কথা
আমার মৃত্যু চাই আমি
কোন নির্জন বনভূমিতে,
অসীম নীরবতার মাঝে
কিছু না বুঝে চমকে ওঠা
সবুজ ঘাসের মেঝেতে ।
কেউ জানবেনা, কাউকে সইতে হবে না
এ ঝঞ্ঝাট!!
আমি একাই বইবো আমার মৃত্যুভার ।
আমার অবমুক্ত আত্মা
হয়তো মুখে কিছু কাল্পনিক কষ্টের ভার চাপিয়ে
বহন করবে আমার শারীরিক খোলস ।
আমি চাইনা, কেউ আমার গল্প করুক অন্য কারো ভ্রু কুঞ্চিত মুখের সামনে ।
কেউ ফেলুক দীর্ঘশ্বাস
কেঁপে কেঁপে ওঠা অক্সিজেনবাহী বাতাসে ।
আমি সবার অলক্ষে চলে যেতে চাই
অনেক অনেক দূরে ।
যেখানে আমাকে খুঁজতে যেতেও কাউকে আলসেমিতে পেয়ে বসবে ।
তখন সবাই বলবে, ধুর চাই!!
খুজে পাওয়ার থেকে ভুলে যাওয়া সহজ ।
আমি এভাবেই হারিয়ে যেতে চাই ।
কত ভীষনভাবে যে চাই!!
কবিতাটা লিখছিলাম ১১’র সেপ্টেম্বরের দিকে । যদিও জানি এটা আদৌ কবিতা হয়নি । আসলে এটা ছিল একটা অভিমানি, রাগী মেয়ের মনের কথা!! তখনো আমার বাবুটা হয়নি । আমি এক বিচিত্র মানসিক অবস্থায় দিন পার করি । এই সবকিছু ভালো লাগে । আবার হয়তো বিরক্ত হয়ে যাই অল্প কিছুতেই । সকালে মন ভালো । মহানন্দে সবাইরে ফোন দিয়ে কথা বলতেছি । সন্ধায় কি হইল কে জানে, যত দুঃখের কথা সব মনে পড়ে গেল । দুনিয়ার সবাইরে মনে হইল আমার শত্রু ।
অবস্থাটা ঠিক শ্রাবন মাসের মত, এই বৃষ্টি ...... এই রোদ ......... এই মেঘ । পরে জেনেছি এটা একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া অন্তঃসত্ত্বা মেয়েদের জন্য । এর ডাক্তারি নাম আছে অনেক । আছে কিছু সুনির্দিষ্ট কারন ।
ইন্টারনেট ঘেটে জানলাম প্রতি দশজন মেয়ের মধ্যে একজন গর্ভকালীন বিষন্নতায় আক্রান্ত হয় । এই একজন কিন্তু কঠিন ডিপ্রেশনে ভোগে । যেটার চিকিৎসা করা হয় । আর বাকি নয়জন সাধারন বিষন্নতায় আক্রান্ত হয় । একটু পরামর্শ, স্নেহ, সহানুভূতি আর অনেক আদর পারে একজন অন্তঃসত্ত্বা মেয়ের মন ভালো করে দিতে ।
আমার এক কাকি একটু বয়স্ক হয়ে বাচ্চা নিছিল । চাকরিজীবি সেই মহিলাকে ওইসময় আল্লাদ করতে দেখে আমরা হাসতাম । স্বাভাবিক মানুষটা হঠাত করে ছেলেমানুষি শুরু করে দিছিল । কাকা খুব বিরক্ত হত । কাকি যত অসুস্থ হয়ে পড়ছিল কাকা তত বিরক্ত হচ্ছিল । তখন অতটা ভাবিনি । পরে নিজের ক্ষেত্রে বুঝতে পারছি । মেয়েরা এইসময় যে অস্থির আচরনটা করে তার জন্য দায়ী তার হরমন ।
www.babycenter.com বলতেছে
“experts now believe that the rapid increase in hormone levels at the start of pregnancy can disrupt brain chemistry and lead to depression.”
--------------------------------------------------------------------------------------------------
কবিতা একটা দিলাম উপরে কিন্তু আজকে ঠিক এইটা আমার লেখার বিষয় না । একটা ছোটগল্প দিতে চাইছিলাম । শেষ হয়নাই । ব্লগে ঢুকে মীরের নতুন লেখার প্রথম প্যারাতেই যা দেখলাম!! দেখে মনে হল , এই ছেলেটা কি আমার নোটখাতায় লেখা ওই কবিতা দেখে ফেলেছে!! ( কিন্তু এটা তো অসম্ভব, না? ) একরকম চিন্তা!! কিন্তু আমি এইধরনের চিন্তা করতাম বাবু হবার সময় । ওইসময় মনের কোন ঠিক ঠিকানা থাকে না ।
মীরের কি হল?
