গৌতম'এর ব্লগ
কাছেদূরের বইমেলা (১)
ঢাকা থাকতে প্রতিদিনই যে বইমেলায় যেতাম, তা নয়; কিন্তু একটা স্বান্ত্বনা ছিল যে, চাইলেই যেতে পারবো। যাওয়া হতো অধিকাংশ দিনই, হয়তো বই কেনা হতো না, দেখা হতো না কারোর সঙ্গেই; কিন্তু মেলা চত্বরে খামোকাই বসে থাকতে ভালো লাগতো, কিংবা অনর্থক ঘুরাঘুরি।
শোনা কথায় বইমেলা: শেষ
গত দুই/তিনদিন ধরে এই সিরিজের লেখা প্রকাশ ধীরগতিতে এগুচ্ছে। গতকাল যে পর্বটি প্রকাশিত হলো, সেটি আরও দুইদিন আগেই লেখা হলেও প্রকাশ করতে মন চাচ্ছিল না। লিখতেও ইচ্ছে করে না। কারণ একটাই। সবাই প্রজন্ম চত্বরের আন্দোলন নিয়ে কথা বলছে, লেখালেখি করছে। সে তুলনায় আমি কিছুই করছি না। ঢাকার বাইরে থাকি- সেটা কোনো কারণ হতে পারে না। এখানেও আন্দোলনগুলোর সাথে একাত্ম আছি- কিন্তু তারপরও সব মিলিয়ে মন সায় দেয় না। মানুষের সামনে এমন কিছু কিছু সময় যখন আর সব কাজ বাদ দিয়ে শুধু একটিমাত্র কাজই করতে হয়। এখন সেই কাজটি হচ্ছে শাহবাগ। আর আমি কিনা শাহবাগ বাদ দিয়ে বসে বসে ব্লগ লিখছি!
শোনা কথায় বইমেলা: ফেব্রুয়ারি ১০
বইমেলা, বই প্রকাশ, বই বিপণন, ব্যবসায়িক সাফল্য ইত্যাদি নানা বিষয় নিয়ে বিডিনিউজে/বাংলানিউজে রাখাল রাহা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ লিখেছেন। বাইরের দেশের প্রকাশনা সংস্থাগুলোর উদাহরণ দিয়ে তিনি বাংলাদেশের প্রকাশনা সংস্থার কিছু বিচার্য বিষয় আলোচনা করার চেষ্টা করেছেন। পাশাপাশি দেশ ও বিদেশের প্রকাশকদের অবস্থার তুলনামূলক আলোচনার পাশাপাশি এ দেশের প্রকাশকদের পূর্বের ও বর্তমান ধারার চিত্রও তুলনা করেছেন। এ আলোচনা থেকে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নিতে পারলেও অন্তত উপলব্ধি করা যায় যে, প্রকাশনা সংস্থাগুলোতে যে ধরনের পেশাদারিত্ব আমরা আশা করি, সেটা বাংলাদেশে অনুপস্থিত বললে অত্যুক্তি হবে না।
শোনা কথায় বইমেলা: ফেব্রুয়ারি ৯
বইমেলা উপলক্ষ্যে সম্ভবত বছর চারেক আগে একটি ওয়েব সাইট প্রকাশিত হয় বেসরকারি উদ্যোগে। সাইটটি তৈরি করেছিলেন আমারই এক পরিচিতজন। এর আগে শুধু বইমেলা নিয়ে কোনো ওয়েব সাইট আমার নজরে আসেনি। ফলে তার তৈরি করা ওয়েব সাইটটি নিয়ে অনেকটাই উচ্ছ্বসিত ছিলাম। তাদের একটা স্টলও বসেছিল মেলা প্রাঙ্গনে- আরও নির্দিষ্ট করে বললে লিটলম্যাগ চত্বরে। সেখানে নতুন আসা বইয়ের নামধাম তোলা হতো। সার্চ করার অপশনও ছিল। সাইটটিতে বইয়ের ক্যাটালগ তৈরি করা হতো ইংরেজিতে, তবে বাংলায় ইমেজ আকারে বইয়ের নাম ও লেখকের নাম থাকতো। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাইট নির্মাতাকে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছিলাম যার একটি হচ্ছে পুরো সাইটটাকে বাংলায় করা আর বইয়ের পরিচিতি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা। শুধু বইয়ের নাম, লেখকের নাম, দাম, ক্যাটাগরি আর প্রচ্ছদ থাকলেই বইয়ের পরিচিতি জানা হয় না। বইটা কী বিষয়ে, সেখানে কী আছে ইত্যাদি বিষয়ও জানা দরকার। প্রিন্ট বা ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় স্পেস বা সময়ের সংকট থাকে, সেখানে না হয় এসব কারণে এতো তথ্য দেয়া সম্ভব হয় না; কিন্তু ওয়েব সাইটে তো আর সেই ঝামেলা নেই!
