ইউজার লগইন

পাখি তার নীড় হারালে, কোন কোন সন্ধ্যা তারা খুব কাঁদে

মন হাওয়ায় পেয়েছি তোর নাম
মন হাওয়ায় হারিয়ে ফেললাম

আজকাল তুমি বড্ড অপ্রতিরোধ্য হয়ে যাচ্ছ। কিছুতেই তোমাকে প্রতিহত করতে পারছি না। আমার মগজের প্রতিটি কোনায় কোনায় এখন তোমার অবাধ যাতায়ত। চব্বিশ ঘন্টার ছত্রিশ রকম কাজে বারবার তুমি এসে ভীষণ গোল বাঁধিয়ে ফেলছ। মস্তিষ্কের কোষ থেকে কিছুতেই তোমাকে সরাতে পারিনা। ঘূণ পোকার মত কুড়ে কুড়ে খাচ্ছ আমার অস্থি-মজ্জা আর হৃদয়। তুমি নেই, অথচ এই জগত সংসারে আমি ঠিক বেঁচে বর্তে আছি-এ ভাবনাই অর্থহীন।
তাই আমি পালাব বলে, মনস্থির করেছি। তুমি আমাকে তোমার কথার চাতুর্যে বেঁধে কিছুতেই পালাতে দিতে চাইবে না আমি জানি। কিন্তু পণ্ডিত অজয়ের একটা গান আছে, শুনেছ কি? "যত পাহারাই দাও মন পালাবেই"।

আমি জানি, তোমাকে ছাড়া আমি এক মুহূর্ত থাকতে পারব না। আমি জানি তোমাকে আমার করে পাবও না-তাই ঠিক করেছি, তোমাকে নিয়েই পালাবো। এ জগতে কিছু কিছু মানুষ আছে, ভালোবাসা যাদের জন্য নয়। সেটা জানো তো! কারো কারো এক একটা জীবন কেটে যায় ভালোবাসাহীন। আমি সেই মানুষের দলে। অথচ তুমি জানলে না যে, আমি কতটা ভালোবাসতে জানি। যাবে আফ্রোদিতি আমার সাথে সাথে?

ঢাকা ছেড়ে বেরিয়ে পড়ে, আমরা টাঙ্গাইলে একটু থামবো। ওখানে পথের ধারে ধারে অদ্ভূত সব দোকান আছে, জানো! বাঁশের খুঁটি বেয়ে বেয়ে উঠে গেছে ছোট ছোট দোকান। খুব ভালো করে দেখলে, মনে হবে ওগুলো ট্রী হাউজ।জানি শুরুটা এভাবে তোমার মোটেও ভালো লাগবে না তবুও ওখানটায় ধুলো ময়লায় সামান্য খেয়ে নিয়ে,

তারপর আমরা দুজন মিলে ঢুকে যাব সিরাজগঞ্জ।
এলিয়ট ব্রীজের সিঁড়ির ধাপ গুলোতে বসে, তোমার আঙ্গুলগুলো এই প্রথম স্পর্শ করব খুব। তারপর তোমাকে যমুনা দেখাতে নিয়ে যাবো। এ নদী কিন্তু নারীর মত, মানে তোমার মতো। অযথাই ভাসায়। যমুনা বাঁধের ওপর সারি সারি গাছগুলোর ছায়ায় হাঁটতে হাঁটতে আমরা অনেকটা হারিয়ে যাব। খুব কষ্ট হবে সোনা তোমার? যাও তোমাকে নৌকায় করে মাঝ যমুনায় ভাসিয়ে নেব। তখন আমি ছাড়া কেউ থাকবে না, তোমার কাছে। কি করে লুকোবে তোমাকে? ওমন জলের ভেতর তোমার ভয় করবে না? আমি যদি পুরুষ হয়ে উঠি?
আচ্ছা যাও অমন ছলছল চোখে আর তাকাতে হবে না।

এরপর তোমাকে নিয়ে বগুড়ায় পাড়ি জমাব। বগুড়া থেকে তোমার জন্য এক খিলি মোহাররমের পান কিনে দেবো। নানান মশলায়, তার বাহারী স্বাদ। পান মোড়া রূপোর রাংতা কাগজটাও তোমার মিহিন দাঁতের ভাঁজে অনায়াসে আত্মহুতি দেবে। তোমার ঐ কমলার কোয়ার মত লাল টকটকে ঠোঁট জোড়াকে পাহারায় রেখে তোমাকে নিয়ে নাটোরে থামবো।

