ইউজার লগইন
ভ্রমনকাহিনী
টিটিকাকা হ্রদে ভ্রমণের গল্প : সহজ জীবনের খতিয়ান
১.
জীবনে সুযোগ পেলে একবার আমাজন মহাবনে ঘুরতে যাবো- এমনটা যখন আমি প্রথমবার ভেবেছিলাম তখন বোধহয় আমার বয়স ছিল ১৩। ১৯৯৮ সালের শেষ দিকর কথা। সেবা প্রকাশনী কিশোর থ্রিলার সিরিজ "তিন গোয়েন্দা"-র কোনো একটা সদ্যপ্রকাশিত বইতে সেবার কিশোর পাশা, রবিন মিলফোর্ড আর মুসা আমান মিলে আমাজনের উদ্দেশ্যে বের হয়েছিল। মূল উদ্দেশ্য ছিল চোরা-কারবারিদের পাকড়াও করা। বইয়ের পাতায় পাতায় মহাবন অমাজনের যে জীবন্ত বর্ণনা ছিল তাতে যেন সবকিছু ভেসে বেড়াচ্ছিল আমার চোখের সামনেই। এক দমবন্ধ উত্তেজনায় ঠাসা দুপুরে এক বসায় বইটা শেষ করে আমি মনে মনে ঠিক করে ফেলেছিলাম, একদিন আমাজনে আমায় যেতেই হবে।
হঠাৎ শ্রীমংগল
সাজ্জাদ ভাই বলল, চল শ্রীমংগল যাই । কোন কথা নাই ব্যাগ গুছিয়ে তৈরী হয়ে নিলাম। ৩ জুন ভোর ছয়টায় গাড়ী ধরতে হবে। তাই ভোর পাচটায় সাজ্জাদ ভাই এর ফোন গাড়ী নিয়ে আসতেছি বাসা থেকে বের হও। কোথায় থাকবো , কোথায় যাবো কিছুই জানি না, সাজ্জাদ ভাই বলল যে রাস্তায় যেতে যেতে বিস্তারিত বলবো।
রাস্তার বিড়ম্বনা-
সকাল ৬ টায় সায়দাবাদ থেকে হানিফ এর বাস শ্রীমংগল এর উদ্দেশে যাত্রা শুরু করলো এবং রাস্তার জ্যাম এর কারনে ফ্লাই ওভার পার হতে ৮ টা ও ভুলতা পার হতে ৯:৩০ বেজে গেল অতপর শমশেরনগর গিয়ে গাড়ীর চাকা পাংচার হল, সময় তখন দুপুর ১২:৩০ টা। চাকা ঠিক করে দুপুর ২ টার দিকে শ্রীমংগল এবং সেখান হতে সিএনজি নিয়ে আমাদের গন্তব্য শ্রীমঙ্গল শহর থেকে ২৩ কি.মি দুরে শহরস্থী বাজার (পাচাউন) এর কাছে ক্যাপ্টেনস হাউজে ।
আথিতিয়তা গ্রহন-
আশ্চর্য ভুতের গল্প ( সত্য ঘটনা)
আজকে আপনাদের সাথে ছোট কিন্তু সত্য একটা ঘটনা শেয়ার করবো।
আমাদের গ্রামের বাড়ি নড়াইলে। বাস থেকে নেমে ১৫ মিনিট মেঠো পথ দিয়ে হেঁটে যেতে হয়। আমি প্রতি ১৫ দিনে একবার করে যেতাম বাড়িতে। এখন দেশের বাইরে থাকি তাই যাওয়া হয় না। আপনাদের সাথে যেদিনের কথা শেয়ার করবো তখন আমি ইন্টারে পড়তাম। ঢাকা কলেজে। কলেজ হটাত একদিন বিকালের দিকে বন্ধ দিলো কিছু রাজনৈতিক কারণে। ভাবলাম বাসায় চলে যাবো। মাকে ফোন করে জানালাম। কিন্তু স
েদিন বাসায় রাতে আমাকে আনতে যাবার মতো কেউ ছিল না। তাই মা বললেন আসিস না। আমি তবু জিদ করে গেলাম।
বাস থেকে নেমে হাঁটা ধরলাম বাড়ির দিকে। রাস্তা পরিষ্কার। তখন শীতের শুরু। তাই মানুষজন একদমই নেই। রাস্তায় কিছুদূর যাবার পর একটা ডোবা পড়ে। তার পাশেই এক বিশাল তাল গাছ। এখানে নাকি অনেকেই খারাপ জিনিস দেখেছে। যদিও আমার সাথে কখনো এমন কিছু ঘটে নি। এবার অনেকদিন পরে বাসায় যাচ্ছি, তাই আনন্দিত ছিলাম।
