সোনামুখী সুঁইয়ে রূপালী সুতো ( কিস্তি, এক-ক)
এই সদ্যজাত উপন্যাসের প্রয়াসের কুমারীত্ব হরণের দায়ভার আমরাবন্ধুর । এই যাত্রায় আমরাবন্ধুর বন্ধুদের সহযাত্রী এবং সমালোচক হিসেবে পেলে যাত্রা আনন্দপূর্ণ হবে সন্দেহ নেই ।
এক-ক.
আমি আশফাকুর রহিম আশিক মেঘ বালিকার চিঠিটি পড়ি । প্রথম পাঠে 'হাতের কাছে ভরা কলস তৃষ্ণা মিটেনা'র মতো অনুভূতি হয় । প্রতিটি শব্দ আলাদা করে ছুঁয়ে দেবার মতন করে দ্বিতীয় পাঠ দেই, এবং তৃতীয় পাঠে অনেকগুলো শুভ্র স্বপ্নের আশ্রয় স্থল চিঠির কাগজগুলো সাদা একখানা পর্দা হয়ে 'দোল দোল দোলনার' মতো দোল খাবার রসিকতায় মাতলে আমি চন্দ্রাহত হই ! খন্ডচিত্র স্বপ্নদের আমি তখন নড়েচড়ে ওঠতে দেখি ! জীবন্ত হয়ে দাবি পূরণের শ্লোগানে সোচ্চার স্বপ্নরা ধেয়ে আসতে থাকলে, সেই সময়ে জ্যৈষ্ঠের দুপুর রোদের কার্ণিশে বিরামহীনভাবে কাকীয় সঙ্গীত ভজনরত কাকেদের যখন ক্ষণিকের জন্য হলেও নীরবতা পালন করেত মর্জি হয়, আর তখন হয়তো তারা এই মর্মে ক্ষমা প্রার্থনা করে যে, - 'ক্লান্তি মোদের ক্ষমা করো প্রভূ..;' সেই সময়ে আতিউর রহমান আতিকের সাড়ে তিন হাত ক্লান্ত দেহের ছায়া আমাদের চিলেকোঠার ঘরের দরোজা গলে মেঝেতে আছড়ে পড়া রোদে দীর্ঘায়ীত হয় । আতিউরের ঘামগন্ধী ভেজা শার্ট, ঘর্মাক্ত তেলতেলে মুখ মধ্যবিত্ত তরুণের প্রতিনিধি হয়ে আমাদের দশ ফিট বাই দশ ফিট ঘরে প্রবিষ্ট হয় । তখন হয়তো আসাদ , আসলাম, আলমাস, কিম্বা আবদুল হাই এবং এরকম আরো অসংখ্য তরুণ ছোট-বড়ো বিদ্যাপিঠ থেকে অর্জিত তাদের সবুজ ফাইলবদ্ধ সনদপত্রগুলো নিয়ে দেশের নানাপ্রান্তের অফিস পাড়াতে ঘুর ঘুর করতে থাকে । বিনয়ের অবতার হতে হতে, মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীর অফিস ঘরগুলোতে নীচু মাথায় ঢুকতে ঢুকতে , দ্য হাঞ্চব্যাক অব ঢাকা, চট্টগ্রাম , রাজশাহী, খুলনা ইত্যাদিতে পরিণত হবার আগে- আগে তাদের কেউ কেউ যখন ইন্টারভিউ বোর্ড থেকে ডাক পাবার সৌভাগ্য লাভ করে, তখন হয়তো ইন্টারভিউ বোর্ডের কোন সদস্য জানতে চান, -'এই মুহূর্তে সুন্দরবনে কতোগুলো হরিণ বিচরণ করছে বলতো পারো ?' এহেন প্রশ্নে তাদের কেউ কেউ স্বভাবতই ভ্যবাচ্যাকা খায় এবং স্পষ্টতই বিরক্তির প্রকাশ ঘটিয়ে ভুল করে । এরকম প্রশ্নে অভ্যস্ত কোন কোন রসিক তরুণ এই বলে ইন্টারভিউ বোর্ডের সদস্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে যে,- 'প্রশ্নটা বেশ সহজ ছিল স্যার; উত্তর যদিও অজানা ! তবু, আপনি যদি জানতে চায়তেন, এই মুহূর্তে সুন্দর বনে কতোগুলো সুন্দরী গাছে কয় মিলিয়ন পাতা আছে, তো আমার জন্য আরো বিরাট বিপদ হতে পারতো !'
