আমার যাদুমনি (১১)
দেখতে দেখতে দিন গুলো চলে যাচ্ছে। কাল হঠাৎ মনে পড়লো ঋহান এর নিউমনিয়া কালীন সময়ে হসপিটালে পার করা ভয়াবহ দিন গুলোর কথা। ঋহানকে নিয়ে যখন ডাক্তার আই.সি.ইউ তে ঢুকলো, আমার ঋহান ভেতর থেকে সজোড়ে চিৎকার করে কাঁদছে আর এদিকে আমি বাইরে দাঁড়িয়ে অঝরে কাঁদছি। তারপর এক এক করে ৭টা দিন এভাবেই পার করা আমার জন্য মুখের কথা ছিলো না। তাও পার করে আসতে পেরেছি সেই ভয়াবহ ৭দিন। তারপর হাসি-কান্না্, সুখ-দুঃখ মিলে একে একে ৯টা মাস পার হয়ে গেলো। আমার ঋহান এখন বড় হয়ে যাচ্ছে। এখন ও বসতে পারে, একটু একটু দাঁড়ানোরও চেষ্টা করে। সারাদিন ওকে ঘিরে আমার কত শত মূহুর্ত! ও কি জানে, ওর প্রতিটা কাঁন্না আমার মন খারাপ করে দেয়? ও কি জানে ওর প্রতিটা হাসি আমার মন ভালো করে দেয়? ও কি জানে, ও নিজের মুখ থেকে সারাদিন যেসব অর্থহীন শব্দ উচ্চারন করে সেই প্রতিটি শব্দতে আমি এক একটা অর্থ খুঁজে পাই? সারদিন শেষে যখন সে তার বাবা’কে পায় তখন আমাকে ভুলেই যায়। সেই সময় ও তখনই আমার কাছে আসে যখন ওর খিদা লাগে, কাছে এসে আমাকে আঁকড়ে ধরে। তবুও, প্রচন্ড ভালো লাগে, অন্তত একটা প্রয়োজনে তো সে “মা” ছাড়া আর কাউকে খুঁজে না।
সেদিন বিকেলে সময় কাটছিলো না, ঋহানকে নিয়ে গেলাম বারান্দায়। সে বারান্দার রেলিং ধরে উদাস হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। তাই দেখে কিছু ছবি তুললাম। আহারে! এই বয়সেই কত চিন্তা
তবে সেদিনকার সেই মূহুর্তের আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হলো ঋহানের প্রথম হাঁটা’র সাক্ষী হওয়া। আমি যখন ছবি তুলছিলাম ঋহান তার আপন মনে বকবক করছিলো, হঠাৎ যখন ক্যামেরা দেখলো তখন সেটা ধরার জন্য আমার কাছে আসতে চাইলো। তখন আমি তার থেকে প্রায় দুই হাত দূরে বসে আছি। কিন্তু ও সেটা তয়াক্কা না করে দিব্বি চার কদম ফেলে দৌড়ে এসে আমাকে ধরলো। তারপর মা-ছেলের সেই কি হাসি! হাসতে হাসতে ও আমাকে কয়েকটা কামড় লাগিয়ে দিতেও ভুললো না। ও কেন হাসছিলো জানিনা, আমি হাসছিলাম খুশিতে। এই তো আমার এইটুকুন ছোট্ট ঋহান আজ হাটতে শিখে যাচ্ছে। বড় হয়ে যাচ্ছে আমার লক্ষী বাবাটা। সৃষ্টিকর্তার কাছে আমার অসংখ্য কৃতজ্ঞতা। ৯ মাস আগে যেই ভয়াবহ দিনের সন্মুখীন তিনি আমাদের করিয়েছিলেন, আজ ঠিক ততটুকু বা তারচেয়ে অনেকখানি বেশি সুন্দর দিন তিনি আমাদের দিয়েছেন। এভাবেই হাসি-খুশি, সুস্থ-স্বাভাবিক থাকুক আমার ঋহান!
উদাস ঋহান
ভাআআআবজ
গাছের পাতাদের মরনের দিন চলে আসছে
আবারো উদাস
পানিতে হাঁস গোসল করছে, তাই দেখছে অতি মনযোগ সহকারে
এই যে ক্যামেরা দেখলো!
দুষ্টুমি হাসি দিয়ে ক্যামেরা ধরার জন্য ঘুরে দাঁড়ালো।
একটু একটু করে ঋহানের এগিয়ে আসা। মিশনঃ ক্যামেরা ধরা
মাশাল্লাহ ছেলেটা বড় হয়ে যাচ্ছে। ওসহ সকল শিশুদের আল্লাহ সুস্থ রাখুক... তোমার ছবির হাততো দারুন !!
