ইংরেজী সাবটাইটেল।।
আজ যথেষ্ট গরম কম। বৃষ্টি হবে হবে করছে, বাইরে ব্যাপক বাতাস। আমি বাসাতেই বসে আছি। বাসাতেই আজকাল আমাকে থাকতে হয়। ভালো লাগে না কিছুই। বাইরেও ভালো লাগে না। বসে থাকি তো থাকি। আগে বাসায় অসময়ের বিছানায় শুয়ে থাকতে মেজাজ খারাপ লাগতো। এখন লাগে না। বিছানায় আছি তো আছি, না ঘুমিয়েই শুয়ে আছি। বসলেই প্যারা শুরু, ফেসবুকের নিউজফিড দেখার প্যারা, দিনের পর দিন নতুন ইস্যু নিয়ে মেজাজ খারাপ- খবর টবর জানার প্যারা, বিনোদনের জন্য ইউটিউবে গান দেখার প্যারা, সিনেমা দেখার প্যারা। নতুন পোলার আইস ক্রিমের বিজ্ঞাপনের মতো বলি, পিসির সামনে বসলেই প্যারা অন! তাই প্যারা থেকে দূরে থাকার উপায় সিনেমা দেখো। আমার আবার হলিউড ভালো লাগে না। হলিউডেও সিনেমাতেও খুব একটা ধৈর্য পাই না। আর হলিউডে এত এত সিনেমা লিষ্ট দেখলেই কষ্ট লাগে। তাই হলিউড যত কম পারা যায়। এখন নতুন হুজুগ সবাই মিলে ফার্ষ্ট এন্ড ফিউরিয়াস দেখতে যাওয়া, এভেঞ্জারস দেখতে যাওয়া তাও আবার যেনতেন জায়গায় না, স্টার কিংবা ব্লকব্লাষ্টারে। আমার সুপার হিরো মুভি কখনোই ভালো লাগে না। যারা সুপার হিরো মুভির ফ্যান তারা আবার হিন্দি বাংলা সিনেমাকে গাঁজাখুরি বলেন, মনে প্রশ্ন আসে গাজার সরবরাহে কে কার চেয়ে এগিয়ে? বন্ধুরা আজ যাচ্ছে সুন্দরবন, তার আগের মাসে গেল সেন্টমার্টিন, অফুরন্ত টাকা নাই আর মনে শান্তি নাই তাই যাওয়া হলো না। এরকম আমার কোথাও যাওয়া হয় না আসলে। তাও বাসার সবার ধারনা আমি খুব আমোদে আছি, বসে বসে তাঁদের টাকার শ্রাদ্ধ করছি, কিন্তু আমি যে কি পরিমান লক্ষ্মী ছেলের মতো বাসায় দিন গুঁজার করি, সেইটা কাউকেই বুঝানো গেল না। যাই হোক, যার যার বুঝ তার তার তরমুজ। সবাই সবার তরমুজ নিয়ে সুখে থা্কুক।
আজ অবশ্য বাসায় বসে বসে খেলা দেখছিলাম। পাকিস্তানের বেধড়ক মার দেখলাম, বাংলাদেশের ব্যাটিং বিপর্যয় দেখছিলাম আর সচলায়তনে নারী সপ্তাহের পোষ্ট পড়ছিলাম। ব্লগের ভেতর এখন সচলায়তনেই খালি যত্ন নিয়ে যাওয়া হয়। সবার লেখা যত্ন নিয়ে পড়ি না। কিছু লেখকের লেখা আসলেই মুগ্ধ করে, তাঁদের লেখা আসলেই নাম্বার ওয়ান। তবে কিছু লেখককে আমার ওভাররেটেড মনে হয়। তাঁদের লেখাও পড়ি। কারন তারা অন্তত আমার চেয়ে তো ভালো লিখে। নারী সপ্তাহ উদ্যোগটা দারুন। নারী সম্পর্কিত