ইউজার লগইন
ভালোবাসা
রূপকথা
-ধুর!
-কি?
-ভালো লাগতেছে না। প্রেমের কথা আর কত লিখা যায় বল! প্রেম একদম মাথায় উঠে গেছে।
কথাটা শুনে রূপকথা প্রচন্ডভাবে হেসে উঠল।
-সেকিরে! প্রেম মাথায় উঠে কীভাবে?
-কেন! গ্যাস্ট্রিক যেভাবে মাথায় উঠে!
-গ্যাস্ট্রিক মাথায় উঠে!!!!
কথাটা বলে রূপকথা আমার দিকে বড় বড় চোখ করে চেয়ে রইল। মায়াকাড়া চোখ। নিমিষেই প্রেমে পড়া যায়।
-একটা কথা কি জানিস। অন্য কিছু দিয়ে না হোক তোর এই চোখ দুটোর দিকে তাকিয়ে হাজার বার প্রেমে পড়া যায়।
-তাই!
-হুম।
-তুই কতবার পড়েছিস?
-এখানে বসে আছি কতক্ষণ?
-প্রায় ১ ঘন্টা।
-তাহলে প্রায় ৩৬০০ বার তোর প্রেমে পড়েছি
-কি?
-হ্যা। সেকেন্ডে ১ বার করে।
-প্রপোজ করলেই ত পারিস!
-তারপর ধরে তুই আমারে ট্যাঙ্গানি দে। প্রেম কারা করে জানিস?
-কারা?
-বোকারা। আমি যেহেতু বোকা না তাই প্রেমে পড়াও আমার দ্বারা হবে না।
-এই না বললি তুই আমার প্রেমে পড়েছিস
-আসলে তোকে দেখলে আমার মাঝেমধ্যে খুব বোকা হতে ইচ্ছে হয়। তুইও তো একটু বোকা হতে পারিস।
আকাশের দিকে চেয়ে বলে উঠলাম-
-“বস, এই মেয়েটাকে কেন বোকা বানালে না? তাইলে তো আমারে আর এত চিন্তা করতে হয়না”
ইতিহাসে প্রহসনের বিচার (১) - সক্রেটিস ।
খ্রিস্টপূর্ব ৪৭০ সালের দিকে সক্রেটিসের জন্ম, তিনি ছিলেন প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক। এই মহান দার্শনিকের সম্পর্কে তথ্য লিখিতভাবে পাওয়া যায় কেবল মাত্র তাঁর শিষ্য প্লেটো এর রচনা থেকে। তৎকালীন শাসকদের কোপানলে পড়ে তাঁকে হেমলক বিষ পানে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। তাকে পশ্চিমা দর্শনের ভিত্তি স্থাপনকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তিনি এমন এক দার্শনিক চিন্তাধারা জন্ম দিয়েছেন যা দীর্ঘ ২০০০ বছর ধরে পশ্চিমা সংস্কৃতি, দর্শন ও সভ্যতাকে প্রভাবিত করেছে। সক্রেটিস ছিলেন এক মহান সাধারণ শিক্ষক, যিনি কেবল শিষ্য গ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষা প্রদানে বিশ্বাসী ছিলেননা। তার কোন নির্দিষ্ট শিক্ষায়তন ছিলনা। যেখানেই যাকে পেতেন তাকেই মৌলিক প্রশ্নগুলোর উত্তর বোঝানোর চেষ্টা করতেন।
অনেকের ব্যক্তিগত ক্রোধ ছিল সক্রেটিসের উপর। অনেকের জ্ঞানের অহংকার সক্রেটিসের কাছে চুর্ন হয়েছিল। সক্রেটিস প্রকাশ্যভাবে ঘোষণা করতেন
আমার কোন জ্ঞান নেই।--কিছুই না' আমি এই মাত্র জানি
অযথা অ-চিঠি.. [হাবিজাবি!]
প্রিয়তমেসু,
কেমন আছো? ভালো নিশ্চয়ই?
আমার চিঠি পেয়েছিলে তো?