সমুদ্দুরের গ্রাম দেখা
অনেকদিন গ্রামের বাড়ি যাওয়া হয় না। শেষ গিয়েছিলাম তাও বছর খানেক আগে। সমুদ্দুরের বয়স এখন ৫ বছর ৩ মাস। বেশ কিছুদিন ধরে জ্বালাচ্ছিলো, গ্রামে যাবার জন্য। যদিও এর পেছনে তার মায়ের ইন্দন ছিলো স্পষ্টত। তাই প্ল্যান ছিলো রোজার ঈদের পরদিন বাড়ি যাবো। সপ্তাহ খানেকের জন্য।
আকাশে বাতাসে প্রচন্ড গরম। তারপরও হঠাৎ করে গ্রামে যেতে হলো। ২৪ তারিখ বাড়ি থেকে খবর এলো, একমাত্র ফুপুর অবস্থা খারাপ। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, বাড়ি যাবো। ২৪ তারিখ বিকাল ৫টা ১৫ মিনিটের বাসে চড়লাম। সায়েদাবাদ থেকে বাস। মাঝে কুমিল্লায় চা বিরতি ৪৫ মিনিট। তেল নিলো বাসে, আরো ১৫ মিনিট। ঢাকা থেকে বাড়ি যেতে সময় লাগে ৬ ঘন্টার মত। যদি যানজটে না পড়ে।
ট্রেন থেকে লিখছি.........
উৎসর্গঃ প্রিয় দাদী
৫ ডিসেম্বর, সকাল ৭.৩০। রাজশাহী রেলস্টেশন থেকে গল্পটা যখন লিখছি তখন আমি সিল্কসিটি ট্রেনের ‘ঝ’ বগির ৩৯ নম্বর সিটের যাত্রী, গন্তব্য ঢাকা। পাশের সিটে আমার খুব কাছের প্রিয় এক মানুষ, আমার দাদী।
৭৪ এর দুর্ভিক্ষে আমার আপন দাদীকে হারিয়েছে, তাই আমার সৌভাগ্য হয়নি তাকে দেখা দাদু পরে আর বিয়ে করেনি। বাকিটা জীবন একা কাটিয়ে দিয়েছেন। ২০০৫ সালে এসে দাদুকেও হারালাম।
তারপর থেকে রাজশাহীতে বাবার এক চাচা-চাচীকে দাদু আর দাদী বলে ডাকি। আপন দাদীর যে আদর থেকে বঞ্চিত হয়েছি তা অনেকটাই পূরণ করেছেন এই দাদী।
দু জনে বসে গল্প করছি আর রাস্তার দু ধারের সরিষা ক্ষেতের মনোরম দৃশ্য দেখছি
কখনো বা আসেপাশের সিটে বসা মানুষের গল্প শুনছি। আমাদের সামনের সিটগুলোতে দশ জনের এক বিশাল পরিবার। খুব মজা করছে ওরা। ওদের কথার সাথে আমরাও একটু আধটু তাল মিলাচ্ছি।
ছবি ব্লগ: হঠাৎ বান্দরবনে একদিন :)
ইটকাঠ ঘেরা এই পাথরের শহরেতে হৃদয়ের কারবার? লোকসান বারবার। বাট... আমরাতো হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল... তাহলে? উপায় একটাই... আমরা সবুজে বাঁচি... সবুজে থাকি... সবুজ করি আমাদের এই মন... চির সবুজ এই দেশের সবুজ গালিচায় গড়াগড়ি করে সবুজ হয়ে আবার কর্মোদ্দিপনার সংগ্রহ নিয়ে ফেরা।
হুটহাট আয়োজন ছাড়া আসলে কিছু হয় না... তারপরেও ঋহানের কথা মাথায় রেখে কিছুটা হিসাব নিকাশ... রবিবার জন্মাষ্টমীর ছুটি হওয়াতে প্রায় ৩ দিনের একটা লম্বা অবসর। অনেক দিন ঢাকার বাইরে বের হওয়া হয় না... কিছুটা হাঁসফাঁস ছিলোই ... এমন সুযোগ কি কখনো হাতছাড়া করা যায়? এবারের ট্রিপ বান্দরবন এবং তার আশপাশ...