তুমি নাটোরে রানীর বাড়ি গিয়েছ কখনও?
রানী ভবানির বাড়িতে শ্বেত পাথরের সিঁড়ি ডিঙ্গিয়ে এক হাত ভাঙ্গা কালো মূর্তিটাকে পেছনে ফেলে, ছোট্ট গোপন ঘরটায় ঢুকে যাবো। যেখানে রাখা আছে সিংহাসন। জানো তো, সিংহাসনের হাতলে মিনা করা সিংহের মূর্তি আছে। এবার তোমাকে আমি সিংহাসনে বসিয়ে দেব দেবী।
আর কোন কথা শুনতে রাজী নই। তোমার ঐ রক্তজবার মত লাল ঠোঁটে একটা প্রগাঢ় চুম্বন এঁকে দিতে চাই।
কেন এত ছটফট করছ? সিংহকে ভয়? না? শুধু পুরুষে তোমার এত ভয়? তোমার কাছে সিংহ পুরুষ হতে পারলাম কই?
আচ্ছা চলো, তোমাকে সঙ্গে নিয়ে কানাইখালির বাবুর পুকুর পাড়ে বসবো।
শ্যাঁওলার গন্ধের সাথে তুমি খুঁজে নিও পুরোন ফেলে আসা অতীত। আমি তোমাকে আমার শৈশবের গল্প শোনাবো।শোনাোব, গুলাম আলীর সেই বিখ্যাত গজল- চুপকে চুপকে রাত দিন, আঁসু বাহানা ইয়াদ হ্যায়

নাটোর থেকে বেরুবার পথে তোমাকে কালীবাড়ির কাঁচা গোল্লা খাওয়াব। অপূর্ব তার স্বাদ।
তারপর রেল গাড়িতে তোমাকে নিয়ে দুদিন ঘুরবো। অনেক ছোট বড় জংশন তোমাকে দেখাবো। রেলের জানালা তোমার কাছে হয়ে যাবে বায়োস্কোপ। সেই বায়োস্কোপের পেটের ভেতর তোমাকে শোনাবো, অন্ধ ভিখিরির গান। দেখাবো, জীবিকার তাগিদে হকারেরা কি চাতুরিতে বেঁধে রাখে যাত্রীদের । ড্যাব ড্যাব বলে কেউ হেঁকে যাবে।
তোমাকে নিয়ে শান্তাহার কিম্বা ঈশ্বরদীতে নেমে পড়ব।

ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশনটা দেখতে অদ্ভূত সুন্দর, খুব স্মৃতি গন্ধের মত। মন কেমনিয়া। ওখানে একটা পুরানো রান ওয়ে আছে। সেখানে বসে বসে আমি তোমাকে মেঘেদের গল্প শোনাবো। তুমি কি জানো, এক ধরণের মেঘ আছে, যার বুকের ভেতর ঘণ কু্য়াশার মত অভিমান!!! অভিমানি এই মেঘ গুলোকে বলে কিউমুলাস মেঘ। ঠিক তোমার মতো। তোমার মতই ওরা গাঢ় আর গভীর। আকাশে উড়োজাহাজ যখন ওড়াউড়ি করে, তখন আকাশের একটা সীমানাকে সংক্ষেপে বলা হয়, পি এন আর মানে পয়েন্ট অব নো রিটার্ণ। এমন একটা জায়গা যেখান থেকে আর আগের জায়গায় ফেরা যায়না। আমার হয়েছে এমনই দশা। তোমাকে ভালোবেসে আর ফিরে যেতে পারছি না, আমার সেই একার পুরানো ছন্নছাড়া জীবনে।
গল্প শুনে শুনে বাড়ি ফেরার জন্য বুঝি মন কেমন করছে...

