ইউজার লগইন
কবিতা
নষ্ট স্মৃতি
তোমায় রোমন্থন করি
তব ভাষায় নষ্ট
স্মৃতির মাঝে,
যা মম তরে অমৃত
সম।।
তব সকল স্মৃতিকে রোমন্থন করি
মম পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের পরিসীমার সকল
অনুভূতির দিয়ে।।
দোতলার বারান্দা থেকে
বাউন্ডারি ওয়াল বরাবর
লেবু, পেয়ার, পেপে গাছে
থোকা থোকা ফল গুলো
তব শরীর নামক
অবয়ব খানির নির্দিষ্ট
কিছু অংগের স্মৃতি
মানস পটে
জাগরূক করে তোলে।
আমি পলকে রূমাঞ্চিত
হই।
তোমাকে পড়ে মনে
সেটা কি নষ্ট স্মৃতি।।
তবু আমি আমার ভাবনার সাগর
কেন,
পুকুরেও যেতে চাই না।
জানি আমি আমার নিজকে
ধরে রাখতে পারব না।
আমি/ আমরা যে প্রকৃতি দাস
তাকে এড়িয়ে যায়
এ সাধ্য কার??
তাকিয়ে দেখ
বাউন্ডারি ওয়ালের
ওপারে বাঁশের ঝাড়।
দুটি চুড়ুই পাখি
মনে হয় সদ্য বিবাহিত
নইলে এত!
এত,আমোদে মাতবে কেন?
চারদিকে হাজারও পাখির কোলাহল
তাতে ওদের কোনই ভ্রুক্ষেপ নেই।
থাকবেই বা কেন?
ফিরে তাকাও অদুর অতীতে
আমার কথা বাদ দাও,
তব মনে কি জাগবে না স্মৃতি।
তাকে কি তুমি নষ্ট বলবে।
বললে বল, আমি বলব না।
আমি বলব সুখ, মহা সুখ স্মৃতি।
খন্ডখানি জমি পরে
ধরিছে মাছ, কিশোর যুবা,
দেখিছে বৃদ্ধ বৃদ্ধা।
শেষ বিদায়
আর না -আসিব আমি তোমারই মাঝে।
ব্যার্থ হয়োনা যেন, তুমি আমাকে খুঁজে।।
আমি চলে গেলে আসিবে নতুন জন।
তারে তুমি করে নিও একান্ত আপন।।
বিদায়ের স্মৃতি বড় বেদনা দায়ক।
আমি চেয়েছিনু তব স্বপ্নের নায়ক।।
বহু আশা নিয়ে এসেছিনু তব দ্বারে।
শত ব্যাথা বুকে নিয়ে আসিলাম ফিরে।।
তোমাকে মনে থাকবে মোর আমরণ।
যতকাল বেঁচে থাকি করিব স্মরণ।।
বিদায় বেলায়, আমি তাই বলে যায়।
অন্যায় যদি করে থাকি তোমার কাছে,
সব টুকু ফেলে দিও মন থেকে মুছে।
এ জীবনে যত দুঃখ যাবে সব ঘুচে।।
সময়ে সময়ে সময় ভেঙ্গে যেতে থাকে
ধবল গন্ধরাজ আমাকে যেদিন মোহিত করেছিল
শিপ্রার নীল স্কুল ড্রেসে তার ছাপ এঁকে দিচ্ছিল
আমি সুবাস নিতে চেয়েছিলাম তখন
সে না গন্ধরাজ না শিপ্রা – বুঝিনি
বহু বছর পর তার ত্রিমূর্তিতেও আমি মোহিত -
তার জলবৎ কথামালার 'পর ভাসমান পোকারা ছুটে
দিক-বিদিক দ্রুত
পদ্ম পাতার মুক্তোও হঠাৎ উঠে নড়ে
মূহুর্তের বিস্ফোরণে সময় পাখা মেলে
সময় থেকে পৌঁছি আমি অন্য আরেক সময়
বোধ থেকে পৌঁছি আমি অন্য আরেক বোধ
রক্তাভ দালিম দানাগুলো এক এক করে
উন্মুক্ত গ্রাসে যেই ছুট দিলো
অগত্যা আমার ডানা মেলে উড়তেই হলো
নিকষ আলোর পাপ
ফিনিক্স জন্মের বোধোদয় নয়
শরীরের মাঝে যদি জেগে যায় অশরীরী কিছু
তবে তো তারস্বরে চীৎকারও ক্ষয়ে যায়
আহ্ শব্দহীন এক আস্ফালন কেন যে ভেতর ভেতর জেগে উঠে
কান্নার সঘন তারস্বর ভেসে আসে না
আমার হৃদয়ের ডান বাম সম্মুখ পশ্চাৎ সব দেখেছি
বড় হতে চাইনা
বড় আমি হতে চাইনা,
হতে চাই ছোট।
আবার যদি হতাম ছোট,
তাহলে কেমন হত ?
