ইউজার লগইন
ভালোবাসা
অভিমানী দম্পতির চিঠি চালাচালি
স্ত্রীকে স্বামী
আমার পেটে-বুকে খুব জ্বালাপোড়া করছে। এটা নতুন কোনো ঘটনা নয়। অনেক বছর ধরে এই যন্ত্রণা সহ্য করে যাচ্ছি। ওষুধ খেতে খেতে আমার চুল উঠে গেছে।
চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকতে ইচ্ছা করছে। তবু তোমার ইচ্ছা পূরণের অদম্য ইচ্ছায় কাগজটা, কলমটা নিয়ে বসলাম। আমিতো তোমাকে কিছুই দিতে পারি না। অন্তত এই চাওয়াটা পূরণ করি না খানিকটা।
হাফ-ওয়াল,লাল-নীল ফুল ও একজন আইন্সটাইনের উপলব্ধি
অপেক্ষার এই সময়গুলোতে ক্যাফের সাম্নের হাফ-ওয়াল টাকে বড্ড আপন মনে হয় আমার । বাচ্চাকালে দেখা এক্টা বিজ্ঞাপনের কথা মনে পড়ে গেলো । পশ্চিমের শীতবস্ত্রের মোড়কে আচ্ছাদিত এক বঙ্গ ললনা নাচন-কুদন করে আমাদের জানাতেন যে , গ্রীষ্ম-বর্ষা-শীতে ত্বকের যত্ন নিতে, তিব্বত পমেট-ই তার একমাত্র সঙ্গী । কিন্তু সৌভাগ্যবশত (কিম্বা দুর্ভাগ্যবশত),সেই ললনার মেকাপ বিহীন মুখমন্ডল দেখবার পর হতে, তিব্বত পমেট এর সঙ্গ লাভের যৌক্তিকতা খুজে পাইনি আজও । কিন্তু যৌক্তিকতা বোধহয় স্থান,কাল,পাত্রের উপর নির্ভরশীল । বুয়েট এর স্থাপন কালে কোন যুক্তিতে, এরকম আপাত-দৃষ্টিতে আধা সম্পূর্ণ একটি দেয়াল বানানো হয়েছিল তা প্রায়ই আমার 'কিছু না করার সময়' গুলোতে চিন্তার খোরাক যোগান দেয় । কোনো দূরদর্শী প্রেমিক প্রকৌশলী হয়ত তখন বুঝে থাকবেন যে, আজ হতে কয়েক যুগ পরে এই হাফ-ওয়ালটাই এ যুগের প্রেম-প্রকৌশল এর ছাত্রদের কাছে তিব্বত পমেটের মত গ্রীষ্ম-বর্ষা-শীত
ছবিতে ছবিতে পিকনিকের গপ্পো
আমাদের সবার আকাঙ্খিত , প্রতিক্ষীত পিকনিক হয়ে গেল গতকাল ২৪শে ডিসেম্বর।
মেসবাহ ভাইয়ের অক্লান্ত পরিশ্রম আমাদের পিকনিকের প্রেরনার উৎস।
ভাড়া করা হয়েছিল বি আর টি সি'র নতুন চাইনিজ বাস । এবার জয়িতা চাকার উপর না বসাতে বাসের টায়ার নষ্ট হয়নাই, আমরাও কোথাও নেমে চা খাইতে পারি নাই। মেসবাহ ভাই কে চায়ের কথা বললেই বলেন - নো-টি
লাস্ট স্টপেজ - রাজধানী স্কুল থেকে যাত্রা করে বাস । বাসে উঠেই দেয়া হয় নাস্তা
শুভ জন্মদিন দোস্ত!
এবি'তে এসেছে ২মাস হলো, এক মাঝে অবশ্য নিজের পরিচিতিটা বানিয়ে ফেলেছে ও।
আমার সাথে পরিচয় প্রায় ৪ বছর আগে। পরিচয় হবার পরদিনই ও আমাকে জিজ্ঞেস করলো, "নাজ তোমার কি মন খারাপ?" হ্যাঁ, ঐদিন আমার প্রচন্ড মন খারাপ ছিলো। কিন্তু, ও বুঝলো কি করে? জানিনা একেই হয়তো বন্ধুত্ব বলে!