বেশ তোমাকে আমি গাইবান্ধায় নিয়ে যাব। নশরতপুরে একটা দারুণ থাকার জায়গা আছে কিন্তু। একটা রাত আমরা ওখানেই কাটিয়ে দেবো। মাঝ রাতে ভয় পেয়ে আমার কাছে চলে আসার পুরস্কার হিসেবে তোমাকে পরদিন সকালে চমৎকার রস মালাই খাওয়াবো। তারপর নদী দেখতে বেরিয়ে পড়বো। শহর ছেড়ে একটু দূরে একটা নদী আছে,একটা শহুরে নৌকায়, যার গতি আছে, মাঝিদের খুব বেশী কষ্ট করতে হয় না- এরকম নৌকায় তোমাকে নিয়ে যাবো, নদীর ওপারে। নদীর ওপাড়ের মানুষেরা বড্ড সরল। ওদের সাথে কথা বলে, ওদের অতিথি হয়ে কাটিয়ে দেবো একটা বেলা।
এবার কুড়িগ্রাম যাবো। পথে ক্লান্ত হলে, আমার কাঁধে তোমার এলোমেলো খোঁপার বিস্তার খুলে দিয়ে একটু জিরিয়ে নিও।

কুড়িগ্রামে ঐ ছোট্ট শহরটায় আমার প্রথম দেখা বিষ্ময় হল, লাল ভাই আর শাহানা আপা। জানো, লাল ভাইয়ের দুবার স্ট্রোক করে ওর শরীরের একটা অংশ প্যারালাইজড আর শাহানা আপার ক্যানসার। স্বামী-স্ত্রী দুজন মানুষই জানেন তাদের হাতে আর সময় নেই, যে কোন মুহূর্তে চলে যাবেন, তবুও ওরা কি যে হাসি-খুশী। ওদের কাছে থেকে শিখে নিও, যণ্ত্রনাকে কি করে জয় করতে হয়!!!
ওমা, বোকা মেয়ে এত অল্পতে কেউ কাঁদে? এই যে দেখ, দুহাত প্রসারিত করেছি, খুব কাছাকাছি এসো, আমি তোমার নির্ভরতা হবো।

চলো, তোমাকে নিয়ে এবার পঞ্চগড় যাবো। আমরা দুজন একটা পুরোন বাড়িতে একটা রাত কাটি,য়ে দেবো আর খুব সকালে তোমাকে আদর দিয়ে দিয়ে তোমার ঘুম ভাঙ্গাবো।
তারপর দুচোখ বন্ধ করে, তুমি আমার হাত ধরে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসবে। চোখ খুললেই দেখতে পাবে, কাঞ্চন জংঘাকে। কি যে অপরূপ না দেখলে বিশ্বাস করবে না। তারপর তোমাকে নিয়ে চলে যাব তেঁতুলিয়ায়। ওখানে মহানন্দায় তোমার সাথে অনেক ভিজব।
জল তোমাকে কতটা অপরূপ করে, সেটাই একবার পরখ করে নিতে চাই। তোমার অমন উদ্ধত পায়রা যুগলকে সিক্ত লাজুক শাড়ি সামলাতে কতটা হিসশিম খায়, সেটা ভেবে আমার দারুণ হিংসা হচ্ছে। কি অমন হিংস্র চোখে তাকিও না। আমি নিশ্চিত খুন হয়ে যাবো।

আচ্ছা আর রাগ দেখাতে হবে না। চলো, আমরা রাজশাহী চলে যাই। এ শহরকে আরেকটা নামে ডাকা হয়। সিল্ক সিটি। তোমাকে নজরুলের গান থেকে শব্দ ধার করে, একটা ধানি রঙ শাড়ি আর মেঘ রং এর ওড়না কিনে দেবো। তুমি যখন শাড়িটা পরে আমার সামনে দাঁড়াবে, তখন চারিদিকটা আলোয় আলোয় ভরে উঠবে। তোমার সেই জোত্যিময় কপালে খুব আলতো চুম্বন এঁকে দেবো। শুঁয়ো পোকা থেকে তুমি হয়ে উঠবে ছটফটে সিল্কি প্রজাপতি। ওখানে সাহেব বাজারের মোড়ের বইয়ের দোকানগুলো থেকে, একগুচ্ছ কবিতার বই কিনে নেবো।