ফিরে পেতাম আবার সব !
হারিয়েছে যত-
দুঃখ হাসি কান্না আর পাগলামি।
ছোট ছেলে-মেয়েদের সাথে খেলা,
আর শয়তানি।
যে ভাবে খেলতাম কানামাছি,
আর পলাপলি,
দোকানদারী করতাম যত,
নিয়ে ধুলা বালি।
কাদার পুতুল দিয়ে বানাইতাম,
বউ আর - বর
সবাই মিলে হৈ চৈ করে বলতাম,
ধর ওরে ধর ;
পাল্কী থেকে পড়েনা যেন নিচে।
আসলে সব কিচু ছিল তো মিছে।
মিছে হলেও ছিলাম যত সুখে।
বড় হয়ে মরি এখন দুখে।
বয়ঃসন্ধির প্রেম
তুমি তখন বয়ঃসন্ধিকালে
বাঁধনহারা মুক্ত পাখির মত
নীল আকাশে মেলে রঙিন ডানা
উড়ে বেড়াও নিজের খেয়ালে,
চোখ দু’টো যে শান্ত নদীর জল
ঘাস ফড়িঙের স্বপ্ন ডানায়
কাটছিলো দিন রৌদ্র ছায়ায়
পায়ে তোমার বাজতো রূপোর মল।
আমি কেবল পেরিয়েছি কৈশোর
ভাবনাবিহীন অলস অবসরে
তোমায় দেখে থমকে দাঁড়াই
দু’চোখ ভরা স্বপ্নমোহের ঘোর,
মনের মাঝে স্বপ্ন হাজার বুনি
রাত্রি দিনের হিসাব নাহি রাখি
দুরন্ত মন বাঁধ মানেনা
তোমায় দেখার প্রহর শুধু গুণি।
প্রায়ই আমার স্কুল হত ফাঁকি
লেখার খাতায় কেবল আঁকিবুঁকি
উথাল পাথাল মনের অস্থিরতায়
পড়ালেখা শিকেয় উঠতে বাকি,
ভরদুপুরে নিরবধি কত অধীর ক্ষণ
স্কুলগেটে তোমার অপেক্ষাতে
বিবর্ণ সব উদাস প্রহরগুলো
বুকের ভিতর তুলতো আলোড়ন।
ভুল বয়সের ভ্রান্ত কালের স্রোতে
রঙিন স্বপ্নে বিভোর হয়ে
কোন খেয়ালে জড়িয়ে ছিলাম
অবাধ্য এক মাতাল প্রেমের ফাঁদে,
নজরবন্দী রাজকন্যা উড়তে তোমার মানা
স্বপ্ন ভাঙার কষ্ট বুকে নিয়ে
অনেক পরে বুঝেছিলাম- তুমি ছিলে
ভুলতে পারিনা
কখনো ভুলতে পারিনা, আমি তাহাকে।
গভীর রাতে কত কাঁদি, খোদার কাছে ;
হে খোদা মহান ! আমাকে দাও সে শক্তি,
তাকে ভুলে থেকে, আমি পাই যেন তৃপ্তি।
না পেলাম তাকে, তবু নেই কোন ক্ষতি।
আমি তো শুধু ভুলতে চাই, তার স্মৃতি !
তার'ই করুণ সুর এ হৃদয় মাঝে,
ছন্দ-তালে, আর ও করুণ হয়ে বাজে।
কি করে মুছবো আমি হৃদয়ের ব্যাথা।
সারাক্ষণ ভর করে শুধু অস্থিরতা।
জানিনা কোনদিন পারব কি ভুলতে,
নাকি আজীবন থাকব শুধু জ্বলতে !
