ক্যাপ্টেন হায়দার
রুমীর মৃত্যুর পরের ঘটনা। একদিন কয়েকজন
সহকর্মী নিয়ে জাহানারা ইমামের বাসায় এসে হাজির হলেন
ক্যাপ্টেন হায়দার্। জাহানারা ইমাম তখন স্বামী আর
ছেলে হারিয়ে শোকার্ত অবস্থায়। কোথাও
সমবেদনা জানাবে তা না। ক্যাপ্টেন হায়দার করে বসলেন
অন্য কাজ। জাহানারা ইমাম কে বললেন,
- আমার একজন বডিগার্ড দরকার্।
আমি কি জামী কে কিছুদিনের জন্য আমার
কাছে রাখতে পারি
বুঝতে হবে ,ক্যাপ্টেম হায়দার বলে কথা। কনভেনশাল
ওয়েতে শোক জ্ঞ্যাপনের আনুষ্ঠানিকতা তার সাথে যায়না।
বরং উল্টো এক কথায় প্রিয়জন হারানো বাড়িতে নতুন এক
বিশ্বাস ফিরিয়ে আনলেন।
এমনি ক্যারিজম্যাটিক ছিলেন হায়দার
মেলাঘরের প্রশিক্ষনে প্রথম দিন যখন ১৮-১৯ বছরের
সদ্য কৌশোর পেরোনো আপাত
বাচ্চা ছেলেগুলো কে দেখে আর্মির অন্যরা মুখ
টিপে হাসছিল।
খালেদ মোশাররফ এনে দাড় করিয়ে দিলেন
পাকিস্তান আর্মির স্পেশাল কমান্ডো ব্যাটিলিয়নের ক্যাপ্টেন
এটিএম হায়দার কে।
- লুক হায়দার্। দিস অল আই গট ফর ইউ। উই নিড আ আরবান
কমান্ডো টিম
না মুখ টিপে হাসেননি হায়দার্। তিনি রুমিদের ওই
বাচ্চা বাচ্চা মুখে স্বাধীনতার আগুন টের পেয়েছিলেন
এই ১৭ জন অ্যামেচার কে নিয়ে গঠিত দলটাকেই ক্যাপ্টেন
এটি এম হায়দার পরবর্তী দেড় মাসে সামরিক যুদ্ধের
ইতিহাসের ভয়ঙ্করতম গেরিলা ট্রুপে পরিণত করেন
নাম তার ক্র্যাক প্লাটুন...
দোর্দন্ড প্রতাপ পাক জেনারেল
নিয়াজি যে ক্র্যাক প্লাটুন কে ভয়ে ভয়ে নাম দিয়ে ছিলেন
মুক্তি কা বিচ্ছু
আর এসবেরই মূলে ছিলেন একজন। ক্যাপ্টেন এটিএম
হায়দার পরবর্তীতে মেজর হায়দার্। আত্মসমর্পণের
সে ঐতিহাসিক মুহুর্তে যখন জেনারেল নাগরা আর টাইগার
সিদ্দিকি জেনারেল নিয়াজির সাথে আলোচনায় ব্যাস্ত
তখনো নিজের গাড়ি নিয়ে ঢাকা শহর চষে বেড়াচ্ছেন
ক্যাপ্টেন হায়দার্। কোথাও কোন বিশৃংখলা হল
কিনা ,মুক্তিবাহিনীর কে কেমন আছে...
রেডিও
টিভিতে ভেসে এল তার ভারী কন্ঠের
আওয়াজ ..আমি মেজর হায়দার বলছি...
আবার এই নরম মনের এটিএম হায়দারই ক্র্যাক প্লাটুনের
প্রশিক্ষনে বলেছিলেন
আমি ঢাকা কে গোরস্থান বানিয়ে দিতে চাই... আই
সিমপ্লি ওয়ান্ট টু ডেমোলিশ ঢাকা।
ইয়াহ,হি ইজ আওয়ার ক্যাপটেন ক্যারিজমা ফাদার অফ ক্র্যাক
প্লাটুন ক্যাপ্টেন এটিএম হায়দার
এইত গতকাল ১২ ই জানুয়ারী তার জন্মদিন গেল। আমি নিজেও
ভুলে গেছিলাম। রাতের আকাশে বেলুন মেলুনের
ওড়াওড়ি দেখা গেলেও ক্যাপ্টেন হায়দারের নাম কোথাও
দেখা যায়নি।
আমরা বরই ফরেন মালের
পাগল ...দেশী জিনিসের খবর নাই
বাট দা ট্রুথ ইজ আমাদের কোন ক্যাপ্টেন আমেরিকা নাই।
কিংবা বলতে হয় ক্যাপ্টেন আমেরিকার মত কোন
এনিমেটেড কারেক্টার আমাদের বানাতে হয়না। আমাদের
রক্তমাংসের ক্যাপ্টেন হায়দাররা আছেন। যারা কিনা প্রচন্ড
অ্যাটিটিউডে শালা ওয়ার্ল্ড গ্লোবটাই
পাল্টে দেন..ক্যাপ্টেন ক্যারিজমা হায়দার... গ্রীন স্যালুট
ইউ নো, আই সিম্পলি ওয়ান্ট টু ডেমোলিশ দা গ্লোব আ
থাউজেন্ড টাইমস টু গিভ বার্থ অফ আওয়ার রেড এন্ড গ্রিন।
(সংকলিত)
চমত্কার।
সংকলিত বলতে কি বুঝিয়েছেন?
মন্তব্য করুন