ক্ষুধা পেলে ট্রেনের বুফেতে কিছু খেয়ে নেবো। চপ-কাটলেট কিম্বা চা’'টা খুব একটা খারাপ নয় কিন্তু!!! খুলনায় দারুণ পূজা হয় জানো তো। তোমার গায়ে গা লাগিয়ে, তোমার চুলের গন্ধ ছুঁয়ে ছুঁয়ে, পুজোটা মনে মনে সেরে নেব দেবী। তুমি ছাড়া আর কে আছে বল- যাকে অর্ঘ্য দেবো?
ওরা দেবী বিসর্জন দেয় বলে, আমার সে পূজা ভালো লাগেনা। তোমাকে কি আমি বিসর্জন দিতে পারি? বিসর্জনের কথা শুনে আবার চোখের কোলে মেঘের ছায়া জমল কেন দেবী?

ঠিক আছে চলো, যশোর যাই। পুরোন যশোর শহরের কোন এক বাড়ী থেকে তোমাকে একটা গাঢ় নীল রঙ এর যশোর স্টিচ এর শাড়ি কিনে দেব। তাতে থাকবে অসংখ্য কারূকাজ আর তাতে থাকবে আমাদের ভালোবাসা খোদাই করা।
তুমি জানো, ভালোবাসা এবং বেদনা দুটোর রঙ ই নীল,।
যশোরে ভালো লাগছে না। যশোর এলে কেবল যশোর রোডের কথা মনে পড়ে যায়। আজ সমস্ত বেদনার গল্প তোলা থাক। আজ ভালোবাসার গল্পগুলো দখল করে নিক চরাচর।

চলো আমরা নড়াইলে চলে যাই। ওখানে গিয়ে সোজা তোমাকে নিয়ে যাব লাল ভাইয়ের বাসায়। ও লাল ভাইকে চিনতে পারছ না। হ্যাঁ গো আমি শিল্পি এস এম সুলতানের কথা বলছি। তাঁর তুলিতে তুমি কেমন শক্তিশালী চাষী বউ হয়ে ওঠ আমি সেটাই দেখতে চাই। শিল্পি সুলতান শিশুদের নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখেছেন। তিনি ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চাদের নিয়ে সমুদ্রে ভাসবেন বলে, এক বিশাল নৌকা বানানো শুরু করেছেন।
ছোট্ট দূরন্ত শিশুর কথা শুনে, গোলাপের সব রঙ তোমার মুখে জমল কেন বুঝতে পারছি না। চলো চিত্রায় তোমাকে নিয়ে একটা বেলা ভাসবো।

যাও ওভাবে তাচ্ছিল্য দেখিও না। আচ্ছা বেশ তবে চলো পিরোজপুর যাই। ওখানে বলেশ্বর নদীতে খোলা স্পিডবোটে যাব কুয়াকাটা। আহা দূর্দান্ত গতি নিয়ে খোলা জলে উড়ে যাবার মজা তুমি কখনই জানলে না।
না না, ভয় পেও না। কুয়াকাটায় তোমাকে আর বাঘ দেখাব না।
তোমার হাতের কাছে আমার আস্ত একটা বাঘ থাকতে কে আর জঙ্গল ঘেঁটে আর একটা বেঙ্গল টাইগার কে খুঁজতে যায় বলো। আর তুমি তো ভীত হরিণী। আমার বাঘ হবার কথা শুনেই তির তির করে কাঁপছ।
একটা বাঘ তার হরিণীর মনো হরণের গল্প শেষে আমরা মাঝ সমুদ্রে দুজন মিলে খুব ঘুমিয়ে নেব। তোমাকে ঘুম পারিয়ে রাখব আমার বুকের নরমে।

এবার চট্টগ্রাম যাব। দুদিন ঘুরেফিরে কাটিয়ে দেবো বন্দরে। দুজন হাত ধরাধরি করে দূরের জাহাজ দেখব। সন্ধ্যার ম্লান আলোতে হারিয়ে যাওয়া জাহাজের বিষন্ন বাঁশি শুনব। ওখানে তোমায় আমি আমার প্রিয় কবি পূর্ণেন্দু পত্রীর কথোপকথন থেকে কবিতা শোনাব।

