সকলকে মৌসুমী ফলের আমন্ত্রন
কেমন আছেন সবাই। আশা করি ভাল। সামনে আসছে মধুমাস। আমার বাগানে আছে দশটি কাঁঠাল গাছ, আটটি আম গাছ ও চারটি লিচু গাছ। প্রতিটি গাছে অসংখ্য ফল। কাঁঠাল গাছের শিকর হইতে শুরু করিয়া আমের মত থোকায় থোকায় কাঁঠাল গাছে ঝুলিতেছে। আম গাছের ও একই অবস্থা। গাছে পাতার চাইতে ফল অধিক। লিচুর গাছ গুলির দিকে তাকাইলে মন ভরিয়া যায়। ফলের ভারে গাছগুলি নত হইয়া এমন উচ্চতায় আসিয়া স্থীর হইয়াছে যে আমার ছয় বছরের ছেলেও উহা হাত দিয়া ধরিতে পারে।
সবাইকে আমার বাসায় আন্তরিক আমন্ত্রন জানাচ্ছি।
এবারে লিচু কাহিনী। লিচু যে অত্যান্ত লোভনীয় ফল তাহা আর বলিবার অপেক্ষা রাখে না। আমি বাজারেই লিচু দেখিয়াছি। লিচু গাছ দেখিয়াছি নার্সারীতে। আমার এই বাসায় যত বড় বড় লিচু গাছ ইহা আমার এই প্রথম দেখা। জানিলাম ইহা দিনাজপুরের বোম্বাই জাতের লিচু।
দেখিতে দেখিতে লিছু গাছ মুকুলে ভরিয়া গেল। মৌমাছিদের আগমন বাড়িল। একদিন দেখি ছোট ছোট লিচু ঝাকরা ঝাকরা ভাবে আকাশের দিকে মুখ করিয়া বাড়িয়া উঠিতেছে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথা ঠাকুরের ভাষায়--উর্ধ্ব আকাশে মেলি অঙ্গুলি--,
আর আমার ভাষায় --সাবেক সরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাবরের মাথার চুলের মত।
ধীরে ধীরে ফলগুলি বড় হইতে লাগিল। ফলের ভারে গাছ নুইয়া পরিতেছে। এখন ফলগুলি রক্ষা করিবার চিন্তা আসিয়া উপস্থিত হইল। তাহা না হইলে বাদুর এবং কাক একটি ফল ও রাখিবে না। কেহ কহিল ঘন্টা বাঁধো পাহারাদার বসাও, কেহ কহিল গাছ বিক্রি করিয়া দাও। সমস্ত ঝামেলা তাহাদের। তোমার যতটুকু খাইবার জন্য দরকার তাহা তাহারা তোমাকে দিবে। আমি দেখিলাম ইহাই উত্তম প্রস্তাব। আমি রাজি হইয়া গেলাম। লোক আসিল গাছ কিনিতে। তাহারা গাছ দেখিয়া অনেক হিসাব নিকাশ করিয়া আমাকে কহিল পাঁচশত টাকা দিবে। আমি আকাশ হইতে পরিলাম। আমাকে সকলে স্বপ্ন দেখাইল এক একটি গাছ দশ হাজার করিয়া বিক্রি হইলে চল্লিশ হাজার টাকা হয় সেখানে মাত্র পাঁচশত। কহিলাম বাদুর আর কাকই খাক কক্ষনই বিক্রয় নয়।
