ইউজার লগইন
কবিতা
শ্যাম-রাধা বিচ্ছেদঃ ০৬-রাধাবৃক্ষ
গাছের পাতা উড়ে হাওয়ায়
উড়ে আঁচল তোমার,
বুকের মাঝে কষ্টগাছ
শিকড় বাকড় শুধু আমার।
তুমি হইলা ফুল আর ফল
আমি দিলাম ছায়া আর জল।
অনিমেষ কয়-হাওয়ায় উড়ে
যাইবা কোথায় রাধা;
কৃষ্ণ হইলো একলা নাও
সে দুঃখনোঙ্গরে বাঁধা।
তুমি হইলা পুজার যোগ্য
ফুল-ফল সব তোমার ভোগ্য,
তুমি প্রেমের ধারা,
রাধা বিনে বহে কেমন
দিন রাত সব আছে যেমন
প্রেমের ঝর্নাধারা।
অধরা
অধরা
হৃদয়ে রেখেছো হাত-
বুকের পাঁজর তলে হৃদয়রতন টকটকে লালতরমুজ-
অবোধ ষোড়শী হেসে খেলে ফালি ফালি কাটে,
আঁধার সমান বিরহপাথর-প্রেমের উত্তাপে গলে।
সময় বঙ্কিম সিঁথি খুঁজে তবু অধরার মুখ
পাতাল পাহাড় সাগর অরণ্যে ছুটে নিয়ন বাতির সাথে
ক্ষয়িষ্ণু কাহিল বুক।
৫টি কবিতা
এপিটাফ
অনুভূতিহীন এই নগরে
আমি পতনের শব্দ শুনতে শুনতে ক্লান্ত
তাই দৃশ্যের দর্শক না হয়ে,
রোদের মধ্যে মিশে গেছি
হয়ে গেছি রাতের চিত্রকল্প।
দ্যাখো তো আমাকে দেখতে পারো কি না
সিগারেট
অন্ধকারের করতালিতে তোর মুখের ছায়া কখন লাফিয়ে উঠে
সেই ভয়ে আমি সিগারেট পাশে রাখি,
সিগারেটে আগুন ধরিয়ে তোর ঘাতক ছায়াকে ভয় দেখাই
যতোবার তোর মুখের ছায়া উদয় হয় আমি একটা সিগারেট জ্বালাই!
সিগারেট শেষ হয়। সিগারেটের প্যাকেট হৃদয়ের মতো হয়ে যায়
সিগারেট পুড়ে, কলিজা পুড়ে, তোর মুখের ছায়া তবু পোড়ে না।
গোপন
তোমার গোপন দাগ
রোজ দেখে স্নানের জল।
তাহলে গোপন রইলো কিভাবে?
চে’ গুয়েভারা
আমাকে পথ দেখাতে হবে না
কোন পথে যেতে হবে আমি জানি,
আমার পথ দেখিয়ে দিয়ে গেছেন চে’ গুয়েভারা।
প্রস্থান
ঢাক পিটিয়ে, শঙ্খ বাজিয়ে নয়
রোদের ব্যানারে ঘোষণা দিয়ে নয়,
খুব নিভৃতে ঝরা পাতার মতো
ঝরে পড়বে ক্ষুদ্র একটি পাতা,
যে পাতা অনেক কষ্ট করে ঝড়ের মোকাবেলা করতো,
বিশ্বাস আর স্বপ্ন ছাড়া তার আর কোন অস্ত্র ছিলো না।
জঙ্গলে স্থিত
বলো কারে জিজ্ঞেস করি
ব্যস্ততা,ঘাসের সস্তা উথ্থানের কারণ
বাকল আকলে মোড়ানো বিবিধ ধাতুর জিহ্বা
লকলকে লাউডগা চারকোণ আবরণ।
অন্ন' এই শব্দ সাঁকোমুখী মুখ
দেহ,হাত,নখ,সুখ বিপরীত সুখ
সকল সাবালক স্মৃতিযূথ দেহের আহার।
উচ্চতা টলমলে পা', পাদুকাভাস নদীস্রোত খরতা
নদী কি আলাপমাখা সমতার তীর ছুঁড়েছিল?