তোমার বন্ধু কে? দীর্ঘশ্বাস?
আমারও তাই
আমার শূন্যতা গণনাহীন
তোমারও তাই?
আমার নদী ছিল, নৌকা নেই
তোমারও তাই?
মন খারাপ করো না দেবী, চলো কাল অন্য কোথাও যাই। ফয়েস লেকে ঢোকার মুখে তোমাকে অনেক মাটির খেলনা কিনে দেবো। কিনে দেব মাটির গয়না। পুরো লেকটায় যতটা পারা যায় তোমাকে নিয়ে একটা চক্কর খাবো। তোমাকে চট্টগ্রামের বেলা বিস্কুট খাওয়াবো। তুমি চায়ে ভিজিয়ে ভিজিয়ে কুট কুট করে সেই বিস্কুট খাবে, আর আমি ব্যাকুল নয়নে সেটা দেখবো।
সময় ফুরিয়ে আসছে দেবী। এ জন্মের মত ছাড়াছাড়ি হয়ে যেতে পারে।
কেঁদ না, দেবী। চলো। তোমায় সমুদ্রে স্নান করাব কাল। সমুদ্র স্নান সেরে তোমাকে নিয়ে ছুটব রাঙ্গামাটি। পাহাড়ি রাস্তায় বাঁকে বাঁকে বিপদ তবুও রোজ রোজ কত মানুষ যাচ্ছে।
রাঙ্গামাটিতে আদিবাসী বাঙ্গালি ভাই-বোনদের সাথে কাটাব ক’দিন। ওদের পাহাড় কেটে পাহাড়ের গায়ে গায়ে গড়ে তোলা যে কোন একটা বাড়ি বেছে নেবো।
তারপর খোলা জানালা দিয়ে মেঘেদের আমন্ত্রণ জানাবো। মেঘ তোমাকে ছুঁয়ে পালিয়ে যাবে, আর আমি সে দৃশ্য দেখব। ওখানে শহরে ঢোকার মুখে একটা মোটেল আছে সেখানে প্রচুর ঝাল ঝাল ঝোল দিয়ে কাঁকড়ার মাংস খাব। খাব চিংড়ির মজার মজার সব প্রিপারেশন। তার সাথে ভীষণ ঝাল আচার।
দেবী তোমাকে বিদায় দিতে ভালো লাগছে না। আর একটু থাকো না আমার সাথে!!! কাঁদছ কেন?
একদম কাঁদবে না। আমার সামনে, তুমি কাঁদলে-নিজেকে বড্ড অসহায় লাগে। অহংকার শব্দটা বরং তোমাকে মানায়। নিষ্ঠুরতাও খানিকটা মানিয়ে যায় কিন্তু বেদনা তোমার জন্য নয়!!

চলো, তোমাকে ভোলা নিয়ে যাই। তুমি কি কখনো চর তজুমিদ্দিনে গেছ? ওখানে তোমাকে মেঘনা দেখাবো।
মেঘনার পারে দাঁড়ালে তুমি বুঝবে, মানুষের ছোট্ট একটা জীবন কতটা শুণ্যতায় ভরা। ওখানে দিনমান ছলাৎ ছল ছলাৎ ছল ঘাটের কাছে গল্প বলে নদীর জল।
তোমাকে মেঘনার অপরূপ সৌন্দর্যের কাছে দাঁড় করিয়ে দিয়ে জেলেদের এক বিশাল ডিঙ্গি নৌকায় চেপে হারিয়ে যাব মাঝ গাঙ্গে। যেখানে পদ্মা আর মেঘনা মিলেছে। ওরা মিলে গেলেও ওদের সঙ্গমের বাঁকটা বড় বিপদ সংকুল। ঠিক ওখানে ঐ বাঁকে আমি হারিয়ে যাব।

আমি হারালে কি তুমি খুব কাঁদবে? সন্ধ্যা তারার মত?

পোস্টটি ২৪ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

লীনা দিলরুবা's picture


অনেক, অনেকদিন পর ব্লগে একটি অসাধারণ প্রেমের গল্প পড়ার অভিজ্ঞতা হলো।
কয়েকটি কথা, মানতেই হচ্ছে, মনে রাখার মতো। যেমন-

এ নদী কিন্তু নারীর মত, মানে তোমার মত। অযথাই ভাসায়।

ওমন জলের ভেতর তোমার ভয় করবে না? আমি যদি পুরুষ হয়ে উঠি?

