আজকের ম্যাচ নিয়ে ভাবনা
১.
বাংলাদেশের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ আজকেরটা।
আয়ারল্যান্ড ইংল্যান্ডকে হারিয়ে হিসেব একটু ওলট-পালট করে দিলেও, বলা যায় যে অঘটন বারবার ঘটাতে পারবেনা তারা। ঐদিকে গ্রুপের সবচেয়ে শক্তিশালী ভারতের সাথে এক পয়েন্ট নিয়ে রাখাতে, আয়ারল্যান্ডের সাথে পয়েন্ট খোয়ানোর পরও ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে সুবিধাজনক অবস্থায় থাকবে ইংল্যান্ড, যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে তারা হেরে না বসে, এবং বাস্তবে সেটার সম্ভাবনও খুব কম। সেদিন দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে পড়ায় দেখা গেছে দিনে দিনে কতটা অসহায় একটা দলে পরিণত হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ধরা যায় যে এই গ্রুপে ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড সম্ভবত ১১,১০, ৭ পয়েন্ট নিয়ে খেলা শেষ করবে। বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজের আজকের ম্যাচের হিসেব বাদ দিলে, বাকী দলগুলোর সাথে খেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও বাংলাদেশ, উভয়েই সম্ভবত ৪ পয়েন্ট করে উঠিয়ে আনতে পারবে । ধরে নিলাম ইন্ডিজ আয়ারল্যান্ডকে হারাবে, আর বাংলাদেশও নেদারল্যান্ডের সাথে জিততে পারবে। অঘটন সব ম্যাচে ঘটেনা। তাই আয়ারল্যান্ডেরও ৪ পয়েন্ট নিয়েই শেষ করার সম্ভাবনা বেশি, অথবা আয়ারল্যান্ড ২, নেদারল্যান্ড ২।
সে হিসেবে আজকের ম্যাচে বাংলাদেশ বা ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে যে দলটি জিতবে তাদের ৪র্থ দল হিসেবে ৬ পয়েন্ট নিয়ে কোয়ার্টারে চলে যাবার সম্ভাবনা খুব জোরালো এখনও। সম্ভবত এই ম্যাচটাই গ্রুপ এ'র সবচেয়ে পিভোটাল।
২.
ইতিহাস বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মূল শক্তিশালী দলের সাথে আমাদের রেকর্ড খুব একটা ভালো না। কয়েকটা ম্যাচের স্কোরে চোখ বুলিয়ে দেখলাম, অধিকাংশই ২০০ এর নিচে। তবে আশার কথা হলো, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মূল শক্তিশালী দলের সাথে আমরা শেষ যখন খেলেছি, অর্থাৎ ২০০৭ বিশ্বকাপে, স্লো উইকেটে মাত্র ১৩১ রানে অলআউট হয়ে গেছে আমাদের দল। ৯৯ রানে হেরেছে। তবে আশার কথা দল এখন সম্পূর্ণ ভিন্ন, সেই ৫০ এর মধ্যে ৫ উইকেটফারিয়ে প্রতিপক্ষ বোলারদের মধ্যে গা ছাড়া ভাব এনে দেয়া, সেটার সুযোগে ৬ষ্ঠ বা সপ্তম জুটিতে পাইলট/সুজনদের ৩০-৪০এর ফাইটিং ইনিংস খেলা -- বাংলাদেশ ক্রিকেটের সেই তামার যুগ শেষ। এখনও স্বর্ণযুগ এসেছে এমনটা বলা যাবেনা, তবে যে ধাতুর যুগ সেটা আগের চেয়ে অনেক চকচকে। তাই অতটা হতাশ হচ্ছিনা।