এবারে সকলে বুদ্ধি দিল নেট লাগাইবার। তের টাকা গজে নেট কিনিলাম দুইশত গজ। দুদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করিয়া ক্লান্ত আমার লোক জন কিছুতেই নেট লাগাইতে পারিল না। তৃতীয় দিন অর্থাৎ গত শুক্রবার আমি আমার লোকদের কহিলাম --ওরে বেল্লিকেরা নেট দেবার লোক আলাদা আছে তাদের ডেকে আন। যা পয়সা লাগে দেব। এই বার আমার লোকদের মাথায় বুদ্ধি আসিল। তাহারা লোক আনিতে ছুটিল। শনিবার লোক আসিল। একটি গাছ ঢাকিতে তিনশত গজ নেট লাগিল।
সন্ধ্যায় তাহারা কাজ শেষ করিয়া চলিয়া যাইবার পর আসিল প্রচন্ড ঝড়। রাতের আঁধারে ঝড় প্রান ভরিয়া উপভোগ করিলাম। ঠান্ডা বাতাসে রাত্রিতে সুনিদ্রা হইল। সকালে উঠিয়া লিচুগাছের দিকে তাকাইয়া স্থীর হইয়া গেলাম। গত রাত্রিতে বৃষ্টির পানি মুছিবার জন্য কে যেন তাহাকে ছোট ছোট কয়েকটি রুমাল প্রদান করিয়াছে। অর্থাৎ নেট ছিড়িয়া টুকরা টুকরা হইয়া রুমালের মত ঝুলিতেছে।
সান্তনা এই যে মোট তিনশত গজ নেট কিনিয়াছিলাম।
কাল একটি করিয়া টিন বাঁধিয়াছি প্রতিটি গাছে । আমার লোকজনদের বলিয়াছি পালা করিয়া পাহারা দিতে।
সকলকে আবার ও আমন্ত্রন জানাচ্ছি মধুমাসের মৌসুমী ফল গাছ থেকে পাড়িয়া খাইবার আমন্ত্রন।
আমি অবশ্যই যাবো। যাবোই যাবো তবে এই মাসে না , সামনের মাসে।
কিভাবে যেতে হবে ? থাকার ভালো হোটেল আছে কি না সবিস্তারে জানান।
গিয়ে বাগানে বসে বাগানের ফল খাওয়ার মজাই আলাদা।
বাই দ্যা ওয়ে, আপনাদের বাসায় মি মাটির চুলা ? তাইলে মাটির চুলার রান্না না খেয়ে আসবো না। কেউ না গেলে আমি একাই যাবো।
অবশ্যই সামনের মাসে। সামনের মাসেই ফল পাকবে। আপনি আসুন ব্যবস্থা হয়ে যাবে। সৈয়দপুরে আমি। আসবার সময় জানালেই ঠিকানা পেয়ে যাবেন। মাটির চুলা আপনার জন্য ব্যাবস্থা করা যাবে । কোন অসুবিধা নেই।
আপনের বাসার ঠিকানাখানা তুলিয়া দেন, সময় মতোন পৌছাইয়া যাবো...
আসবার সময় আওয়াজ দিয়েন ঠিকানা পেয়ে যাবেন।
ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে দেখলাম মশারী দিয়ে লিচুর গাছ মুড়ে দিয়েছে। সেইটা করে দেখতে পারেন।
সেটাই তো করেছি। নেট দিয়েছিলাম। কিন্তু ঝড় সব বরবাদ করে দিয়েছে। কত আর খাবে বাদুর আর কাক। অদের ও ত হক আছে তাই না, খাক না কিছু।
আমন্ত্রন পাইয়া আনন্দিত হইলাম। সুেযাগ পাইলে হাজির হইব।
বলাবাহুল্য, ইহা আমন্ত্রণ নয় নিমন্ত্রণ...