একদিন পাঠালাম ছোট্ট উড়োজাহাজ করে, তুমি যেমনটা বলেছিলে ঠিক তেমনই - আকাশের ঠিকানায়। আরেকদিন, কুয়াশার চাদরে মোড়ানো সকাল পেরিয়ে ছিমছাম দুপুরের শেষে এসে - হঠাৎ বৃষ্টি হলো যে খুব? ওইদিন, কাগজের নৌকোয় আদর ভরে পাঠিয়েছিলাম। চিনতে পারো নি বুঝি? আমি ভেবেছিলাম চায়ের কাপের রিনিঝিনি টুংটাং শুনেই বুঝে নিবে - সে 'আমি'ই হবো। তাও পাছে আমায় চিনতে ভুল করো, হালকা আকাশি রঙএর রাংতা মোড়ানো পেজা তুলোর মত ভেজা মেঘ আর কিছু চেনা অচেনা প্রিয় সুরও পাঠালাম তোমায়। তবুও খুজে পেলে না তাতে আমায়?
নাকি, ছোট্ট চিঠি বলে রাগ করে উত্তরই দিলে না? কি করবো বলো, হয়তো হৃদযন্ত্রখানাই খুব ছোট আমার। আর তাতে যতটুকু ভালোবাসা ধরে, তাই লিখি তোমায়। এটুকুই সম্বল আমার।
তবে কি, জানো? আমার তোমাকে জানার প্রথম দিনগুলোর চিঠি ক'খানার উত্তর যে তুমি কখনই দাওনি, এই বিষাদ আমার কখনই হারাবে না। সেই সময়টুকুর স্মৃতির পাতায় পাতায় জড়ানো তীব্রতম ভালোবাসা সাক্ষি।
যখন চোখের জন্য শরীরে কোনো পানি অবশিষ্ট থাকে না
তখন আমার একটা সিনেমা দেখতে খুব ইচ্ছে করে।
নাম্ব সময়ের দিনলিপি
পহেলা বৈশাখ আর একুশে ফেব্রুয়ারিতে রাত ১০টার আগে ক্যাম্পাসে যেতে ভালো লাগে না। গিজগিজে ভিড় আর ধাক্কাধাক্কি-ঠেলাঠেলি। বিজয় দিবসে কখনো এত মানুষ ক্যাম্পাসে আসে না। তাই বিজয়ের দিনে আমার ক্যাম্পাসে টো টো করতে খুব ভালো লাগে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এবার বিজয় দিবসে (গতকাল) কয়েক লাখ মানুষ ক্যাম্পাসে হাজির হয়েছিলো কিন্তু সেই ভিড় দেখে খারাপ লাগে নি। কারণ কালকের ভিড়টা আজগুবি ছিলো না।
বিকেলের মাঝামাঝি সময়ে লাল আর সবুজ রং দেখতে দেখতে মাথা খারাপ হয়ে যাবার মুহুর্তে একবার আকাশী নীল রং চোখে পড়েছিলো। বহুদিন পর প্রিয় রংয়ের শাড়ি চোখে পড়লো। আবারও সেই ছিপছিপে লম্বা মেয়েটি। উবায়েদ ভাইয়ের দোকানে যাকে দেখেছিলাম। আমি ভেবেছিলাম এবার ওর সাথে কয়েকটা কথা বলবো। অথচ ভিড় আমাদের দু'জনকে কাছাকাছি হতে দিলো না।
দুই প্রিয়জনের জন্মদিনে
১.
Twenty years from now you will be more disappointed by the things you did not do than by the things you did. So throw off the bowlines. Sail away from the safe harbor. Catch the winds in your sails. Dream. Explore. Discover.
উক্তিটি মার্ক টোয়েনের। ছেলেবেলা থেকেই এ ভদ্রলোককে আমি চিনি। টম সয়্যার আর হাকলবেরী ফিনকে বন্ধু মনে করি। তার বক্তব্যে ভরসা না পাওয়ার কোনো কারণ নেই। অন্তত আমার কাছে। প্রিয় লীনা আপুর জন্মদিন। মার্ক টোয়েনের উক্তিটি উপলব্ধি করার জন্য উনার প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি এবং সেই সঙ্গে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।
২.