আমার খারাপ সময়গুলোতে এত এত মানুষের ভীড়ে যাকে আমি সবার সামনে পেয়েছি, যাকে মন খুলে সব কথা বলেছি, যার কাছ থেকে অনেক অনেক অনেক ভাল কিছু সময় পেয়েছি, আজ ওর জন্মদিন ছিলো।
লিজা!
Sorry রে! সব কিছু নিয়ে এখন নিজের মাঝে এতই ব্যস্ত থাকি যে, সারাদিনে তোর একটা খবরও নিতে পারিনি আজ।
মাফ করে দিস দোস্ত
অনেক অনেক ভালো থাকিস!
‘আমরা বন্ধু’ যেসব ক্ষেত্রে বন্ধুসুলভ নয়...
ডিসক্লেইমার: ‘আমরা বন্ধু’ অনেকক্ষেত্রেই বন্ধুসুলভ। কিন্তু নিন্দামন্দ না করলে নাকি পেটের ভাত হজম হয় না! গত দুদিনে দুটো বিয়ের দাওয়াত খেয়ে এসেছি, পেট এখনো ভুটভুট করছে। গত কদিন কারো নিন্দামন্দ করি নি বলেই হয়তো রোস্ট, কাচ্চি বিরানী বা টিকিয়া কাবাবগুলো এখনো হজম হচ্ছে না। সামনের শুক্রবারে আবার এবির পিকনিক। ইচ্ছা আছে অন্তত দুটো খাসি আর চার-পাঁচেক মুরগি সাবাড় করা, সাথে এক লিটার কোক আর যা যা থাকে, সেগুলোর একটু একটু করে চেখে দেখা। নিন্দামন্দ না করলে যদি ওগুলো হজম না হয়, তাইলে পিকনিকটা তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করতে পারবো না। তাই এই লেখা। পরিষ্কার কথা- এর মধ্যে কোনো ভংচং নেই।
এবি'র পিকনিক : সর্বশেষ সংবাদ
ইতোমধ্যে এবির পিকনিকের সব কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মাসুম ভাইয়ের যোগাড় করা স্পটেই যাচ্ছি আমরা। এজন্য তারে এবিবাসী সবাই থ্যাংকু জানাই। গাড়ী, বাবুর্চি, মেন্যু, পিঠাওয়ালা সবার সাথে সিডিউল ফাইনাল হয়েছে। তাইলে ওই কথাই রইলো। ২৪ ডিসেম্বর সকালবেলায় আমাদের যাত্রা শুরু হচ্ছে। আশা করছি, নির্ধারিত দিনে নির্ধারিত সময়ে সবাই চলে আসবেন। এ পর্যন্ত যারা যারা চাঁদা নিশ্চিত করেছেন, তাদের মধ্যে আছেন :
শওকত মাসুম, লীনা দিলরুবা, টুটুল, নাজ, হাসান রায়হান, নাজনীন খলিল- ২ জন, আসিফ, জয়িতা, জেবীন, বিমা, মাথামোটা, বাফড়া, বৃত্তবন্দী, ফারজানা, বোহেমিয়ান, মামুন ম. আজিজ, ঈশান মাহমুদ- ২ জন, ডটু রাসেল, লিপি, নাজমুল হুদা, শাহাদাত উদরাজী, ভাস্কর, আনিকা, সাঈদ, সোহেল কাজী, নাহীদ, ফিরোজ কবীর, মৌসুম, তাজীন, গৌতম- ২ জন, মুক্ত বয়ান, বিলাই শাওন, ছায়ার আলো- ২ জন, আলী আরাফাত শান্ত, মিতু ভাবী- ৫ জন এবং মেসবাহ য়াযাদ। সব মিলিয়ে: ৪৪ জন।
জীবন সাথী।
১।