তবে এটুকু বোঝা যায়, ওয়েস্ট ইন্ডিজ টাইপ "পাওয়ার" বোলিংসমৃদ্ধ দলের সামনে বাংলাদেশ দল মনোবল হারিয়ে ফেলে। সেজন্যই খেলতে হবে একটু সাবধানে। সাধারন হিসেবে টসে আজ জেতার কথা না সাকিবের, একটানা তিনবার টসে জেতার চান্স কম। তবে গত ম্যাচের মতো নিজেই কয়েন ছুঁড়লে একটা চান্স আছে। কয়েন ছুঁড়ে আমি নিজেও যে পিঠটি ফেলতে চাই সেটাকে ১০ বারের মধ্যে ৮ বার ফেলতে পারি, বুড়ো আঙুল থেকে যে জোরটা দিয়ে কয়েনকে উপরে ঠেলে দিতে হয়, সেটা আংুলের ডগায় এ্যাডজাস্ট করে ফেলতে পারলেই হয়। স্কুল লেভেলের ক্রিকেট ক্যাপ্টেনরাও এই প্র্যাকটিসটা করতো দেখতাম, যদি কোনো চান্সে আম্পায়ার তাকে টস করতে দেয় সেই আশায়। আমাদের সাাকিবও নিশ্চয়ই এক্সপার্ট। টসে জিতলে ব্যাটিং নেয়াই উচিত হবে। ডে-নাইট ম্যাচে পরে ব্যাট করা দল এমনিতেই ২০-২৫ রানের একটা অফসেটে ভোগে। যত আলোই থাকুক রাতের চেয়ে বিকেলে মনোযোগ বেশী থাকে, আর ক্রিকেটে ব্যাটিংয়ের মনোযোগটা অনেক বেশী জরূরী। একটা ভুল ব্যাটসম্যানকে সম্ভাব্য ১০০ রান থেকে বঞ্চিত করতে পারে, যেখানে বোলারকে বড়জোর ৬ রানের একটা ভোগান্তি দেয়। আর তাছাড়া রাতের স্টেডিয়ামে পঞ্চাশ হাজার জ্বলজ্বলে চোখ, গমগম গর্জন, চারদিক থেকে ঘেরাও করে আটকে ফেলার মতো একটা দমবদ্ধ পরিবেশ -- সেটা প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের চাপে ফেলবে নিশ্চিত।
৩.
আগে ব্যাট করলে বাংলাদেশকে গত দুই ম্যাচের স্ট্রাটেজী থেকে বের হয়ে আসতে হবে। স্লো উইকেট, পেস বলের লিফট ভালো হবেনা, পাওয়ারপ্লে-১ এর সময়ে লফটেড শটে ক্যাচ উঠতে পারে সহজেই। গত ম্যাচেও আয়ারল্যান্ডের সাথে কয়েকটা সেরকম ক্যাচ উঠেছিলো প্রথম পাঁচ ওভারেই, ভাগ্য ভালো ছিলো তামিম-ইমরুলের, জায়গামতো ফিল্ডার ছিলোনা। আজ শুরু থেকে ওভাবে মেরে খেলার দরকার নেই। বিশেষ করে ইমরুলকে ইনিংস টেনে নিয়ে যেতে হবে অনেকদূর। এই মাঠে ২৫০ই যথেষ্ট, প্রথম দশ ওভারে ৮০/৯০ এর ঘরে চলে গিয়ে কয়েকটা উইকেট হারানোর কোনো প্রয়োজন নেই।
আমার মতে ২০০ এর মধ্যে ৩ এর বেশী উইকেট যাতে না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ৪০ ওভারে ২০০ রান ২ বা ৩ উইকেট খুঁইয়ে -- এটা হতে পারে জেতার জন্য খুব আদর্শ অবস্থা। এজন্য দরকার একটা বড় পার্টনারশীপ, ভালো রানিং বিটউইন দ্য উইকেটকে ব্যবহার করে যেটা গড়া সম্ভব। এজন্য সাকিব-জুনায়েদ খুব ভালো পছন্দ, ওদের এক এক করে রান নেয়া আর স্ট্রোকের জোর -- দুটো গুণই ভালো। যেজন্য স্যামিকে বাউন্ডারিতে কিছু বাড়তি ফিল্ডার রাখতে হবে, আর সেটার সদ্ব্যবহার করতে হবে খুচরো রান নিয়ে। স্লো উইকেট, তাই প্রচুর সংখ্যক খুচরো রানের বিকল্প