সেই পরিণতির অপেক্ষায়
সিগারেটের প্যাকেটে লিখে রেখেছে- ধূমপান হৃদরোগের কারণ। সাদা জমিনে কালো কালিতে বড় বড় হরফে কথাটা লিখে রাখা হয়েছে। আমি বুঝি না, যারা হৃদরোগ নিয়ে এত চিন্তিত; তারা ধূম্রশলাকা উৎপাদন করে কেন? পৃথিবীতে তামাশা ছাড়া আর কিছু হয় না নাকি?
সবসময় যানজটপূর্ণ রাস্তায় চলাচল করে অভ্যস্ত বলেই হয়তো যানবাহনমুক্ত রাস্তায় আজকাল আতঙ্ক অনুভব করি। মনে হয় রাস্তাটা নিরিবিলিতে আমাকে পেলেই গিলে ফেলবে। আগে একবার আশপাশে সতর্ক দৃষ্টিতে তাকাবে। যদি দেখে ধারেকাছে কেউ নেই, তাহলেই সাথে সাথে কোনো একটা অদৃশ্য মুখগহ্বর দৃশ্যমান হয়ে আমাকে উদরস্থ করে ফেলবে। পৃথিবীর কেউ জানবে না সেই ঘটনাটা।
বিলীন হয়ে যাওয়ার আতঙ্কে কখনোই আক্রান্ত হই নি। জানি খুব দ্রুত বিলীন হয়ে যাওয়ার নিমিত্তেই আবির্ভূত হতে হয়েছিলো আমাকে। তারপরও মাঝে মাঝে হিম নামের মেয়েটির কথা ভেবে খারাপ লাগে। আমি যখন থাকবো না তখনও হিম বার বার ফিরে আসবে। মানুষ ঝরাপাতা আর শুকনো কাঠ কুড়িয়ে আগুন জ্বালবে। সেই আগুনের চারপাশে গোল হয়ে বসবে এবং হাসাহাসি করবে। আমি আশপাশেই থাকবো কিন্তু প্রচ্ছন্নতার আবরণ ভেদ করে দৃশ্যমান হতে পারবো না।
প্রিয় পাহাড়টার উপর থেকে যখন কাউকে শূন্যে ভাসিয়ে দেবো
মানুষ ধীরে ধীরে বদলাতে থাকে এবং তাদের আচরণে সেটা ফুটতে থাকে। পুরোপুরি বদল না ঘটা পর্যন্ত অবশ্য সেটা বোঝা যায় না। যখন কোনো একটা ঘটনার মধ্য দিয়ে একজনের আমূল পরিবর্তনটা দৃশ্যমান হয়ে ওঠে, তখন পুরোনো ঘটনাগুলো নিয়ে ভাবলে বোঝা যায়; পরিবর্তন শুরু হয়েছিলো আরও আগে থেকেই।
স্টিভ জবস্ বলে গেছেন, ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে জীবনের জরুরি বিন্দুগুলোকে জোড়া দেয়া যায় না। আমরা সবসময় সেই ভুলটাই করি। একেকটা পরিবর্তনের চিহ্ন দেখি আর মনে করি বিষয়টা কিছু না। ভবিষ্যতে ঠিক হয়ে যাবে। আসলে তা হয় না। অতীত থেকে সবকিছু ঠিক হয়ে সামনের দিকে যেতে থাকে। জরুরি কিন্তু অদৃশ্য বিন্দুগুলোকে জোড়া দেয়া সম্ভব কেবলমাত্র অতীতের দিকে তাকিয়েই।