শোনা কথায় বইমেলা: ফেব্রুয়ারি ৮
বইমেলাতে যাদের বই প্রকাশিত হয়, তাঁরা অন্যের বই কয়টা কিনেন?
প্রশ্নটা ভাবাচ্ছে কয়েকদিন ধরে। কারণ, প্রতি বছর বইমেলাতে প্রচুর বই বের হয়। প্রচুর বই মানে প্রচুর লেখক। বই বিক্রি হয় না বলে একটা অভিযোগ আমাদের সাধারণ ক্রেতাদের প্রতি প্রকাশকরা করে থাকেন। যারা বই লিখেন, তাদের সংখ্যাটা যদি বেশি হয়, তাহলেও, আমার ধারণা, প্রচুর বই বিক্রি হওয়ার কথা। বড় লেখকরা প্রায়শই উঠতি লেখকদের পরামর্শ দেন বই লেখার আগে বেশি বেশি বই পড়তে। আমরা অবশ্য যতো না কিনে বই পড়ি, তার চেয়ে বেশি বই পড়ি ধারদেনা করে। এর বড় কারণ হচ্ছে টাকার অভাব। কিন্তু তারপরও দশটা বইয়ের মধ্যে একটা বই তো কিনে পড়াই যায়। সেই কাজটা আমরা কয়জনে করি? এই ব্যাপারে একটা জরিপ চালানো যেতে পারে। ভাবছি, আগামী বছর একটা ছোটখাটো জরিপ চালাবো এটাকে কেন্দ্র করে।
শোনা কথায় বইমেলা: ফেব্রুয়ারি ৭
আগের পর্বগুলোতে সরাসরিই লিখেছিলাম- বইমেলা আর শাহবাগের মধ্যে এখন আর কোনো পার্থক্য নাই। পত্রপত্রিকাগুলো খবর দিচ্ছে, শাহবাগ থেকে উৎসাহিত হয়ে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে। তার মানে বইমেলা আস্তে আস্তে বাংলা একাডেমী থেকে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। লিখেছিলাম- শাহবাগের একেকটি মানুষ একেকটি বই। তার মানে এরকম লাখ লাখ বই এখন সারা দেশে, প্রতিবাদমুখর। সেই সাথে কিছু প্রশ্নও জাগছে মনে, কেন অন্য শহরের মানুষগুলোর এক বা দুদিন পর থেকে প্রতিবাদ শুরু করলেন? শাহবাগে যেমন প্রতিবাদী মানুষজন রায়ের ঘণ্টাখানিকের মধ্যে প্রতিবাদ করতে দাড়িয়ে গেলেন, তেমননি কেন হলো না অন্য শহরগুলোতে? সবকিছুকে ঢাকাকে অনুসরণ করা কি আমাদের অভ্যাসে পরিণত হচ্ছে?