কেন এত ছটফট করছ? সিংহকে ভয়? না? শুধু পুরুষে তোমার এত ভয়? তোমার কাছে সিংহ পুরুষ হতে পারলাম কই?

ওমা, বোকা মেয়ে এত অল্পতে কেউ কাঁদে? এই যে দেখ, দুহাত প্রসারিত করেছি, খুব কাছাকাছি এস, আমি তোমার নির্ভরতা হব।

আজ সমস্ত বেদনার গল্প তোলা থাক। আজ ভালোবাসার গল্পগুলো দখল করে নিক চরাচর।

মেঘনার পারে দাঁড়ালে তুমি বুঝবে, মানুষের ছোট্ট একটা জীবন কতটা শুণ্যতায় ভরা। ওখানে দিনমান ছলাৎ ছল ছলাৎ ছল ঘাটের কাছে গল্প বলে নদীর জল।

আমি হারালে কি তুমি খুব কাঁদবে? সন্ধ্যা তারার মত?

শাপলা's picture


ধন্যবাদ লীনা, এত সুইট একটা মন্তব্য করার জন্য।

লীনা দিলরুবা's picture


এ কিন্তু একদম ব্যতিক্রম আপনার ব্লগে Wink
বেশি বেশি করে লিখুন Smile

শাপলা's picture


লীনা আপনার লেখার কাছে আমার লেখা গুলো একদম নস্যি।
তবুও চেষ্টা করব লিখতে।
এবার মনে হচ্ছে লেখালেখির জন্য একটু সময় পাব।

লীনা দিলরুবা's picture


ভাগন্তিস

কী বলেন এগুলো!

নিয়মিত লিখতে খুশী হবো। শুভকামনা আপাতত।

শাপলা's picture


যা সত্যি, তাই বলেছি লীনা।

আপানাকেও শুভেচ্ছা।

জ্যোতি's picture


অনেকদিন পর আসলেন। অনেকদিন পর এমন মিষ্টি একটা লেখা পড়লাম। Smile

শাপলা's picture


ধন্যবাদ জ্যোতি

বিষণ্ণ বাউন্ডুলে's picture


এত্ত মিষ্টি একটা প্রেমের গল্পের জন্য আপনার জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা, আপু।

এত্ত ভাল লাগা ব্লগ অনেক দিন পর পড়লাম। প্রিয়তে জমা থাকুক।

ভাল থাকুন। অনেক ভাল। সবসময়।

১০

শাপলা's picture


তোমার এত সুইট মন্তব্যেও আমার মন ভরে গেল।

নেবে আমাকে পরেরবার এবি এর পিকনিকে?

১১

বিষণ্ণ বাউন্ডুলে's picture


আমি নিজেও যেতে পারি নাই পরীক্ষার কারনে! Sad

নেক্সট টাইম আর মিস হবে না, ইন শা আল্লাহ! Smile

১২

শাপলা's picture


আহা!!! কতদিন দেশের পিকনিক খাই না।

১৩

বিষণ্ণ বাউন্ডুলে's picture


দেশে আইসা পড়েন, আইসা প্রত্যাবর্তন পার্টি কাম পিকনিক আয়োজন করেন। Big smile

আমরা সবাই তো আছিই! Smile

১৪

শাপলা's picture


অধম মানুষের আবার প্রত্যাবর্তন হয় নাকি?
আমি ফিরলে লোকের বোঝা বাড়বে।

১৫

বিষণ্ণ বাউন্ডুলে's picture


মাথায় কিল দেওয়া ইমো টা একটু কষ্ট করে দেখে নিয়েন! Tongue

১৬

আরাফাত শান্ত's picture


একটানে পড়ে ফেললাম দুর্দান্ত লাগলো।
অনেক কাল ধরেই আপনি আমার ফেসবুকের বন্ধু এইটা ভাবতে প্রাউড ফিল করতেছি Tongue

১৭

শাপলা's picture


:Cool :Cool :Cool হোমরা চোমরা বন্ধুরা এই সব বললে লজ্জা লাগে না বলো।

১৮

শাপলা's picture


হায় হায় দিলাম সাই ফিল করার ইমোটিকন আর আসল কি?!!!!