সময়ের কাছে আছে জগতের প্রায় সব সমস্যারই সমাধান। তাই বিষয়গুলো সবসময় খানিকটা সময়ের দাবিদার। আমরা সেটা বুঝতে চেষ্টা করি না। অস্থির সময়ের দাবি মেনে নিয়ে নিজের ভেতর অস্থিরতাকে ঠাঁই দিই। অথচ বিশ্বাস করতে চাই না, জীবনে আবার হয়তো কখনো স্থিরতা আসবে। মানুষ আসলে প্রাণী হিসেবে যতটা উন্নত, ঠিক ততটাই অদ্ভুত। সম্ভবত পৃথিবীর একমাত্র প্রাণী যারা নিজেদের উন্নতির জন্য ডেসপারেট এবং অবনতির জন্যও।
আমার আমি
আমার পরিচিত কাছের মানুষেরা অভিযোগ করেন আমার কাছে, আমি বড় হই না, বাচ্চাদের মতো করি, বয়সটা আমার কোথাও একুশে আটকে আছে। হয়তো পিছনে পিছনে বলেন, আমি যা করি তা হয়তো আমাকে মানায় না। যিনি আমার এই ছেলেমানুষীর সবচেয়ে বেশী ভুক্তভোগী তিনি বলেন, শরীরটা শুধু ডেভেলাপ করেছে, ব্রেইনটা ডেভেলাপ করেনি। তবে তিনিও এটা বলতে বলতে এখন ক্লান্ত হয়ে ক্ষ্যান্ত দিয়েছেন শুধু আমি যেমন ছিলাম তেমনই রয়ে গেছি। সবার অনুযোগের পরেও আজও নিজেকে সামলে সবার আকাঙ্খা অনুযায়ী নিজেকে বড় করে তুলতে পারিনি।
বদলে যাওয়া বড় হওয়া সব কী নিজের হাতে থাকে? সবাই কী চাইলেই নিজেকে ইচ্ছেমতো বদলে ফেলতে পারে? বড় হয়ে যেতে পারে?
সাপ্তাহিক হতাশা
শ্লার লাইফ! শ্লার চাকরী!!! ইটস সাক্স!!!
সারাটা সপ্তাহ অপেক্ষা করি এই একটা শুক্রবারের জন্য। সারাটা সপ্তাহ এই ফাত্রা রাজনীতির ফাপরে পইরা জীবন হাতে নিয়া অফিস করলাম। শুক্রবারে একজনের সাথে দেখা হবে এই আশায়।
ছয়টা দিন গোলাপি বেগমের পেইন সহ্য করলাম। আর যেই না তার পেইন শেষ হইলো অমনি শুরু হইলো তথাকথিত কর্পোরেট এর পেইন।
হঠাৎ করে তাদের শুক্রবারে খোলা রাখার সাধ জাগলো!!! যদি শুক্রবারে খোলাই রাখবি রে হাউয়ার পুত, তাইলে গত ছয়দিন এত্তো পেইন দিয়া অফিস করাইলি ক্যারে???
শালা ফাউলের গুষ্টি, গাছেরটাও খাইবো আবার তলারটাও কুড়াইবো। আর তাদের এই চিপায় পইরা আমাগো জীবন নষ্ট।
ভালোবাসার মানুষটাকে সারা সপ্তাহ জুড়ে আশায় রেখেছিলাম যে শুক্রবারে তোমায় নিয়ে ঘুরতে যাবো। আজ এটা শোনার পরে সে বললো, থাক ব্যাপার না। সবসময় যে প্ল্যান সাক্সেসফুল হবে তা তো নয়!!!!