ঘটনা অনেক আগের, আপনাদের এই ঢাকা শহরের। বিবাহ করে জীবন সাথীকে নিয়ে সুখে দিনাতিপাত করছিল। টাকা পয়সার ব্যাপক প্রযোজনীয়তা তখনো নেই। জীবন একটা সাধারন চাকুরী করে, যা পায় তা দিয়ে কোন রকমে চলে যাচ্ছিলো। দুইজনই যেহেতু নিম্ম মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে এসে ঘর বেধেছিল তাই চাওয়া পাওয়াও কম ছিল। তবে মাসের শেষে বাজার খরচে একটা হালকা টান পড়ে যেত, শেষ দুই চারদিন জীবনের পকেটে টাকা থাকত না। সোজাকথা জীবন ও সাথীর জীবনবোধ তখনো চাঙ্গা হয় নাই। এমনি একদিনে দু’জনে রাতের খাবার খেতে বসে, মাদুর পেতে - ভাত, লাল মরিচভর্তা আর পানিডাল।
বিদ্রোহ করিবার চাহে এ মন।
গতকালের চরম দুঃখবোধ ও ভীষণতা কেটে উঠেছে সারাদেশ। আজ সকালের নুতন সুর্য্য ইংগিত দিচ্ছে আগামীকালের, আগামীকাল আমাদের মহান বিজয় দিবস। আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের বিজয়। এই ধরনের খুশিমাখা দিন এলে আপনাদের সবার মত আমিও আবেগে ভরে যাই। তবে আমার ভিতরে একটা শুন্যতা কাজ করে - মুক্তিযুদ্বে যে পরিবারের সদস্য হারিয়ে গেছে, তার কথা মনে পড়ে সর্বাগ্রে। মনে পড়ে সেই সব পরিবারের কথা। পিতা, সন্তান, ভাই, বোন, স্বামী হারিয়ে এ পরিবার গুলো কি করে এতটা বছর পার করে এলো। ক্ষনে ক্ষনে আমার মনে পড়ে, ওরা আসবে মনে করে যারা আজো বসে আছে! বাবা, আর কত দেরী। আর কত সময় লাগবে তোর!
৫ হাজার টাকার কমতো নয়ই....!!!
খুব বেশি দিন আগের কথা না। অনেকগুলো ব্রিজ তখনো হয়নি। ঢাকায় আসতে চাইলে লোকজনের পুরা দিন চলে যেত। সকালে রওয়ানা করলে মধ্যরাতে এসে ঢাকায় নামতো। বিশেষ করে ঈদ বা অন্য কোনো ছুটিতে মানুষের ভোগান্তির শেষ ছিলনা। ফেরি পারাপার ছিল। ফেরির জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে থাকতে হত। আহ, কত কষ্ট ছিল মানুষের !
বিশেষ করে যমুনার ওপারের লোকজনের অবস্থা ছিল বেশি খারাপ। ধরুন আপনার বাড়ি সিরাজগঞ্জ। বিশেষ প্রয়োজনে ঢাকায় আসতে হবে আপনাকে। সকালের বাসে রওয়ানা হলেন। নগরবাড়ি ঘাটে পোঁছে গাড়ীর লাইনে পড়লেন। ৫/৭ ঘন্টা পরে ফেরিতে উঠলেন। ফেরি চললো ২/৩ ঘন্টা। আরিচায় আসলেন। তারপর ঢাকায় আসতে আরো ২/৩ ঘন্টা। মানে বাড়ি থেকে বেরুনোর পর আপনার কমপক্ষে ১০/১২ ঘন্টা লাগলো। একইভাবে বৃহত্তর রংপুর, বগুড়া, দিনাজপুর, রাজশাহীর লোকজনের অবস্থা ছিল।
উইকিলিক্স প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান আসাঞ্জকে সালাম জানাই।