শোনা কথায় বইমেলা: ফেব্রুয়ারি ৬
কিছু কিছু সময় আসে যখন স্বাভাবিক নিয়মের ধারা বাদ দিয়ে উত্তুঙ্গ বিষয়টিকে আঁকড়ে ধরতে হয়। সেই সময়টাই চলছে এখন। যদিও এ ধরনের সময়ের কিছু দুর্বলতা থাকে- মানুষের একদিকের মনোযোগের ফাঁকে অন্য অনেক বড় বড় কাজ বা কুকাজ করে ফেলা যায়- সেরকমটা হচ্ছে কিনা কে জানে! এই মুহূর্তের মনোযোগের বিষয় সবটুকু কেড়ে নিয়েছে শাহবাগ- মানুষজন যেখানে দিনের পর দিন মিছিল দিয়ে স্লোগান দিয়ে আন্দোলন করে দিনাতিপাত করছে- সেখানে বইমেলা নিয়ে সিরিজ লেখা এবং তা পড়া এবং তা নিয়ে কমেন্ট করা বিসদৃশ লাগার কথা। ভেবেছিলাম বন্ধ করে দিবো- কিন্তু মনে পড়লো ফেব্রুয়ারির ৪ তারিখের লেখাটির কথা। সেখানে স্পষ্টভাবেই বলেছিলাম- শাহবাগের একেকটি মানুষ একেকটি বই। শাহবাগের একেকটি মানুষ একেকটি বইমেলা। সেদিনের পর থেকে শাহবাগে ‘ছাপানো নয় কিন্তু জীবন্ত’ এরকম বইয়ের পরিমাণ বেড়েছে বহুগুণ। এরকম নতুন নতুন বই এসেছে অভাবিত পরিমাণে। সেদিনের পর থেকে শাহবাগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রতিটা মিনিটের বইমেলা। সুতরাং তাদেরকে নিয়ে লিখলেও আদতে বইমেলা নিয়েই লেখা হয়।
শোনা কথায় বইমেলা: ফেব্রুয়ারি ৫
কখনও কখনও অনিবার্য কারণে থেমে যায় বাধ্যতামূলক কোনো সিরিজ;
অনিবার্য-কারণটুকুরও নাম দিয়ে গিয়েছিলেন জহির রায়হানেরা- 'সময়ের প্রয়োজনে'।
বইমেলার দিন শুরু হয়েছিল আজ প্রবল হতাশায়-
শেষ হচ্ছে প্রবল ক্ষোভ নিয়ে- বইমেলা আজ চলে গেছে বাংলা একাডেমী থেকে শাহবাগে।
রক্তঋণ শোধ করতে গিয়ে নিজেদের আমরা প্রমাণ করে চলেছি অথর্বতার সংজ্ঞায়
একফালি প্রতিবাদ তাই আজ বড় শক্তি-
প্রতিবাদী মানুষ মানেই একেকটি প্রতিবাদী বই
প্রতিবাদী মানুষ মানেই একেকটি প্রতিবাদী বইমেলা
'শোনা কথায় বইমেলা' সিরিজে আজ পড়ছি অসংখ্য ব্লগ- যারা গিয়েছে শাহবাগে
'শোনা কথায় বইমেলা' সিরিজে আজ দেখছি অসংখ্য ছবি- যারা তুলেছে শাহবাগে
'শোনা কথায় বইমেলা' সিরিজ আজ অনিবার্য প্রতিবাদের সমর্থনে বিরত।
'শোনা কথায় বইমেলা' সিরিজ আজ চলে গেছে শাহবাগ মোড়ে, সেখান সে বসে আছে প্রতিটি প্রতিবাদী মানুষের পাশে- হাতের মুঠোয় হাত রেখে।
সুতরাং আপনার আজ এই সিরিজ পড়ার দরকার নেই