বহ্নি জ্বালা(পর্ব-২)
আমার ছেলেমেয়ের জন্য আমার অনেক দুঃখ হয় বিশেষ করে ছেলের জন্য। আমি যে নির্মল আনন্দ গুলো করেছি আমার ছেলে তা ভাবতেও পারে না। আমার ছেলে এখন অষ্টম শ্রেনীতে পড়ে, ঠিক একই বয়সে ফাগুন চৈত্র মাসে নিজ হাতে বানানো ঘূড়ি উড়িয়ে কি যে মজা পেতাম কিভাবে ব্যাখ্যা করব। উড়ানোর মজা এক, বানানোর মজা আরেক। আজ যখন মনে হয় ভাবি এত কষ্ট করতে হত, একটা ঘুড়ি বানানোর জন্য?
সে সময় মেলায় ঘুড়ি পাওয়া যেত। তা কিনেও আনতাম, তবে সে সব ঘুড়ি ছিল ছোট ও পাতলা কাগজের, কদিনেই ছিড়ে যেত। তাই ঘুড়ি বানানোর জন্য বাঁশের ঝাড় থেকে বাঁশ কেটে শুকাতে দিতাম। বাতা করার উপযোগী হলে তা থেকে উপর নিচের ধনুকের মত দুটি শলাকা এবং মাঝের জন্য আর একটি শলাকা বের করে নিতাম। ঘুড়ির লেজ বানানোর জন্য আরও একটি শলাকা লাগত। সুতার সাহায্যে বেঁধে ঘুড়ির কাঠামো তৈরীর পর কাগজ দিয়ে তার ছাউনি তৈরী করা হত।
বহ্নি জ্বালা
আজ বজ্র যেন হানিছে আঘাত
বহ্নি জ্বালায় জ্বলিছে দেহ মন
অবারিত অক্ষিদ্বয় যেদিকে তাকায় শুধুই শুন্যতা।
ক্ষনকাল অতীতেও যা ছিল
চাঁদ, তারা, নিহারিকা বা উদিয়মান সূর্যের
হাজারও আলোক রশ্মিতে আলোকিত,
ভোরের নির্মল শীতল সমীরণের পরশে
যেমন থাকে দেহমন পরিপূর্ণ।
এ কি কিছু হারানো ?
না কোন কিছু হারানো নয়
কখনও না হারানোর ব্যথাও যে বহ্নি জ্বালাকে হার মানায় আগে বুঝিনি।
দিন পনের ঢাকাতে হেড অফিসে ছিলাম বিভিন্ন কাজ নিয়ে, ডাইরেক্টার স্যার বললেন প্রজেক্ট তো শেষ প্রায়, মানষিক ভাবে প্রস্তুত থাক, অন্য প্রজেক্টে যেতে হবে,
জিজ্ঞেস করেছিলাম,কোথায় যেতে হবে, বললেন না,
সুন্দরবন ভ্রমন ২০১৩ (পর্ব ৫)
সময় সুযোগ পেলে হরহামেশাই কক্সবাজার ঘুরে আসেন প্রায় সকলেই, কিন্তু সেই তুলনায় সুন্দরবন ঘুরতে যাওয়া মানুষের সংখ্যা খুবই কম। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হলেও, সুন্দরবন বেড়াতে যাওয়ার নানান নিয়মকানুন আর অমূলক ভয়ের কারনেই অনেকের যাওয়া হয়ে ওঠে না । এই ক্ষেত্রে সুন্দরবন যেতে চাইলে ট্যুর কোম্পানী অথবা অভিজ্ঞ কারো সাথে যাওয়াই ভালো। সুন্দরবন ঢোকার ব্যাপারে হরেক রকমের বাধ্যবাধকতা আর নিয়মকানুনের ঝামেলা পোহাতে হবে না যদি কোন ট্যুর কোম্পানী কিবা অভিজ্ঞ কারুর সাথে যান। অনেকেই আবার বাঘের ভয়ে সুন্দরবন যেতে চাননা। কিন্তু বাঘের এই আকালের সময়ে বাঘের দেখা পেয়েছেন এমন কারুর দেখা মেলাই ভার! আর প্রকৃতির কোন কিছুকে বিরক্ত না করলে তাও নিশ্চয়ই বিরূপ হবে না মানুষের প্রতি। বাঘও বিরক্ত করেনা। তাই এইসবের চিন্তায় সুন্দরবনের যে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য তা না দেখা থেকে নিজেকে বঞ্চিত করার মানেই হয় না।