মনের মুকুরে ভেসে ওঠে তার ছবি,
তাকেই ভেবে আজ আমি হয়েছি কবি।
শেষ অনুরোধ
এ আমার শেষ অনুরোধ তোমার প্রতি।
আর কাউকে করবেনা এমন,
যেমন করেছ আমার ক্ষতি।
মন ভাঙলে কাঁচের মত,
বুঝলেনা সে কাঁচের মুল্য কত।
আমার ভুলেই তাই,
আমি আজ কেঁদে যায়।
ছিল এই পরিণতি।
নিঠুর হাতে মেরো না, আর কার অনুভূতি!
এ আমার শেষ অনুরোধ তোমার প্রতি।
অনেক কিছুই চেয়েছিলাম দিতে,
বিনিময়ে চাইনি কিছুই নিতে।
ব্যাথায় আজ আমার আঁখি ছল্ ছল্ !
হয়ত দিয়ে গেলাম, এক টুকরো কলঙ্ক,
আর দু ফোঁটা চোখের জল।
হে নিষ্টুর, নির্দয় রূপবতী !
আর কাউকে দিও না কষ্ট,
কনো জীবন করনা নষ্ট,
এ আমার শেষ অনুরোধ তোমার প্রতি।
কবিতা
হায়! বড়ই দুর্ভাগ্য আমার জীবন।
সারাক্ষণ হাত ছানি দিতেছে মরণ।।
এ জীবনে স্বাধ করে চাইলাম যারে।
অনেক চেষ্টা করে পাইলাম না তারে।।
অন্তরে ভরে আছে, শত ব্যাথা বেদনা।
মনকে বুঝালাম তুমি আর কেঁদো না।।
জীবনে সব "চাওয়া "পাওয়া যায়না।
সবাই' সব কিছু চাইতে ও হয়না।।
তবু, মন তো আমার মানতে চায়না।
ছোট বাচ্ছার মত ধরে শুধু বায়না।।
জীবনের প্রতি আর নেই কনো মায়া।
যেখানে থাকি অন্তরে পড়ে তার ছায়া।।
নিজেকে করে চলেছি, শুধু অবহেলা।
জীবন আমার হয়ে গেলো মিছে খেলা।।
স্ক্রিবলস...
২৫০৯১৩
সাদাকালো আকাশের অশ্রু মেখে বিষণ্ণ হয় কাশদল...
২৭০৯১৩
বৃষ্টি থেমে এলে স্থবির নগর
কাদা মাখা পথে বিহ্বল ইঁদুরের পাল...
২৮০৯১৩
ফুলার রোডে সন্ধ্যা নামে...
রঙীন অন্ধকার...
চোখের কোনের অশ্রু আর এলোমেলো কথামালা
বার বার হারিয়ে যেতে থাকে রিকশার ঘন্টায়...
তুই...
ভালো থাকিস রঙীন অন্ধকার রাতে
ঘুমন্ত বালিশের আদরে...
০৪১০১৩
শহর ভরা মেঘের গুঁড়ো,
আকাশ ভরা মেঘ
দুপুর জুড়ে সাঁঝের মায়া,
অবাক দিনের শেষ..
০৯১০১৩
ভুলে যাবার চেষ্টা আসলে তোমারই স্মৃতিচারণ..
১২১০১৩
অনিবার্য সকাল হেঁটে আসে,
মৃদুপায়ে;
আধা জোছনার নাগরিক পথ ধরে...
১৯১০১৩
রাত কিভাবে কালো হয়?
২০১০১৩
পাঁচিল ভাবলেই তোমার চোখ।
মেলে ধরা হাতের পাতায় লালচে আলো।
এসফল্ট, কালো ধোঁয়া আর ধুলো ওড়া বাতাসের পটভুমিতে দৃঢ় সংবদ্ধ চিবুক।
পাঁচিল ভাবলেই পায়ে দলে যাওয়া রোদ।
ড্রেনে পড়ে থাকা শুকনো পাতা।
ওভারব্রীজের জলাকীর্ণ সিঁড়িতে খানিকটা চাঁদ।
পাঁচিল ভাবলেই আমার অস্থিরতা এবং ভুল।
২৩১০১৩
দেয়ালে দেয়ালে ছায়া দিয়ে আঁকা গল্পগুলো সব পাখি হয়ে যায় কৃষ্ণপক্ষের রাতে...