এই বইমেলার সবগুলো গুরুত্বপূর্ণ বই আপনি পাবেন এখন শাহবাগে- বইমেলায় যাওয়ার চেয়ে আপনার এখন শাহবাগে যাওয়াটা জরুরি।
শোনা কথায় বইমেলা: ফেব্রুয়ারি ৪
ব্লগে লেখালেখির একটা বড় সুবিধা হচ্ছে যে, মানুষজন ব্লগের লেখা এবং লেখকের ব্যাপারে কী ভাবছে- তা সহজেই জানা যায়। এখানে ভুংভাং করে পার পাওয়ার কোনো উপায় নেই। পত্রিকায় একটি কলাম লিখলে সেই পত্রিকার তালিকাভুক্ত কোনো কলামিস্ট যদি ভুলত্রুটি ধরিয়ে দেয় বা প্রশংসা করেন, তাহলে হয়তো কলাম লেখকের একটি নির্দিষ্ট লেখার পক্ষে বা বিপক্ষে দুএকটা ছত্র থাকতে পারে। না হলে কলামিস্ট যা লিখবেন, তা-ই সই। আজকাল অবশ্য পত্রিকাগুলোর ইন্টারনেট সংস্করণে মন্তব্য করা যায়- কিন্তু তাও মডারেটেড। পত্রিকা কর্তৃপক্ষের পছন্দ না হলে অনেক মন্তব্য প্রকাশ হয় না। আমি নিজে একটি বড় পত্রিকার কয়েকটি খবর ও কলামে একসময় কিছু মন্তব্য করেছিলাম- কিন্তু অধিকাংশই প্রকাশ হয় নি। কলামিস্টের ভুল ধরিয়ে দেয়া মহাপাপ! পত্রিকার আদর্শের বাইরে মন্তব্য করা গর্হিত কাজ!
শোনা কথায় বইমেলা: ফেব্রুয়ারি ৩
বইমেলা নিয়ে ফেসবুকে মানুষের উচ্ছ্বাস ভালোলাগে। কারও নতুন বই বেরুচ্ছে, কেউ বইমেলা থেকে কিনে এনেছেন গাদাগাদা বই, কেউবা শুধুই বেড়াতে গিয়েছেন- দেখা হয়ে গেছে নানান জনের সাথে। বছর দশ-পনের আগেও মানুষ কি বইমেলায় নিছক আড্ডা দিতে যেত? আমার অভিজ্ঞতা তেমনটি বলে না। তখন মানুষজন যেতেন একটু ঘুরতে, দুয়েকটা বই কিনতে, এই ফাঁকে হয়তো পরিচিত কয়েকজনের সাথে দেখা হয়ে যেত। লেখকদের কথা অবশ্য আলাদা, তারা অপর লেখকদের সাথে আড্ডা দিতে যান, অটোগ্রাফ দেবার জন্য যান; কিন্তু সাধারণ মানুষদের জন্য বইমেলা একটা আড্ডার স্থান, সামাজিকতার স্থান হিসেবে দিন দিন বইমেলাটা একটা দারুণ জায়গা হয়ে যাচ্ছে। বিষয়টা দারুণ লাগে, কারণ এই ধরনের আড্ডাতে বই-ই শেষ পর্যন্ত মুখ্য বিষয় হয়ে দাড়ায়। অনেকের প্রতিদিন বই কেনার সামর্থ্য থাকে না, কিন্তু বইমেলায় না গেলে কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা লাগে, সন্ধ্যেটা কাটতে চায় না- বইমেলা যে এই আকুতিটা তরুণপ্রাণে সৃষ্টি করে দিয়েছে- এ কি কম গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার!