তখন, সেইসব তরুণদের শ্রান্ত দেহ পিপাসার্ত হলে, সিটি কর্পোরেশনের 'ফি সাবিলিল্লাহ' ফ্রিজ থেকে তারা শীতল পানি পান করে । তখন যখন, পল্টন ময়দান কিম্বা লালদীঘি মাঠে কোন নেতা মুখ গহ্বর প্রশ্বস্ত করে ঘোষণা করেন, - ' দেশে কোন বেকারের অস্তিত্ব থাকবেনা ;' প্রকারান্তরে বেকারদের ধ্বংস করে দেবার কথাই তিনি বলেন কিনা তা বুঝে ওঠাবার আগেই, দৃশ্যত চোখ খোলা, অথচ অদৃশ্য কালো কাপড়ে চোখ বাঁধা এক দঙ্গল জনতা যখন এই বক্তব্যে উৎফুল্ল হয়ে ওঠে ; যখন হইহই রব আর করতালিতে নেতাকে সমর্থন জানায়, বেকার সেইসব তরুণদের মুখনিঃসৃত ভাষা তখন সার্ফ এক্সেলে ধোয়ার মতো করে জননেতাকে ধুয়ে দেয় ! তখন তরুণদের কেউ কেউ হুডতোলা রিক্সায় হুরপরীদের তুলতুলে নরম হাত ধরে বসে থাকে, তাদের হাতগুলো ঘামতে থাকে, তখনও তাদের কেউ কেউ নিয়ম করে দৈনিক ইত্তেফাকে চাকরীর বিজ্ঞাপন খোঁজে, সেই সুবাদে তাদের চোখে পড়ে বাংলা সিনেমার বিজ্ঞাপন, নায়িকা ধুনফুনের অনাবৃত্ত স্থুল উরু তখন তাদের দৃষ্টি আকর্ষণে সমর্থ হলে, তাদের একটি উক্তি বিখ্যাত হয়ে যায় ,- 'ইহার (নায়িকা ধুনফুনের) সবল উরু কাঙালী ভোজে সমানভাবে ভাগ করে দেয়া হোক !' তখন নিশ্চয় তাদের এইরকম ধারণা হয় যে, নায়িকা ধুনফুনের একটি সবল উরু সমান এক গাঁয়ের কাঙালের ভোজ !
সেই সময়ে, বিচিত্র সব সংবাদ তাদের বিচলিত করে । যেমন, ক্ষমতাবান একজন বললেন,- 'বেশী করে আলু খান-ভাতের উপর চাপ কমান!' তখন তরুণরা এই বক্তব্যের নানাদিক নিয়ে ভাববার অবকাশ পায় এবং একসময়,- কি করে ওই ক্ষমতাবানের পশ্চাতে আলুর সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করা যায়, সেই সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পেরে বিমলানন্দ লাভ করে ! তখন চিলেকোঠার ঘরে চন্দ্রাহত আমি চিৎ হয়ে শুয়ে থাকি । আমার হাতে ধরা স্বপ্নগ্রস্থ পর্দাটি তখনও দোল দোল-দোল খেতে থাকে; তা দেখে আতিউর রহমান আতিক জিজ্ঞেস করে,- কি , চিঠি ?
- হ্যাঁ !
- কার চিঠি ?
- মেঘের !
- ও !