১৯

জেবীন's picture


এবি'তে আজকে হইছে কি! এত্তোগুলা দারুন সব লেখা!
লেখা অনেক মায়াময় হইছে আপু!

কত্তো জায়গা ঘুরান্তি দিয়ে ফেললাম! লেখাটা পড়তে পড়তে মীর'এর অনেক আগে লেখা "বকপাখির ডানায় .।।। " পোষ্টটা মনে পড়ছিল!

২০

শাপলা's picture


জেবীন এটা মীরের লেখার নকল বলতে পারেন।
মীরের বক পাখির ডানায় লেখা গল্পটা আমার পড়া শ্রেষ্ঠ গল্পের একটা।

২১

জেবীন's picture


নকল বলছেন কেন আপু! থিমটা একই বলা যায়! মীরের গল্পটাতে মিষ্টি স্বপ্নটা দেখি, দুনিয়া চক্কর দিয়ে আসি, আবার বাস্তবেও ফিরে আসি, ঘোর লাগা আনন্দের অনুভূতির পাশাপাশি বেদনাও ছুয়েঁ যায় পাঠককে। কিন্তু আপনারটা ইচ্ছে করেই স্বপ্নটাকে অটুটই রেখেছেন আপনি!

আমার পড়া শ্রেষ্ঠ গল্পের একটি অইটা, কেন জানি লাগে মীর আর যতই লিখুক না কেন, অই গল্পটার মাধুর্য্যকে ছাপায়ে যেতে পারবেন না! Smile

২২

শাপলা's picture


ঠিক বলেছেন, জেবীন।

মীর তার ঐ লেখাটাকে ছাপিয়ে যেতে পারবে না।

২৩

বিষণ্ণ বাউন্ডুলে's picture


আমি পড়ি নাই!

লিংক দেন না কেও..

২৪

জেবীন's picture


আজিব বিষয় হইল এই যে, লিন্কটা খুজে পাচ্ছি না! মীর কি লেখাটা মুছে ফেলছে! মাইর পাওনা হবে কিন্তু ঐ লেখা সরালে! Stare

২৫

বিষণ্ণ বাউন্ডুলে's picture


আমিও পাইলাম না খুঁজে.. Sad

২৬

শাপলা's picture


ইস!!! কি বলছ এসব?

২৭

শাপলা's picture


কি বললে, মীর লেখাটা মুছে ফেলেছে???

যদি সত্যি তাই হয়, তবে আমি এ জীবনে যত কষ্ট পেয়েছি, এটি হবে তার মধ্যে অন্যতম।
এত ভালো একটা লেখা!!!

২৮

পারু রহমান's picture


শাপলা... তোমার লেখা পড়ে প্রেম করতে ইচ্ছে করছে Love হাহাহাহাহাহ
খুব ভাল লেগেছে লেখাটা Glasses

২৯

টুটুল's picture


আপ্নার মতিগতি বেশী সুবিধার ঠেক্তাছেনা কৈলাম Wink

৩০

শাপলা's picture


টুটুল ভাই কারে কইলেন, আমারে না পারুরে?

৩১

জেবীন's picture


পারু'পা, ফেসবুকে গলায় মালা দেয়া ছবি লাগায় আবার এইখানে এসে "প্রেম করতে চাই" সংলাপ দেয়!! Shock
ভইনের হইছে কি!!

৩২

টুটুল's picture


পারুপারে Wink

৩৩

শাপলা's picture


পারু রহমান শুধু প্রেম দেখলেন
আফ্রোদিতির অপ্রেমটা দেখলেন না। Sad Sad

তবুও শুভেচ্ছা

৩৪

শাপলা's picture


ইয়াল্লাহ পারু আপা মানে আমাদের পারু আপা....