নেই। আগের ম্যাচে রকিবুল-মুশফিকের ঐ খুচরো রানের জুটিই আমাদের বাঁচিয়েছিলো, ২০০৭ এর বিশ্বকাপেও আয়ারল্যান্ডের সাথে প্রায় একইরকম অবস্থা ছিলো আমাদের, ১৬৯ রানে প্যাকড। গত ম্যাচের সাথে ৩৬ রানের যে পার্থক্য সেটা মূলত ২০০৭ এর ম্যাচে ৫০ ও করতে পারা কোনো পার্টনারশীপ না থাকার কারণেই। আজকের স্লো উইকেটেও বড় পার্টনারশীপের বিকল্প নেই। বলে দেওয়া যায় আগে ব্যাটিং নিয়ে ১০ থেকে ৪০ ওভারে একশোর বেশী একটি পার্টনারশীপ থাকলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবে জিতবে।
আশরাফুল যদি খেলে, যদিও আমি পক্ষপাতি না এইজন্য যে রিয়াদের স্পিনটা একটু দ্রুতগতির (আফ্রিদির মতো), সাকিব-রাজ্জাক-নাঈম ত্রয়ীর স্লো স্পিনে অভ্যস্ত হয়ে পড়া ব্যাটসম্যানদের রিয়াদই ভোগাতে পারবে বেশী। তাছাড়া, আশরাফুল যদি কোনোভাবে পোলার্ডের সামনে পড়ে, তবে এক ওভারই আজকের ম্যাচের সব নির্ধারন করে দিতে পারে।
তারপরও উইনিং কম্বিনেশন রাখার দায়ে যদি আশরাফুল নামেও, তবে তার পজিশনটা একটু ডায়নামিক রাখতে হবে। অর্থাৎ। ৫ম উইকেট যদি থার্ড পাওয়ারপ্লের মধ্যে বা সেটা শুরু হবার এক দুই ওভার আগে পড়ে, তাহলে সাত নম্বরে আশরাফুল ঠিক আছে। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত যদি থার্ড পাওয়ারপ্লের বেশ আগেই ৫ম উইকেট পড়ে যায়, তাহলে আমি বলবো নাঈমকে ৭ নম্বরে নামাতে। ধরে খেলার যোগ্যতা আশরাফুলের নেই, দলের ক্রিটিকাল সময়ে দশ ওভার খুচরো রান নিয়ে কাটিয়ে আবারো ভিত গড়ে দেয়ার কাজ সে কখনই করেনি, বরং দুঃসময়ে নেমে একটা দুটো চার মেরে আউট হয়ে কফিনের শেষ পেরেকটা ঠুকে দেয়াতেই তার পারদর্শিতা বেশী। গত ম্যাচেও মুশফিক যখন আউট হয় তখনও বাংলাদেশের ২৫০ এ যাবার অবস্থা ছিলো, হাতে ১৭ ওভার, ৫ উইকেট। আশরাফুল এসে আউট হয়ে প্যানিকটা চুড়ান্তে নিয়ে গিয়েছিলো। গতকাল কানাডার হয়ে যে কাজটা করলো চিমা।
থার্ড পাওয়ারপ্লে আমার মতে ডিফল্টে মানে শেষ ৫ ওভারে নেয়াই ভালো। কারণ, আজকের ম্যাচটায় বিশাল স্কোর টার্গেট করার দরকার নেই। বরং বিশাল স্খোরের স্বপ্ন নিয়ে যাতে নড়বড়ে একটা টোটাল নিয়ে ফিরতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা জরূরী। থার্ড পাওয়ার প্লের জন্য সব ফিল্ডিং সাইডই দলের ভয়াবহতম প্লেয়ারদের ওভার জমিয়ে রাখছে। কাজেই উইকেট কম খুইয়ে থাকতে পারলে থার্ড পাওয়ারপ্লের আগের ওভারগুলোতে (মানে ৪০~৪৫ওভারে) এমনিতেই যথেষ্ট রান নেয়া যাবে।
সবচেয়ে বড় কথা ব্যাটিংয়ে অবস্থার সাথে সাথে প্ল্যান বদল করে নিতে হবে। যদি টার্গেট হয় ৩০০, আর ৩৫ ওভারে যদি স্কোরলাইন থাকে ৫ উইকেটে ১৬০, তবে টার্গেট ২৫০-৬০ এ এ্যাডজাস্ট করে নেয়াই ভালো।
৪.