শুনে ভালো লাগলেও, ঠিকই বুঝতে পেরেছি যে সে কষ্ট পেয়েছে। এই কষ্ট অপ্রাপ্তির কষ্ট। আর তার অপ্রাপ্তি আমায় অসহায় করে দেয়।
মস্তিষ্কে বাসা বাঁধছে ঘূণপোকা
বুকে হাত দিয়ে বলো সূর্যের আলো রুখিতে কি পারে কেউ? আমাদের ধরে ঠেকানো যাবে না গণজোয়ারের ঢেউ। ডাকসুর দেয়ালে ঝুলে থাকা কালো হয়ে আসা চিকাটা মলয়দা'র লেখা। আর কয়দিন টিকবে কে জানে। যে রাতে মলয়দা' চিকাটা লিখেছিলেন সে রাতে আমি উপস্থিত ছিলাম না কিন্তু পরদিন ক্যাম্পাসে গিয়ে চিকাটা দেখে সারা দিন মনের ভেতর অজানা উচ্ছ্বাস অনুভব করেছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বা দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলাম তখন। আমরা নিয়ম করে রাতের বেলা ক্যাম্পাসের দেয়ালে চিকা মারতাম। ভালো চিকা দেখতে খুব ভালো লাগতো। বিশেষ করে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কথাটা যত ভালোভাবে লিখতে পারতাম, তত বেশি সুখ পেতাম। তখনও গ্রাফিতির চল ঘটে নি সেভাবে। এখন ক্যাম্পাসে অনেক সুন্দর সুন্দর গ্রাফিতি দেখা যায়। আইএমএল-এর দেয়ালে একটা চমৎকার গ্রাফিতি দেখেছি সেদিন। আমাদের ঘাঁটিটায় একটা বড় গ্রাফিতি আঁকবার শখ জেগেছে সেটা দেখে। আর আফসোস জেগেছে যখন আমার সময় ছিলো, তখন এ বিষয়ে কেন কোনো জ্ঞান ছিলো না ভেবে।
আমার রাজকন্যার গল্প
আজ ১৪ নভেম্বর।আমার রাজকন্যার বয়স তিন মাস পূর্ণ হলো।সময় কত দ্রুত যায়! এই তো সেদিন ১৪ আগষ্ট,২০১৩ বুধবার দুপুর ২টা ৪০মিনিটে গগনবিদারী চিৎকার করে আমার রাজকন্যা এলো এই কঠিন পৃথিবীতে।এরপর থেকে এই তিন মাস সময় যেন চোখের অলক্ষ্যেই কেটে গেছে।রাতের ঠিক নেই,দিনের ঠিক নেই।রাত-দিন যেন মিলেমিশে একাকার।
রাতে ঘুমানোর আয়োজন করছে সবাই,অথচ আমার রাজকন্যা কেঁদে অস্থির।সারাটা রাত থেমে থেমে কান্না দিয়েই শেষ করেছে প্রথম এক মাস।
দ্বিতীয় মাসে রাজকন্যা একটু বড় হলো।তাই দ্বিতীয় মাসের রাতগুলো সে কাটিয়েছে বিরামহীন কান্নায়।তার কান্নায় পাড়া প্রতিবেশীর ঘুমের বারটা বেজে যেত।আর তাই সকালবেলা রাজকন্যার নানুমনিকে মুখোমুখি হতে হতো একগাদা প্রশ্নের,নাতনী এত কাঁদে কেন?ডাক্তার দেখান।হুজুরের কাছ থেকে তাবিজ আনুন। মনে হয় কারো নজর লেগেছে।এরকম হাবিজাবি আরও অনেক কথা।
তৃতীয় মাসে রাজকন্যা তার দাদাভাইয়ার বাসা থেকে বেড়িয়ে এসে বেশ লক্ষীটি হয়ে গেছে।এখন সে মাঝে মাঝে রাতে জেগে থাকে।তবে আমার রাজকন্যা একা রাত জাগতে পছন্দ করে না বলে ইদানীং তার মার পাশাপাশি তার বাবাকেও রাতটা জেগেই পার করতে হয়।
এবি'র জন্মদিনে বিউগল রেষ্টুরেন্টে সুবেদার আলী
সুবেদার আলীর শরীরটা থরথর করে কাঁপছে। শরীর বললে ভুল হবে। কাঁপছে তার দুই গ্যালন সাইজ ভুড়িটা।