চিলচোখ কৌতুহল,কৌতুককোণ সম্পর্ক উচাটন
পঁচা মাংসের 'পর জমানো বিয়োগ বারতা।
পার হওয়া চিহ্নস্মৃতি আদানের উপ্
খুলে খুলে লোহা,কাঠ,আলকাতরা
এরপর যাবে না বোঝা নৌকা,নদীজল
ভেসে ছিল,তুমি ছিলে অতীতের পেটে পীঠে আস্ত মমতা।
স্বীকার ও শিকার দ্বৈত দীনহীন দীক্ষার তসবিহ্
নয়ে নয় পার হয়ে সংখ্যাতত্ত্ব ধাবমান
তুমি হবে না পার বোলেই তিনতারের জঙ্গলে স্থিত অপার।
তার আর উপায় ছিল না
আজ পিছনে তাকালে কেন কুয়াশা নামে চোখে
আজ আমার সানগ্লাসের কাঁচ ঝাপসা হয়ে আসে।
কোথায় সেই চির দামিনী, চঞ্চলা, চপলা
বিপুলা উৎসাহী, উদ্যমী, কর্ম-প্রাণ ভোমরা
কোথায় সেই অত্যাচারিনী, অবিচারিনী, আমার ত্রাতা?
তার মলিন চেহারায় যেন রাজ্যের যত ক্লান্তি ছাপা!
পিছনে তাকিয়ে কেন বুকে কাঁপন এত
অথচ আজো সে আবেগে ব্যথিত
মুখে যদিও থাকেনা উত্তর চোখেতে জল সদা উত্থিত
হাওয়া দিলেই ভাসে বাড়িঘর বাঁধভাঙা বানে।
তার বানী কেন আজ এত বাজে কানে!
যে এককালে ঘুমাত গভীর স্বপনে দিবায়
আজ নির্ঘুম নিঃঝুম রজনী কাটায়।
দুগ্ধবতী গাভী তিলে তিলে সব দিয়ে
শেষে এই বললি 'চলে যা পালিয়ে'!
এছাড়া তার আর কিবা উপায় ছিল।
এক দেশে সংখ্যালঘু সারা পৃথিবীতেও তাই
তবু নিজ ভুমে অবমাননা সহ্য করা দায়।
এনাদ্দার অতীন্দ্রীয় প্রতুত্তরাধুনিক কাইব্য
ভুমিকাঃ- শিলাজিতভাইয়ে কৈয়া গেসিলেং,
শুনো ঠিক শুরুরয়াগে ভুমিকাটা জমিয়ে বলি
যদিউ অনেক বলার্তবুও অনেক্কমিয়ে বলি............ ইত্যাদি ইত্যাদি লৈয়েই আমগোর আইজকার ইত্যাদি.........
তো যেইটা কইতেছিলাম, প্রাচীন যুগে এক্ষান ইয়ে লিক্সিলাম। ইয়ে মাইনে আসলে সেইযে, লুগজনে যেইটারে কবিতা কয় সেডিই লিক্সিলাম আর কি। মাইনশে এই কবিতা সেই কবিতা লেখে। আমি লিক্সিলাম উত্তরাদুনিকেরো পরের্ভার্সনের কাইব্য। নিজের পের্শংসা নিজেরে কর্তে না কৈরা গেসেন মুরুব্বারা। মাগার বাট লেকিন নিজের ঢুল আবার্ফের নিজেরেই বাজাইতে কইয়া গেসেন মুরুব্বারাই। তাই কি আর করা, আমার্সেই কাইব্য মাশাল্লা খুবেক্টা খ্রাপয়নাই। সেই দুর্দুর থিকা লুগজনে ফুন্দিয়া, চিডি দিয়া পের্সংসা কর্ছিলো। তাই যারে বলে ইন্সপিয়ার্ড হৈয়া আবারো কাইব্য জগতের্খাতাত নিজের নাম লিখাইতে চইলা আইলাম এনাদার অতীন্দ্রীয় প্রতুত্তরাধুনিক কাইব্য লৈয়া। শুইনা কৈয়েঙ্গো, কেরাম হৈলো
এনাদার অতীন্দ্রীয় প্রতুত্তরাধুনিক কাইব্য
ওওই দেখা যায় যাত্রাবাড়ী ওওই যে ফেলাই ওভার
টেরাক ভৈরা গরু আইয়া বাড়াইয়া দিসে পেশার।
পেশার মামা পেশার মামা থাকো তুমি কৈ?
ছয় ছয় তিন
..............................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................