অপেক্ষায় রইলাম।
ধন্যবাদ।
এই ভাবে লোভ দেখাইতে হয়না, জানো তো যেতে পারবোনা
এই খানেই তো মজা বন্ধু জানলে কিন্তু আসতে পারলে না।
সৈয়দপুর আর লিচু! আমি যাইতে চাই
চলে আসুন আগু পিছু না ভেবে।
এবি বাহিনী এগিয়ে চলো.... তোমার আমার ঠিকানা সৈয়দপুর সৈয়দপুর।
ইয়ে আপামনি , রেলওয়ের একটা ভালো রেস্ট হাউজ আছে তো সৈয়দপুরে
চিন্তা নাই ভাই আমার বাসার সামনেই রেস্ট হাউজটা। রাস্তার এপাড় আর ওপাড়।
যাইবার জন্য মন আকুলি বিকুলি করিতেছে।
তাহলে আর কি -- মনের সাথে পা গুইটি কেও চালিয়ে ফেলুন।
হ্যাঁ, পা গুইটি'কে দ্রুত চালু করুন।
সৈয়দপুর পর্যন্ত কি ট্রেনে যাওয়া যায় ???
অবশ্যই। সৈয়দপুরে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রেলওয়ে ক্যারেজ এন্ড ওয়াগন কারখানা রয়েছে ।
আমি কিন্তু এক-দুই মাস পরপরই সৈয়দপুর যাই। কানাডা হাউজে থাকি। আগামী মাসে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
সাঈদ ভাই, সৈয়দপুর ট্রেনে যাওয়া যায়।
কানাডা হাউজ টা কি ভাই?
আমি সৈয়দপুর যেখানে থাকি সেই ভবনটির নাম কানাডা হাউজ। এটা আমাদের অফিসের অফিস কাম রেস্ট হাউজ।
বুঝেছি আপনি প্লান এ চাকুরী করেন।
সন্ধ্যার ফ্লাইটে আইতাছি
সৈয়দপুরে বিমান যায় না
ফ্লাইট নাই। মোর ডানা নাই আছে এক ঠাঁই সে কথা যাই পাসরী।
এত সুন্দর করে লিখেছেন; আমি আরো ভাবলাম, আপনি বুঝি কেবল আমাকেই নিমন্ত্রণ করছেন। সেই সঙ্গে ভাবলাম যাই একটু ঘুরে আসি।

কিন্তু এখন তো দেখা যাচ্ছে পুরো দিল্লী'ই যেতে চায় সৈয়দপুর। নাহ্ এ জগতে আর শান্তি পাওয়া হৈল না।
পুরা দিল্লী যদি আসতে পারে ভয় নেই ভাই আমার সৈয়দপুর তাকে পুরাই ধারন করতে পারবে।
বাগানে ঘুরতে ইচ্ছে করছে খুব
চলে আসুন। আমি মন খারাপ লাগলে বা খুব ভাল লাগলে সময়টা গাছের ছায়ায় ছায়ায় কাটিয়ে দেই।
দাওয়াতের জন্য ধন্যবাদ। সামনে রংপুর আর সৈয়দপুর যাওয়ার ইচ্ছা আছে। গেলে দেখা হবে।
অবশ্যই দেখা হবে।
আমি ছাড়া আর একজনকে পাইলাম যে মন খুইলা এভাবে লোকজনকে দাওয়াত করে খাওয়ায়
আমি খেতে আসবো না এমনিতেই আসবো বেড়াতে। আম জামে অনেক সুগার, খেলে ফিগার নষ্ট হবে
আমে সুগার আছে কিন্তু আমে ভিটামিন এ আছে যা শরীরে জমা থাকে। লিভারের জন্য খুবই ভাল। অন্যান্য এ শরীর থেকে বের হয়ে যায় এটা যায় না। আর জামে সুগার নাই। আর ফিগার দিয়া কি হবে ?? মরে গেলে কি এই ফলগুলি খাইতে পারবেন ?? তাই মনের সাধ মিটিয়ে--
হ, ফিগার ঠিক রাখো কেপ্টেন
বান্ধাইয়া রাখনের মতন ডাইলগ...
না আসতে পারলে পাঠাইয়া দিয়েন। ঠিকানা দেবো?
ইস! সত্যি যেতে চাই। কিন্তু পারবো বলে তো মনে হয়না
মন্তব্য করুন