বোলিংয়ে সাকিবের অপশন ভালো, চার স্পিনার আর দুই পেসার। খুব বেশী অদল-বদল করে বোলারদের দিয়ে বল করান আমাদের অধিনায়ক, যদিও সাফল্যের পুরো ব্যাপারটাই নির্ভর করে বোলারদের ভালো বল করা আর ব্যাটসম্যানদের ভুলের ওপর।
নাঈম, রাজ্জাক দু'জনেই নতুন বলে ভালো স্পিন করে। জিম্বাবুয়ের সাথে নিয়মিতভাবে প্রত্যাশার জবাব দিয়েছেন রাজ্জাক। তাও আমার মতে প্রথম দুই পাওয়ারপ্লেতে আগের ময়াচের মতোই সম্ভব হলে, মানে বেধড়ক পিটুনি না খেলে নাঈম/আশরাফুল/রিয়াদকে ব্যবহার কর প্রতিপক্ষের হতাশা বাড়ানো যেতে পারে।
মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের সাথে সারওয়ান/চন্দরপল টাইপের ধৈর্য্যশীল ব্যাটসম্যানরা খুব ভালো খেলে। কারণ আমাদের ফিল্ডিংয়ে ভুল কম হলেও ত্রিশ গজের ভেতর সেই আগ্রাসী ভাবটা কম যেজন্য সহজেই প্রতিপক্ষ সিঙ্গেলস নিয়ে নেয়। এই দু'জনের জন্য সাকিব/রাজ্জাকের বেশ কিছু ওভার তুলে রেখে দিতে হবে। রুবেলের ব্যাটসম্যান রিডিং ভালো, পোলার্ড-গেইল টাইপের মাথাগরমদেরকে আশা করি সে ফেরাতে পারবে। যদ্দুর জানি এই দু'জন স্পিনারদের ভালো খেলে।
ব্রায়ান লারার ভক্ত বলে কিনা জানিনা, আমার মনে হয় আজ বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় থ্রেট হচ্ছে ব্রাভো। গেইল,পোলার্ড, সারওয়ানদের ভীড়ে এই নামটি হয়তো কম উচ্চারিত হচ্ছে বাংলাদেশ শিবিরে, তবে ব্যাটা লারার দুঃস্বপ্ন নিয়ে হাজির হতে পারে.
৫.
চাপটা খুব বেশী এবার দলের উপর, প্রত্যাশার চাপ। দলের শক্তিমত্তা যাই হোক, কোয়ার্টার ফাইনালে না উঠতে পারলে সারা দেশ ভীষনভাবে হতাশ হবে -- এ ধরনের একটা চাপ নিয়েই আমাদের বীর ক্রিকেটাররা মাঠে নামে। তবে তারা নিশ;চয়ই এটাও জানেন, দর্শকরা যখন বোঝে যে খেলোয়াড়রা নিজের সামর্থ্যের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে লড়েছে, তখন তাদের নিয়ে গর্ব করার বিষয়টিকে হার-জিত খুব একটা প্রভাবিত করতে পারেনা। সেরকম অনুভূতি নিয়ে লড়াকু বাংলাদেশ নামুক আজ মাঠে, এই প্রত্যাশায়।
বাংলাদেশ মনে হয় আগে বোলিং করলেই ভাল। অবশ্য দর্শক হিসেবে চিন্তা করতাছি- এজন্য মনে হতে পারে এটা। হতাশ খেলার শুরুতেই হতে হবে না
টস জিতে ব্যাটিং নিলে বাংলাদেশ। মনে হচ্ছে সিদ্ধান্তই ঠিকই আছে। সবাই তো তাই বলছে্ দেখা যাক।
ব্যাপক বিশ্লেষণ!!
