ইউজার লগইন

নীড় সন্ধানী'এর ব্লগ

ওভারট্রাম

আমি জানি আমার শরীরের কয়েকটা ফাংশন ঠিকভাবে কাজ করছে না। অচল হয়ে যাবার সময় আসেনি এখনো। কিন্তু এটুকু সচলত্ব নিয়ে বাকী জীবন পার করা মুশকিল হয়ে দাড়াবে। বিশেষতঃ পকেটের টাকা যখন ফুরোবার দিকে থাকে। এত দীর্ঘায়ুর কোন সম্ভাবনা ছিল না। তাই সঞ্চয়কে নিরুৎসাহিত করেছি সারাজীবন। যা কামিয়েছি দেদারসে না হলেও সমানে সমান খরচ করেছি। ভেবেছিলাম চাকরী ফুরোবার আগেই ঠেসে যাবো। পরকালে গিয়ে টাকাকড়ির চিন্তা নাই। সন্তানদের জন্য কিছু তৈরি করে যাবার কথা বলে সবাই। কিন্তু তৈরী করে দিলেও লাভ নেই। আমার ভাই তৈরী করে দিয়ে গিয়েছিল। গাড়ি বাড়ি টাকা কড়ি ব্যবসা। দেখা গেল ভাইয়ার কবরের মাটি শুকাতে না শুকাতে সম্পত্তি নিয়ে কামড়া কামড়ি লেগে গেছে। লোকে এটা নিয়ে ব্যাপক হাসাহাসি করেছে। আমি ঠিক করেছিলাম পৈত্রিক এই বাড়িটা ছাড়া আর বছরখানেকের খোরাকী রেখে মরবো। বাকীটা ছেলেরা করে খেতে পারবে।

এবি'র জন্মদিনে বিউগল রেষ্টুরেন্টে সুবেদার আলী

সুবেদার আলীর শরীরটা থরথর করে কাঁপছে। শরীর বললে ভুল হবে। কাঁপছে তার দুই গ্যালন সাইজ ভুড়িটা।

জীবনে এই প্রথম তার এরকম কোন জায়গায় আসা। তার নিজের কখনো সুযোগ হতো না যদি হাতেম তাকে এই সুযোগ না দিত। হাতেম তার দীর্ঘদিনের সঙ্গী। একই মেস ঘরে থাকে দুজনে। বিউগল রেষ্টুরেন্টে কাজ করে হাতেম। ভালোমন্দ খাবার সুযোগ হলেও হাতেমের দিন কাটে হয় মুলার ঝোল নয় শশার ঝোলের তরকারি আর বড়জোর একটা ডিম। সুবেদার মেট্রিক পাশ। হাতেমের চেয়ে শিক্ষিত। কিন্তু খাবার দাবারে দরিদ্র। কারণ সে একটা গুদামে বস্তা গুনার কাজ করে। হাতেমের কাছ থেকে খাবার দাবারের গল্প শুনতে শুনতে অবিশ্বাস্য লাগে তার। কোন কোন বেলায় নাকি দুইশো পদের খাবারও সাজানো থাকে ওখানে। তার নাম বুফে। এত খায় কেমনে? এমনকি তার দুই গ্যালনের পেটের মধ্যেও বড়জোর বিশ পদ ঢুকানো যাবে ঠেসেঠুশে।

তার ছিড়া গল্প

১.
দূরে কোথাও বৃষ্টি হচ্ছে। চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছি। জানালা দিয়ে অনেক দূরের কিছু পাহাড় সারির ধোঁয়াশা। ধোঁয়াশাটা বৃষ্টির পর্দা। পাহাড়গুলো নদীর ওপারে। মাঝে মাঝে দেহবহির্ভূত হয়ে মনটা ওই পাহাড়ের আড়ালে আশ্রয় নেয়। একদিন নদীটা পার হয়ে সোজা ওই পাহাড়গুলোর দিকে চলে যাবো। অফিসে আসার পথে প্রতিদিন নদী পারাপারের খেয়াঘাট পেরিয়ে আসি। কখনো সখনো দেখি সারিবদ্ধ মানুষ নৌকা থেকে নেমে শহরের নানান জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে। যেখানে ঘাট, সেখানেই বাসস্টপ। সন্ধ্যের আগে কাজ সেরে সবাই ফিরে যাবে ওই পাড়ে।

