দিনের প্যাচাল ২৪
শীতে মোটামুটি আনকমফর্টেবলি নাম্ব অবস্থা। যত ভারী ভারী জিনিসপত্র আছে বের করে ফেলসি, এখন সেগুলা একটার পর একটা গায়ে চাপায়ে ঘুরি, তাও রক্ত জমাট বেঁধে যেতে চায়। উত্তরবঙ্গে লোকজন মারা যাচ্ছে ঠান্ডায়...আজকে পত্রিকায় দেখলাম আমাদের আবহাওয়াবিদরা নাকি বলছিল যে এইবার খুব একটা ঠান্ডা পড়বেনা, এখন ঠান্ডা পড়তে দেখে তারা অবাক! তাদের অবাক হওয়া দেখে আমি পাল্টা অবাক, কবে ওনারা যা বলছেন তা ঠিকঠাক হইছে?
কিছু মন খারাপ করা ঘটনা ঘটতেছে ইদানিং, জের টানতে হবে হয়তো আরো কিছুদিন, তবে মনটা আসলে এতো বুড়া হইছে যে এখন ক্যামন একটা নির্লিপ্ততা নিয়ে সব দেখি। মনে হয় ঘটনাগুলো আমার জীবনের না, অন্য কারো জীবনের নানান টুকরা টাকরা চোখের সামনে দেখতেছি। সিনেমা দেখার মত অবস্থা। এইখানে ডিরেক্টর যদিও আমি নিজেই। প্রডিউসার ব্যাটা নানা গ্যান্জাম করতে চায়, শুধু ইটা না, লোহার রড, স্টান গান, ব্লো টর্চ ইত্যাদি ইত্যাদি নিয়ে সে নানানরকম অত্যাচারের পরিকল্পনা করে। আমি গভীর মনোযোগ দিয়ে আমার ক্র্যাপি ফিল্মটা বানায়ে যাই, মাঝে মাঝে মহান প্রডিউসারের রকমারি জিনিসপাতির অত্যাচার সহ্য করে।
কালকে বন্ধুর সাথে ভোর পর্যন্ত গল্প করলাম। এক পর্যায়ে ও আমাকে জিগ্গেস করলো 'দোস্ত, তুই তোর বাপমাকে মিস করিসনা?'। এরপর একটা বিশাল ব্যাখ্যা দিলাম যে ক্যানো মিস করা সত্ত্বেও জাতি এবং জনগনের স্বার্থেই আমি তাদের সাথে যোগাযোগ রাখতে চাইনা। তবে এরপর থেকে অন্য মন খারাপগুলার সাথে এইটাও যোগ হয়ে গ্যালো। বাবামা আসলে মাথার উপর বিরাট একটা গাছের মতন। অন্যদের সাথে যখন অন্যদের বাবামার মায়ামায়া কথাবার্তা দেখি ভালই লাগে। সমস্যাটা আমার, মাথার উপর গাছের ছায়া আমার পছন্দ না। আমি রোদ্দুর চাই। ঝড়বৃষ্টি, টর্নেডো, সুনামি সবকিছু চাই। আর আমার গাছটা শুধু ছায়া দিয়েই ক্ষ্যান্ত না, সে চায় আমিও শিকড়বাকড় গজায়ে একটা গাছ হয়ে যাই। সবারই হয়তো তাই, এই কারণে সবাই সেই গাছের ফাঁকফোকর দিয়ে রোদ্দুর পোহায় খানিক, আর শিকড়বাকড় ছোট ছোট করে ছেটে রাখে। আমি মনে হয় একটু এক্সট্রিমিস্ট আছি, রোদ্দুর তো রোদ্দুর, ছায়া তো ছায়া!
ভালো লাগতেছেনা। পালাতে হবে। অনেক দূরে। সবার থেকে।
এমনি হচ্ছে কিছুদিন যাবত!!
২৪তম প্যাচাল্টা পড়তে খুব ভাল্লাগছে, নাহ, মনে লাগছে বলা উচিত।
মন্তব্য করুন