পরিচয় যখন সাংবাদিক
১.
একজন সম্পাদকের কথা বলি। তার মূল ব্যবসা হচ্ছে পত্রিকা বের করার জন্য মালিক খোঁজা। তারপর এক সময়ে টাকা পয়সা নিয়ে ভেগে যাওয়া। তবে ডাকাতেরও বাপ থাকে। ধরা খেয়েছেন অবশ্য একবার। পত্রিকা হারিয়ে দখলে রেখেছেন একটা অনলাইন পোর্টাল, আগের পত্রিকার নামে। তার কাজ হচ্ছে অন্য মিডিয়া থেকে নিউজ চুরি করা। সবচেয়ে ভয়াবহ হচ্ছে চুরি করার সময় আবার তারা নিজেদের ইচ্ছামত সংবাদটি টুইস্ট করা। হিট পাওয়ার জন্য নিজেদের মতো করে সংবাদটি তৈরি করা হয়।
নিজস্ব কোনো রিপোর্টার নেই, কয়েকজন আছে কেবল নিউজ চুরি করার দায়িত্বে। অথচ প্রতিটি রিপোর্টে একজন করে রিপোর্টারের নাম দেয়া আছে। সব নাম ভুয়া।
এই হচ্ছে ওই সম্পাদকের নৈতিকতা, মান ও সাংবাদিকতা। তার আবার সাংবাদিকতা শেখানোর একটা দোকানও আছে। নিজে যা জানেন না, মানেন না, তাই শেখান অন্যদের।
তিনি এখন টকশোতে গিয়ে অন্যদের সাংবাদিকতা শেখান। আবার টকশোতে গিয়ে এটাও বলতে ভোলেন না যে, হলমার্কের তানভীরকে একটা সুযোগ দেওয়া উচিৎ, যাতে সে ব্যবসা করতে পারে।
কে না জানে, একসময় তানভীর অর্থ খরচ করে নানা জায়গায় এই বার্তাটিই দিতে চেয়েছিল।
পেশাগত সাংবাদিকেরা দুর্নীতির একেকটি ঘটনা বের করে আর ওই সম্পাদকের মতো কিছু মানুষ সেখান থেকে পয়সা খায়। আর এতে হেল্প করে মাঝ রাতের টকশো।
আমরা সাংবাদিকতার চেষ্টা করি, আর ওই সব মানুষগুলো সাংবাদিকতার নামে ব্যবসা করে।
২.
টেলিভিশনের টকশোতে বাংলাদেশের সবচেয়ে অসৎ একজন সম্পাদকের কদর সবচেয়ে বেশি, সবচেয়ে অসৎ সাংবাদিকতা করা এই সম্পাদকই সাংবাদিকতার জ্ঞান সবচেয়ে বেশি দেন। আরো কয়েকজন আছেন এবং আসেন টকশোতে, তাদের পত্রিকা চলে না, পত্রিকা চালাতে পারেন না, তারাও দেখি জ্ঞান দেন সুসাংবাদিকতার
৩.
ধরেন আপনি নিজেকে এখনো পরিচয় দেন সাংবাদিক হিসাবে। কোনো এক সময় হয়তো সাংবাদিকতা করেছেনও। কিন্তু আপনি সরকারের কাছ থেকে ব্যাংক নিছেন, টেলিভিশন চ্যানেল নিছেন, প্লট নিছেন, নিছেন আরো কত কী!
যে সরকারের কাছ থেকে নিয়েছেন তাকে তো সার্ভিস দিতেই হবে। দেন, কোনো আপত্তি নাই। কিন্তু তাহলে টকশো বা অন্য কোথাও নিজেকে দলের সমর্থক বা কর্মী বা বিশেষ সুবিধাভোগী পরিচয়টাই দিন, সাংবাদিক পরিচয় কেন দেন?
৪.
এতোদিন ছিল ইয়োলো জার্নালিস্ট আর ইয়োলো জার্নালিজম। এখন দেখা যাচ্ছে দেশে প্রবল ভাবে আছে ইয়োলো টেলিভিশন (মূলত নিউজ চ্যানেল), ইয়োলো টকশো উপস্থাপক ও উপস্থাপিকা, ইয়োলো টকশো আলোচক, ইয়োলো অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও এর সম্পাদক, ইয়োলো ব্লগার, ইয়োলো ব্লগ আর ইয়োলো ফেসবুক স্ট্যাটাস……..
৫.
একটার পর একটা ঘটনা। বাংলাদেশে সাংবাদিকতা করা ব্যাপক আনন্দের
৬.
রাতের টকশোর যারা সঞ্চালক তাদের ভূমিকা কি হবে? এই প্রশ্নটা মাথায় ঘুরছে। তারা কি মাঝামাঝি অবস্থানে থেকে প্রশ্ন করবেন, সঞ্চালনা করবেন, না কি কোনো এক পক্ষের হয়ে থাকবেন? বেশিরভাগ সাংবাদিক-সঞ্চালকরা এক পক্ষের হয়ে সঞ্চালনা করতে দেখি আজকাল। প্রশ্নও করেন একপক্ষের হয়ে। প্রশ্নের নমুনাগুলোও ভয়াবহ। আবার কেউ কেউ আরও এক ডিগ্রি উপরে। আগেই ফেসবুকে বা অন্যকোথাও কোনো এক পক্ষের প্রতি নিজের কঠোর অবস্থান জানিয়ে রাখেন।
আপনারা সঞ্চালনা না করে বরং টকশোর বক্তা হয়ে যান। সেটাই ভাল
৭.
রাজনীতি নিয়ে টকশোতে যখন একজন সাংবাদিক কোনো একটি দলের মুখপাত্রের মতো কথা বলেন, তখন নিজের পরিচয় সাংবাদিক না দেয়াটাই ভাল। বরং সমর্থন করা দলের কর্মী হিসাবে পরিচয় দিলে সাংবাদিকতার মর্যাদা খানিকটা রক্ষা হয়তো হতে পারে
ফেসবুকে শেয়ার করার সাথে সাথেই পড়ে ফেলেছি!
সমাজের সব কিছুই যখন রসাতলের পথে যায় তখন সাংবাদিকরা কি আর তার বাইরে থাকতে পারে!
মেসবাহ ভাইয়ের কথা বলেন নাই
সমাজের সব কিছুই যখন রসাতলের পথে যায় তখন সাংবাদিকরা কি আর তার বাইরে থাকতে পারে
মনের কথাগুলো বললেন মাসুম ভাই। আমরা এমনই আমজনতা যে সবই সহ্য করতে হয় । রাতদুপুরে টিভিতে টক শুনে শুনে মাঝে মাঝে এত বেশী রাগ লাগে, মনে হয় মানুষ কত বড় চাপাবাজ হয়, ধান্ধায় থাকে । এক সাংবাদিকের চাপা শুনলে তো বারবারই তসলিমা নাসরিনের কথা মনে পড়ে, আর মনে হয় এই বেটার মুখে এসব বাণী মানায় না ।
৭১ টিভিতে প্রায় রাতেই টক শো সঞ্চালক থাকে নবনীতা । সে তো আওয়ামীবিরোধী কেউ থাকলে তারে ধরার তালে থাকে । দলীয় এমন কর্মীদের দিয়েই দলের বদনাম ।
তাই টকশো দেখাই ছেড়ে দিয়েছেন।
মন্তব্য করুন