিয়া মনে হৈল হায় একি বিলাত আসিলাম নাকি নাইজেরিয়া আসিলাম। শঙ্কিত মনে দিনাতিপাত করিতে থাকিলাম। কিছুদিনের মাঝে তাহার সঙ্গীত রসের সাথে পরিচিত হৈলাম। তিনি আমাকে বঙ্গদেশের মহাগায়েন শরিফুদ্দিন সাবের সাথে পরিচয় করাইয়া দিলেন। আমিও খুশি মনে শুনিতে লাগিলাম “বুরকা পড়া মেয়ে পাগল করেছে”, “বড় ভাইয়ের শালী”, “বিলাতী লাল চকলেট” ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি নিত্য প্রত্যুষে উঠিয়া এইরূপ উচ্চমার্গীয় সং-গীতের সহিত পরিচিত হৈবার জন্যে উক্ত ভদ্রলোক ও গাহিবার জন্য শরিফুদ্দিন সাহেবের প্রতি কৃতজ্ঞতায় মস্তকাবনত হৈতে শুরু করিলাম।
মনোযোগী ছাত্রের মত নিত্য আমি শরিফুদ্দিনের গান শুনিবার অভ্যাস করিলাম। মনে মনে খুশী হৈলাম আমার জাতে উঠিবার পথ বুঝি সুগম হৈল। কিছুদিন অতিবাহিত হৈবার পর উক্ত ভদ্রলোক ম্যাকডোনাল্ড নামক একটি উচ্চশ্রেনীর খাইবার দোকানে কাজ পাইলেন। আমার গান শুনিবার সাথী হারাইয়া গেলো। মনে মনে আমি ম্যাকডোনাল্ডের মন্ডুপাত করিলাম। শাপ-সাপান্ত করিয়া শেষ করিয়া দিলাম কেন তাহারা আমার সাথী কাড়িয়া নিলো।
জীবন কাহারো জন্যেই থামিয়া থাকে না। এই মহান বানীতে বিশ্বাস রাখিয়া আমি আত্মবিশ্বাসের সহিত প্রতি প্রত্যুষে শরিফুদ্দিন চর্চা করিতে থাকিলাম। যেহেতু আমার পথ প্রদর্শক সময় দিতে পারিতেছিলেন না তাই আমার পদচুত্যি ঘটিলো।ধীরে ধীরে আমি আজকালকার সস্তা বিনোদন ধুক ধারাক্কা ধরনের গানে ফিরিতে শুরু করিলাম। হায় আমার বুঝি আর জাতে উঠা হৈল না।
এইরূপ এক প্রত্যুষে আমি শিরোনামহীন নামক একটি সস্তা গানের দলের গান শুনিতেছিলাম। এমতাবস্থায় আমার পথপ্রদর্শক আমার কক্ষে তাহার পদধুলি দিলেন। ভ্রু কুচকাইয়া আমাকে কহিলেন “এই সব কি শুনিতেছো?” আমি লজ্জা পাইয়া গেলাম। মিনমিন কন্ঠে বলিলাম, “জ্বী একটি বঙ্গদেশীয় গানের দল। নাম শিরোনামহীন।” তিনি এমন ভাবে আমায় দেখিলেন যেনো আমি সদ্য নর্দমা স্নান সারিয়া আসিয়াছি। তিনি আমাকে অতঃপর বলিলেন, এইরূপ গান কোন মানব সন্তানের পক্ষে শুনিয়া উপভোগ করা সম্ভব নয়। আমি মনে মনে তখন সীতার মত বলিতেছি হে ধরণী দ্বিধা হও। নিষ্ঠুর ধরনীও আমার কথা শুনিলো না। আমি মিনমিন করিয়া কহিলাম, আমি রোজ প্রত্যুষে শরিফুদ্দিন চর্চা করিয়া থাকি কিন্তু তোমার অনুপস্থিতি হেতু আমার এই পদস্থলন। অতঃপর আমি রবিবাবুর আমারো পরানো যাহা চায় ছাড়িয়া দিলাম। তহার মখোভাব দেখিয়া বুঝিলাম তিনি আমার প্রতি নাখোশ হৈয়াছেন। আমি তাই গান বন্ধ করিয়া দিলাম। অতঃপর তিনি আমাকে বলিলেন, বাংলা গান ছোট জাতের লোকেরা শুনিয়া থাকে। আমি দিশেহারা হৈয়া তাহাকে প্রশ্ন করিলাম তবে কিরূপ গান শুনিব? তিনি আমাকে তখন অন্তর্জাল হৈতে কিছু গান বাহির করিয়া দিলেন। এবং বলিলেন, শুনিতে হৈলে জাস্টিন বেইবার, আসার(!), লেডী গাগা, বাউন্স (!) প্রমুখের গান শুনিবে। তিনি আমাকে লেডি গাগা নামক মহিলার সচিত্র গান ছাড়িয়া দিয়া গেলেন। তিনি ইংরেজী ভাষায় কি বলিতেছিলেন কিছুই আমার বোঝে আসে নাই শুধু মাত্র তাহার ছোট ছোট কাপড় ও অঙ্গ চালনা দেখিয়া কামভাব উদ্রেক হৈল। মনে মনে নিজেকে ধিক্কার জানাইলাম যে কিছুই বুঝিলাম না গানের, হায় আমার আর জাতে উঠা হৈল না, পাতে উঠা হৈল না।
পোস্ট খুবই মজারু হৈসে। জাতে উঠা যেইহেতু হৈল না, কি আর করবেন? এরুম মজার মজার পোস্ট আরো দেন।
আমার জাতে উঠা হৈল না আছি সেই দুঃখে আর আপনে মজা খুজেন?
তয় 'বুরকা পড়া মেয়ে পাগল করেছে' রক্স।
আংরেজি গানের যেই দিকপালদের কথা কইলো...তারাও যদি কোন এক জাতের হইতো, তাইলে একটা কথা ছিল!
তাহারা অতীব উচ্চ শ্রেনীর। তাহাদের গানা ম্যাকডোনাল্ডে বাজিয়া থাকে
আমরার পদ্ম নাকি রে! আছেন কেমুন গো ভাইডি?
ভালা আসি ভাইডি আন্নে কিরাম?
ভাগ্যিস জাতে ওঠেন নাই! চেষ্টা চালায় যান, আর নিয়মিত আপডেট জানান এইরকম পোস্ট দিয়ে।
ধইন্যবাদ দোয়া রাখবেন চেষ্টায় কুনো কমতি দিতাছি না
গাগা করিয়া পোলাপাইন ইদানীংকালে মরিতেছে কেন? ইহা বোধগম্য হইতেছে না।
কৈতারি না। মনে হয় তার কাপড়ের খা খা অবস্থা দেইখা গা গা করে
কেমন আছেন আপু? স্যরি তখন ছিলাম না ফেসবুকে।
হা হা ... মজা পাইলাম।
হুনলাম দেশে আইছেন ! না উইঠাই আইলেন ? নাকি আবার যাইবেন জাতে উঠিবার বাসনায় ?
না জাতে উঠতারি নাই। উঠার চেষ্টা জারি আছে
কি আর করা
মন খারাপ করার হেতুতো বুঝলাম না। জাতে ওঠার সময়তো এখনো যায় নাই
মন্তব্য করুন