মাঝে মাঝে আমার ভীষন ইচ্ছে করে
সমগ্র অনুভুতিগূলোকে মাটি চাপা দেই।
চলতি পথে মোড়ের অবহেলিত
ল্যাম্পোস্টের নিচে
কিংবা ঝুল বারান্দার কার্ণিশে
পায়ে ভেঙ্গে উঠা সিঁড়ির গাঁয়ে
লেপ্টে থাকা অনুভূতিগুলো
আমায় দেখে মুচকি হাসে
অনুভুতিগুলো তোমার টু –পয়েন্ট পিস্তলের
গুলির গল্পের মতো
দাগ দিয়ে যায় হৃদয়ের অভ্যন্তরে।
অনুভুতিগুলো অতন্দ্র প্রহরির মতো
দাঁড়িয়ে থাকে মধুমিতা কিংবা
জসিম উদ্দিন রোডের মাথায়
কিংবা ব্যস্ত শহরের সর্বত্র ।
ফিনফিনে অনুভূতিরা নিঃশব্দে হেটে বেড়ায়
বসুন্ধরা কিংবা কর্ণফুলি গার্ডেন সিটির ফুড কোর্টে।
শহরের অলিতে গলিতে কিংবা
অবেলা নবান্ন
সোনালি আলোর ক্লান্ত মিছিল
ধবল বক কিছু গাঙচিল
কুয়াশারা দলবেঁধে পর্দা আঁকে
যৌবনা ধানক্ষেত হেমন্ত বাঁকে।
স্বপ্ন রং
আমার স্বপ্নের রং গুলো এখন অস্বাভাবিক লাল,
এইতো কিছুদিন আগেও যেগুলো ছিল আকাশের মত নীল।
স্বপ্নগুলোকে এখন আর স্বপ্ন বলা যায় না..
রং বদলিয়ে তারা হয়ে গেছে দুঃস্বপ্ন..
দুঃস্বপ্নগুলো এখন রূপ ধরেছে ভয়াবহ।
পৃথিবীর বুকে আমার চিহ্ন মুছে দিতে তারা এখন সক্রিয়,
হয়তো সত্যি তারা সফল হবে আমার অস্তিত্ব মিশিয়ে দিতে।
তবু বাঁচার বড় ইচ্ছা হয়,
ইচ্ছা করে সাদা স্বপ্ন দেখতে,
কিন্তু না, তা হয় না,
আমার স্বপ্নগুলো আজ হারিয়ে গেছে আজ গভীর সাগরে।
সাগর থেকে স্বপ্নগুলো নিংড়ে আনার চেষ্টা করেছি,
কিন্তু সবই ব্যার্থ্..
যত সময় যায় হারিয়ে যায় অতল গভীরে……
২৭-০২-২০০৪ রাত ৯:৩৫
ভাতার দাড়িয়ে আছে জ্যোস্নার মুখোমুখি
জাত গেল
ভাত গেল
ভাতার দাড়িয়ে আছে জ্যোস্নার মুখোমুখি।
খুনোখুনি গেল
গেলমান হুরের পীঠে টপ্পার তাল ধরে
ধারাবাহিকতার যুগ
তোমার জামার ত'লে নেচে যাচ্ছে সুপ্ত হুজুগ।
মান গেল
মাপের নিক্তি খোঁজে দুই পা
উন্মোচণের পালা শেষ হলে হাকিকত জানালো আ'পা।
জগত গেল
গত হওয়ার পর পরকীয়া প্যাকেটে করে এলো কাছিমের ডিম
ভিম পাউডারে এলোমেলো দগদগে ক্ষত
বিসর্জন না-কি বিষর্জণ বলো ডুব দিয়ে এলে ভিজে জামা
নামের বানানে থাকেনা নানা মাত্রার ব্রত আছে যত সংযত।
বৃদ্ধ শামুক
মোনালিসার চোখের তারায় দুঃখ বোনে জাল…
কষ্টে আছি, কষ্টে আছি, কষ্টে কাটে কাল…
রাতের কষ্ট দিন বোঝে না..
কুলের কষ্ট ঢেউ বোঝে না…
মাছের কষ্ট গাছ বোঝে না…
আমার কষ্ট তুমি..
কষ্টে আছি… কষ্টে আছি..
এই ভেবে দিন কাটে..
কষ্টগুলো বৃদ্ধ শামুক..
বুকের তলায় হাটে..
( আমার লেখা প্রথম কবিতা অথবা মনের কথা,কিন্তু এটা তো আর লাইন বাড়ানো যাবে না,কিন্তু পোষ্ট হয় না বলে বর্ননা লিখতে হলো )
অগাষ্ট ১৯৯৮
নিষিদ্ধ অন্ধকার
প্রতারক শহরে আমরা সবাই বোকা
বেহালা বাদক ফিরে যাচ্ছে,
জ্বলে ওঠো বিশ্বাসের বারুদ
জ্বলে ওঠো নক্ষত্রপুত্র।
ফেরাও তাকে এই দুর্দিনে
ফেরাও তাকে ভালোবাসায়।
পূর্ণিমার প্রছন্ন বিষাদে
অন্তরালে যে নিষিদ্ধ অন্ধকার ঝড় তুলছে
পুড়িয়ে ছাই করে দিচ্ছে সোনালি বাগান
ভেঙে চুরমার করে দিচ্ছে স্বপ্নের প্রতিমা
চোখের জলে ভাসিয়ে দিচ্ছে গোপন ঠিকানা!