আমার মতে বাংলাদেশ ভয় না পেয়ে নিজেদের মত করে খেললেই আজকে সহজে জিতে যাবে।। বাংলাদেশের পেসাররা যদি ভালো করে তবে জয় নিশ্চিত
এইটা ডেথ গ্রুপ হয়ে গেছে।, ইংল্যান্ড হেরে এবং টাই করে আমাদের ক্ষতি করেছে
দারুণ জিনিস শিখলাম।
জ্বীনদা আজকের জন্য একটা মিলাদ পড়ান।
ভয়ংকর টেনশনে পড়ে আছি।
আপনার বিশ্লেষনের বেশ কিছু জায়গারে আমার যতোটা না ক্রিকেটিয় লাগলো তার চাইতে লাগলো মনোবিশ্লেষণ টাইপ।
২.
আপনি কইলেন টসে জিতলে ব্যাটিং নেয়াটা ভালো হইবো...কিন্তু আধুনিক ক্রিকেটে পেশাদার একটা দলের সাথে খেলায় স্পিন নির্ভর একটা দলের জন্য বিষয়টা আসলেই কঠিন। বসন্তের এই সময়টায় এখনো কুয়াশা জমে দেশে আর যেই কারনে শিশির সিক্ত থাকে মাঠে। স্পিন বোলিঙে বল গ্রিপ করার ধরনের কারনেই শিশির সমস্যা হিসাবে অ্যাপিয়ার করে। বলের ওজন বাইড়া যাওয়ার জন্য ফ্লাইটেড ডেলিভারীগুলি অতোটা নিখুঁতভাবে করা যায় না। যেই কারনে রাজ্জাকের নতুন ফ্লাইটেড ডেলিভারিটা গতো খেলায় করতে দেখা যায় নাই, যেই সুযোগটা কেভিন আর নেইল ও'ব্রায়েন প্রায় নিয়া নিছিলো সেই দিন। বল স্পিন করার চাইতে স্কিড করে বেশি যেইটাও একজন স্পিনারের জন্য সমস্যা হিসাবে ধরা দেয়।
৩.
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলিং লাইন আপে একজন প্রায় বিশ্বমানের স্পিনার আছে অনেকদিন ধইরাই...তার অনেক উচু থেইকা করা ডেলিভারিতে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানগো লেইগা ক্যারিবিয়ার পীচেও সমস্যা হইছিলো শেষ সফরে। কেবল কেমার রোচরে মাথায় রাইখা বিশ্লেষণটাও খুব সুবিধার হয় না। সুলেমান বেন আর কেমার রোচ কম্বিনেশনটাও বাংলাদেশরে ভালোই ভুগানোর কথা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের একটাই দূর্বলতা আচে সেইটা হইলো ডোয়াইন ব্রাভোর অনুপস্থিতি। এই থার্ড বোলার অপশনটা নিয়া হয়তো স্যামি'র চিন্তা করতে হইবো। কিন্তু বাংলাদেশের ওপেনিং পেয়ারের যেকোনো একজন চইলা গেলে জুনায়েদ সিদ্দিকীর উইকেটটা নিতে খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হইবো না হয়তো উইন্ডিজ বোলারদের।
মুশফিক ভালো খেলার কথা উইন্ডিজের সাথে...এইটা হইবো তার টেকনিক আর নিজের উচ্চতার অভাবরে সুবিধা বানাইয়া নেওয়ার কৌশলের জন্য। কিন্তু রকিবুলের কপি বুক আসলে কদ্দূর কাজে লাগবো সেইটা নিয়া আমি সন্দিহান উইন্ডিজের গতো খেলার পারফর্ম্যান্স দেখার পর। তারা অনেক ডিসিপ্লিন্ড হইছে আগের চাইতে। উইকেট টু উইকেট বল আর স্পিন পেইস ভ্যারিয়েশনটাও তারা ভালোই করতেছে। স্যামি'রে এই মুহুর্তে পাত্তা দিতেছি না। কিন্তু গতো ক্যারিবিয়ান সফরের সময় স্যামি কিন্তু বাংলাদেশের জন্য হুমকী হিসাবে চইলা আসছিলো। তার নিয়মতান্ত্রিক ফাস্ট মিডিয়াম বলে একটা খেলায় যদ্দূর মনে পড়ে ৫ উইকেট নিছিলো। আর এই ক্যাটেগরির বোলাররা কিন্তু স্লো পীচেও ভালো করে। যেমন করতেছে মুনাফ প্যাটেল।