২৪১০১৩
আগে কি সোন্দর দিন কাটাইতাম!
প্রকৃতির পাঠশালায় পড়ে থাকি…
সবুজ প্রান্তর ছাপিয়ে বিস্তৃতি তার কতই অবাধ
সবুজ পাতাকে পড়ি, ঘাসফুল তুলে নিই হাতে,
দু'পায়ে মেখে নিই দূর্বাদলে লেগে থাকা ভোরের শিশির,
শৈশবের 'সবুজ-সাথী' দুলে উঠে স্মৃতির ঝালরে।
খুঁজে-খুঁটে দেখি বৃক্ষ-লতা-পাতা,
বয়সী বটের মতো আমিও সুস্থিত হই, শেকড় ছড়াই।
বৃক্ষের বাকলে খুঁজি প্রপিতামহীর মুখের ভাঁজ
নীড়ে ফেরা পাখিদের ঝুমঝুমি কোলাহলে ভারী হয়ে আসে
গোধুলির গোলাপী আকাশ।
অতঃপর সন্ধ্যা হলে ঝিঁ ঝিঁ ঢাকে
মন্ত্রের মতো প্রাচীন সংগীত এক, মস্তিস্কের কোষে কোষে
ধ্যানী হয়; থেকে থেকে সন্ধ্যের সুরেলা আযান ভেসে আসে
রাত্রিতে পুঁথি পাঠ গানের আসর
রহমান বয়াতির ধরণে আমাকে জানান দেয়
"আগে কি সোন্দর দিন কাটাইতাম!"
বিধি বাম!
তোমার সবুজ প্রান্তরে বিষাক্ত সীসার মতো
কে যেন ছড়ায় সন্ত্রাস, ভাঙ্গে নীড়,
ঘর-মন-গেরস্থালি তছনছ, পোড়ামাটি, বিধ্বস্ত মন্দির
কে যেন নিমেষে গুঁড়িয়ে দেয় স্বপ্নসাধ, আমাদের সম্প্রীতি অবাধ।
প্রতিমার ভাঙা হাত, দেহের বিচ্ছিন্ন অংশ চারিদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে…
এ কোন 'রক্তাক্ত প্রান্তর' দেখি আজ?
হে প্রিয় মাতৃভূমি, জননী আমার!
বুক পকেট
-------- বুক পকেট
আমার একটা আকাশ আছে ৷
যখন সবাই ঘুমিয়ে পরে তারাগুলো জেগে উঠে ৷
ছোট্ট করে ভাজ করে,আকাশটাকে বুক
পকেটে ডুবিয়ে রাখি আলতো করে ৷
পকেটে তো স্বপ্নগুলো দিনের বেলায় করে খেলা ৷
স্বপ্নগুলোর জোসনা দিয়ে আকাশটাকে রাঙিয়ে তুলি ৷
সবাই যখন ঘুমিয়ে পরে মাঝরাতে নিজ নিরে ,
জোসনাগুলো মেখে নিতাম শরীরটাও ডুবিয়ে নিতাম ৷
কেউ জানেনা বুক পকেটে আরো কিছু কষ্ট ছিলো ৷
কষ্টগুলো নিজ মনে জলত সে যে ক্ষণে ক্ষনে ৷
ছোট্ট একটা নদীও ছিল বুকপকেটের মাঝখানটে ৷
কষ্টগুলো জ্বলত যখন নদীর পানি আপন ধারায় ছুটতে তখন আবেগ হারায়
৷
সাথে কিছু দুঃখ ছিল চুপটি করে বুক পকেটে থাকত সেতো নীরব
মনে ৷
নদীর পানি শুকিয়ে গেলেই দুঃখ তাকে ভরিয়ে তোলে ৷
লোনা পানির আপন ধারায় ছুটত নদী নিজ গতিতে ৷
আকাশটা আজ অনেক বর ৷ পুব আকাশে মেঘ জমেছে ৷ তারাগুলোও
হারিয়ে গেলো ৷ আকাশের
পানে তাকিয়ে দেখি জোসনাগুলোও নেই সেখানে ৷ আবার
কবে ভরবে আকাশ ?
