ইউজার লগইন
মুক্তিযুদ্ধ
তারেক মাসুদের গানে শ্রেণি, রাজনীতি ও জেন্ডার চেতনা: একটি সূচনামূলক আলাপ
এক.
পাকিস্তানী সেনা অফিসারদের কন্ঠেই গণহত্যার সাক্ষ্য
১৯৭১ সালে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানী সেনা অফিসারদের বিভিন্ন সময়ের কথা বার্তায় উঠে এসেছে তাদের অপরাধের সত্যতার প্রমাণ, তারা কিভাবে পরিকল্পিতভাবে এই দেশে গণহত্যা চালিয়েছে সেসকল তথ্য।
হামিদুর রহমান কমিশনের কাছে লেফটেন্যান্ট কর্নেল আজিজ আহমেদ খান তার সাক্ষ্যতে বলে, "জেনারেল নিয়াজি ঠাকুরগাঁও এবং বগুড়াতে আমার ইউনিট পরিদর্শনে এসে আমাদের কাছে জানতে চান, আমরা কি পরিমাণ হিন্দু হত্যা করেছি। মে মাসে একটি লিখিত নির্দেশ আসে হিন্দুদের হত্যা করার জন্য। এই নির্দেশ ২৩ ব্রিগেড এর ব্রিগেডিয়ার আবদুল্লাহ মালিক প্রেরণ করেছিলেন।"
ব্রিগেডিয়ার পাকিস্তানী অপর এক সেনা কর্মকর্তা তার এক বিবৃতিতে বলেছিলো, অফিসারদের খুশী করতে পাকিস্তানী সেনাসদস্যরা পাখির মতন গুলি করে বাঙ্গালীদের হত্যা করতো। সে আরো বলে ততকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জেনারেল গুল হোসেন তার কাছে প্রায় জানতে চাইতো সে কি পরিমাণ বাঙ্গালীকে গুলি করেছে।
একটি ছহি নুডলসবিক্রেতা কোপানিবৃত্তান্ত
পৃথিবীর এক কোনায় একটি গ্রাম ছিলো, সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা। সেই গ্রামের লোকেরা মাছ দিয়া ভাত খাইয়া, জারি-সারি গান গাহিয়া মনের সুখেই দিনাতিপাত করিত। কিছু কিছু মানুষ অবশ্য ভাতের বদলে তখন রুটি কিংবা নুডলস এই জাতীয় দ্রব্যাটি খাইত। যাহারা ভাতে অভ্যস্ত তাহারা তাহাতে আঁৎকাইয়া উঠিতো। রুটি না হয় সহ্য করা গেলো, ভাতের পাশাপাশি তাও চলিয়া যায়, তাহাদের মতই দেখিতে অন্য গোত্রের মানুষরা সেইটা খায়। তাই বলিয়া নুডলস! সেতো পুরোই অশাস্ত্রীয় অনাচার!
জার্নাল ৩৩
১. পবিত্র ধর্মগ্রন্থে আছে, “সৃষ্টিকর্তা সীমা লঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না।” দেশ চলছে মদিনা সনদ অনুযায়ী। সেই সূত্রানুসারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজি, কমিশনার সবাই ব্লগারদের হুঁশিয়ারি দিয়েছে, সীমা লঙ্ঘন করলে একেবারে খোঁয়াড়ে পুরে দেবে, হুঁহ। ধর্মগ্রন্থে কার্টুন আঁকা নিষেধ, লেখালেখি নিষেধ, কিন্তু কোপাকোপি নিষেধ নয়। তাই তারা লেখার বদলে লেখা নয়, কার্টুনের মোকাবেলায় কার্টুন নয়, চাপাতির পর চাপাতি চালাবে। তাদেরকে পুলিশ ধরবে না, মন্ত্রী বকবে না, ধর্ম গ্রন্থে কোপাকোপি যেহেতু আইনসিদ্ধ তাই তারা আইনত সীমা লঙ্ঘন করছে না। তারা লাইনেই আছে।
গোপালপুরের গণহত্যা