শোনা কথায় বইমেলা: ফেব্রুয়ারি ২
স্মৃতি শুধু সাদামাটা প্রতারণাই করে না; মারাত্মকভাবেও প্রতারণা করে।
গতকালের শোনা কথায় বইমেলায় কার কার সাথে দেখা হলো, কী আলোচনা হলো তার একটি বিতং বর্ণনা দিয়েছি। কিন্তু বইমেলা থেকে চলে আসার আগে রাসেল ভাইয়ের সাথে যে দেখা হলো, তা কী করে যেন বেমালুম ভুলে গিয়েছিলাম। রাসেল ভাইয়ের সাথে আলাপ হলো টুকটাক, সাথে ভাবী ছিলেন। কিন্তু পুরো ঘটনাটা কী করে যেন মনেই আসেনি লেখাটি তৈরি করার সময়। মনে পড়লো আজ দুপুরে- ঘুম থেকে উঠা পর। এ সময়ে হঠাৎ করে মনে পড়ার কোনোই কারণ নেই, কিন্তু যে রহস্যজনক কারণে ভুলে গিয়েছিলাম, ঠিক সেই রহস্যজনকভাবেই আবার এটি মনে পড়ে গেল।
আজকে বইমেলা যাওয়ার ইচ্ছে ছিল। রাতের ট্রেনে যাচ্ছি রাজশাহী- ভাবলাম বিকেলবেলা ঢু মারা যাবে। কিন্তু বিকেলেই চলে এলেন কয়েকজন অতিথি। ফলে যাওয়া আর হলো না। গতকাল অবশ্য শান্ত ভাইয়ের সাথে কথা হচ্ছিল এ নিয়ে- তিনি বললেন, রাতের ভ্রমণ- ধুলাবালি খেয়ে সারারাত ভ্রমণ করার চেয়ে কিছুটা বিশ্রাম নেয়া ভালো। তাঁর কথা একদিক দিয়ে ঠিক- কিন্তু বইমেলার জন্য আকুলিবিকুলিটা তার চেয়েও বড় হয়ে দেখা দেয়।
শোনা কথায় বইমেলা: ফেব্রুয়ারি ১
থাকি ঢাকার বাইরে। আগে মতো আর প্রতিদিন বইমেলায় যাওয়া হবে না। এ এক বড় দুঃখ!
১৯৯৩ সাল, নবম শ্রেণীতে উঠেছি। পিসিরা খ্যাপায়- নাইনে নাকি ‘লাইন’ করে। শুনে কিছুটা লাজরাঙা হই; কৈশোর বয়স। দাড়িগোফ উঠতে শুরু করেছে। আভাস দিচ্ছে বড় হওয়ার কিংবা বড়ত্বের। পিসিদের কথার প্রবল প্রতিবাদ করি- না, না, লাইন-টাইন করবো না। তাহলে কী করবি?- পিসিদের প্রশ্নের উত্তরে বলি, কবিতা লিখবো। ইতোমধ্যে বেশ কিছু ছড়া লিখেছি, আস্তে আস্তে ভাবছিলাম কবিতার দিকে যাবো কিনা। কবিতা আমার কাছে তখনো বড়দের ব্যাপার। ভেবেছিলাম লাইনের বদলে পিসিদের কবিতার দিকে ডাইভার্ট করা যাবে; কিন্তু শুনে তারা বললো- মানুষ নাকি প্রেমে পড়লে কবিতা লিখে!
তাই কি?
নিতান্তই সহজ-সরল ::: ৩
আঙ্গুল-কিবোর্ড অভিমান!
অনেকদিন ব্লগ লেখা হয় না। বিষয়টা এমন না যে, ব্লগ লিখে অনেক কিছু করে ফেলছি। কিংবা ব্লগে লিখে দুনিয়াকে উল্টাতে না পারলেও অন্তত কিছুটা সুড়সুড়ি দিতে পারছি। মাঝেমাঝে এমনও মনে হয়, মানুষ নিজের সুখের জন্য যেমন বিকেল বেলা চা খেতে খেতে কান চুলকায়, আমার ব্লগ লেখাটাও তেমনি। এতে কানের একটু আরাম হয় সত্যি, কিন্তু অন্যের তো দূরের কথা, নিজের কানের কোনো উপকার হয় না- বরং মাঝখান থেকে কটনবাড কেনাবাবদ কয়েকটা পয়সা লস! এই লেখালেখি না করতে পারাটাকে অনেকে কাব্যিকভাবে ‘রাইটার্স ব্লক’ বলে- আমার ক্ষেত্রে আবার সেটাও সত্যি না- কারণ ব্লগে না লিখলে নানা কারণে নানাভাবে নানাকিছু লিখেই যাচ্ছি। রাবিশ রাবিশ রাবিশ অসংখ্য রাবিশ লিখে একসময় উপলব্ধি হয়- রাবিশ লেখালেখিই সম্ভবত আমার যোগ্যতা- কারও কারও ক্ষেত্রে রাবিশ বলাটা অবশ্য তাদের যোগ্যতা। মাঝে মাঝে অবশ্য হালকা বাতাসের মতো কাব্যিক চিন্তা পাতলা চুলের ফাঁক দিয়ে তালুতে/টাকে আঘাত করে- কোনো কারণে কি আঙ্গুল আর কিবোর্ডের মাঝখানে অভিমান বা দ্বৈরথজাতীয় ঘটনা ঘটেছে?