যাই হোক, একজন লোককে আমি খুব ভালোবাসি । উনি বয়স্ক এবং রাগী আর গম্ভীর । কিন্তু উনি যে খানিক্টা ছেলেমানুষ এটা জানেননা । বেশিরভাগ সময় রাগী রাগী একটা ভাব ধরে থাকেন । খোচা দিয়ে কথা বলেন । আবার খুব মায়াময় কিছু দেখলেই ওনার চোখ দিয়ে পানি বের হয় । কাউকে ভালোবাসেন এটা মরে গেলেও মুখে প্রকাশ করবেননা । লোকটা আমার শশুর! উনি খুব অসুস্থ । বুকের ভিতর একটা চাপ কষ্টবোধ হচ্ছে । একটু ভয় হচ্ছে । আল্লাহ নিশচই ওনাকে সুস্থ করে দেবেন ।
আমার শশুর খুব খুব ছোটবেলায় তার মাকে হারিয়েছিলেন । উনি এজন্য কাউকে মা বলে ডাকতে শেখেননি । তবে খুব ভালোভাবে ওনাকে দেখলে, মনে হয় উনি খুব স্নেহের পাগল । কেউ তাঁকে ভালোবাসে এটা বুঝলে তার জন্য ব্যাস্ত হয়ে পড়েন ।
ওনার সুস্থতা কামনা করছি মনে প্রানে ।
বেশি কিছু লেখার মন নেই । একটু বাবুর কথা বলি , সে নতুন অনেক কিছু করতে শিখেছে । উপুর হওয়া , পা টেনে এনে সেটা খাওয়ার চেষ্টা করা, আমাদের দৃষ্টি আকর্ষন করা । দিনগুলো গত জীবনের থেকে অনেক ভালো কাটছে । বাবুর ভবিষ্যত নিয়ে টেনশন করতে চাইনা । কিন্তু অজান্তেই করে ফেলি । কি আর করা, আম পাব্লিক তো!!
বেঁচে আছি । ভালো আছি ।
দারুণ লাগলো পড়তে
লিজা যে ভালো লেখে এটা সম্ভবত ব্লগের সবাই জানে। তাই সেটা আমি নতুন করে বলবো না। কিন্তু মেয়েটি অনেক কম লেখে। হয়তো বাবুটা তার অনেক সময় কেড়ে নেয়। তবুও লেখালেখির জন্য দিনে-দুইদিনে একটা নির্দিষ্ট সময় বের করে নিতে তাকে আমি অনুরোধ করবো। কারণ, নাহলে ওর নিজের প্রতিভার ওপর অবিচার করা হয়ে যাবে।
ওয়েল কবিতাটা সুখপাঠ্য। "তখন সবাই বলবে, ধুর ছাই!!"- এরকম একটা পুরোদস্তুর লোকমুখে প্রচলিত কথাকে সিরিয়াস একটা কবিতার ভেতর এত সাবলীলভাবে ব্যবহার করার জন্য কবিতা সম্পর্কে যে সেন্স দরকার, সেটা কবির আছে। আমার সর্বাঙ্গীন শুভকামনা রইলো তার প্রতি।
আর শ্বশুর সম্পর্কে মনোভাবটাও প্রশংসার দাবিদার। পিচ্চির হাসিখুশি ছবিটা হঠাৎ করে দেখলে যে কারুরই মন ভালো হয়ে যাবার কথা। তার পা টেনে এনে খাওয়ার চেষ্টা করার কথা পড়লে অজান্তেই হাসি চলে আসে নিজের মুখে।
সো সবিমিলিয়ে এটা শোকেসে তুলে রাখার মতো একটা লেখা। বহুদিন পর একটা নিপাট ব্লগপোস্ট পড়লাম। ভালো লেগেছে সেটা আলাদা করে বলার দরকার মনে করছি না।
লিজা, আশাকরছি তোমার শ্বশুর নিশ্চয়ই সুস্থ হয়ে যাবেন।
লেখা ভালো লাগলো। ভাল থেকো
লেখার শুরুতে আমিও চমকে উঠেছিলাম...
মীরের পাহাড়ের কোলে আত্মহণনের লেখাটা মনে হলো... কী আশ্চর্য তাইনা ?
আপনার বাবুটা ভালো ভাবে বেড়ে উঠুক।
শ্বশুর সুস্থ হয়ে উঠুক দ্রুত।
লেখা ভাল্লাগছে, প্রত্যেকটা অংশই আলাদা আলাদা দৃষ্টিকোণ থেকে।
বাবুটার জন্য অনেক অনেক আদর আর শুভকামনা।
ভাল থাকুন, আপু। অনেক ভাল। প্রতিটি দিন, প্রতিটি ক্ষণ।
লেখাটা দারুন লাগলো।
আশা করছি তোমার শ্বশুর ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ঊঠবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে
মন্তব্য করুন