পাওয়ার প্লে খেলতে যেই মানসিক অবস্থা লাগে বাংলাদেশি ক্রিকেটে মনে হয় সেইটা নাই। গতো লীগে একটা মাত্র ম্যাচে অলোক কাপালির একটা পার্ফর্ম্যান্স যেই কারনে তারে দলভূক্ত করনের লেইগা বড় যূক্তি হইয়া উঠে। অথচ বাকী ম্যাচগুলিতে তার ভূমিকা ছিলো শূন্যের কোঠায়। আশরাফুলই একমাত্র বিগহিটে যাওয়ার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যাটসম্যান বাংলাদেশের...তার সাথে আরেকজনেরই তুলনা হইতে পারে, সে হইলো আপতাব। কিন্তু এইবারের দলে তারো ঠাই হয় নাই। আমি আশরাফুলের সমর্থক না, কিন্তু বিকল্প কি এইটাও ভাবতে পারি না...কারণ নাঈমের খুব বেশি ভালো খেলা আমি দেখি নাই আর মাহমুদুল্লাহরে আমার কখনোই স্লগার মনে হয় না।
৪.
শেষ পয়েন্টে আমার কেবল একটাই কথা আছে। কেবল গেইল বা ব্রাভোরে মূল্যায়ণ করতে গিয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের অনেকটা ভালো সময়েরও দুইজন ব্যাটসম্যানও এই দলে আছে সেইটা যেনো ভুইলা না যাই। চন্দরপাল আর সারওয়ানের স্পিন খেলাতে যেই দখল আছে সেইটা কিন্তু ইতিহাস স্বীকৃত। সুতরাং বাংলাদেশের মাত্র দুইজন স্পেশালিস্ট স্পিন আর দুইজন পার্টটাইমার নিয়া তৈরী হওয়া বোলিং ডিপার্টমেন্ট নিয়া আমি আহ্লাদিত হইতে পারি না। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদরে আমার কখনোই খুব এফিশিয়েন্ট স্পিনার লাগে নাই...তার কোনো স্পেশাল অফস্পিনিং ডেলিভারি নাই, নাঈম হয়তো সেইদিক থেইকা তার চাইতে ভালো। আর আশরাফুলের বোলিং ভূমিকা নিয়া আমি কিছু কইতে চাই না।
শরীফুল আর রুবেল হয়তো আজকে ভালো করতে পারে...কারণ উইন্ডিজের পোলার্ড পর্যন্তই ব্যাটসম্যান। তারপর আর কেউ নাই যে স্ট্রেইট ড্রাইভ খেলতে পারে। তবো যেই দলে চারজন্য বিশ্বমানের ব্যাটসম্যান পরপর মাঠে নামে তাগো বিরুদ্ধে আমাগো বোলারগো পারফর্ম্যান্স দেখনের লেইগা আমি আসলেই অপেক্ষায় আছি।
৫.
শেখ হাসিনার মতোন আমি ভুল করতে চাই না। এই ক্রিকেট দলের খেলোয়ারগো লগে একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধাগো লগো তুলনা কইরা মহান সেইসব মানুষদের প্রতি অবমাননামূলক কোনো বালখিল্য আচরণ করার মতোন রুচী আমার নাই।
মন্তব্যের শেষে আমার ফেইসবুক স্টেটাসটা তুইলা দিতে চাই...