গ্রীষ্মের দাবদাহে ফাল্গুনের গদ্য

১.
এদেশের ভবিষ্যত নিয়ে অনেকেই চিন্তিত। ভবিষ্যত নিয়ে আশাবাদী হবার মানুষ কম। যে কয়েকজন আশাবাদী মানুষ আছে তারা কতোটা অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করেন, বলা মুশকিল। এখানে কেউ নিরংকুশ ভালো নেই। কেউ আর্থিক, কেউ মানসিক, কেউ শারিরীক, কেউ পারিবারিক, কেউ বৈষয়িক, কেউ সামাজিক, কেউ নৈতিক সমস্যায় আক্রান্ত। 'আমি ভালো আছি' - এই কথাটা জোর দিয়ে বলার মতো মানুষের সংখ্যা হাতের আঙুলেই গোনা যাবে হয়তো। আমি অন্ততঃ সেরকম মানুষের দেখা পাইনি আজো। আশেপাশে সমস্যাক্রান্ত ঘনিষ্ঠ মানুষের মধ্যে থেকেও কেউ যদি বলে 'আমি ভালো আছি', তাহলে সে চরম স্বার্থপর মানুষ। আর এতটা স্বার্থপর ভালো থাকাকে মেনে নেয়া যায় না। তাই 'আমি ভালো আছি' কথাটা কেবল মুহুর্তের উচ্চারণ এবং ওই ভালো থাকা অল্প কিছু সময়ের আপেক্ষিক মাত্রা।

২.

কি লিখি?

১) সরাসরি ব্লগের পাতায় লিখি না কখনো। আগে লিখি রাফ খাতায়, তারপর ফাইনাল, তারপর ব্লগে কপি পেষ্ট। পাবলিকও তাই করে বলে মনে হয়। আজকে সরাসরি ব্লগের খাতায় লিখতে বসলাম। কারণ গুরুতর নয়, আমার কপিপেষ্ট বোতামের কোমর ধরে গেছে হেমন্তের হঠাৎ ঠাণ্ডা বাতাসে।

২) বাজারে এখন নতুন টাকার রূপে ঝলমল। একেকটা নোটের কয়েক রকম রূপ। ৫০০ টাকা ৩ রকম, ১০০ টাকা ৩ রকম, ১০০০ টাকা ২ রকম। টাকার নোটের এই তামাশার কারণে ঈদের দিন সিএনজি ওয়ালারে ৫০০ টাকার নোট মনে করে আক্কেল সেলামি দিলাম ১০০০ টাকার একটা নোট। ভাড়া পেয়ে এতটা খুশী হতে দেখিনি কোন টেক্সিওয়ালাকে। সে যাবার পর মানিব্যাগ খুলে বুঝলাম ঘটনা।

৩) বাংলাদেশে কোরবানীটা যতটা ধর্মীয় তার চেয়ে বেশী সাংস্কৃতিক হয়ে গেছে। চট্টগ্রামে এটা আরো বেশী। ফলে বড় গরু কেনার উৎসব চলে ধনী লোকদের। এবার গরু সস্তা হওয়াতে মওকা আরো বেড়ে গেছে। আমার এক আত্মীয় ১ লাখ ৩০ হাজার দিয়ে বিশাল এক গরু কিনে আনলো। কিন্তু কোরবানীর আগের রাতে গরুটা হঠাৎ করে ইহধাম ত্যাগ করলো সবাইকে চরম বিপদের মধ্যে ফেলে। আগে মরা জিনিসে ভেজাল হতো, এখন জীবন্ত জিনিসেও ভেজাল শুরু হয়ে গেছে।

ছয়টি ব্লগরব্লগর

১.
এক লোক গলায় দড়ি দিয়ে মরার জন্য দড়ির গাছি নিয়ে গাছে উঠছিল। মাঝপথে উঠে দেখলো গাছের কোটরে একটা সবুজ সাপ সাড়ে তিন প্যাচ দিয়ে বসে বসে ধ্যান করছে। লোকটা আর উপরে উঠতে সাহস পেলো না। সুরসুর করে নেমে এল মাটিতে। সাপটাকে কষে গাল দিল, দুশশালা শান্তিতে মরতেও দিলি না।