উইকিলিক্স প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান আসাঞ্জ। গত কদিন ধরে তার খবরা খররের উপর নজর রাখছিলাম। নানা ধরনের নিউজ পড়ছিলাম। জুলিয়ান আসাঞ্জ’র নানা টাইপের ছবি দেখছিলাম। সারা দুনিয়া থেকে নানা মানুষ তার কাছে টাকা পাঠাছিল বলে তার অনেক ব্যাংক একাউন্টও বন্দ করা হয়েছে। গতকাল ইন্টারপোল অবশেষে সমঝোতার ভিত্তিতে (!) তাকে আদালতে নিল। ইংল্যান্ডের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা ২০ হাজার পাউন্ডের বদলে তার জামিন চেয়েছিল। আদালত তাকে জামিন না দিয়ে ৭ দিনের রিমান্ড দিল। সুইডেনে তার বিরুদ্দে দুই নারী অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ নামা পড়ে আমার হাসি পেয়েছিল। জুলিয়ান আসাঞ্জ শুধু চেষ্টা করেছিলেন মাত্র! জুলিয়ান আসাঞ্জ’র বিরুদ্দে আসলে এটা ফালতু অভিযোগ বলে মনে হয় কিন্তু ওরা এটাই সত্য বলেই প্রমান করে ফেলবে হয়ত। এই সাহসী বীরের জন্য আমার হ্রদয়ে একটা মায়া জমে গেছে।
হাড় কালা অন্তর কালা
নানা কারণে একটা খুব খারাপ সময়ের ভেতর দিয়ে যেতে হচ্ছে। কোনকিছুতেই বিশেষ আনন্দযোগ খুঁজে পাচ্ছি না। যে বিষয়টা বোঝার চেষ্টা করছি সেটা হচ্ছে, কেন সবসময় আমার চারপাশেই মেজাজ খারাপ করার বিভিন্ন উপাদান ছড়িয়ে থাকবে? আমি একটু নড়তে চড়তে চাইলেই কেন সেগুলো আমার শরীরে ভাঙা কাঁচের টুকরার মতো ফুটবে? এটা কি জন্মদাগের মতো কোন কিছু? যেটা থাকবেই এবং কোনো ব্যাখ্যা ছাড়া যেটাকে মেনে নিতে হবেই।
শীত এলো বন্ধু, শীত এলো।
(এক বন্ধুবরকে উৎসর্গিত)
১।
শীত এলো বন্ধু, শীত এলো
গতকাল শুক্রবারে মসজিদে নামাজে একটাও ফ্যান চলেনি
বুঝা গেলো বন্ধু, শীত এলো।
শীত এলো বন্ধু, শীত এলো
অফিসে অনেক টাইস্যুট, সুয়েটার চাদর পরা দেখছি
বুঝা গেলো বন্ধু, শীত এলো।
শীত এলো বন্ধু, শীত এলো
ব্লগে ব্লগে পিকনিকের আমেজে খুশির বন্যা চলছে
বুঝা গেলো বন্ধু, শীত এলো।
২।
শীত এলো বন্ধু, শীত এলো
সকালে ঘাসের পাতায় শিশির বিন্দু দেখার দিন এলো
শীত এলো বন্ধু, শীত এলো।
শীত এলো বন্ধু, শীত এলো
গ্রামীণমেলায় মিঠাই নিয়ে নগরদোলায় দোলার দিন এলো
শীত এলো বন্ধু, শীত এলো।
শীত এলো বন্ধু, শীত এলো
স্বামী স্ত্রীদের একই কম্বলে ঘুমানোর দিন এলো
শীত এলো, শীত এলো।
এলো বুঝি পৌষ মাঘের পালা, হালা, এইবার পিকনিকের ঠ্যালা সামলা !!!
হেডিং দেখে কেউ মাইন্ডাইয়েন্না ,
পিকনিক নিয়া ২ ছত্র লেখার চেষ্টা করছিলাম আর কি !!!