বিভিন্ন লেখা আসছে। তবে লেখকদের নিয়ে আমার অব্জারভেশন ভিন্ন, কারন অনেকেই লিখে, এই জাতি পুরোটাই মায়ের গুনগানে মুখর, কিন্তু নারীর প্রতি সহিংসতায় আমরাই আবার এগিয়ে। বেশীর ভাগ পুরুষ মানুষই দিনশেষে পুরুষ মানুষ, তা যত মহাপুরুষই হোক, তাই লেখালেখি করে আমার মনে হয় না কাজ হবে, আমাদের দরকার মানসিকতার রীতিমত বিপ্লব আর আইন কানুন প্রয়োগের কড়াকড়ি- তার সাথে অবশ্যই দরকার মেয়েদের রুখে দাঁড়ানো- তাহলেই সম্ভব নারীদের জন্য সহায়ক এক দেশ। এখনো সেই দিন আসতে আমাদের অনেক সময় লাগবে। এখনো যে দেশে ধর্ষন কিংবা নারী নিপীড়নের শিকার হলে সব দোষ পড়ে মেয়েদের, মেয়ের পোষাকের, সেরকম পশ্চাদপদ অসভ্য সমাজে নারীর মুক্তির পথ আরো অনেক দূরে।
যা নিয়ে বলছিলাম, সিনেমা। আমি গত মার্চ- এপ্রিল মাসে ব্যাপক সিনেমা দেখছি। পুরোনো হিন্দি সিনেমা যা দেখার কথা ভাবছিলাম, তা সব দেখা শেষ। গুরু দত্ত, শাম্মী কাপুর, রাজ কাপুর, দেব আনন্দ সুনীল দত্ত, দিলীপ কুমার এদের যা মোটামুটি মানের সিনেমা আছে সব দেখা শেষ। মধুবালা, ওয়াহিদা রেহমান, শর্মিলা ঠাকুর, নুতন, নার্গিস দত্ত, মীনাকুমারী, সায়রা বানু, আশা পেরেখ, সাধনা, এদেরও যথেষ্ট সিনেমা দেখলাম। সব কিছুর সহায় উইকি। উইকিতে সার্চ মারি, ইউটিউবে সেই সিনেমা নিয়ে নানান জনের কমেন্ট পড়ি, তারপর ইউটিউবেই সিনেমাটা দেখি না হলে ডাউনলোড করি। এখন আর বাকী কিছু নাই যা দেখা উচিত ছিল। তবে সিনেমা আমার ভালো লাগছে দুই ব্যাক্তির এক দেব আনন্দ আর রাজ কাপুরের। আর পরিচালনায় ভালো লাগছে, গুরু দত্তকেই। বিমল মিত্রের সাহেব বিবি গোলাম আমার পড়তে ওতো ভালো লাগে নাই, কিন্তু ভালো লাগছে গুরু দত্তের ছায়ায় আবরার আলভী যখন তা পরিচালনা করছে তখন। কাগজ কা ফুল, পিয়াসা, সিআইডি, মিষ্টার এন্ড মিসেস ফিফটি ফাইভ, চৌদাভি কি চাঁদ, সহ প্রায় সব সিনেমাই মনে ধরেছে। আর গুরু দত্ত ওয়াহিদা রেহমানের ক্যামিষ্ট্রি তো অসাধারন। একদিন গুরু দত্তকে নিয়েই পোষ্ট দিবো। একটা ডকুমেন্টারী আছে উনাকে নিয়ে, পাচ্ছি না। ওটা পেলে গুরু দত্তকে নিয়ে জানাটা আরো প্রখর হবে। এখন যা জানি তা মুলত সার্চ মেরে বিভিন্ন পত্রিকা থেকে। বলিউডের একটা জিনিস ভালো। তা হলো মোটামুটি সব বিখ্যাত স্টারকে নিয়েই অনেক বই আছে, বিভিন্ন নামী প্রকাশনার। আর গুরু দত্ত, মধুবালা, মীনাকুমারীর মত অকাল প্রয়াত লোকদের নিয়ে তো বইয়ের অভাব নাই। ইবুক পড়তে যুত পাইনা। জেমসের মতো ইবুক লাভার হলে পড়ে ফাটিয়ে ফেলতাম।
