টিস্যুর সাথে আলাপচারিতা
-আপনাকে কোন নামে ডাকব ? টয়লেট না কি ফেসিয়াল?
-ওটা মানুষের সমস্যা। আমার না।
-মানে কি ?
- আত্মপরিচয়হীনতায় ভোগে বলে ওরা সব সময় কোন না কোন ক্লাসিফিকেশনের মধ্যে নিজেকে ফেলতে চায়।এ কারণে মানুষের চেয়ে অন্যান্য পরিচয়ই ওদের কাছে বড় হয়ে ওঠে। কেউ কালা, ধলা,বাদামী; কেউ হিন্দু, মুসলমান,ইহুদী, নাসারা, বৌদ্ধ; কেউ বাঙালী,চাকমা,সাঁওতাল, মুরং। আছে আরো নানান কিসিম। শুধু মানুষই খুঁইজা পাওয়া যায় না।
-এবার বলুন কেমন এনজয় করছেন এমন লাইফ।
-আমি সন্তুষ্ট। সন্তুষ্ট নয় শুধু মানুষ।
-মানুষের সাথে আপনার এত আড়ি কেন ?
-মানুষ ছাড়া সবাই সন্তুষ্ট হতে জানে। মানুষই শুধু সন্তুষ্ট হতে শেখে না। তাছাড়া ইদানীং কিছু কিছু মানুষ টিস্যুর জীবন যাপন করছে। এটা আমাদের আত্মসম্মানের ব্যাপার। শেষ পর্যন্ত মানুষকে আমাদের সাথে তুলনা করা হচ্ছে !
-বিষয়টা একটু খোলসা করবেন ?
-টিস্যুর ধর্মই হচ্ছে ওয়ান টাইম ইয়্যুজেবল। মানুষও যদি তাই হয় তাইলে ব্যাপারটা আমাদের জন্য অমর্যাদাকর। এই যেমন, তোমার কোন আন্দোলন চাংগা করতে হবে। কিন্তু সরাসরি তুমি সেইটা নিয়া কথা বলতে গেলে মানুষ বুইঝা ফেলবে তোমার মতলব। সো তুমি একজনরে ব্যবহার করলা। ব্যবহার শেষে তারে ওয়ান টাইম ইয়্যুজের মত ফালাইয়া দিলা। এর পর আরেক ইস্যুতে আরেক টিস্যু হাতে নিলা। আগেরটা নিতে পার না কারণ মানুষ আগের জনের ভন্ডামী জাইনা গেছে। সুতরাং তোমাকে বার বার মানুষ বদল মানে টিস্যু বদল করতে হচ্ছে। এইটা শুধু আন্দোলন না। সরকারের ক্ষেত্রেও এটা শুরু হইয়া গেছে। কোন দল একবার সরকার গঠন করলে যারা বেশী কথা কইয়া টিস্যুর দাম কমাইয়া ফেলে পরের বার তারা আর কথা কয় না। কারণ মানুষ টিস্যুগুলারে চিন্যা ফালায়। জানে এইগুলায় হুদাই কথা কয়। তাই নতুন টিস্যু বাইচ্ছা নেয়।
-ধরলাম কিছু কিছু মানুষ টিস্যুর মত ব্যবহৃত হতে ভালবাসে। কিন্তু তাদের জীবন তো আর টিস্যুর মত ক্ষণজন্মা নয় । তারা অনেকদিন বাঁচে। ব্যবহৃত হয় বলে টাকা পয়সা নিয়া বেশ সাচ্ছন্দেই বাঁচে।
-এইটারে বাঁচা কইলে আমার কওয়ার কিছু নাই। আর কিছু কিছু বলদ তো জানেই না সে টিস্যু হইয়া গেছে। হুদাই ফাল পাড়ে।
-সে না হয় বুঝলাম। মানুষরে আপনার মত ব্যবহৃত হতে দেখে পুলকবোধ না করে খারাপ বোধ করেন কেন সেইটা কিন্তু বললেন না।
-দেখো সেটা আগেই বলেছি। ওয়ান টাইম ইয়্যুজেবল।
-আমাদের পাঠকদের উদ্দেশ্য কিছু বলুন।
-আর যাই হোন না কেন! টিস্যু হইয়েন না।
মানুষগুলো মানুষ হয়ে বাচুক ।
সহমত।
দারুন
টিসুর জীবন মজার না হলেও পড়ে মজা পেলাম।
মন্তব্য করুন