সুন্দরবন ভ্রমন ২০১৩ (পর্ব ৪)
সকালের নাস্তা খেয়ে উঠতে না উঠতেই সবাইকে ট্রলারে চাপিয়ে আবারো বেড়িয়ে পড়া হলো কটকা বীচের উদ্দেশ্যে। কাদা, শ্বাসমূল এড়িয়ে চলার জন্যে কাঠের ব্রিজ তৈরী করা, কিছুদূর যেতেই কয়েকটা দেখা মিলে বনবিভাগের তৈরী করা কিছু কটেজ, লাল-শাপলায় পরিপূর্ন পুকুর। কয়েকগ্রুপে ভাগ হয়ে কেউ কটেজের দিকে, কেউ বাঘের আশায়, কেউ বীচের দিকে আগাতে থাকলাম। হাল্কা গাছের সারি পেরিয়ে গেলে গোলপাতা আর আরো নানান গাছেরসারির মাঝে দেখা মেলে সার সার হরিণের দল। চারদিনের ট্যুরে যত হরিণ দেখেছি এখানকার হরিণের পাল দেখতে বেশি আকর্ষনীয় লেগেছে। চঞ্চল নয় অপেক্ষাকৃত শান্ত, ছোটবড় অবাক হয়ে চেয়ে থাকা প্রানীগুলোর সৌন্দর্য্যতা মুগ্ধতা এনে দিবে যে কাউকেই নিঃসন্দেহে।
সুন্দরবন ভ্রমন ২০১৩ (পর্ব ২)
বাংলাদেশের দক্ষিনপ্রান্ত থেকে ভারত পর্যন্ত চলে যাওয়া বিস্তীর্ন সুন্দরবনের বেশিরভাগই ম্যানগ্রোভ বন দ্বারাই পরিপূর্ন। পঞ্চাশ প্রজাতির ম্যানগ্রোভের মাঝে সাতাশ প্রজাতির দেখা মেলে সুন্দরবনে। জীববৈচিত্রের অপার সম্ভার এই বনকে ইউনেস্কো ১৯৮৭ সালে বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করেছে। অতুলনীয় সৌন্দর্য্যময় ল্যান্ডস্কেপ ছাড়াও এখানে রয়েছে অসংখ্য বন্যপ্রানীর সমাগম। প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পর্যটক রয়েল বেঙ্গল টাইগার, নানান প্রজাতির হরিণ, কুমির, বানর, সাপ এবং প্রায় দু’আড়াই’শ প্রজাতির পাখি দেখার আশায় সুন্দরবন ভ্রমনে আসেন।
সুন্দরবন ভ্রমন ২০১৩ (পর্ব ১)
ভোরের আলো না ফোঁটা মেঘবিহীন বৈশিষ্ট্যহীন আকাশ, শীতের আবছা কুয়াশার চাদর কেটে ট্রলার নীলচে-সবুজ পানির উপর দিয়ে ধীরগতিতে এগিয়ে যাচ্ছিল, দু’ধার জুড়ে গোলপাতাসহ নাম না জানা হরেক গাছের সারি ঘন থেকে আরো ঘন হতে হতেই সামনের দূরে এগিয়ে আসা বাঁকটা যেন হারিয়ে যাওয়া কাউকে যেন তীর খুজেঁ পাবার আশায় উদ্বেল হবার হাতছানি দিয়ে যায়! টলটলে পানি, নির্মল বাতাস, গাছেরসারি, থমকে যাওয়া একঘেয়ে আকাশ, সবকিছুর মাঝ দিয়ে চলছি আমরা সমান তালে সাথে যাচ্ছে কেবল থোক থোক কুয়াশার দল! চারপাশে পাখি ডাকারও শব্দটি নেই, অভিযাত্রীদের কেবল শ্বাসের শব্দে উপস্থিতি জানান দিয়ে যায় সুন্দরবনের এই অপার সৌন্দর্যতার।
অপরুপ এই দৃশ্যটি ছিল, সুন্দরবন ভ্রমনের প্রথম প্রহরের। কোন ছবিতেই এই ভ্রমনে দেখা সৌন্দর্য্য তুলে আনা যাবে না, সে কেবলি উপভোগের একান্ত অনুভূতি।
পালাই পালাই