৫ই মে, ১৯৭১। নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার গোপালপুর সদর। অপারেশন সার্চ লাইটের নামে বাঙ্গালী নিধনের অংশ হিসেবে রাজশাহীতে অবস্থিত সেনা সদর দফতর থেকে স্থল পথ এবং আকাশপথ ব্যবহার করে সেনা পাঠানো হয় পাবনা, ঈশ্বরদী এবং নাটোরে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে। আধুনিক অস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাবাহিনী দখল করে নেয় বাঙ্গালীদের ঘাঁটি গোপালপুরের চিনিকল। প্রায় ২০০ চিনিকলের বাঙ্গালী কর্মচারীকে জড়ো করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপারে।
আমাদের দেশ, আমাদের গল্প, আমাদের স্বপ্ন
নেদারল্যান্ডসে প্রাইমারী স্কুলের শেষের দুই ক্লাশে বাচ্চাদেরকে স্কুলে প্রেজেনটেশান (spreek beurt) করতে হয়। ল্যাপটপ, স্লাইড, প্রজেক্টর সব দেয়া হয়। বলা হয় তাদের পছন্দমত একটি বিষয়কে বেছে নিতে আর তার ওপর তথ্যমূলক প্রেজেনটেশান বানাতে। বাচ্চারা প্রায় পাঁচ-ছয় মাস সময় পায় কারণ স্কুল শুরু হলেই বছরের শুরুতে তাদেরকে সারা বছরের কারিকুলাম দিয়ে দেয়া হয় এবং সাধারণত তার কোন রদবদল হয় না।
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার
ছবিঃ স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি ছাপানো হয় এই যন্ত্রটি দ্বারা।
১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ দিবাগত রাতে গ্রেপ্তারের আগেই বঙ্গবন্ধু আওয়ামীলীগের ততকালীন নেতাদের আলাদা আলাদাভাবে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়ে যান। তিনি একাধিক পরিকল্পনা করেছিলেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায় পরবর্তীতে। একাধিক পরিকল্পনার কারণ ছিল, কোন একটি পরিকল্পনা ব্যর্থ হলে যাতে অন্যটি কাজে লাগানো যায়। বঙ্গবন্ধুর সেই নির্দেশনা অনুসারেই
গ্রন্থালোচনাঃ আমি বীরাঙ্গনা বলছি ঃ নীলিমা ইব্রাহিম
যুদ্ধের সবচেয়ে বড় শিকার হয় নারী ও শিশু। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধও এর ব্যতিক্রম কিছু নয়। বহুদিন ধরে পড়তে চাওয়া নীলিমা ইব্রাহিমের লেখা “আমি বীরাঙ্গনা বলছি” বইটি পড়ে শেষ করলাম। খুব সহজ ভাষায় সাতটি মেয়ের বীরত্বের কাহিনী এতে লেখা আছে। একশো ষাট পৃষ্ঠার এই বইটি পড়তে খুব বেশী সময় লাগার কথা নয়। কিন্তু আমার অনেক সময় লেগেছে। আমি পাঁচ দিনে সাত জনের গল্প পড়লাম কারণ আমি হজম করতে পারতাম না। অনেকক্ষণ ধরে ভাবতে হয়, থমকে থাকতে হয়। কীসের মধ্যে দিয়ে গেছেন তাঁরা। কিছু লিখবো না লিখবো না ভেবেও শেষ পর্যন্ত লিখছি। তাদের নাম-পরিচয়, পুর্নবাসন, তাদের সংগ্রাম নিয়ে, তথ্য উপাত্ত ভিত্তিক পূর্নাঙ্গ কোন বই আছে কীনা, তাও জানা নেই। আমি বাংলাদেশের অনেক মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক সিনেমা দেখেছি কিন্তু শুধু তাদের ওপর করা অত্যাচার এবং যুদ্ধ পরবর্তী তাদের মানসিক কষ্টের ওপর কারো কোন কাজ দেখেছি বলে মনে করতে পারছি না। তাদের পুর্নবাসনের কার্যক
মুক্তিযুদ্ধের প্রতিদিন মার্চ-ডিসেম্বর ১৯৭১
