দিন শেষে আমি ইকারাস
ইকারাসের গল্পটা খুব সাধারণ।
সে আর তার বাবা ডেডেলাস একটা গোলোকধাঁধাঁ
থেকে পালাতে চেয়েছিলো। ডেডেলাসই তৈরি
করেছিলেন সেই মেইজ। পালাবার একমাত্র উপায়
বিশাল আকাশ। মোম গলিয়ে তাতে পালক জোড়া
দিয়ে দুই জোড়া পাখা বানিয়েছিলেন। এক জোড়া
তাঁর নিজের জন্য। আরেকটা ইকারাসের।
ওড়ার আগে ডেডেলাস বারবার ইকারাসকে
সাবধান করে দিয়েছিলেন " বাবা উড়বি, কিন্তু
সুর্যের কাছে যাবি না। মোম গলে যাবে।"
প্রথমে তাতে সায় দিলেও,নভশ্চারী ইকারাসের
শিঘ্রই তা বিস্মৃত হয়। এবং আনন্দে আত্মহারা সে
"আরো উঁচুতে যাবো। আমি স্বর্গ ছোঁব" এমন
কল্পনায় নতুন উদ্দ্যমে উড়তে থাকে। নিচে তার
বাবা চিৎকার করে বলেন " বাবা, আর উপরে যাস
নে, আর উঁচুতে উঠিস নে, মারা যাবি!"
কে শোনে কার কথা। যৌবনমদে মাতাল ইকারাস
আরো আরো আরো আকাশে যায়।
সুয্যিমামা তার বেজায় ইগো আর প্রানশক্তি
দেখে হিংসাই করে বসে বোধ হয়। সুর্য কী আর
এমনি এমনি মামা! তার ও তো বয়স হলো। কিছুদিন
পর দাদু ডাকা লাগবে তাকে।
তো তার সহ্য হলো না ইকারাসের বেয়ারা
প্রানশক্তি। জ্বলন্ত চোখে তাকিয়ে, অনলাংকৃত
করলেন ইকারাসের সাদা পালকের ডানা।
মোম গলে গলে পরতে থাকলো লোনা সলিলময়।
হয়তো উজ্জ্বল রোদে খুব ঝিকমিক করেই
গ্রাভিটিকে চুমি খেলো। রয়াল বৃটিশ ওয়েডিং।
অনাহুত গেস্ট ইকারাস ডানা হারিয়ে সলিল
সমাধিস্থ হলো। আর আমরা পেলাম অসাধারণ
কিংবদন্তি। গ্রিক মিথলজিও বলা যায় মোটা
দাগে।
মোটা দাগ কারণ এটা মিথ না। এটা শুধু কিংবদন্তি
না। এটা একটা জীবনীশক্তি।
এটা আমাদের অনেকেরই গল্প। আমাদের ছোটো
ছোটো ঘুমকাতুরে স্বপ্ন। বিশাল ক্যানভাসে
কামাতুর রংদার মোনালিসা। যেখানে মুচকি হাসি
পরিণত হয় উদ্দাম উচ্ছন্নে যাওয়া হোহো মাতাল
অট্টরোল।
ইকারাসের মতোই বলা যায় আমি একটা মেয়ের
প্রেমে পড়েছি। ভালোবাসি
ইকারাসের পাগলামি মেনেই, আর যখন সুর্যের
আঘাতে আহত আমি সাগরে ডুবতে থাকি, দেখি
সেখানেও ও আছে। ইকারাসের থেকে ভাগ্যবান
আমি এখানেই।
যখন একটা কবিতা লিখবো বলে ভাবি, তখন তো
আমি ইকারাস, উড়ি যখন কাগজে খসখস। সমুদ্রে,
লেখা যখন শেষ, আর আমি হাঁপাচ্ছি।
একটা বই, একগাদা মুভিং স্টিল শট, একটা সুরের
ঝংকার, সিগারেটের প্যাকেট, রংপেন্সিলের আঁচর, কাগজ ময়লা করা
গ্রাফাইটের দাগ, এসবই তো ইকারাসটাকে বের
করে আনে। আর ক্ষণিকের জন্য কী বিশাল
বিস্মিতা আকাশে আমি উড়ি। বাতাস,মেঘ,বৃষ্ট
িচ্ছটা, জীবন।
সবাই তো আর ইকারাস হতে পারে না। কাউকে না
কাউকে ডেডেসাল হতে হয়। কেউ কেউ ভয়ানক
মেন্টর হতে হয়। যার অর্ধেক পশু কিছুটা মানবকোষ।
যাকে করতে হয় মন্দ কাজটিই। আবার অন্য দিক
থেকে দেখলে সে তাই করছে যার তা করার কথা।
ইকারাস যদি একটু উদার হতো, তাহলে সে বাঁচতে
পারতো আরো কিছুটা মহাকাল।আরো কয়েক
মহোক্ষন। হলো না। পায়নি সে। গল্পটা ঠিক এখানে
এসেই অনন্য হয়ে ওঠে। আমার ভাষায় কবিতা।
ইকারাস একটা বিপ্লবী কবিতার নাম। একটা ছোট্ট
পোয়েট্রি,গ্লিটারিং উইদ দ্যা ব্রাইটেস্ট অফ
কালার্স "লাইফ" ক্যান অফার।
চমত্কার কথকতা, ভালো লাগলো অনেক..
আপনার জন্য শুভকামনা..
ধন্যবাদ
ইকারাস মানে কি ?
গল্প পড়নি?
পড়েছি তো । কিন্তু বুঝতে পারিনি ।
না । ইকারাস এর গল্প আবার কোনটা ? নামই ই তো শুনলাম এই প্রথম
উইকিপিডিয়াতে ইকারাস লিখে অনুসন্ধান কর!
অকে
শামসুর রাহমানের ইকারুসের আকাশ পড়েছেন?
না,ভাইয়া। তবে পড়ে ফেলব।
মন্তব্য করুন