আমার মনের আঙিনায়/ পথে তুমি হেঁটে যাও..
মাঝে মাঝে খুব ইচ্ছে করে একলা হই। মানুষ হয়ে জন্মাবার একটা বড় সুবিধা বা অসুবিধা যেটাই বলি না কেন, তা হল, প্রচন্ড ভীড়ের মাঝেও একাকিত্বের স্বাদ নিতে পারা। চারিদিকে হই-হুল্লোড়, চিৎকারের মাঝে হুট করে নিজের মনে হারিয়ে যাওয়ার একটা সুযোগ যেমন থাকে, তেমনি আবার অনেক সময় একলা হতে চাওয়াটার পূর্ণতা প্রাপ্তি হয় না এই কোলাহলের কারণেই..
আজ সকাল থেকেই আকাশের মন খারাপ। ঘুম থেকে খুব ভোড়ে উঠেই এই মুখ ভার করে থাকা আকাশ দেখে কিছুক্ষণ থমকে দাঁড়াই বারান্দায়। পিলারে ঝুলতে থাকা কাপড় শুকানোর লোহার তারগুলোয় ভর দিয়ে তাকিয়ে দেখি ধূসর-কালো আকাশকে। মেঘ চিড়ে উড়ে যায় ভোরের পাখি কাক, আর সকাল- সাঁঝ পার্থক্য করতে না পারা কোন চিল। হলে থাকলে কেবল এই সময়টায়ই নৈ:শব্দের কোলাহল শোনা যায়, উপভোগ করা যায় এক অদ্ভূত একান্ত নিস্তব্ধতা। কেমন যেন অনুভূতি.. একটা বিশাল ক্ষুদ্রতা ঘিরে ধরে।
ভোরের আমেজটা হুট করে কেটে যায় না কেবল ঐ খেয়ালি আকাশের কারণে। ঘুম ঘুম চোখ ঐ চিলের মতই প্রতারিত হয় বাড়তি বেলাকে ভোরের হালকা রোদের সাথে গুলিয়ে ফেলে। আমি রুমে ফিরে আসি। পত্রিকা পড়ি। কানে হেডফোন গুঁজে গান শুনতে থাকি। প্রযুক্তির কল্যাণে ভালোবাসার মানুষের সাথে খুনসুটি খুব সহজ হয়ে যায় নিত্যিদিন। ভালোবাসার মত এক অসম্ভব সৌভাগ্যের অধিকারী এক জুটির নারীটি তার প্রিয় মানুষটিকে তার নামে কোন এক গায়িকার গাওয়া গানের লিংক দিয়ে আসে। তাই নিয়ে দুষ্টামি। তাদের কল্যাণে খোঁজ পাওয়া অ্যালবামের গান শুনতে থাকি। গায়িকা হয়ত গেয়েছে তার মত করে। আমি ভাবতে বসি আমার মত করে। "আমি পথে একলা হাঁটি/ তবু তুমি নেই পাশে/দু'চোখে জল আসে/ বাদল এসে ফিরে গেল আবার.."
শুনতেই থাকি, শুনতেই থাকি। হঠাৎ কি মনে হয়, পুরোনো ছবিগুলো দেখতে বসি। দেখতে দেখতে হুট করেই যেন ফিরে যাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরুর দিকগুলোতে। রাতে চিন্তাভাবনা, পরদিন সকালে উঠেই কোথাও ঘুরতে চলে যাওয়া। এমন কখনো হয় নি। তাই বলে ঘুরতে যাইনি, তেমনটাও না। বেশ কয়েকদিন ধরে গুঁতোগুতি করে ঠিকই প্রতি বন্ধে কোথাও না কোথাও যাওয়া হত। আর, সেখানে গিয়ে প্রতিবারই আমাদের কারো কারো বাকিদের খোঁচা পুরো ভ্রমণজুড়ে সহ্য করা! প্রতিবারই ফিরতি পথে ঠিক করা, আর না এদের সাথে। তারপরও আবার কোথাও যাওয়ার কথা উঠলে প্রবল উৎসাহে লাফিয়ে ওঠা।
এই আমাদের শেষ ঘুরোঘুরি প্রায় ১ বছর আগে। সবাই ব্যস্ত। কেউ গানের অ্যালবাম নিয়ে, কেউ ছবি তোলা নিয়ে, কেউ তার ভালোবাসার মানুষটিকে নিয়ে; সবাই যার যার ক্ষেত্রে দুর্দান্ত রকমের অনুরক্ত। ভালোবাসার জায়গা থেকে কেউ যদি কিছু করে, সেটা ঐ বিষয়ে কথোপকথন চলাকালিন তার চোখেমুখে ফুটে ওঠে। আমার বন্ধুগুলোও তেমনি। সারাদিন এগুলো নিয়ে তারা ব্যস্ত। দিন শেষে রুমে ফেরে কিছু ঘর্মক্লান্ত দেহ, আর চনমনে মন।
আমার রুম আর তাদের রুম ৯ তলার তফাৎ। প্রতিদিন যাওয়া হয় না। তাদের সাথে দেখাও হয় না, পড়াশুনার বিষয়ের পার্থক্যের কারণে ক্লাস চলাকালীন সময়ে।
আমাদের দেখা হয় এখন রাতে। সাড়ে ৯টা/ ১০টায় মাঝে মাঝে ফোন আসে, "ঐ ***, রুমে আয়।"
আমি জানি, কেন ডাকছে। তারপরও ভাব নেই, 'কেন?'