সেই অনেক দিন ধরে... একটা দীর্ঘ সময় আমরা ব্লগের পেছনে ব্যয় করেছি। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, মুক্তিযুদ্ধ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ব্লগাররা লিখে গেছে নিরলস ভাবে। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারীতে শুরু হওয়া বাঙালীর প্রাণের মেলা "একুশের বই মেলা"য় ব্লগারদের পদচারণায় মুখরিত থাকে বই মেলা চত্বর।
নুরুজ্জামান মানিক... যাকে আসলে আলাদা করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার প্রয়েজন হয়তো নেই... তবুও একটু বলি। মানিক ভাই দীর্ঘ দিন ধরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লিখে গেছেন নতুন প্রজন্মের জন্য। সেই লেখালেখি গুলো নিয়েই আপনাদের জন্য একটি মোড়কে হাজির করেছেন আমাদেরই অনুরোধে।
মানিক ভাইয়ের কথা:
ক্যাপ্টেন হায়দার
রুমীর মৃত্যুর পরের ঘটনা। একদিন কয়েকজন
সহকর্মী নিয়ে জাহানারা ইমামের বাসায় এসে হাজির হলেন
ক্যাপ্টেন হায়দার্। জাহানারা ইমাম তখন স্বামী আর
ছেলে হারিয়ে শোকার্ত অবস্থায়। কোথাও
সমবেদনা জানাবে তা না। ক্যাপ্টেন হায়দার করে বসলেন
অন্য কাজ। জাহানারা ইমাম কে বললেন,
- আমার একজন বডিগার্ড দরকার্।
আমি কি জামী কে কিছুদিনের জন্য আমার
কাছে রাখতে পারি
বুঝতে হবে ,ক্যাপ্টেম হায়দার বলে কথা। কনভেনশাল
ওয়েতে শোক জ্ঞ্যাপনের আনুষ্ঠানিকতা তার সাথে যায়না।
বরং উল্টো এক কথায় প্রিয়জন হারানো বাড়িতে নতুন এক
বিশ্বাস ফিরিয়ে আনলেন।
এমনি ক্যারিজম্যাটিক ছিলেন হায়দার
মেলাঘরের প্রশিক্ষনে প্রথম দিন যখন ১৮-১৯ বছরের
সদ্য কৌশোর পেরোনো আপাত
বাচ্চা ছেলেগুলো কে দেখে আর্মির অন্যরা মুখ
টিপে হাসছিল।
খালেদ মোশাররফ এনে দাড় করিয়ে দিলেন
পাকিস্তান আর্মির স্পেশাল কমান্ডো ব্যাটিলিয়নের ক্যাপ্টেন
লাশটি উপুর হয়ে পড়েছিল
"অন্যেরা যখন ১৬ই ডিসেম্বর সকালে ছাদে ছাদে পতাকা উড়ায়, গলা ছেড়ে জয় বাংলা ধ্বনিতে বাংলার আকাশ-বাতাস মুখরিত করে, আমি তখন ভাগারে ভাগারে আমার স্বামীর লাশের খোঁজে ব্যস্ত। দমকা হাওয়ায় হারিয়ে যাও সেই প্রিয় মুখটি আর একবার দেখার জন্য সহস্র বন্ধুকের গুলি বুক পেতে নিতে প্রস্তুত। সে সময় কত এলোপাতাড়ি গুলি চলছিলো, কত লোক ১৬ ডিসেম্বরেও গুলি খেয়েছে কিন্তু একটি গুলিও আমাকে স্পর্শ করেনি। আলীম হত্যার সাক্ষী হয়ে থাকবো বলেই হয়তো।"
স্বামী ডাঃ আলীম চৌধুরীর লাশটি এভাবেই খুঁজেছিলেন শ্যামলী চৌধুরী। সেই লাশটি তিনি পেয়েছিলেন ১৮ই ডিসেম্বর। একটি ইটের ভাটায় পড়েছিলো ডাঃ রাব্বি, আলিম চৌধুরী সহ আরো অনেকের লাশ। লাশটি উপুর হয়ে পড়েছিল।
ব্লগ নয়, ভালবাসা আর দু চার লাইন কথা
১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বরের সূর্য্যি কেমন
ছিল জানি না।তবে এটা জানি ৩০ লক্ষ শহীদের
রক্ত একত্রিত করলে যতটুকু লাল
হবে নি:সন্দেহে তার চেয়ে বেশি লাল ছিল।
বিজয়ের মাস।সবাই দেশপ্রেমিক। আমার যে বন্ধু গোলাম আযমকে আল্লাহর অলি বলে এখনো বিশ্বাস করে সকালে তাকেও দেখলাম মাথায় লাল সবুজের পতাকা।শুধু মুখ বুঝে সয্য করেছি।কেঁদেছি....
