দিনের প্যাচাল ৩০
কয়েকটা শট আর কিছু আধা ঘুমন্ত কথাবার্তার পর যেই কথাটা মাথায় নিয়ে ঘুমাতে গেলাম সেটা হলো, কেউ যদি অবলিগেইটেড হয়ে আমার জন্য কিছু করে, সেটা চরম তিতকুটে একটা বিষয় হয়। আর আমার তিতা জিনিষপত্র অপছন্দ।
এই বছর রেযোল্যুশন লিখবো বলে ঠিক করছি। টিনএজার যখন ছিলাম তখন বছরশেষে নিয়ম করে পরের বছরের জন্য রেযোল্যুশন বানাতাম। ধীরে ধীরে বড় হইলাম আর বুঝতে পারলাম যে এইগুলা চরম ফালতু ব্যাপারস্যাপার। বছর শেষে রেযোল্যুশন থাকে রেযোল্যুশনের জায়গায়, আর আমার জায়গায় আমি। কিন্তু যেহেতু আমি একটু বেশি নস্টালজিক আজকাল, সেহেতু রেযোল্যুশনের পোকা আবার মাথায় ঘোরাঘুরি করতেছে মহানন্দে। আর ক্যানো জানি মনে অনেক স্ট্রেংথ চলে আসছে, রেযোল্যুশনগুলা এইবার ঠিক ঠিক করে ফেলতে পারবো এইরকম একটা ভ্রান্ত ধারনায় ভুগতেছি। আমি অবশ্য অনেকদিন ধরেই অল্প অল্প করে অনেকখানি স্ট্রেংথ জমায়ে ফেলছিলাম সামনের কঠিন কিছু সময় পার করার জন্য, মনে হয় ঐখান থেকে কিছু স্ট্রেংথ পথ ভুল করে এই রেযোল্যুশন অংশে এসে গেছে।
যাকগা। রেযোল্যুশনগুলা লিখে রাখি।
১। হিংসা নামক জিনিষটাকে বিদায় দেয়া লাগবে। এইটার কাজ অবশ্য ইতিমধ্যে শুরু করে দিছি। যা বুঝতেছি পারবো শেষ পর্যন্ত।
২। রেগে যাওয়া যাবেনা। ইদানিং অনেক শর্ট টেম্পারড হয়ে গেছি, অল্পতেই চিল্লাপাল্লা শুরু করে দেই। এইটা থামাতে হবে। চিল্লাচিল্লি বন্ধ, চিল করা শুরু!
৩। আমি অনেক কুটনা। শুধু সবার মধ্যে খারাপ জিনিষ দেখে বেড়াই। এটা আসলে ঠিক করতে পারবো কিনা জানিনা, কারন আমার স্কেপ্টিক চরিত্রের একটা অংশ এই ব্যাপারটা। কিন্তু হয়তো মাত্রাটা কমায়ে নিয়ে আসা যাইতে পারে।
৪। কারো উপর ইমোশোনালি ডিপেন্ডেন্ট হবোনা। এইটা সমস্যা ছাড়া আর কিছু তৈরি করেনা। খুব বেশিদিন আর বাঁচতেছিনা, সো এই অল্প কিছুদিন ইমোশোনাল কোন ঝামেলায় না জড়ায়ে কাটায়ে দেয়াটা খুবি ভাল বুদ্ধি। সুযোগ পাওয়া মাত্রই একটা ইমোশোনাল রোলারকোস্টারে ঝাপায়ে পড়া বন্ধ।
৫। কেউ যাতে কোনদিন অবলিগেইটেড হয়ে আমার জন্য কিছু না করতে পারে সেই দিকে কড়া নজর রাখতে হবে। নিজে অবলিগেইটেড হয়ে কোনকিছু করতে পছন্দ করিনা, অন্যের উপর ক্যানো এইটা চাপাবো! কি আজব!
৬। একা কাজকর্মবিহীন বসে থাকলেই কেবল মন খারাপ হইতে থাকে। তার সাথে আরো কিছু অনুষঙ্গ যোগ হয়ে ডিপ্রেশনকে একেবারে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে আসে। আমার একটা যে যুদ্ধংদেহী ব্যাপার ছিল ডিপ্রেশনকে তাড়াবার, সেটা জানলা ভেঙ্গে পালায় চলে গেছে অন্য কারো কাছে। আমাকে কেউ বেশিদিন পছন্দ করেনা, সো নো ওয়ান্ডার! শুধু এই ডিপ্রেশন শালাটা বারবার এসে জ্বালায়। আচ্ছা রেযোল্যুশনটা হইলো, এইবার আরেকটা ফাইটিং স্পিরিটকে নিয়ে আসবো ধরে। প্রস্তুতি চলছে। ওকে ভুলায় ভালায় একবার আনতে পারলেই ডিপ্রেশনকে দুইজন মিলে ঝেটায়ে বিদায় করে দিবো বাসার থেকে।
৭। দুনিয়ার যে যাই করে নিজে ভালো থাকার জন্যই করে। সুতরাং কারো কোনো কাজে মন খারাপ করাটা বোকামি। আমি তো চাই সবাই ভাল থাকুক, তাইনা? অতএব, অন্য কারো কোন কাজে কোনোভাবেই মন খারাপ করা চলবেনা। শুধু নিজে উদ্ভট কিছু করে ফেললে সেটার জন্য অল্প একটু মন খারাপ করা জায়েজ।
আপাতত এই, আর কোনকিছু মনে পড়লে লিখে যাবোনি পরে।
মন্তব্য করুন