জীবনে এই প্রথম তার এরকম কোন জায়গায় আসা। তার নিজের কখনো সুযোগ হতো না যদি হাতেম তাকে এই সুযোগ না দিত। হাতেম তার দীর্ঘদিনের সঙ্গী। একই মেস ঘরে থাকে দুজনে। বিউগল রেষ্টুরেন্টে কাজ করে হাতেম। ভালোমন্দ খাবার সুযোগ হলেও হাতেমের দিন কাটে হয় মুলার ঝোল নয় শশার ঝোলের তরকারি আর বড়জোর একটা ডিম। সুবেদার মেট্রিক পাশ। হাতেমের চেয়ে শিক্ষিত। কিন্তু খাবার দাবারে দরিদ্র। কারণ সে একটা গুদামে বস্তা গুনার কাজ করে। হাতেমের কাছ থেকে খাবার দাবারের গল্প শুনতে শুনতে অবিশ্বাস্য লাগে তার। কোন কোন বেলায় নাকি দুইশো পদের খাবারও সাজানো থাকে ওখানে। তার নাম বুফে। এত খায় কেমনে? এমনকি তার দুই গ্যালনের পেটের মধ্যেও বড়জোর বিশ পদ ঢুকানো যাবে ঠেসেঠুশে।
অসীম প্রতিক্ষা
দুই আংগুলের ফাঁকের ধুম্রশলাকাটি অবিরাম জ্বলছে। ধোঁয়াটে পরিবেশ। ছেলেটি একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ভেজা রাস্তায়।
রাস্তাটি সচরাচর ধুলোমাখা থাকে। তবে আজ আকাশের মন খারাপ। তাই ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। আর সেই কয়েক ফোটা জলে ধুলোমাখা পথঘাট কর্দমাক্ত।
গন্তব্যের দিকে ছুটে চলা প্রতিটি দ্রুতগতির গাড়ি রাস্তার কাদাজলে মাখামাখি। সাদা গাড়ির গায়ে কাদার মেটে রং সাথে হ্যালোজেন আলো এক মুগ্ধকর পরিবেশ।
ঘরের বাইরে মনোমুগ্ধকর পরিবেশ আর ঘরের ভেতরে ধোঁয়াটে আবেশ। সব মিলিয়ে একটি অতিসাধারণ রাত একজন নিভৃতচারীর কাছে। তার কাছে সকল রাতই অতিসাধারণ। ছেলেটির ধারনা তার রাতের দরকার নাই, কিন্তু রাতের তাকে প্রয়োজন। রাত তার কাছে শুধুই কিছু সময়ের ব্যাপ্তি, কিন্তু অনেকের কাছেই হয়তো নতুন কিছুর শুরু।
নীল উইপোকাদের বাস্তবতা কিংবা কল্পনায় গন্তব্য খোঁজার চেষ্টা
একটি সমবায়ী পিঁপড়া তার নিজের চেয়ে অনেকবড় আকারের কিছু একটা দাঁতে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। আমি ঘরের কালো অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে কথাটা ভাবছিলাম। হতেই হবে এমন কোনো কথা নেই, আবার হলেও খুব বেশি সুবিধা নেই। বাংলাদেশে ২০১৩ সালে বেঁচে থাকা একজন ছাপোষা কেরানী না হয়ে যদি ষাটের দশকের একজন বিটনিক হতাম, তাহলে কি ক্ষতি হতো?
কোনো এক প্রেম হাওয়ায় পেয়ে হাওয়ায় হারানোর পর চন্দ্রবিন্দুর অনিন্দ্য খুব সুন্দর একটি গান গেয়েছে। শিরোনাম হচ্ছে মন। শুনছি গানটা। আর কিছুই করা হচ্ছে না। মন আলেয়া পোড়ালো খালি হাত, মন জাগে না জাগে না সারারাত। রাত যত গভীর হচ্ছে, সুরটা তত মধুর হয়ে কানে প্রবেশ করছে। টেট্রা হাইড্রো ক্যানাবিনল মেশানো একটি সিগারেটের অভাবে ফুসফুস হাঁপিয়ে উঠছে। আধেক শোয়া অবস্থা ছেড়ে উঠে একটু কষ্ট স্বীকার করলেই নির্বাণলাভ সম্ভব। অথচ ইচ্ছে করছে না। মনে হচ্ছে এভাবে বুকের ভেতর একটা ক্লান্ত ফুসফুস নিয়ে শুয়ে থাকি অনন্তকাল। আর স্পিকারে বাজতে থাকুক, নাহয় পকেটে খুচরো পাথর রাখলাম।