দেখতে দেখতে আরেক টা শীতকাল চলে এল। গত শীতে এবি থেইকা পিকনিকে গিয়া যে মজমা , যে ফূর্তি করছে সেটা মনে উঠলেই এখন পিকনিক করতে মঞ্চায় শুধু।
সক্কাল সক্কাল বের হইলাম, বাসে চড়লাম, কিছুদূর গিয়া টায়ার ফাটলো ( টায়ারের উপর জয়িতা বইছিল বলেই নাকি টায়ার ফাটছিল, লোকমুখে শুনি)। মেসবাহ ভাই আমাদের নিয়া গেল সেইইই গাজীপুরের ভিতরে কোন এক বনে। এর থেইকা সুন্দরবন আরো কাছে মনে হয়!!! একদম সকাল ১২ টার সময় পৌছলাম সেখানে। পাশে ছিল পদ্মা নদীর লেক। সেখানে নৌকায় চড়লো বালকেরা, বালিকারা বৈঠা বাইলো। কেউ কেউ নদীর লেকের পাড়ে বাঁশী বাজাইলো কেউবা উদাস হয়ে দেখলো বউ পাশে নিয়ে। ব্যাচেলর ছেলেরা নারীদের হাসি দেখে গলে গলে পড়লো, ক্লিক ক্লিক করে ছবি তুলতে লাগলো।
কোরবানীর গরু!
কাল কোরবানীর ঈদ। বড় রাস্তার পাশে আমাদের অফিস। মাঝে মাঝে পাঁচ তলা থেকে নেমে রাস্তার পাশে দাঁড়াই। মানুষ দেখি, মানুষ দেখার মত মজা এই দুনিয়াতে আর নাই। আজ অনেকক্ষন গরু দেখে এলাম। ভাই কত? ভাই কত? অনেক গরুর দাম জিজ্ঞেস করে অনেকে বিরক্ত করেছি মনে হয়। প্রতিশোধ! ছোট বেলায় আমাকেও এভাবে গরু নিয়ে যেতে হয়েছে বহুবার, অনেকবার। আমিও দাম বলতে বলতে গরুর সাথে দৌড়েছি অনেক! আজ গরুর দাম অনেক সস্তা মনে হচ্ছে, গতকালের তুলনায়। গতকালকেও অনেকের কাছে দাম জেনেছি।
আমার মনটা ভাল নেই। আজ অফিস করছি, কাল ঈদের দিনেও আমাকে অফিস করতে হবে! তবে এই অফিস করাটা আমি মেনে নিয়েছি। আমি একা নই, প্রায় বারশত লোকবল আমরা অন্যের সেবায় কাজ করব - ঈদের দিনে, এ আনন্দ বলে শেষ করা যাবে না। আজকাল অফিসে থাকতেই ভাল লাগে। মানুষ অভ্যাসের দাস! মানুষ কি না পারে! প্রথম প্রথম দীর্ঘ সময় অফিসে থাকা, নাইট ডিউটি সহ শুক্রবারে অফিস করা ভাল লাগত না। আজকাল ভালোই লাগে। অফিসে থাকলে টাকা পয়সা খরচ হয় না। নানাবিধ চিন্তা থেকে মুক্ত থাকা যায়। খালি সালাম আর সালাম পাই, মাঝে মাঝে সালাম দিতেও হয়! তারপর সারাদিন এয়ারকুলার! কি মজা রে! কেমন খাসা চোহারা হয়ে যাচ্ছে!
চোহারার কথা যখন উঠল, তখন বলেই ফেলি। যে কোন ঈদের আগের রাতে আমার বউ আমাকে চেপে ধরে। তোমার চোহারা আজকাল যা হচ্ছে না! কি মিষ্টি চোহারা ছিল আর কি বানিয়েছ! মাথার চুল পড়ে, দুই চাপা ফুলে আমি নাকি আফ্রিকান গুলতি মাছের মত হয়ে যাচ্ছি! গুলতি মাছটা আমিও চিনি না, চিনতে চাইও না! আমি বলি, অফিসে বড় সাহেব হয়ে যাচ্ছি, ধাপে ধাপে এগুচ্ছি! পেট সহ গালগুল একটু মোটা না হলে কি চলে? আপনারাই বলেন বাংলাদেশে প্রাইভেট কোম্পানীর এমন কোন একটা জেনারেল ম্যানেজার দেখাতে পারবেন, যার ভুঁড়ি নাই! গাদুম ঘুদুম!
আমাদের অফিসের সিংহভাগ ম্যানেজারদের পেট! মাশাআল্লাহ! হাতী চালান হয়ে যাবে! ডাইরেক্টর সাহেবদের কথা ছাড়েন। এই যে ধরুন আমাদের মিডিয়া কোর্ডিনেটর! যিনি আমাদের নানা সাংবাদিক বিপদ থেকে বাঁচান। মাশাআল্লাহ, কম পেট বানান নাই! আসলে আমার কি দোষ, আমি এদের সাথে থাকতে থাকতে!