প্রজন্মান্তরের সমস্যা?
পেচ্ছাপেছি: ইহা কীভাবে খায়?
১. দুনিয়াতে দেখার মতো অনেক মজার জিনিস আছে- সমস্যা হইলো কোনটা মজার আর কোনটা অ-মজার সেইটা পার্থক্য করার ক্ষমতাটা সবার থাকে না। যানজটের কারণে আজকে যদি মধ্যবাড্ডা এলাকাটা বন্ধ করে দেয় সরকার বা সিটি করপোরেশন, তাহলে হয়তো অধিকাংশ মানুষ বিরক্ত হবে, কিন্তু আমার মজা পাওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। কারণ আমাকে প্রতিদিন ঘণ্টাখানিক যানজট ঠেলে ওই এলাকাটা পার হতে হয়; দিন দিন বিরক্ত হতে হতে এখন এমন একটা স্যাচুরেশন পয়েন্টে পৌঁছে গেছি যে, মজা পাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। এই লেখায় যদি আপনারা কমেন্ট করেন, তাহলেও যেমন মজা পাবো, কোনো কমেন্ট না করলেও কিন্তু একইভাবে মজা পাবো! সুতরাং আপনি কমেন্ট করবেন কি করবেন না, সেইটা আপনার ভাবনা! আমার মজা পাওয়া থেকে আমাকে আপনি কোনোভাবেই বিরত রাখতে পারবেন না।
শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি নিয়ে এতো জটিলতা কেন?
গত সেপ্টেম্বরের ২ তারিখে বেসরকারি কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ঢাকায় এসে এমপিওভুক্তির দাবিতে পুনরায় আন্দোলন শুরু করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ঢাকায় আন্দোলন করেছিলেন এবং সেসময় বিভিন্ন ধরনের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের আন্দোলন সেপ্টেম্বরের ১ তারিখ পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়েছিল। সম্ভবত তাঁদের আশা ছিল- সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এমপিওভুক্তির দাবি মেনে নেবে। রাস্তাঘাট অবরোধ করে বা এ ধরনের কর্মসূচি দিয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে আন্দোলন করাটা আইনের চোখে অপরাধ কিনা জানি না; তবে মানুষজন আজকাল এ ধরনের কর্মসূচি ভালো চোখে দেখে না। অন্যদিকে এদেশে যতোক্ষণ না মানুষজন রাস্তায় নামছে ততোক্ষণ তাদের কথা সরকার কানে তুলে না। সেপ্টেম্বরের ১ তারিখ পর্যন্ত স্থগিত আন্দোলন তাই স্বাভাবিকভাবেই দুই তারিখ থেকে নতুনভাবে শুরু হয়েছে। তার বেশ কিছু আগের আন্দোলনে শিক্ষকরা রাস্তা অবরোধ করেছিলেন শাহবাগে। সরকারের পুলিশ বাহিনী বীরত্ব দেখিয়েছিল শিক্ষকদের পিটিয়ে। অবশ্য এবার পুরোপুরি রাস্তা অবরোধ না করে শিক্ষকরা প্রেসক্লাবে রাস্তার পাশে শুয়ে-বসে আন্দোলন চালাচ্ছেন। সরকার তাঁদের দাবি কতোটুকু শুনছে বা শুনলেও আদৌ পাত্তা দিচ্ছে কিনা জান