ইউজার লগইন

সবার জন্যে নয়

আবেগাক্রান্ত এবং যারা ব্যক্তিগতভাবে রুমানা মঞ্জুরের সাথে সম্পর্কিত তারা অনুগ্রহ করে এ লেখাটা পড়বেন না, তাহলে সাঈদের প্রতি ঘৃণার একটা অংশ আমার উপরেও বর্ষিত হতে পারে। আবেগাক্রান্ত সময়ে এমনটাই স্বাভাবিক আর চলমান ঘটনার ভেতরে থেকে ব্যক্তিগত সম্পর্কের জায়গা থেকে নিরাবেগ হতে পারাটা কঠিন এবং মানবিকতার জন্য অপ্রয়োজনীয়।

বৌ পিটিয়ে পৌরুষ জাহির করার প্রবনতা সব সমাজেই আছে, সভ্যতার একপর্যায়ে সম্পদ হিসেবে নারীর ভুক্তি নারীকে শুধুমাত্র পণ্য করেছে, মানুষ হিসেবে তার স্বীকৃতি সীমিত , গেরোস্থালী আসবাব কিংবা নিছক গৃহসজ্জ্বা এবং রমণ ও সন্তান উৎপাদনে প্রয়োজনীয় যন্ত্রের বাইরে পৃথক মানুষ হিসেবে তার অস্তিত্বের স্বীকৃতি মেলে নি এখনও।

কোথাও পড়েছিলাম "শরীয়ত মেনে বৌ পেটানোর তরিকা" , যারা ধর্মও ছাড়তে পারেন না আবার বৌকে নিয়ন্ত্রনও করতে ব্যর্থ তারা কি তরিকায় বৌকে পিটালে সেখানে শরীয়তের বরখেলাপ হবে না এ সংক্রান্ত বিভিন্ন ধর্মীয় বানীও আছে। ধর্ম প্রয়োজনে নারীকে শাররীক নির্যাতনের অনুমতি দিয়েছে। শুধুমাত্র মুখমন্ডল এবং শরীরের প্রকাশ্য অংশের বাইরে যেকোনো জায়গায় হাতে কিংবা বেতে নারীপ্রহারে শরীয়তের বরখেলাপ হয় না।

কিন্তু ঠিক কোন পর্যায়ে নারীকে প্রহার বৈধ? এসব নিয়ে ইমামে ইমামে মতভেদ আছে, সেসব মতভেদের কোনোটাতে হয়তো রুমানার শাররীক নির্যাতনের বৈধতা খুঁজে পাওয়া যাবে, অন্তত আমাদের ধর্মপ্রাণ মানস দিয়ে বিবেচনা করলে রুমানার উপরে এই বর্বর নির্যাতনে ধর্ম ক্ষতিগ্রস্ত হয় নি।

বাস্তবতা হলো রুমানা নামের মধ্যবিত্ত কিংবা উচ্চমধ্যবিত্ত একজন নারী যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা সে তার স্বামী কতৃক নির্যাতিত হয়েছে, সে বাস্তবতা অন্য কোনো বক্তব্যে এড়ানো যাবে না, কিন্তু এই নির্যাতন নিছক মর্ষকামীতা নয় এর পেছনে কোনো না কোনো গল্প আছে, আক্রান্ত হিসেবে সবটুকু সহানুভুতি পাওয়া রুমানা এবং নির্যাতক হিসেবে সম্মিলিত ঘৃণা পাওয়া সাঈদের ভেতরের গল্পটা একেবারে উধাও।

নারী নিজের নির্যাতনের চিহ্ন লুকিয়ে রাখে, রাখতে চায় এমনটাই সামাজিক রীতি, তবে এই নৃশংসতা লুকিয়ে রাখা সম্ভব হয় নি, এটা একধরণের সংবাদভাষ্য। এখানেও পুরুষতান্ত্রিকতার নজির আছে। মানে শব্দ এবং বাক্য গঠনের ভেতরে সংবাদ লেখকের পুরুষতান্ত্রিকতা লুকানো সম্ভব হয় নি। সাঈদ বেকার, ঘরজামাই, এবং আমি জানি না হয়তো কোনো কোনো ক্ষেত্রে ইতমধ্যেই তার সাথে অবৈধ যৌনতার সম্পর্ক জুরে তাকে আরও ঘৃনিত চরিত্র হিসেবে নির্মাণের একটা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