জোসনাগুলো করবে খেলা ৷
আমি তখন সুখের ধারায় গুনবো আকাশে কয়টি তারা ৷
তোমায় খুঁজি
তোমায় খুঁজি
শীতের সকালে সবুজ ঘাসের উপর জমে
থাকা শিশির বিন্দুর মাঝে
তোমায় খুঁজি
কলসি কাঙ্ক্ষে হেলে দুলে চলা
নদীর ঘাটে জল আনতে যাওয়া
পল্লী নব বধূর মাঝে
তোমায় খুঁজি
পৌষ, অগ্রহায়নে নবান্নের নানা কাজে ব্যস্ত
লাজ রাঙ্গা গাঁয়ের বধূর মাঝে
মাড়ানো ধান কুলায় উড়ানো
ঘুর্ণী বাতাসে উড়ন্ত
চোচা ধান ও খড়ের মাঝে।
তোমায় খুঁজি,
রবি, নজরুল, শরতের লেখা
গান, কবিতা, গল্প উপন্যাসের মাঝে।
তোমায় খুঁজি
মাঠের পর মাঠ হলুদাভ
সরিষা ফুলের মাঝে।
তোমায় খুঁজি
হালুয়া, রাখাল, গারোয়ানের
মন প্রাণ উজার করে গাওয়া
গানের কথা ও সুরের মাঝে।
তোমাকে খুঁজি
লাউ সিম
হাজারো সবুজ সবজি বাগান
হাজারো ফুল বাগানের,ফুলের মাঝে।
তোমাকে খুঁজি
অতি ভোরে
নতুন ধানে নিরবিচ্ছিন্ন চিড়া কুটা
পল্লী বালার মাঝে।
তোমাকে খুঁজি
পৌষ পাবনে রাত জেগে
হরেক রকম পিঠা বানানো
রমণী কুলের মাঝে।
তোমায় খুঁজি
বাড়ির পাশে বয়ে যাওয়া নদীতে
নেয়ে আসা মেয়ের ভেজা কাপড়ে
অর্ধ-দৌড়ে ঘরে ফেরার মাঝে
তোমায় খুঁজি
সকালে রবির মিষ্টি রোদ,রোদেলা দুপুর।
বা ডুবন্ত সূর্যের আবেগময় অবয়বের মাঝে।
তোমায় খুঁজি
বিষণ্ণ হাহাকার
অসীম শূণ্যতায় নীরব অন্ধকারের দিকে তাকায়
ওখানে তো কোন আলো নেই!
কুয়াশা আঁধারে ঢেকে থাকে সতেজতা।
দেয়ালে প্রতিধ্বনিত হয়ে ফিরে ফিরে আসে
বিষণ্ণ হাহাকার।
পেজো তুলোর মত মেঘের আড়ালে
ভেসে বেড়ায় নীলাভ চাঁদ,
মাঝরাতে জ্যোৎস্না বৃষ্টিতে স্নাত হওয়া হয়না আর,
কবিতা লেখার চেষ্টাগুলো বিফলে যায়,
জট পাকানো শব্দমালা হারিয়ে যায়
নিঃসীম সময়ের গহ্বরে।
অশুদ্ধ সময় পরিহাস করে
অক্ষমতাকেই বার বার মনে করিয়ে দেয়,
নষ্ট সময়ে পিষ্ট হয়ে
গিনিপিগের মত বেঁচে থাকা
বাড়িয়ে দেয় আগুন হৃদয়ের উত্তাপ।
চাতকীর চোখে নতুন দিনের স্বপ্ন
সূতোকাটা ঘুড়ির মতই হাওয়ায় ভেসে বেড়ায়
অপ্রাকৃত সুন্দরের সন্ধানে হাত বাড়ায়,
মনে মনে ভাবে-
একদিন চলে যাব বহুদূরে, নিরুদ্দেশের পথে।
ছুটে চলা জীবনের এক ফাঁকে
ক্লান্ত পথিক এসে দাঁড়ায়
পথের শেষে; অবশেষে বুঝে নেয়-
এরা ভুল করেই সবকিছু চায়
ভুলে যায় এরা ভুল সময়ের মানুষ!
