ভালো থাকবেন
নিজের সাথে সরাসরি সম্পর্ক নেই এমন বিষয় নিয়ে মাঝেমাঝে ছোট টেনশন থাকে। যেমনটা ছিলো হুমায়ুন আহমেদের সুস্থ্য হয়ে ওঠা নিয়ে। শুনেছিলাম, ক্যান্সার বেশ ক্ষতিকর পর্যায়ে চলে গেছে, তাও ছোট্ট একটা আশা ছিলো সুস্থ্য হয়ে এসে আবারও আমাদের গল্প শোনাবেন তিনি। ক্যান্সারের সাথে তাঁর লড়াইয়ের গল্প। অতিসুক্ষ্ম রসবোধ আর ভীষন দরদ মিশিয়ে আবারও ছুঁয়ে যাবেন অসংখ্য পাঠককে। আশাটা পূর্ণ হয়নি। লোকটা চলে গেলেন, অনেক দীর্ঘশ্বাসের জন্ম দিয়ে।
মনটা বিক্ষিপ্ত। অনেক কিছু মনে জমে আছে, লিখতে ইচ্ছে হচ্ছে। আবার ভালোও লাগছেনা।
সিনেমা-টিভির তারকা, মডেল, খেলোয়াড় - এদের সবাইকে ছাড়িয়ে একজন লেখক আর কোনোদেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বে পরিণত হতে পেরেছেন কিনা আমি জানিনা। এটা হয়ত হুমায়ুনের বিশালত্বের একটা পরিচায়ক।
তাঁর লেখা ভরা ছিলো মায়া, যাদুবাস্তব না, সত্যিকারের। মাঝেমাঝে মনে হতো, ঝর্না কলমে লিখছেন হুমায়ুন, লেখার সাথে সাথে অঝোরে কেঁদে যাচ্ছে কলম। গল্প বা উপন্যাসের চরিত্রদেরকে এতটা ভালোবাসা দিয়ে সম্ভবত অন্য লেখকেরা লালন করেননি, যেখানে হুমায়ুন আলাদা হয়ে ছিলেন দশকের পর দশক। তাঁর লেখার এত বিশাল গ্রহনযোগ্যতার পেছনে সহজ সাবলীল ভাষা, মধ্যবিত্ত জীবন -- এরকম অনেক কিছুকেই কারণ হিসেবে দাঁড় করানো যায়। তবে সম্ভবত সবচেয়ে বড় কারণ, চরিত্রদের প্রতি তাঁর নিংড়ে দেয়া টান, ভালোবাসা। সেটা পাঠককে স্পর্শ করত।
পরিবারের কেউ নন, বন্ধুও নন, এমনকি পরিচিতও নন। কোনদিন সামনাসামনি দেখিনি। তারপরও লোকটার মৃত্যুতে চোখে পানি। সম্ভবত তাঁর লেখাগুলো দিয়ে অবচেতন মনেই তাঁর সাথে অনেক কথা বলেছি বলেই।
হুমায়ুনের অতি বড় সমালোচকরাও আজ শোকাহত।
আমার ধারনা, একজন মানুষ সম্পর্কে মানুষের মনে ভালোবাসা, অনুযোগ, ক্ষোভ, ক্রোধ, ঘৃনা, এসবের মিলিত অনুভূতি জন্ম নিলেও, তাঁর মৃত্যুর পর ভালোবাসাটুকু ছাড়া বাকি অনুভূতিগুলো অদৃশ্য হয়ে যায়। হয়ত তাই এখন অনেকেই টের পাচ্ছে অবচেতন মনে আসলে তাঁকে কতটা পছন্দ করত
ভালো থাকুন প্রিয় লেখক। সবার ভালোবাসায় আপনার যাত্রাপথ জোছনা ভাসানো চান্নিপসর রাতের চেয়েও উজ্জল, আমি জানি। হয়ত সেজন্যই, পরম করুণাময় আপনার যাবার জন্য আলাদা করে কোনো চাঁন্নি পসর রাতের ব্যবস্থা করেননি।
সারাদিন কেমন জানি এক অস্থিরতার মাঝে কাটালাম। ভাল লাগছে না কিছুই।
লেখার কারিগর।
স্যালুট।
কিচ্ছু বলার নাই, বুকের ভেতরে খাঁ খাঁ করতেছে...
বুক ফেটে কান্না আসছে.।.।.।.।।
পিতা হারিয়েছি বলে মনে হচ্ছে.।.।.।।
লেখার কারিগর
স্যালুট
আগ্রহ করে আর কখনোই বই কেনা হবেনা
ভালো থাকেন অন্য ভুবনে!
অন্যভুবনে শান্তিতে থাকুন তিনি !
(
ভালো থাকুন প্রিয় লেখক। সবার ভালোবাসায় আপনার যাত্রাপথ জোছনা ভাসানো চান্নিপসর রাতের চেয়েও উজ্জল, আমি জানি। হয়ত সেজন্যই, পরম করুণাময় আপনার যাবার জন্য আলাদা করে কোনো চাঁন্নি পসর রাতের ব্যবস্থা করেননি।
মন্তব্য করুন