অস্থির, উদ্দাম, সিদ্ধান্তহীনতা, নিজেকে নিজের অপছন্দ, মনের বিরুদ্ধে পড়ালেখা সব মিলিয়ে ১৯৯৯ সালটা আমার জন্যে অদ্ভূত একটা সময়। ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হতে হবে এই সংকল্প আমাকে এমন এক বিষয় পড়তে বাধ্য করলো যা পড়তে ভালো লাগে কিন্তু পরীক্ষার খাতায় আমার জন্যে আশানুরূপ নাম্বার যোগ বয়ে আনে না- সেই বিষয়ের নাম দর্শন।আমার মুখস্থ বিদ্যা বরাবরই শূন্যের কোঠায়। বন্ধুদের দেখেছি পাটীগণিত পর্যন্ত না বুঝলে মুখস্থ করে ফেলতে। আমি ব্যর্থ। না বুঝলে এক কলমও এগোতে পারি না। দর্শন পড়ি, ভালো লাগে পড়তে কিন্তু পরীক্ষার খাতায় আমি ২০ পৃষ্ঠা মুখস্থ উগড়ে আসতে পারি না। ফার্স্ট ইয়ারে আমার রেজাল্ট বলে দিচ্ছে আমি থার্ড ক্লাস নম্বর পেতে যাচ্ছি চলমান চার বছরে।সেই সম্ভাবনা পরবর্তীতে উৎপাটন করলেও ৯৯ সালে আমি আতংকে অস্থির।
নাগরিক বতুতা
আপ্তবাক্য-নাগরিক জীবনে বিনোদনের অভাব, ঘোরার জায়গা নেই, নিরাপত্তা নেই, অর্থের অভাব; এ কথাগুলো আমি মানুষের মুখে ঘুরবার ব্যাপারে হরহামেশা অভিযোগ হিসেবে শুনতে পাই। ক্ষুদ্রজীবনে ঘুরবার জায়গার কখনো কোন অভাব বোধ করিনি। নিরাপত্তাকে থোড়াই কেয়ার করেছি, টাকা কস্মিনকালেও ছিল না। শুধু পায়ে হেঁটে ঢাকা শহরের কত জায়গায় যে গিয়েছি - কি এক দ্রষ্টব্য বস্তু ছিলাম মানুষের চোখে- হাড় জিরজিরে একটা মেয়ে জিন্স আর পাঞ্জাবী পরে, কোমর ছাপানো চুল নিয়ে ভয়াবহ রোদে হাঁটছে কিংবা রিকশায় হুড ফেলে বৃষ্টিতে ভিজছে-কখনো ভাবিনি এগুলো খুব আহামরি কোন কাজ, কেউ কিছু বললে বা ক্ষরচোখে তাকালে আমি দৃষ্টি ফেরত দিয়েছি।
ওড়াওড়ি
মানসিক অস্থিরতার কিছুকাল থাকে। এক একজনের এর প্রকাশ এক একরকম হয়।কি সাংঘাতিক বন্য সে সময়, কোনকিছুই প্রাণে লাগে না। আমার সকল অনুযোগ অস্থিরতা ঢেলে দিয়েছি ছোটাছুটি করে। এইচএসসির পরীক্ষার বছর কি অদ্ভূতভাবে যে কেটেছে! আজ আমি এখানে তো কাল সেখানে, এবেলায় এ গ্রুপ তো সে বেলায় সে বন্ধু। ৯৬ তে একটা জায়গা সবার মাঝে খুব পপুলারিটি পেল ঢাকার কাছে ঘুরবার জায়গা হিসেবে সেটার নাম ওয়াটার ফ্রন্ট। এয়ারপোর্ট এর কাছে খুব না কি সুন্দর জায়গা ঘুরবার। এর কাছে শুনি তার কাছে শুনি।বিশেষ করে কাপলরা সেই জায়গার ভূয়সী প্রশংসা করে। আমার বন্ধু সনি ৯৬ এর সেপ্টেম্বরের ৯ তারিখে আমাকে নিয়ে ওয়াটার ফ্রন্টে গেল। একটু পানি, কিছু গাছপালা, আর বিমানের উঠানামা। এখানে কি আছে তেমন আমি বুঝলাম না। গেলাম বন্ধুর মন রক্ষার্থে। কিছুক্ষণ পর আমরা একটা নৌকায় উঠলাম। পানির ভেতর ঘুরেটুরে যখন পাড়ে এলাম নামতে তখন আমি এবং সনি দুজনই কাদায় পড়ে গেলাম। কাদামাখা সনি কাদামাখা আমাকে এখানে বলবে সে আমাকে একটু একটু লাইক করা শুরু করেছে, আমি মনে মনে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ব এবং ইয়ে দোস্তি কত তাড়াতাড়ি শেষ করা যায় তার প্ল্যান করব।