বলে আতিউর রহমান আতিক অর্থপূর্ণ হাসি হাসলে তখন চিঠিভর্তি স্বপ্নগুলোকে ভাঁজ করে আমি সযত্নে বুক পকেটে বুকের কাছাকাছি লুকিয়ে রাখি । সেখানে বুকের ভেতর আরো যেসব শ্যাওলা জমা স্বপ্ন থাকে মেঘবালিকার কাছ থেকে ধার করে পাওয়া স্বপ্নদের প্রতি তারা কোনরকম অসহযোগ আন্দোলন ঘোষণা করেনা, বরং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে একাত্ম হয় !
চলুক।
ধন্যবাদ মুকুল ।
চলবে আশা করছি ।
জট্টিলতো
আর্শির নিয়মিত লেখা চাই
নাইলে দেশে আইলে জরিপানা হপে
জরিপানায় নাহি ডরে বীর...থুক্কু..কি কইতে কি কয় ।
ইয়ে বস, জরিপানা কইরেন মাগার কনসিডারের বিষয়ডা মাথায় রাইখেন
থ্যাঙ্কুস !
চলুক।
নামটা মনে ধরেছে খুব।
প্রথমে অন্য নাম ছিল । হঠাৎ করেই এ নামটা মাথায় এলো এবং পছন্দ হয়ে গেল ।
এখন আপনার ভালো লাগা জেনে, সমর্থন পেয়ে, এই নামের স্থায়ীত্ব জোরদার হলো ।
ধন্যবাদ রায়হান ভাই ।
চলবে ।
এই বার বই চাই..........
বই চাই..........
বই চাই..........
বই চাই..........
বই চাই..........
বই চাই..........
বই চাই..........
বই চাই..........
মাশাল্লাহ !
বই আসিবেক
বই আসিবেক
বই আসিবেক
মাগার, এইসব অখাদ্যের ক্রেতা কেঠায় হইবেক ?
বদ্দা হাছানি..........?
হাছান'তো কিয়া মিছানি ?
সিরিজ শুরু হইলো নাকি বদ্দা ?
আবার জিগস !
চলুক চলুক চলুক। ভাল্লাগছে ভাল্লাগছে।
থ্যাঙ্কু থ্যাঙ্কু থ্যাঙ্কু ; জয়িতার জয় যাত্রা..থুড়ি...জয়িতা !
নাম নিয়া কুন কথায় আমি যামু না। জীবনে নামরে কত বাহার যে আমি দেখলাম!
'নামের বাহার -দামের বাহার'-- শিরোনামে এটা লেখা লেইখা ফেলেন
আর হ্যা, জয়িত নামখানা কিন্তু সুন্দর ।
আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের স্টাইলটার কথা মনে হচ্ছে।
সামনের পর্বের অপেক্ষায়
মজার বিষয় হলো,যখন আমি শহীদুল জহিরের লেখা পড়িও নাই, এমনকি শহীদুল জহির সম্পর্কে জানতামওনা, তখনও অভিযোগ ছিলো শহিদুল জহিরকে অনুকরণ করি আমি । ব্যাপারটা নিয়ে আমি যে একটু গর্বিত , তাও জানিয়ে রাখি । শহীদুল জহিরের কোন লেখা পড়ার আগেই যেহেতু আমি ওইভাবে লেখতাম, তাই আমার কোন গ্লানিবোধ নাই ।
আর আখতারুজ্জামান ইলিয়াস না, কেউ-ই না আসলে । শেষপর্যন্ত লেখা লেখকের স্টাইলেই হয় ।
আপনার আগ্রহের জন্য ধন্যবাদ ।
চলুক...
ধন্যবাদ, ভাস্করদা ।
গোস্তাখি মাফ করবেন হুজুর, আমি কিছু বুঝিনাই। কাহিনী কোনদিকে যাবে?? প্রেমের কোন উপাদান থাকপে? চন্দ্রর কথা মনে পড়তাছে!