আইসিসি ড়্যাংকিঙে উইন্ডিজ বাংলাদেশের পরে, এইটা মনে হয় এই বিষয়ে আইসিসি ক্লাউনটার সবচাইতে কার্যকর কৌতুক, বাস্তবিক এই মুহুর্তে উইন্ডিজ টিম হিসাবে বাংলাদেশের চাইতে শক্তিশালি। স্পিন দিয়া গেইলরে বশ মানানো যদি সম্ভবও হয় সারওয়ান আর চন্দরপাল দাঁড়াইয়া যাওয়ার ক্ষমতা রাখে। ক্যারিবিয়ানগো সাথে অন্য বড় দলের পার্থক্য খালি পেস ডিপার্টমেন্টে। বাংলাদেশের আশা আমি কেবল দেখতেছি একটা জায়গাতেই সেইটা হইলো "অনিশ্চয়তার খেলা ক্রিকেট" এই তত্ত্বে।
ভাই মানসিকভাবে এত দুর্বল দল ব্যাটিং-বোলিং যাই নেক, কথা একই
তবে আমার কাছে মনে হইছিলো যে টসে জিতা বোলিং নিলে বাংলাদেশের জন্য ভালো হইতো...আগে ব্যাটিং কইরা বরঙ এই দলের খুব বেশি জেতার বা ভালো করার রেকর্ড নাই...
কোন জানি মনে মন বলছে আজ বাংলাদেশ জিতবে!
ওরে বাবা রে! কথাটা লিখতে না লিখেতেই দেখি তামিম উইকেট গেল! মনে হয় আমিই কুফা!
মেজাজটা কিঞ্চিত গরম হইলো।
আমার মন্তব্য পইড়া?
তামিমের আউট দেইখা। আমারও
জুনায়েদ কি কখনোই ভালো খেলবে না?
জুনায়েদ একটা ৭০ রানের ইনিংস খেলছিলো গতো ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে...
উইন্ডিজের পোলাপান আজকে কি খেয়ে নামছে? মুশফিকের আউটটা নিয়ে কোনো আক্ষেপ নাই
ধুর্বাল
মিলাদেও কাজ হবে না মনয়
ইমরুল কায়েসরে বসায়ে নাফিসরে নামান দরকার।
দেখা যাক আজকে বাংলাদেশ কতো রান করে...
ওয়েস্ট ইন্ডিজও যে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের নিয়া হোম ওয়ার্ক করছে সেইটা বোলিং দেখলেই টের পাওয়া যায়...কেমার রোচ আর স্যামি একদম ব্যাটসম্যানের উইক পয়েন্ট দেইখা বোলিং করতেছে...
টূর্নামেন্টের শুরুতে সাকিবরে নিয়া করা আমার প্রেডিকশান দেখি মিলা যাইতেছে...এই ওয়ার্ল্ড কাপে বাংলাদেশের ফ্লপ প্লেয়ার হইবো সাকিব আমি এইটা বলছিলাম...
কি কি নতুন রেকর্ড হবে এটাই এখন ভাবার বিষয়!!
আশরাফুলরে নিয়া যেই হাসি তামাশা চলে, বাংলাদেশের জান, বাংলাদেশের প্রাণ সাকিব আল হাসান-রে নিয়া একই ফাইজলামি শুরু দেখনের অপেক্ষায় আছি। উগ্র জাতীয়তাবাদ মানুষের পরিবর্তন প্রক্রিয়ারে বাঁধাগ্রস্ত করে...উন্নতির পথরে থামাইয়া দেয়।
শুরু হয়া গেছে, সাকিবের গ্রামের বাড়ির জানলার কাঁচ ভাংছে। ইন্ডিজের গাড়িতে ঢিল মারছে। আমরা আসলে এইসবই পারি।
বাল্ !!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
শেষের দিকে উইন্ডিজদের দেখে মনে হচ্ছিল ওরা একটা স্কুল টিমের সাথে খেলতেছে ।
কি হৈতে পারতো, আর কি হইলো। ধুত।
জ্বীনদা, পোষ্ট লিখতে যত সময় ব্যয় করছেন, খেলা তার আগেই শেষ হইয়া গ্যাছে। আবার প্রমান করল তারা আমরা আদতেই বাঙ্গালী। রেখেছ গরু করে মানুষ করোনি (
কি হৈতে পারতো, আর কি হইলো।
মন্তব্য করুন