হিন্দি সিনেমা সাইজ করার পর খায়েশ হলো কোরিয়ান সিনেমার পেছনে লাগার। কিন্তু কোরিয়ান সিনেমা দেখার জন্য সাবটাইটেলের বিকল্প নাই। আগে খুজতে হয় সিনেমা তারপর সাবটেল ভালো, প্রিন্ট যেমন খুশী তেমন হোক। এইখানে অবশ্য ভরসা বায়োস্কপ নামে একটা ব্লগ আছে বাংলা। সেখানে কোরিয়ান সিনেমার লিষ্টি দেয়া, কোন জেনারের কোন সিনেমা ভালো। আমি কোরিয়ান কোন স্টারকেই চিনি না। কিন্ত কোরিয়ান নায়িকাদের সেইরকমের পছন্দ হইছে। যে নায়িকার বয়স ধারনা করি ২৬-২৭ সেই নায়িকার বয়স ৩৫-৩৬। আর নায়কদের চেহারা মোরওভার একই রকম। খালি তিন চারজন নায়ককে আমি আলাদা করে চিনতে পারছি। আমি কোরিয়ান দুই ধরনের সিনেমার খুব ভক্ত হইছি এক রোমান্টিক কমেডি আর থ্রিলার। তাঁদের অনেক থ্রিলারই মহেশ ভাট প্যানেলের লোকেরা ভারতে সফলতার সহিত মেরে দিয়েছে। তাঁদের রোমান্টিক সিনেমা গুলো অবশ্য খুব আবেগময়। এত কান্নাকাটি, এত বেদনা, আর বেঠিক সময়ে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের মৃত্যু। তবে তা দেখতে খারাপ লাগে না। এশিয়ান ভাই বোনদের এত আবেগ আমাকেও ছুঁয়ে যায়। মোটামুটি কোরিয়ান সিনেমাও প্রায় বিখ্যাত গুলো সব দেখা শেষ। সামনে অল্প বিখ্যাত কোরিয়ান সিনেমাও দেখে শেষ করে ফেলবো। আপাতত অফ রাখছি। তবে রাস্তা ঘাটে কোনো আদিবাসী মেয়ের সাথে আমি কোরিয়ান নায়িকা কিম হা নিউল কিংবা জুন জি হিউনকে মিলিয়ে ফেলাই। এই দুই নায়িকার সব সিনেমাই দেখা শেষ। এমনকি এদের অভিনীত টিভি সিরিয়াল গুলাও। কোরিয়ানদের সব কিছুর ইংরেজী সাবটেইল পাওয়া যায়। ড্রামা কিংবা সংবাদেও ওদের ইংরেজী সাবটাইটেলের সংকট নাই।
এখন অবশ্য আমি আছি সাউথ এশিয়ান অনান্য ভাষার সিনেমা দেখার উপরে। পাকিস্তানী দুখানা ব্যবসা সফল সিনেমা দেখলাম কাল। ওয়ার আর আরেকটার নাম ভুলে গেছি। ওয়ার সিনেমাটা দেখে খুব মজা পেলাম, ইন্ডিয়ান এজেন্ট আসে পাকিস্তানে বোমা মারতে, তালেবানদের সহায়তা নিয়ে, পাকিস্তানি শাকিব খান নায়ক শান সবাইরে বাঁশ টাশ দিয়ে অস্থির করে দেয়। এইখানেও আছে আর্মি তোষন, শান রিটায়ার্ড আর্মি অফিসার, র এজেন্ট তাঁর ঘর বাড়ি বঊ পোলাপান