২.
টাঙ্গুয়ার হাওর দেখার সাধ আমার অনেকদিনের। কোন সুযোগ পাচ্ছিলাম না। তাই প্রস্তাব পাওয়ামাত্র চাকরীর গুল্লি মেরে টাঙ্গুয়া যাবার জন্য তৈরী হচ্ছিলাম। তখন চাকরীর সাথে সত্যি সত্যি গোলাগুলি চলছিল। যে কোন সময় আমি বা চাকরী যে কেউ যে কাউকে লাল কার্ড দেখিয়ে দিতে পারি। বেপরোয়া সিদ্ধান্ত নেবার মতো চমৎকার একটা পরিস্থিতি। কিন্তু টাঙ্গুয়া যাবার জন্য চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবার কদিন পর একদিন সাদা পতাকা তুললো চাকরী। শান্তি স্থাপন হয়ে গেল চাকরীর সাথে। শান্তি হবার পর পর এমন একটা কাজের শিডিউল পেলাম, আমার টাঙ্গুয়া স্বপ্ন লাটে উঠলো। শান্তিকালীন সময়ে চাকরীকে লালকার্ড দেখানোর কোন কায়দা আছে কি?

৩.

হাল ছেড়ো না বন্ধু!

বাথরুম সিঙ্গার কথাটা শুনতে খারাপ লাগলেও, ব্যাপারটা অত খারাপ না। যাদের গলায় সুর আছে, গানের শখ আছে, অথচ শোনাবার মতো অডিয়েন্স নেই তাদের জন্য ওই জায়গার মতো ভালো অডিয়েন্স আর হয় না। তবে গলায় সুর না থাকলে বাথরুম অডিয়েন্সেও শ্রুতিমধুর কিছু বেরুবে না। আমার ধারণা ছিল যে কেউ চাইলেই সা রে গা মা পা ধা নি সা বলে সুর তুলতে পারে। সেই ভুলটা ভাঙ্গলো যেদিন সুবীরের কন্ঠে সারেগামা শুনলাম রিহার্সালে।

খুব বেশী আগের কথা না, বাইশ তেইশ বছর হবে মাত্র। রিদোয়ান ভাইয়ের নাটকের দলে আমরা ছিলাম তার চেলা চামুণ্ডা। সন্ধ্যায় রিহার্সাল রুমে ঢুকে প্রথমেই সবাইকে গলার কারসাজি দেখাতে হতো। তার মধ্যে সবচেয়ে সহজ ছিল সারেগামা। দশ বারো জন একসাথে 'সারেগামাপাধানিসা' করে স্কুলঘরের দেয়াল কাঁপিয়ে দিচ্ছে, ব্যাপারটা দেখতে খারাপ ছিল না। কেবল এক হরতালের সন্ধ্যায় পাশের রাস্তার কোন এক বেরসিক পিকেটার ককটেল ছুড়ে মেরেছিল রিহার্সাল ঘরের পেছনে। সেই থেকে রিদোয়ান ভাই হরতালের দিনে সারেগামা বন্ধ রাখতেন। সেবার নাটকের শো যখন এগিয়ে আসছিল, রিদোয়ান ভাই সবার গলা আলাদাভাবে পরখ করার সিদ্ধান্ত নিলেন।

নায়কালোচনাঃ The Last King of Scotland

সিনেমা দেখা শেষ হবার পর নায়কের উপর বিরক্তি এসেছে তেমন ঘটনা খুবই বিরল। সেরকম একটা বিরল ব্যাপার ঘটেছে সেদিন।

সবাই জানেন ইদি আমিনের মতো বিখ্যাত খবিস রাষ্ট্রপ্রধান দ্বিতীয়টি নেই। তাকে নিয়ে একটা উপন্যাস লিখছিল সাংবাদিক Giles Foden। তার উপর ভিত্তি করে ২০০৬ সালে The Last King of Scotland নামের একটা সিনেমা নামিয়ে ফেলেছিল Kevin Macdonald. হাতের কাছে ভালো সিনেমা পেলে না দেখে ঘুম আসে না। বহু পুরস্কারপ্রাপ্ত ছবি দ্য লাষ্ট কিং অব স্কটল্যান্ড না দেখেও ঘুমাতে পারছিলাম না। কিন্তু দেখেও মেজাজ খারাপ হয়ে ঘুমের বিঘ্ন ঘটালো চরিত্রহীন নায়কটা। আগে কাহিনীটা শুনুন।

যে ঝড়ো মেঘ একদিন আমাদের আকাশেও ডেকে আনবে বিপুল অন্ধকার

এই গল্পগুলো খুব চেনা আর সাধারণ। ওরা প্রত্যেকে কাছাকাছি সময়ে আলাদা পরিবারে মানুষ হচ্ছিল। বয়েস ৪-৬ বছর। ২০১১ সালে যে গল্পগুলো ছিল এরকম-