রক্ষা করো তাকে, রক্ষা করো হে তরুণ,
সময় তোমাদের, সময় সত্যের।
দোহাই তোমাদের, ফেরাও তাকে, ঘরে ফেরাও
তোমরাও ফিরো পুর্ণ হাতে
বেহালার নিষ্পাপ সুরে, ভালোবাসায়, বিশ্বাসে...
রতি রাতের বিষণ্ণ বিদীর্ণ বর্ষণ
গভীরতায় পড়েনি মিছেমিছি হাত
শুধু জেগে থাকা রাত
বদ্ধ করুণ চার দেয়াল ভিতে
শাওয়ার জলের স্রোতস্বী প্রপাত।
ক্লান্তিতে মিশে হৃদি সত্ত্বা কাঁপন
আহ্ কী যে অবদমিত আস্ফালন
বোঝে না, বোঝে না সে কিছুই
রতি রাতের বিষণ্ণ বিদীর্ণ বর্ষণ।।
[পঞ্চাশ শব্দ তো হচ্ছে না, তাহলে কিভাবে কবিতাটা ছাপি। সমস্যা বই কি? পঞ্চাশ শব্দের নীচেও তো শিল্প সৃষ্টি হচ্ছে।]
দয়াল তোমায় প্রনাম
আকাশপানে খুঁজে বেড়াই
কোথায় তোমার বাস-
দয়াল তুমি দয়ার সাগর
মিটাও মনের আশ ।
গয়া-কাশি-মক্কা শহর
রেশমপথে রেশম নগর
দুনিয়া তার পাগলা নাগর
খেল খেলে যাও পাগলা ডাগর।
তুমি বুদ্ধ-তুমি যীশু
তুমি মালিক-পথের শিশু
উড়াইয়া নাও মেঘপাখি
সকাল বিকাল তোমায় আঁকি-
অনিমেষ কয়-সবি ফাঁকি
হৃদমাঝারে আঁকি-বুকি
দমে দমে দমের খেলা
সময় যে নাই-গেলো বেলা।
আগুন নিভাও-আগুন জ্বালাও
কষ্টেরে দুধ কলা খাওয়াও
তুমি আল্লাহ তুমি খোদা
তুমি কৃষ্ণ-তুমি রাধা।
তোমাতে আমি থাকি
আমাতে থাকো তুমি-
আকাশ ছুঁয়ে ভুমি থাকে
দয়াল তোমায় প্রণমি।
বড় হও
খুব ছেলেবেলায় আমি প্রতিধ্বনিকে ভয় পেতাম।
সিড়ি ভাঙ্গার কালে আড়াল হওয়া মায়ের ভরসায়
যখন 'মা' বলে চিৎকার দিয়ে উঠতাম
প্রতিধ্বনি শুনে আমি ভয় পেতাম।
এখন আমি বড় হয়ে গেছি
তুমি যে আজো প্রতিধ্বনি মত খড় কাদার
পুতুল দেখলেই ভয় পাও,
অস্ত্র হাতে আসো ভেঙে দিতে।
তার যত হাতই থাকুক,
হাতে যতই অস্ত্র থাকুক
খড়টুকু সে নাড়াতে পারে না।
প্রতিবাদটুকু সে করতে পারে না।
অথচ যতবার তুমি একটা করে মূর্তি ভাঙ
ততবার তোমার একটা করে ভাবমূর্তি ভাঙে।
ক্ষেতের মাঝে কাকতাড়ুয়া দেখে
পিচ্চি বেলায় ভয়ে বোনকে জড়িয়ে ধরতাম।
দিদি বলত এটা যে তোকে ভয় দেখানোর জন্য না
পাখিকে ভয় দেখানোর তরে রাখা।
এখন আমি বড় হয়ে গেছি আমি বুঝি
মানুষ নেই অথচ মানুষের রেপ্লিকা তাড়িয়ে দিচ্ছে কাক!
ছেলে বেলায় মণ্ডপে যখন যেতাম
দেখতাম মায়ের মতই সুন্দর করে সাঁজ
কোন এক বধু মাথায় সুন্দর তাজ
কত স্নেহ তার চোখে ঝরছে।