ইউজার লগইন

Reply to comment

শওকত মাসুম's picture


বইটি অনেকেই পড়েছেন। সিদ্দিক সালিকের উইটনেস টু সারেন্ডার। সিদ্দিক সালিক একজন মেজর ছিলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা, ১৬ ডিসেম্বর আত্মমর্পনের পর যুদ্ধবন্দী হিসেবে ভারত যান। মুক্তি পেয়ে এই বইটি লিখেছিলেন। বইটি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে ১৯৭৭ সালে প্রকাশিত হয়। বলে রাখি সিদ্দিক সালিক বিগ্রেডিয়ার থাকা অবস্থায় ১৯৮৮ সালের ১৭ আগস্ট বিমান দূর্ঘটনায় মারা যান, প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হকের সফরসঙ্গী ছিলেন তিনি।
বলা যায় বইটি একজন পাকিস্তানীর দৃষ্টি দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধকে দেখা। অনেকেই বলে থাকেন বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা চাননি বা স্বেচ্ছায় ধরা দিয়ে দলের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন ইত্যাদি। কিংবা জামায়াতের ভূমিকা নিয়েও অনেকে অনেক কিছু বলেন। বলেন আল বদর-রাজাকার নিয়ে অনেক কথা। অনেক প্রশ্নের উত্তরই পাওয়া যাবে বইটি থেকে।
শুরুটা এরকম। এক অবাঙ্গালি সাংবাদিক শেখ মুজিবুর রহমানের সাক্ষাতকার নিয়েছেন। তাঁর অজান্তেই সাক্ষাতকার রেকর্ড করা হয়। সেই রেকর্ড পরে শোনানো হয় অনেককেই। গোয়েন্দা সংস্থারা বঙ্গবন্ধুর কথাবার্তার আরো একটি গোপন রেকর্ড সংগ্রহ করে। দলের কিছু নেতাদের উদ্দেশ্যে বলা তার এই রেকর্ড চলে যায় গোয়েন্দাদের হাতে।
কি বলেছিলেন বঙ্গবন্ধু? 'আমার লক্ষ্য বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা। নির্বাচন শেষ হতেই ইয়াহিয়ার করা লিগাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার আমি টুকরা টুকরা করে ছিড়ে ফেলে দেবো। নির্বাচন একবার শেষ হলে কে আমাকে চ্যালেঞ্জ করবে?'
ইয়াহিয়া এই রেকর্ড শোনার পর ক্ষিপ্ত হয়ে বলেছিলেন, 'সে যদি আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে তাহলে আমি তাকে ফাঁসিতে ঝুলাবো।'
সিদ্দিক সালিক একাধিকবার বলেছেন যে, যখনই বঙ্গবন্ধুকে ৬ দফা নিয়ে কথা বলতে না করা হতো তখনই তিনি বলতেন যে, 'আমাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যান। আর যদি আমি ৬ দফা নিয়ে না বলি তাহলে আমার দলের লোকেরাই আমাকে মেরে ফেলবে।' সিদ্দিক সালিক বলেছেন, এটা ছিল শেখ মুজিবের এক ধরণের কৌশল। এই কৌশল অনেকবারই করতেন তিনি।
৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে সিদ্দিক সালিক কি লিখেছেন সেটা দেখা যাক। তিনি লিখেছেন, সামরিক সরকার জানতে পারলো যে ৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে পারেন মুজিব। এটা নিয়ে প্রবল উৎকণ্ঠা তৈরি হলো। ৬ মার্চ আওয়ামী লীগ গভীর রাত পর্যন্ত বৈঠক করেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারলো না। ইয়াহিয়া কোনো ঘোষণা না দেওয়ার জন্য মুজিবকে চিঠি লেখেন। একই সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তান সরকারকে সশস্ত্র অবস্থা প্রস্তুত থাকার জন্য বলে দেওয়া হয়। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট জিওসি আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে ডেকে বলে দেন যদি মুজিব স্বাধীনতার ঘোষণা দেয় তাহলে রক্তগঙ্গা বইবে এবং এই দেশে শাসন করার লোকও থাকবে না, শাসকও থাকবে না। ঐদিন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ফারল্যান্ড মুজিবের সঙ্গে দেখা করে বলে দেয়, মুজিব যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে কোনো সহায়তাই পাবে না।
এসব কারণেই ঐদিন মুজিব স্বাধীনতার কোনো ঘোষণা দিতে পারেননি।

জবাব

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.