কোন দিকের কথা কোথায় নিয়ে যাচ্ছি! যা বলছিলাম, আজ ঈদের আগের রাত! বিবাহিতদের জন্য বিশেষ ভালবাসা নিয়ে আসে! যা বলছিলাম আগে, আমার বউয়ের কথা - ঈদের আগের রাতে আমার বউ আমাকে চেপে ধরে! আপনাদের না দেখিয়ে আর পারছি না। দেখুন -
এক বোকা নানার বোকামী - ৩
(পাঁচ)
প্রতীক্ষার প্রহর আর শেষ হয়না । দুঃখের সুদীর্ঘ নিশি শেষ হয়ে প্রভাতের আলোর অপেক্ষায় সময় অতিবাহিত হতে থাকে । এরই মধ্যে নানা খোঁজ পায় Walk for Life নামের একটি বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের । এ প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তার কাছে নানা পাঠায় তার অশ্রুভেজা বার্তা আরীবের ছবিসহ ।
“সুহৃদয়েষু সাকিনা সুলতানা, একটি মহৎ দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছেন সে জন্য আপনাকে এবং আপনার প্রতিষ্ঠানকে আন্তরিক অভিনন্দন । অষ্ট্রেলিয়া প্রবাসী ডাঃ কোবাইদুর রহমানের কাছে আপনাদের মহতী কর্মযজ্ঞের বিষয় জানতে পেরে আপনাকে বিরক্ত করা অযৌক্তিক হবে না বলে মনে হলো । শিশুর কান্না স্বর্গীয় ও সুষমামন্ডিত, কিন্তু বৃদ্ধের কান্না বড্ড অশোভন ও অসুন্দর । তাই আপনার মোবাইল নম্বর জানা সত্ত্বেও কথা বলতে ভরসা পাচ্ছিনা । কানেও তো ভাল শুনতে পাইনা, তাই সামনাসামনি কথা বলতেও দ্বিধা আমার ।
এবার কাজের কথা । একটি শিশু, তার নাম আরীব (AREEB) । আজ তার বয়স ১ বছর ৮ মাস ১৮ দিন । জন্ম অবধি সে পৃথিবীর আলো দেখেনি । বাতাস তাকে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন দিতে ব্যর্থ হয়েছে । এখন তার ওজন ১০ কেজি । ছেলেটির হাত ও পা যথাযথ কাজ করেনা । খাবার চলে যায় শ্বাসনালীতে । এ বয়সে ৪ বার নিউমোনিয়ায় ভুগেছে । মাথাটি ছোট । অর্থহীন শব্দ ছাড়া কোন কথা মুখে আসে না । আরীবের মেরুদন্ড ও ঘাড় শক্ত হয়নি, সে বসতে পারেনা, হাঁটার তো প্রশ্নই ওঠেনা । শ্রবণযন্ত্র ব্যতীত তার কোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ স্বাভাবিক নয় । এমন একটা শিশুকে এ পৃথিবীর সম্পদে পরিণত করা কি সম্ভব ? Walk for Life কি তার জন্য কিছু করতে পারে ?
তাকে নিয়ে আমার একমাত্র মেয়ের জীবনটা ব্যর্থ হতে চলেছে । সাংসারিক, সামাজিক, আর্থিক, মানসিক সব কিছুতে আরীবের অস্তিত্বের ছাপ পড়ে সব কিছু ওলটপালট হয়ে যাচ্ছে । আমি শুরু থেকে আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছি । ফল হয়নি কিছুই । আমি ব্যর্থ ; আমার অক্ষমতা সীমাহীন । আপনি কি আপনার মূল্যবান সময়ের কিছুটা আমাকে দিবেন ? উত্তরের প্রত্যাশায় রইলাম।” নানার এ প্রত্যাশাও পূরণ হয়না, কোন উত্তর আসেনা ।