সব বোম মেরে উড়িয়ে দেয়, আর আরেক রয়ের এজেন্টের সাথে প্রভাবশালী মন্ত্রীর দহরম মহরম, সব মিলিয়ে ব্যাপক জাতীয়তাবাদী ভারত বিদ্বেষী মুভি। দেখে শান্তি পেলাম, বলদেরা বলদই থাকে। পাকিস্তানে আরেক কমেডি মুভি দেখলাম সেইটা মোটামুটি একটা ক্লাসের। নেপালী এক সিনেমা দেখলাম পোষাইলো না। এখন সমানে দেখছি মালায়লাম আর তেলেগু ছবি। তবে হিন্দি বাদে সব সিনেমা দেখার উপায় একটাই তাহলো সাবটাইটেল রাখা। ইউটিউবেও সিসি দেখেই আগ্রহে পড়ি সিনেমা দেখার। সাবটাইটেল জিনিসটা খুব কাজের। মানুষের মনের কোনো সাবটাইটেল থাকলে ভালো হতো, মুখে বলে এক কথা, তবে আমরা মোবাইলে এপ্সের মাধ্যমে বুঝে যেতাম তাঁর মনে আসলে অন্য কথা। ফেসবুকে সমাজে চলতে ফিরতে আমরা কত মানুষ দেখি কেউই খুব স্বাভাবিক না, মনে খালি প্যাচ প্যাচ, মুখে একটা অন্তরে আরেকটা, তাঁদের অন্তরে ভাষা বোঝার সাবটাইটেল যদি পেতাম সবাই, দুনিয়াটা আরেকটু অন্যরকম হতো।
সিনেমা নিতে দেখি একেবারে গবেষনা শুরু করছ। কত সিনেমারে!!! হলিউডের গাঞ্জাখুরি সিনেমাগুলা দেখলে বাংলা সিনেমাকে ফার্ষ্ট ক্লাস সিনেমা মনে হয়
সেই ১৯৬৩ সাল থেকেই তুমি তো ব্যাপক সিনেমা খোর। তুমি যেই স্কুলের হেডমাষ্টার আমি সেই স্কুলের পিয়ন
সেই ১৯৬৩ সাল থেকেই তুমি তো ব্যাপক সিনেমা খোর।
কি কও এইগুলা? সিনেমা খাব কেন? আমি নিয়মিত ভাত খাই
বি পজেটিভ, সিনেমাখোর মানে ভাত তরকারীর সাথে সাথে সিনেমাও খাও।
আমি আবার ইংলিশে ফেরত গেছি। ইন্টারস্টেলার, বয়হুড, সিন্ডারেলা, ফিফটি শেডস অফ গ্রে, টেকেন ৩, ফাস্ট এন্ড ফিউরিয়াস ৭ কিছু বাদ দিচ্ছি না
সাব্বাশ। আপনেই তো আসল কাজ করতেছেন!
যার যার বুঝ তার তার তরমুজ। সবাই সবার তরমুজ নিয়ে সুখে থা্কুক। খাঁটি কথা
ফিউরিয়াস ৭ আর বয়হুড দেখার খুবি শখ জাগছে।
সবসময়ই মনে হয় দৈনন্দিন জীবনযাপন নিয়ে কত দারুণ করে লিখ তুমি।
সিনেমা লাগলে বইলেন। ৩ এম্বিপিএসের লাইন, বিদ্যুৎ গতিতে সব ডাউনলোড হয়!
সিনেমা তো লাগবেই। এই দুইটাই দিও তাইলে। সাথে বোনাস দিতে পারো।
আবার দেখা হলে পেয়ে যাবেন আপা!
লাইফ সাইকেলের এ পর্যায়টা আপনার দারুন কাটছে আরাফাত! কারন সাইকেলের স্টিয়ারিংটা এখনো আপনার হাতে ! ইচ্ছেমতো বৃত্তের বাহিরে যাওয়া-আসা চলছে।
ভালো থাকবেন।
দোয়া কইরেন ভাই। ভাবী আর বাবুকে নিয়ে ভালো থাকেন!
মন্তব্য করুন