ইউজার লগইন

স্ট্রিংস!

৩৩ বছর ধরে চলার পর একটা ব্যান্ড ভেঙ্গে গেলে আমার মনে হয় আরও আগে ভাঙ্গা উচিত ছিল। তাও তেত্রিশ বছর কাটলো কেউ কথা না রাখলেও, টুপ করে স্ট্রিংস ব্যান্ডটা ভেঙ্গে গেল। খবরটা আমি পড়েছিলাম আনন্দবাজারে। ফেইক নিউজ মনে করে ভালোই ছিলাম। কি মনে করে কয়েকদিন পর স্ট্রিংসের গান শুনছিলাম। দেখি কমেন্টে সবার আহাজারি। তখন মনে হলো ব্যাপারটা সত্যি। সবাই কমেন্টে আবেগপ্রবণ হয়ে গেছে দেখে আমি ইচ্ছে করেই কমেন্ট করলাম। স্ট্রিংস একটা ওভাররেটেড ব্যান্ড, আগেই ভাঙ্গা উচিত ছিল। মানুষ আমি আমার কেন রাইসুর মতো মন। দেখি পাকিস্তানী নওজোয়ানরা আমাকে ধুমায়া গালি দিচ্ছে। কমেন্টটা মুছলাম। লোকজনকে বোঝানো গেল না, অনলাইনে কমেন্ট একটা মুহূর্তের সিদ্ধান্ত। আসলে তো আমি কি পরিমান হতাশ সেটা তো আর বোঝানো যাবে না। আমরা ধরেন বিভিন্ন অনলাইন কমেন্ট স্ট্যাটাস পড়ে ভাবি লোকটা ওমন। সে ওমনটা নাও হতে পারে। হয়তো গড সিন্ড্রোমে ভুগছে, মজা নেয়া ও প্রতিক্রিয়াটা দেখাই তাঁর কাজ।
স্ট্রিংস নিয়ে লিখতে ইচ্ছে করেছিল। পরে ভাবলাম থাক। আরেকদিন লিখবো। এমনিতেই লোকজন বলবে, তুমি না পাকিস্তান বিদ্বেষী এত ওদের নিয়ে লেখো কেন। জাফর ইকবালের গল্প নিয়ে একটা নাটক বানানো হয়েছিল অনেক আগে। তাতে দেখতাম নায়িকা পাকিস্তানী গান শুনে। নায়ক তাতে ক্ষিপ্ত। তখন নাইন টেনে পড়ি। ব্যাপারটা আমার কাছে সেই লেগেছিল। জামাত বিএনপি ক্ষমতায়, আমিও খুব চেতনায় উদ্ভাসিত। এখন কোক স্টুডিওর জয়জয়কারের ভেতরে এসব কি হাস্যকার শোনায়। ঘৃণা করতে চাইলে লোকের অভাব নাই। শিল্পকলার প্রধান কর্তা লাকী ভাইও পাকিস্তানকে খুব ঘৃণা করে, তবে ক্রিকেট খেলায়। কিন্তু লুটপাটে তাঁর মতো ঘৃণিত ব্যক্তিও হয়তো কোনো না কোনো যুক্তি দেখায়। সায়মন ড্রিং কে নিয়ে পড়ছিলাম এক লেখায়, তাকে পাকিস্তান কারাগারে পাঠাতে চেয়েছিল আর্মি। প্যান্ট খুলে চেক করে পায় কিছু লিখিত নোট। ব্রিটিশ এম্বাসির কারণে উনি পরে ব্যংকক যাওয়ার কথা বলে পার পেয়ে যান। ব্যংককে বসেই তিনি লিখে ফেলেন, অসাধারণ সেই ঢাকায় গণহত্যা নিয়ে রিপোর্ট। হয়তো পাকিস্তানেরও যুক্তি ছিল এই লোক আমাদের কুকীর্তির কথা ফাঁস করে দেবে, দেশের মান ইজ্জত থাকবে না। আর এখন সবার চিন্তা, দেশের কথা ভাবতে হবে আগে। কত গ্লানি নিয়ে দেশেই আছি তাও দেশের কথা ভাববো না, আমার কাজ না সেটা। যাদের কাজ তারা ভাবুক আপাতত। বেশি ভাবলে জেলে হবে যেতে, এক কারাগার থেকে আরেক কারাগারে যাওয়ার ইচ্ছে নাই।
তাই এক্টিভিজমের এখন প্রধান লক্ষ্য নিজের নিরাপত্তা। নিরাপদে থেকে সব কাজ করা। কিন্তু নিরাপদে থেকে সংসার হয়, একটিভিজম হয় না। শাসক শ্রেণীর বিরুদ্ধে আন্দোলন করলে অবশ্যই আপনার জীবন হবে অনিরাপদ ও আপনার জীবিকা পড়বে হুমকিতে। এসবের জন্যই আমাদের নাগরিক আন্দোলন গুলো হয় কাউকে জামিন পাওয়াতে কিংবা কাউকে এরেস্ট করাতেই সীমাবদ্ধ। অনেকেই বলবে এসব নিয়ে কথা হচ্ছে ঐ ইস্যুকে আড়াল করতে। আমরা কি ঠিক করতে পারি কোন ইস্যুতে কে কি বলবে। মেমোরীতে দেখি আমার আগের বেশির ভাগ স্ট্যাটাসই জ্বালাময়ী ও ভীষন রাজনৈতিক। এখন আমি গান বাজনা, সিনেমা, ব্যক্তিত্ব, কালচার, বারেক, সামাজিক নাগরিক জীবন এসব নিয়েই লিখি। তাতে আমারও মনে হয় জেলের ভয় আমারও আছে অবচেতনে। যে বলে, .... টাইম নাই। তারও আছে টাইম অন্য কোথাও গিয়ে। হিজবুত তাহরীর যারা করতো আগে যদি বড়লোক হয় বলে রাখতো এক দেড় লাখ টাকা রেডি রাখতে সব সময়। কারন ধরা খেলে টাকা পয়সা থাকলে জামিন সেইদিনই পাওয়া যায়। বড় কোনো রিকভারী না থাকলে। একবার এক মোহাম্মদপুরের ছেলে লিফলেট দিতে গিয়ে ধরা খেয়েছে র‍্যাবের হাতে। কিন্তু ছেলেটার ইংলিশ এক্সেন্ট দেখে র‍্যাব থতমতো। ওকে ছেড়ে দিয়েছিল একটু পরেই। শালার সেরকম এক্সেন্টও নাই, বড়লোক তো নই কোনোকালেই। তাই আমাদের জাগ্রত ঝিনুক পার্টি জিন্দাবাদ। নীরবে সয়ে যাও সব।

পোস্টটি ৭ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

বিষণ্ণ বাউন্ডুলে's picture


শেষ লাইনটা দারুন হইছে, ব্যবহার করা যাইব অনেক জায়গায়।

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.

বন্ধুর কথা

আরাফাত শান্ত's picture

নিজের সম্পর্কে

দুই কলমের বিদ্যা লইয়া শরীরে আমার গরম নাই!