হুমম, বড় হয়ে যাচ্ছে! মাশাল্লাহ!
ছবির হাত দারুন বলে লজ্জা দিয়েন না।
দারুন মুহূর্ত চমৎকার ছবি।
পরপর তোলা ছবিগুলো দারুন হইছে!
বড়ো হয়ে ঋহান দারুন এক উপহার পাবে, তোমার এই মায়ালাগানীয়া ডাইরীসম ব্লগ।
ঋহান বড় হতে হতে না জানি আরো কত কি উদ্ভাবিত হবে, ও কি আর এইসব ব্লগ পড়বে?
বারান্দায় নেট লাগাবেন মাস্ট
হুমম, সেটা আমি অনেক আগেই ভেবে রেখেছি।
এতে ঋহানের ও সেইফটি আর সে জিনিস পত্র নিচেও ফেলতে পারবে না।
গুল্টুশটা দেখি হাটাও শিখে যাচ্ছে, আসলেই বড় হয়ে যায় বাচ্চারা দ্রুত ।
হ। কয়দিন পর বলবে, চলো মা হেঁটে হেঁটে লিজা খালামনির বাসায় ঘুরে আসি
একটা ছোট্ট শিশুকে বেড়ে উঠতে দেখছি প্রতিনিয়ত। খুবই ভালো লাগছে। একেক সময় ব্লগে একেকটা সিরিজ প্রিয় হয়ে যায়। এই যেমন এখন এটা আমার সবচে' প্রিয় সিরিজ।
প্রথম ছবিটা জোশ!!!!!!!!!!
দোস্তরে অনেক আদর!!!!!!!
হ! উদাস ঋহান
মুহূর্তগুলো চমৎকার ধরেছো। দারুণ
মুহূর্তগুলো চমৎকার ধরেছো। দারুণ
থ্যাঙ্কু ভাইয়া
-এ কারণেই হয়তো ঋহান জ্যাডার আরো ২৫টা ভাইবোন পৃথিবীতে আইলেও জ্যাডামণির জন্য আপনার খানিকটা বাড়তি ভালোবাসা থেকে যাবে। যা দেখে তার ভাই-বোনেরা ঈর্ষাম্বিত হবে।
আমিও শুনেছি ৩মাস বয়সে নয়দিন মরার মতন ছিলাম। আর এ কারণেই অনেকগুলা ভাইবোনের ভীড়ে মায়ের ভালোবাসাটা এখনও যেন খানিকটা বেশি টের পাই!
আস্তাগফিরুল্লাহ! কয় কি? মাত্র ২৫?
আপনার জ্যাডার বাপরে তাইলে আরো কয়েকটা বিয়া দিয়া লাগবে। আই কুইট!
আপনি একটা কাজ করবেন? বাংলা একাডেমী থেকে অনেক আগে 'শিশু' নামে একটা বই প্রকাশিত হয়েছিল। বেশি বড় না, ছোটই। সেটি সংগ্রহ করতে পারবেন? অনেক কাজে লাগবে। লেখকের নাম মনে নেই- তবে সম্ভবত ফেরদৌস... এবং আখতার (এরকম কিছু)- স্বামী-স্ত্রী মিলে তাদের প্রথম শিশুকে পর্যবেক্ষণ করে এই বইটি লিখেছিলেন। এবং এদের কেউ একজন পরে শুধু শিশুর এই পর্যবেক্ষণকে কেন্দ্র করে তার উপরেই পিএইচডি থিসিস লিখেছিলেন।
এই সিরিজের সবগুলো লেখা পড়ে আপনার কিছু কিছু পর্যবেক্ষণ আমার কাছে শক্তিশালী ও গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে। বইটি পড়ার কথা এজন্য বলছি যে, এটি পড়লে আপনি আরো কিছু উদাহরণ ও গাইডলাইন পাবেন। সেগুলো কাজে লাগবেই।
*
মনোযোগ-সহকারে পানিতে হাঁস গোসল করার ক্যাপশনের ছবিটা কেন যেন আমার খুব ভালো লেগেছে। ঋহানকে আদর। ওকে আমাকে এক সপ্তাহের জন্য দিয়ে দেন।
ওকে! চেষ্টা করবো বইটা সংগ্রহ করতে।
এক সপ্তাহ? রাখতে পারলে নিয়ে যান
ঋহানের খেলনা, ধন-সম্পত্তির সাথে কিছু ছবি দেন তো, দেখতে মন চায়।
আচ্ছা, দিবো
দারুণ সব ছবি। অসাধারণ। এখনই বারান্দায় গিয়া উদাস হয়! কলিকাল। নাজকে ধইন্যা।
হ কলিকাল-ই!
দারুন মুহূর্ত চমৎকার ছবি।
আপু
মন্তব্য করুন