১. অমি প্রতি শুক্রবারের অপেক্ষায় থাকে। বাবা বাসায় থাকে সারাদিন। বিকেলে ওকে নিয়ে বের হয়। হয় শিশুপার্ক, নয়তো চন্দ্রিমা, নয়তো চায়নীজ। ফিরে আসার সময় মুঠোভর্তি চকোলেট আর বেলুন। প্রতি শুক্রবার ওর জন্মদিনের আনন্দ।

২. নীহা প্রতি রাতে ঘুমোবার আগে এক ঘন্টা বাবার গলা জড়িয়ে গল্প শুনে। সেই তিন বছর বয়স থেকে গল্প শুনতে শুনতে মুখস্ত হয়ে গেছে বাবার প্রতিটা গল্প, তবু বাবার মুখ থেকে শুনতে ইচ্ছে করে ওর। প্রতিবার শুনলে মনে হয় এই প্রথম শুনছি, বাবা এমন মজা করে গল্প করে।

না

১.
মানুষগুলো খুব সীমাবদ্ধ তাই তারা কিছু করতে পারে না।
মানুষগুলো খুব ভঙ্গুর তাই তারা দৃঢ় পায়ে দাঁড়াতে পারে না।
মানুষগুলো খুব লন্ডভন্ড তাই তারা গোছাতে পারে না।
মানুষগুলো বাঙালী তাই তারা নিজের দোষ খুঁজে পায় না।
২.
আমি পছন্দের দল পাই না, তাই সক্রিয় রাজনীতি করি না।
আমি হরতালে পায়ে হেঁটে কাজে যাই, তাই তোমার আন্দোলন সমর্থন করি না।
আমি মুক্তিযুদ্ধের প্রতি শ্রদ্ধায় নত, তবু সব মুক্তিযোদ্ধাকে বিশ্বাস করি না।
আমি রাজাকারদের প্রতি ঘৃনায় উদ্ধত, তবু রাস্তাঘাটে তাদের পদাঘাত করতে পারি না।
আমি গনতন্ত্রে বিশ্বাসী, তবু নির্বাচনে ভোট দিতে পারি না।
আমি আইনের শাসনে বিশ্বাসী, তবু পুলিশ দেখে ভরসা পাই না।
আমি সুশীল মানুষের পুস্তক পাঠ করি, তবু তাদের কথায় আস্থা রাখতে পারি না।
আমি বিশ্ববিদ্যালয় পার করেছি দেড়যুগ আগে, তবু দুঃসহ সেশন জট এখনো ভুলতে পারি না।

দিবানিদ্রা

আপনার দিবানিদ্রা নামে কোন রোগ আছে?

ভয় পাবেন না। দিবানিদ্রাকে যারা রোগ বলে আমি তাদের সাথে একমত নই। পৃথিবীতে যদি একখন্ড স্বর্গও থাকে তা লুকিয়ে আছে দিবানিদ্রার ভেতরেই।

দুনিয়ার খুব বেশী দেশে এই উপহার নেই। বাংলাদেশের আলসে কুঁড়েদের জন্য প্রকৃতি দিবানিদ্রা নামক একটা জিনিস উপহার দিয়ে গেছে।

দিবানিদ্রা বলতে দিনের ১২/১৩ ঘন্টার মধ্যে মূলত দুপুরের ভাতঘুমকেই বোঝায়। ঠিক কিনা? যদি ঠিক হয় তাহলে দিবানিদ্রা নিয়ে একটা কমন সুখস্মৃতি লিখতে বসে যাই।

কেউ কারো নয় - love that's cry

আশির দশকে বিটিভিতে অন্যতম মজার ধারাবাহিক নাটক ছিল হুমায়ুন আহমেদের বহুব্রীহি। সেই নাটকেই বোধহয় কাদেরের একটা সংলাপ ছিল- "প্রেম ভালোবাসা হলো শরমের কথা"।

সেই কথা ভেবে প্রেম ভালোবাসার পথ মাড়ায়নি এক তরুণ। কিন্তু অনুভুতিরে কে ঠেকায়? অবোধ তারুণ্য সেই অনুভুতি থেকে বঞ্চিত ছিল না মোটেও। সে তখন তার এক 'তুমি'কে নিয়ে লিখতে শুরু করে এইসব না পাঠানো চিরকুট (সতর্কতাঃ কবিতা বলে কেউ ভুল বুইঝেন না আবার। Tongue )