ইনবক্স ভরে গেছে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছায়।আমি কাউকে শুভেচ্ছা জানাই নি। কিছু কিছু বিজয় প্রাণ খুলে উপভোগ করা যায় না।বুকের ভিতর কোথায় জানি ব্যাথা লাগে।
এই দিনে হাজারো মায়ের সন্তান ফিরে এলেও ফিরে আসেনি "শহীদ রুমি"। ফিরে আসেনি ৩০ লক্ষ সন্তান। বাবা,মা,ভাই,বোন....তারা চলে গেছে। ফিরবেনা।অনেক অভিমান তাদের।রেখে গেছে হাজারো স্মৃতি।এক সাগর রক্ত আর একটি দেশ।
বাংলাদেশ
৪৩ বছর পরেও কোমরের ব্যাথায় কষ্ট পান তিনি
"২২শে নভেম্বর দুপুরে হঠাৎ দেখি আমার বাবাকে সাথে করে এক জীপ সৈন্য এসেছে এবং আমাকে খোঁজ করছে। বুঝলাম আমার মুক্ত জীবনের আয়ু আর বেশি নেই। মাকে সালাম করে ওদের সাথে জীপে গিয়ে উঠলাম। জীপে উঠেই এক অসীম সাহস বুঝে এলো। মনের ভেতরে শুধু একটি মুখ ভেসে উঠেছে, তা মুজিবের। একটি মুখ মানুষকে এত শক্তি দিতে পারে তা আগে জানতাম না। মুজিব মানেই তো বাংলা মুখ।"
এরপর সেই বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব সালেহ মোস্তফা জামিলকে নিয়ে হাজির করা হয় তেজগাঁও ড্রাম ফ্যাক্টরির একটি তিনতলা বাড়ীতে। নীচ তলায় মেজর সালিকের অফিস এবং দোতলায় তাদের নির্যাতন কক্ষ। তিন তলায় রাখা হতো বন্দীদের। জামিল ভাইকে নিয়ে রাখা হলো এক রান্না ঘরে। সেখানে আগে থেকেই বন্দি ছিলো আরো পাঁচজন। তাদের মধ্যে একজন উনারই বড় ভাই, পাড়ার চায়ের দোকানের কালু, নিউমার্কেটের কাপড়ের ব্যবসায়ী একজন। বাকী দুইজনের একজন চাকমা এবং অন্যজন এক শিশু মুক্তিযোদ্ধা।
জাতিকে মেধাশুন্য করার ভয়ঙ্কর সেই মিশন..
আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধকে রাজনীতি হিসেবে আখ্যা দেয়াকে কোনভাবেই সমর্থন করতে পারি না। একাত্তরের আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ছিল দীর্ঘদিন যাবত বাঙ্গালীর আপন অস্তিত্ব এবং অধিকার আদায়ের আন্দোলনের চুড়ান্ত রূপ যার পিছনের কারিগরের ভূমিকায় ছিলেন বঙ্গবন্ধু। বাঙ্গালী জাতির মুক্তিসংগ্রামের আন্দোলনকে রাজনৈতিক সীলটা মারার পিছনে জামায়াতীদের দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা কাজ করেছে। তারা সবসময় চেয়েছে আমাদের ইতিহাস বিকৃত করতে। আর এই বিকৃতির পিছনে কারণ একটিই, একাত্তরে নিজেদের কুকর্মের ইতিহাস লুকানোর অপচেষ্টা।
বাবার সার্টিফিকেট
বিজয় দিবসের আনন্দ কিংবা ভাললাগা একজন সাধারণ মানুষের যতটুকু থাকে তার চেয়ে অনেক বেশি থাকে একজন কিশোর মুক্তিযোদ্ধার।যে মুক্তিযোদ্ধার বয়স ছিল ১৯৭১ সালে মাত্র ১২ বছর।এই লেখাট শুধু আবেগের বশে লিখা।বলে কয়ে বাবার প্রতি ভালবাসাটা শুধু লোকদেখানোই।তবু লিখি..... হাজার হোক তিনি আমার বাবা।জন্মদাতা বাবা।একজন দরিদ্র বাবা।যিনি ১০ টাকা, ১৫ টাকা, ২০ টাকার হোমিও ঔষধ বিক্রি করেন।