১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর, ২১ আগস্ট এবং.........
১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর এবং ২১ আগস্টের পিছনের অপশক্তিগুলি এক ও অভিন্ন। তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এক। তারা বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক কোটায় শ্রেনী বিভক্ত হলেও, চূড়ান্ত আদর্শিক জায়গায় তাদের মধ্যে তেমন কোন বিভেদ নেই।
৫মে হেফাজতের সরকারকে স্টেপ ডাউন ও ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে ব্যহত করার বিএনপি জোটের অপচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর, গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বর্তমান সরকারকে নামানো যে সম্ভব নয়, অপশক্তিগুলির কনসরটিয়ামের প্রধান বিএনপির মুল নীতিনির্ধারকরা ভাল ভাবেই বুঝে গেছেন।
বিএনপিকে ফরমালিন দিয়ে বাচিয়ে রাখার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাতেও বিএনপিকে যে জিইয়ে রাখা যাবে, তেমন কোন লক্ষণ স্পষ্ট নয়। বিএনপি কোন আদর্শিক দল নয়। একটি ঐতিহাসিক চক্রান্তেই দলটির জন্ম। বিরোধীদল হিসাবে আওয়ামীলীগের ন্যায় ২১ বছর ঠিকে থাকার রাজনৈতিক ও আদর্শিক শক্তি দলটির নেই। দলটির ভিতর এত বেশি আউলিয়া দরবেশের উপস্থিতি, সাংগঠনিক অবস্থা এতই বাজে,গনতান্ত্রিক আন্দোলন করার মত শক্তি নেই। দল হিসাবে ঠিকে থাকার জন্য চাই, আরেকটি ১৫ আগস্ট, আরেকটি ৩ নভেম্বর, আরেকটি ২১ আগস্ট।
নাজমুল হুদার ভাষায় বিএনপি কোন রাজনৈতিক দল নয়,এটি একটি প্ল্যাটফর্ম। কখন যে কে স্টিয়ারিং-এ থাকে, তা বলা মুশকিল। বর্তমানে স্টিয়ারিং-এ আছেন উগ্র রাজনীতির প্রতীক তারেক ও জঙ্গি রাজনীতির ম্যানুফ্যাকচারার জামাত-শিবির। মওদুদু, খোকারা শীত নিদ্রায়। ডঃ মইনেরা ইতিহাসের দায় কাঁধে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিএনপির ভিতরে যে গ্রুপটি দলটিকে গণতান্ত্রিক শক্তিতে পরিণত করেছিল, তা মা-ছেলের স্বেছাচারিতার জন্যই নিস্ক্রিয় হয়ে গেছে। তা রিভাইব করা সম্ভব নয়।
রাজিব গান্ধীকে হত্যার ষড়যন্ত্রটি হয়েছিল সিঙ্গাপুরের “মাদ্রাজ ক্যাফে” নামে একটি কফি শপে। পাকিস্তানে যতগুলি হত্যাকাণ্ড হয়েছে সেইগুলিরও পরিকল্পনা আগে সিঙ্গাপুর হলেও বর্তমানে দুবাই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
সৌদি আরবের নাম সেইভাবে না এলেও বর্বর সৌদি রাজ পরিবার ইরাকে হামলাসহ সাদ্দামেকে হত্যার জন্য ইসরাইলের সাথে হাত মিলিয়ে আমেরিকাকে আহবান জানিয়েছে। সিরিয়া ও ইরানকে সায়েস্তা করার জন্য আমেরিকার পদলেহন করছে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে জঙ্গি উৎপাদনে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে এবং এখনো করছে। বর্তমানে আইএসআইএস কে অর্থায়ন করছে সৌদি, পরিকল্পনায় মোসাদ আর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় আমেরিকা।
সৌদি প্রশাসনের কট্টর গ্রুপটি খালেদার এই দুরাবস্তায় নিজেদের ব্যর্থতার দায় থেকে মুক্তির চেষ্টা করবে, সেটাই স্বাভাবিক। নিন্দুকেরা যাই বলুক, এখন পর্যন্ত খালেদা জিয়া তথাকথিত ইসলামিক গোষ্ঠীর কাছে শেখ হাসিনার চেয়ে অনেক বেশি বিশ্বস্ত ও নির্ভরশীল।
ইরানকে মোকাবেলার ইস্যুতে আমেরিকা ও সৌদির ভিতর কিছুটা মনমালিন্য দেখা দিলেও ইরাকে আইএসআইএসের স্বার্থে আমেরিকা ও সৌদির সম্পর্ক বেশ ভাল হয়েছে। বিগত হাসিনা সরকারের সাথে আমেরিকার সে দ্বন্ধ তৈরি হয়েছিল, তার জের খুব গভীরে। এই দুই শক্তি কখনো বাংলাদেশে একটি উদার গণতান্ত্রিক সরকার চায়নি।