- একটু খেলাধূলা করবো।
: আমার কাজ আছে, পরশু জমা।
- আয় না ভাই, আয়। একটা খেলবো।
: ধূর মিঞা!!
ভাব নিয়েও ঠিকই ফোনটা রেখে যাই খেলাধূলা করতে। "আই. বি." খেলতে!
আর, আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদের বন্ধুরা? তারাও ব্যস্ত। কেউ চাকরিতে, কেউ নিজে নিজে কিছু একটা দাঁড় করানোয়। সবাই ব্যস্ত। ক্লাসে দেখা হয়। স্যারেরা যখন তার জ্ঞানভান্ডারের কিছু অংশ আমাদের অকৃপণভাবে বিলানোয়, আমরা তখন নিজেদের ভুবনে নিমগ্ন। ক্লাস শেষ, কেউ নেই, সবাই যার যার কাজে রওয়ানা..
আমরা কয়েকজন তবু থেকে যাই। কিছু কথা বলি, কিছু সময় কাটাই। মাঝে একেকদিন একেকজনের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে দুপুরে কোথাও খেতে যাই। দিন চলে যায়।
একেকজন একেকটা শুঁয়ো পোকার মতন। প্রজাপতিতে রূপান্তরিত হবার প্রক্রিয়ার মাঝ দিয়ে যাচ্ছে..
প্রতিদিন আমাদের কেবল ব্যস্ততাই বেড়ে চলেছে। তবুও মনে বাজতে থাকে, "হাতছানি দিয়ে বলে যাও, 'আমি যাব না'/ ফিরে এসে হঠাৎ দেখি/ আমার মনের আঙিনায়/ পথে তুমি হেঁটে যাও..."
[পুরোনো একটা লেখা। ফেসবুকে নোটাকারে লেখা। আগে পড়ে থাকলে স্যরি আছি, আর না পড়লে নতুন বইলা চালায়ে দিলাম!!]
নস্টালজিক কইরা দিলা সকাল বেলা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা ভাবলে এখন এতো বিষন্ন লাগে কেন?
আরে আরে? আপু দেখি?
কেমন আছেন?
নস্টালজিক করে দিলাম? উপ্স!! একটু স্যরি আছি!!
হ, আইলাম।
নস্টালজিক করে দিয়া আবার কয় উপ্স! মাইর খাবা। তার উপরে কয় সরি। সামনে পাইলে দিতাম এমন ঝাড়ি!
নউরিন যে তোমার কেঠা, সেইটা বুঝাই কও নাই দেইখাই তো তোমারেই আপু কইয়া ডাকতেছে।
আপুমণি লেখা ভালু হৈছে
আপুমণি কেঠা??
আয় হায় এত্ত দিন তাইলে কারে মুক্ত বয়ান কৈলাম???? আপু মনি...???
আপ্নে আপুমণি না? নওরিন কেডা তয়লে ...হায় হায় ব্যাপক শরমিন্দা আছি তবে
ঐটা তো গায়িকা!!!
মাইকসহ এত ছোন্দর একটা ফটুক লাগাইছি প্রোফাইলে, তাও যদি কে আপু আর কে ভাইয়া এইটা চিন্তে না পারেন, তাইলে তো আপনেরে নিয়া সন্দো!!!
আপুমনি ঈদ মুবারক
আপুমনি ঈদ মুবারক
আপুমনি
ঈদ মোবারক মুক্ত !
হারানো দিনে ফিইরা যায়তে মন চায় , না ?
স্মৃতি স্মৃতি - আছেই তো সেই অযথা সুখের ছবিগুলো ঘেঁটে দেখা
ভবিষ্যত পাশে ঘুমায়
জেগে থাকে বর্তমান, অতীতেরই সন্তান
আপু মনি কালকে গরীবের বাসায় দাওয়াত রইল..।পুরুষ রুপেই আইসেন আপুমনি
ঈদ মোবারক মুক্ত বয়ান, লেখা সেইরাম হইসে
স্লামালেকুম!
ফাঁকিবাজ!
একটু এদিক-সেদিক করে গানগল্প লিখে দিলে কী এমন ক্ষতি ছিলো? যাকগে, নোটটাও ভালো লাগছে।
কলেজ পড়াশুনা এগুলো ভাবলেই মনে হয় অন্য জীবনের কথা, যে জীবন কখনো হয়তো আমার ছিল।
লেখা ভালো লেগেছে "আপুমনি"
খুব সুন্দর একটা লাইন লিখেছেন মুক্ত। ভালো লাগলো।
মন্তব্য করুন