১.
তোমাকে নিয়ে আমার অনুচিত বোধ আর
বেদনাগুলির দায়ভার একান্তই আমার।

২.
তুমি কখনো আমার ছিলে না,
কখনো আমার হবে না জেনেই
আমি ডুব দিয়েছিলাম তোমাতে।

৩.
তোমার প্রতিটি বিদায়ের সাথে চিরবিচ্ছেদের সম্ভাবনা,
যেমন প্রতিটা ঘুমের সাথে মৃত্যুর।
তবু আবারো জেগে ওঠা হয়,
আবারো তুমি আসো ফিরে।

৪.
আমি না থাকলেও তোমার কিছু এসে যায় না,
ব্যাপারটা আমাকে অযৌক্তিকভাবে আহত করে।

৫.

বনলতার অসুখ

অনেকদিন স্বপ্ন দেখি না। কাল রাতে অদ্ভুত একটা স্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙ্গে গেল। সেই স্বপ্নের অধিকাংশই মুছে গেছে ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথে।

*****

তবু স্বপ্নটাকে নিয়ে লিখতে ইচ্ছে করছে। আবার অর্থহীন স্বপ্নটাকে গুরুত্ব দিতে বারণ করছে আরেকটা মন।

*****

স্বার্থপরতার অলিগলি পেরিয়ে শীত কুয়াশার বেড়াজাল এড়িয়ে শেষরাতের স্বপ্নে ভেসে এলো- কাঁপানো জ্বর নিয়ে এলোচুলে বিছানায় শুয়ে বনলতার শরীর।

এত ছোট্ট স্বপ্ন আমি আর কখনোই দেখিনি।

বইবিয়োগ বইমেলা

জীবনে এই প্রথমবার বইমেলায় গিয়ে বইযোগ হলো না।

ঢাকা গিয়েছিলাম অন্য একটা কাজে। আজকাল ঢাকায় থাকা-খাওয়া-ঘোরা সবকিছুর উপর আমি চরম পরনির্ভরশীল, সবকিছু কতৃপক্ষের(মানে অফিসের) উপর ছেড়ে দেই। ছাত্রজীবনে যেরকম বেহুদা ঘুরে বেড়াতাম ঢাকার রাস্তা ঘাটে, এখন আর সেই ঢাকা নেই। সব রাস্তাঘাট দালানকোঠা অচেনা লাগে। বিশাল দানবীয় সব ব্যাপার। ঢাকার সবকিছু যেন একটু বড় বড়। এমনকি সাইনবোর্ডের সাইজগুলো। দেয়ালের চিকাগুলোও দেখতাম একসময় বিশাল বিশাল। গুলশান বনানী উত্তরা বারিধারার দিকে তো রীতিমতো গোলকধাঁধা। বাকী ঢাকার মধ্যে মতিঝিল কারওয়ান বাজার শাহবাগ টিএসসি এই অঞ্চলগুলো বাদ দিলে বাকী ঢাকায় আমি পথ হারানো বালক।

প্রবৃত্তি

.......রুমে ঢুকতেই ওদের দুজনের ঘনিষ্ঠতম অবস্থান দেখা গেল। ত আর ম। দুজনেই আমার চোখের সামনে। কিন্তু নিজেদের দিকে এত বেশী মনযোগী যে আমি একটা মানুষ পাত্তাই দিচ্ছে না। আমিও ব্যক্তিত্ব প্রচারে বিশ্বাসী না বলে চুপ করে থাকলাম। গলা খাকারি দিতেও ইচ্ছে করছে না পাছে রণে ভঙ্গ দেয়। আদতে সামান্য গলা খাকারিতে ভঙ্গ দিত কিনা সন্দেহ। নিজেদের নিয়ে এতটা মগ্ন।

আসলে সবাই নিজেদের প্রয়োজনেই মগ্ন থাকে। নিজেদের স্বার্থেই ডুবে থাকে। জগতের সকল প্রাণীর জন্য এই নিয়ম। এই নিয়মের ব্যতিক্রম কেউ হলে তাদের আমরা বিশেষায়িত করি। এই দুজন সেই কাতারে পড়ে না। এদের কান্ডকীর্তি মহান হবার প্রশ্নই ওঠে না।

দৃশ্যটাকে আমার কি ঘেন্না করা উচিত? মানবিক দৃষ্টিতে ঘেন্নাই সুলভ। কিন্তু পাশবিক দৃষ্টিতে ঠিক একই দৃশ্যটাকে বলা হয় প্রবৃত্তি।