আপা তাই তো তোমার মতি গতি তো কিছু বুঝতাছি না Big smile Tongue Big smile Tongue

৩৫

তানবীরা's picture


প্রিয়তে জমা থাকুক। অসাধারণ, উড়ছি Big smile

৩৬

শাপলা's picture


ধন্যবাদ তাতা।

৩৭

পারু রহমান's picture


আহারে পুলা পাইন, বুড়া হইসি বইলা কি শখ আল্লাদ বুড়া হইয়ে গেসে নাকি Tongue

তয় জাবীন আর টুলটুল রে কই----- ফেসবুকের মালা ছিল বাবু বসন্তের জন্য যাহাকে তোমরা চিনিতে পারো নাই অবুঝ বালক-বালিকা Wink .......

৩৮

শাপলা's picture


আপা তোমার কথার একটু তরজমা করে দাও গো!!!!

কিছুই বুঝতেছি না।

৩৯

শওকত মাসুম's picture


প্রেমের গল্প ছাড়াও বাংলাদেশের ট্রাভেল গাইড হিসাবেও লেখাটা চালাইতে পারবেন

৪০

শাপলা's picture


বস কই একটা রুমান্টিক কমেন্ট করবেন,মানে লেখা কেমন লাগল এই সব আর কি????
তা না....

যাউজ্ঞা তবুও শুভেচ্ছা

৪১

ধূসর's picture


অসাধারণ, কিভাবে প্রেম করতে হয় জানা নেই তবে এভাবেও যে প্রেম করা যায় তা এই লেখা না পড়লে বুঝতাম না। আপনার লেখার মাধ্যমে প্রত্যেকটি স্থানে যেন মুহূর্তে ছুটে যাচ্ছিলাম। যখনই যাত্রা শেষ হল মনে হচ্ছিল, ‌ এই পথ যদি না শেষ হয়, তবে কেমন হতো তুমি বলতো...?

৪২

শাপলা's picture


ধন্যবাদ অর্ণব!!!

শুভেচ্ছা আপনাকে ভালো থাকুন।

৪৩

বিষাক্ত মানুষ's picture


অঞ্জন দত্ত আর নিমা রহমানের একটা এ্যলবাম ছিলো 'গানে গানে ভালবাসা'

এই পোস্টটা পড়ে মনে হচ্ছে 'জেলায় জেলায় ভালবাসা'
অথবা
'দুরে দুরে
ঘুরে ঘুরে
ছোট্ট ছোট্ট
ভালবাসা'

Glasses

৪৪

শাপলা's picture


ধন্যবাদ বিমা।

জেলায় জেলায় ভালোবাসা শব্দটা পছন্দ হইল না Sad

তবে দূরে দূরে ঘুরে ঘুরে ছোট ছোট ভালোবাসা পছন্দ হয়েছে।

৪৫

নিভৃত স্বপ্নচারী's picture


চমৎকার লাগলো প্রেমের গল্প, সেই সাথে ঘুরে এলাম সারা বাংলা। Smile

৪৬

শাপলা's picture


হুম, ধন্যবাদ নিভৃতচারী।

আহা এটা বেদনারও গল্প সেটা কেউ বলে না।

৪৭

মীর's picture


কোনো বিশ্লেষন বা বিশেষণ প্রয়োগ আপাতত না করি। তার উপরে আবার উত্তরবঙ্গের উপর লেখা!!!! উফ্ জীবন-যৌবন সব ধ্বংস হয়ে গেলো। তবে আমার প্রচুর বক্তব্য আছে। সেগুলো নিয়ে আসতেছি রাতে। শুধু জানায় রাখি, এই গল্পটা আমার জীবনে পড়া সেরা ছোটগল্পগুলোর একটা।

৪৮

জ্যোতি's picture


আপনার পোষ্টটা কই?

৪৯

শাপলা's picture


মীর তোমারে এটা শেষ এবং ফাইনাল আলটিমেটাম। তোমার পোস্ট টা ফিরিয়ে না আনলে, এই পোস্টাও ট্র্যাশে যাবে।

৫০

অতিথি's picture


অসাধারন একটা গল্প। মন ভাল করে দেবার মত লেখাটার শেষ টা পড়ে কেন চোখ ভিজে গেল?

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.

বন্ধুর কথা

শাপলা's picture

নিজের সম্পর্কে

আমি ভালোবাসি, মা, মাটি, আমার আত্মজা এবং আমার বন্ধুদের যারা আমাকে প্রকৃতই বুঝতে পারেন।