অপরাজেয়
অপরাজেয়,
আকাশ পাতাল ভেবেও তোমার কোনো নাম ঠিক করতে পারি নি আজও।
সবচেয়ে সুন্দর, একটা মিঠে নাম দেব তোমাকে, কথা দিলাম।
কিন্তু যে নামেই তোমায় ডাকি না কেন,
আবলুশের দেরাজে আগলে রাখা আমার সব চিঠিতে
তোমার জন্য রইবে এই সম্বোধন- অপরাজেয়!
তুমি এসে আমার একরত্তি উঠোন জুড়ে ঘুরে বেড়াবে, শুনবে না কোনো বারণ,
শিশির ধোয়া ঘাসে পা ডুবিয়ে হেঁটে যাবে একাদশীর চাঁদ দেখতে,
তখনও একই নামে তোমায় ডেকে বলব- ‘আমায় সাথে নেবে না?’
আজকাল বড় ভয় হয়,
সোঁদা মাটির ঘ্রাণের সাথে বারুদের আভাসটুকু পাবে বলে,
তুমি আসার আগেই হয়ত টুটে ফুটে যাবে অমল ধবল পালখানি।
তবু আঁকশি দিয়ে স্বপ্নগুলো হাতের মুঠোয় এনে রাখি, খসে পড়ার আগেই।
অপরাজেয়,
তোমার জন্য বিপ্লবের কুঁড়ি সামলে রেখেছি,
তুমি এলেই পাপড়ি মেলে আগুন রঙের সেই ফুল হেসে হবে কুটিকুটি।
যে যুদ্ধে পারি নি যেতে, যে যুদ্ধে গেছি হেরে, রয়ে গেছে যে যুদ্ধ অসমাপ্ত,
চোখ বুজে বলে দিতে পারি তুমি এলেই হবে শেষ তার,
কান পেতে শুনব জয়ঢাক, তোপধ্বনি বিজয়ের!
তাই এই রংচটা, ফিকে দিনগুলোতে প্রহর গুণে যাই, তোমার অঙ্কুর বয়ে চলি,
তুমি আসবে বলে বারুদের গন্ধ থাকি ভুলে।
বাতাসে ককটেলের গন্ধ
কুড়ি পেড়িয়েছি সেই যুগল বৎসর হল,
শতাব্দীর সঙ্গীত বোদ্ধারা তখন একত্র আমার মাটিতে ।
হয়তো আমি খুঁজে ফিরছি অন্য কোন পথ,
তবু সে পথ আমার বেঁকে এসে পরে এই উঠোনে ।
বিনিদ্র রজনী আর সুরের মূর্ছনা,
হেঁটে চলছি আমি এক অন্য পথের পথিক ।
বিদ্রোহী মন চায় একলা ছুটে যাই
উৎসবের অন্তরালে,দূষিত ফুসফুসের স্পর্শে,
পারিনা,আমি পারিনা,
শত চেষ্টায়ও আমি ব্যর্থ,হয়তো সুপ্ত ইচ্ছায় !
খ্রিস্টাব্দে সময়টা তখন স্থিমিত সূর্য,
আমি ব্যস্ত অপরিচিত আঙ্গিনার মুগ্ধতায়,
হঠাৎ শুনি শ্রবণরুদ্ধ এক ধ্বনি ।
না,এ কোন ধ্বনি না,এ তো অশ্রাব্য অপসংস্কৃতি
যেখানে সঙ্গীত অপমানিত,বাকরুদ্ধ সংস্কৃতি,
এরই মাঝে ভেসে আসে,নাস্তিকতা রোগাক্রান্ত ।
তবে কি বন্ধু তুমি দেখোনা ?
তোমার ধর্মবাদীরা আজ ককটেল আক্রান্ত ।
আর তথাকথিত নাস্তিকরাই সেখানে অসহিংস ।
আমি তো এক নির্জন পথের বিদীর্ন পথিক
ফুসফুসটা বিশুদ্ধ না হলেও তো চলছে,
নিঃশ্বাসের সাথে তবে আজ এই কিসের গন্ধ পাই ?
এ কি সপ্তম আসমান পেড়োতে পারেনি ?
তুমি এখনও নিশ্চুপ,এ কি করে সম্ভব ?
আমার শুদ্ধ মাটির সুগন্ধ যে ক্রমেই দুর্গন্ধময় হচ্ছে,
বাতাসের অক্সিজেন ভারি হয়ে আসছে