নারু কি চায়?
নারু, নায়িকাদের ভক্ত । এর আগে চন্দ্রাবতীর জন্য নারুর মন কেমন কেমন করতো !
ভবিষ্যতে এই গল্পের নায়িকা 'মেঘ' বা মেঘবালিকার জন্যও যে নারুর মন কেমন কেমন করবে, তা নিশ্চিত করেই বলা যায় ।
প্রেম যেহেতু জীবনের খুব জোরালো অংশ, প্রেমের যতকিঞ্চিত ছোঁয়া ছাড়া উপন্যাস সেই অর্থে উপন্যাস হয়ে ওঠবে কিনা তা নিয়ে আমি সন্দিহান । আশার কথা , এইখানা মূলত প্রেমেরই উপন্যাস । সঙ্গে পারিপার্শ্বিক প্রতিদিন ।
একটা জমাট উপন্যাস প্রত্যাশা করছি।
সমকালীন চরিত্রগুলো থাকবে মনে হচ্ছে। ক্ষমতাসীনদের পশ্চাদদেশে আলু প্রয়োগের ব্যাপারটা ভেবে দেখার মতো
বিশেষত যারা বেশী করে আলু খাবার উপদেশ বিতরণ করে থাকেন এই টাইপ গুলানরে...!
সমকালীন রাজনীতির খন্ডচিত্র হঠাৎ হঠাৎ এক ঝলক হানা দেবে !
জমাট লেখা তৈরি করবার মতন লেখক হতে পারলে নিজের চে' খুশী কেউ হতোনা ।
সেই সামর্থ নাই । চেষ্টা আছে ।
ধন্যবাদ, ভাইডি ।
সাবাশ ... ভাল্লাগতাছে .. চলুক
ধন্যবাদ বিমা ।
নতুন কিছু গান-টান শুনাইয়ো আমগোরে ।
#১ । নামটা সেই রকম
#২ । আমার শহিদুল এর কথা মনে পড়ল
#৩ । ভালু পাইলাম
#৪ । চলুক
১.নামটা যুৎসই হইছে বইলাই মনে হচ্ছে, আপনাগো ভোটে ।
২.শহীদুল এর লেখার স্টাইলের সঙ্গে মিলে যায় । তয়, ঈমানে কই ভাই, লেখাটা আমার
৩. ধন্যবাদ ।
৪. চলবে । সাথে থাকুন (গ্রামীন ফোন) !
দেরী করে পড়লাম। সময়াভাব প্রকট।
পড়ে দারুণ ভালো লাগলো।
পুরোটা পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
নামটা সুন্দর।
আর দুয়েকটা পর্ব না পড়া পর্যন্ত বাও বুঝতেছি না, তাই আপাতত কিছু বললাম না। তারপর চেষ্টা করবো নিজস্ব ভাবনাগুলো মন্তব্যের ঘরে রেখে যেতে।
ধন্যবাদ অনেক
আপনার ভাবনাগুলো জানতে পেলে ভালো লাগবে ।
প্রকট সময়াভাবের মাঝেও সময় করে নেবার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ।
গুছানো লেখক হওয়া সম্ভব হয়ে ওঠেনি । প্রতিদিনের জীবন, নগরজীবন, গ্রামীনজীবনের টুকরো -টাকরা তুলে আনার চেষ্টা থাকবে । সঙ্গে মধ্যবিত্ত তরুণের জীবনাচার ।
আপনার আগ্রহ প্রাণীত করলো ।
এরপর কি হলো বুঝতে পারছি না।

হা হা হা !
এরপর কি হলো, কি করে বুঝবেন, যদিনা, এরপরের গুলো দেই ।
দেবো, এই উপন্যাসের কুমারীত্ব হরণের দায়ভার আমরাবন্ধুর ।
অন্যকোথাও প্রকাশের আগে, এখানে আসবে ।
মন্তব্য করুন