তারেক,পার্থ(ঘরের শত্রু!!)আর মাসুদের (কুখ্যাত রাজাকার দেইল্ল্যার পুত্র) মিটিংটি বাংলাদেশের উগ্র রাজনীতির জন্য যেমন আশাব্যঞ্জক, দেশের জন্য তেমনি শঙ্কার। এই মিটিংটি আইএসআই-এর পরিকল্পনায় সিঙ্গাপুরে হওয়ার কথা ছিল। গোপনীয়তার স্বার্থে এটির স্থান পরিবর্তন করা হয়। বেছে নেওয়া হয় সৌদিকে। উদ্দেশ্য, হ্বজ পালনের পাশাপাশি কুচক্রান্তটি চূড়ান্ত করা। কুচক্রান্ত বলছি এই জন্য যে, গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক সিদ্বান্ত সবাইকে জানিয়ে নিতে হয়। বিএনপিকে অতীতে এমন পলায়নপর হতে দেখা যায়নি।
কথিত যে আন্দোলনটি করতে যাচ্ছে তার নাম দেওয়া হয়েছে “মিশন অল আউট”।
তারেকের ভাষায় এটি “ডু অর ডাই” ম্যাচ। মুল উদ্দেশ্য এক, সরকারকে যে কোন পন্থায় স্টেপ ডাউন করানো। এতে দেশি বিদেশি সকল চক্রান্তকারির অপচেষ্টা থাকবে, এটাই স্বাভাবিক।
পুরো সরকারকে স্টেপ ডাউন না করানো গেলেও প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে সরিয়ে দেওয়ার একক পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের জোর চেষ্টা চালানো হবে। ঘটানো হতে পারে আরেকটি ১৫ আগস্ট, আরেকটি ৩ নভেম্বর, অথবা ২১ আগস্ট।
১] ২৬৯ বার পঠিত হওয়ার পরও কোন মন্তব্য আসেনি । আশ্চর্য ! এর অর্থ এইযে হয়তো আপনার মতো করে কেউ ভাবেনি ।
২] “১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর এবং ২১ আগস্টের পিছনের অপশক্তিগুলি এক ও অভিন্ন। তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এক। তারা বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক কোটায় শ্রেনী বিভক্ত হলেও, চূড়ান্ত আদর্শিক জায়গায় তাদের মধ্যে তেমন কোন বিভেদ নেই” ।
১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু নিহত হয়েছিলেন স্বপরিবারে । ২১ আগস্ট শেখ হাছিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড নিক্ষিপ্ত হয়েছিল । এ’দুই ঘটনা একই অপশক্তির কাজ হতে পারে । কিন্তু ৩ নভেম্বর ? সেদিনের নায়কতো ছিলেন খালেদ মোশাররফ । সেনা বাহিনীর চেইন অব কমান্ড ফিরিয়ে আনার জন্য তিনি ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলেন বলে বলা হয়ে থাকে ! তিনি কি করে অপশক্তির অংশ হলেন ? ব্যখ্যা করুন প্লিজ !
৩] “এখন পর্যন্ত খালেদা জিয়া তথাকথিত ইসলামিক গোষ্ঠীর কাছে শেখ হাসিনার চেয়ে অনেক বেশি বিশ্বস্ত ও নির্ভরশীল” । তথাকথিত ইশলামিক গোষ্ঠীর কথা বলেছেন । ভালো । বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কথা কি চিন্তা-চেতানায় থাকতে নেই ? আমারতো মনে হয় এই দুই কুঠনী বুড়ির উপর এই মূহুর্তে গণমানুষের তিল পরিমান আস্থা ও নির্ভরশীলতা নাই । এক ডাইনী সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক উপায়ে প্রতিবেশী অপশক্তির বস্তা বস্তা টাকা আর প্রভাবে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে জাতির উপর চেপে বসেছে । অপর ডাইনী ফন্দি/ফিকির/চক্রান্ত করছে কিভাবে তাকে হঠিয়ে নিজে চড়ে বসবে ।
৪] "এই দুই শক্তি কখনো বাংলাদেশে একটি উদার গণতান্ত্রিক সরকার চায়নি” ।
বিদেশি শক্তির কথা বাদ দিয়ে দেশি শক্তির কথা ভাবুন প্লিজ ! কোন দল উদার গণতান্ত্রিক সরকার দিয়েছে দেশকে ? আ লীগ মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী দল আর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জাতির জনক । স্বাধীনতার পর এইদল এবং নেতাইতো বাংলাদেশকে প্রথম সৈরাচার উপহার দেয় ৪র্থ সংশোধনীর মাধ্যমে । জিয়াকে বি এন পি স্বাধীনতার ঘোষক বলতে অধিক স্বাছন্দ্য বোধ করে । ইনি বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনলেও তার সময়ে গণতন্ত্রের চর্চা এবং বিকাশ কোনটাই ব্যাপকভাবে হতে পারেনি । বিশ্ববেহায়ার কথা শিকেয় রাখলেও দুই গণতান্ত্রিক সৈরাচারের শরমগা ঢাকি কোন তেনা দিয়ে ! ইহারা গণতন্ত্রের কথা বলে জনগণকে গত ২৪ বছর কোন গুতন্ত্র গেলাচ্ছে ভেবে দেখতে অনুরোধ করছি ।
মন্তব্য করুন