পড়লাম সাঈদের সাথে কোনো মন্ত্রীর পারিবারিক যোগাযোগ আছে, সেটার রাজনৈতিক বিবেচনাকেও আমলে আনতে হবে বলে ভাবছে কেউ কেউ। সাঈদ এবং রুমানার বিষয়টা এভাবেই নারীবাদ এবং ক্ষমতার রাজনীতির গুটি হয়ে যাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি যাদের সমাজের অন্য কোনো নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে গ্রেফতারের আলটিমেটাম দিতে দেখা যায় না, তারা আক্রান্ত বোধ করে অপরাধীকে ২৪ ঘন্টার ভেতরেই গ্রেফতারের আলটিমেটাম দিয়েছে।
সাঈদ যে ক্যাডেট কলেজের ছাত্র ছিলো সে ক্যাডেট কলেজের সবাই মানববন্ধন করে রুমানার সাথে সংহতি প্রকাশ করবে, কিন্তু কেউই গল্পটা বলছে না। একজন মানুষ নিছক মনের আনন্দে আরেকজনের প্রতি এমন সহিংস আচরণ করেছে? যদি এমনই নিছক মনের আনন্দে কেউ সহিংস নির্যাতন করতে আগ্রহী হয় তবে তার ভেতরে এই নির্যাতন প্রবনতা অনেক আগে থেকেই ছিলো এবং সেটা কেউ না কেউ লুকিয়ে রেখেছে, নিছক বর্বরতার জন্য বর্বর আচরণ করা মানুষদের স্বাভাবিক বিবেচনায় মানসিক চিকিৎসকরের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

কিংবা এখানে দাম্পত্য সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা নষ্ট হওয়া, ভালোবাসা মরে যাওয়া কিংবা সম্পর্ক অপ্রয়োজনীয় হয়ে যাওয়ার বিষয়গুলো ঘটেছে। আমার অনুমাণ এটাই স্বাভাবিক, সম্পর্ক মরে যায়, অপ্রয়োজনীয় হয়ে যায়, সেটা বিভিন্ন কারণেই ঘটতে পারে, এবং সেটা মেনে নিতে না পারাটাই এই ঘটনার জন্য দায়ী। ভালোবাসার যে চিরন্তনতা আমরা আশা করি কিংবা দাবি করি সেটা বাস্তবের থেকে অনেক দুরের ঘটনা। সম্পর্ক, ভালোবাসা একটা নির্দিষ্ট পর্যায় পর্যন্ত মানুষের প্রয়োজন মেটায়, এরপর তার সম্পর্কের দাবি পুরণ করবার ক্ষমতা থাকে না, তখন বাধ্য হয়ে সম্পর্ক শেষ করতে হয় কিংবা কোনো না কোনো ভাবে আপোষরফা করে যৌথ জীবন চালিয়ে যেতে হয়।

সম্পর্ক ক্ষয়ে যেতে হলে মানুষকে সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে যেতে হয়। পরিচিত ব্যবস্থাগুলো ব্যতিরকে নতুন কোনো পটভুমি তৈরি হতে হয়, সেই পটভুমি বিবেচনা করে বিদ্যমান সম্পর্ক এবং ভবিষ্যত সম্পর্কের সম্ভবনাগুলো যাচাই করে ধ্বংসউন্মুখ সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা এবং সেটার শেকড় উপড়ে বের হয়ে যাওয়ার দ্বন্দ্বের ভেতর দিয়েও হয়তো গিয়েছে রুমানা, কিংবা সাঈষ রুমানার উপরে বিশ্বাস রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। হতে পারে সেটা রুমানার সাংস্কৃতিক পরিবর্তন এবং তার নিজস্ব সংস্কৃতির বিবর্তনের প্রভাবেই ঘটেছে।

ভেঙে যাওয়া সম্পর্ক কব্জির জোরে জোড়া দেওয়া যায় না। শাররীক বলপ্রয়োগের কৌশলে নয় বরং নষ্ট সম্পর্ক নবায়নের জন্য নিজের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হয়, সাঈদ যা করেছে সেটা অপরাধ এবং তার শাস্তি হওয়া প্রয়োজন কিন্তু তারও আগে প্রয়োজন এই মানসিকতাগুলো পরিবর্তন করা, সম্পর্কের চিরন্তনতার সংবেদ দেওয়া যাবতীয় প্রেমের উপন্যাস পড়ে মানুষ এমন সব সম্পর্কের স্বপ্ন দেখে কিন্তু বাস্তবে সম্পর্ক জুড়ে রাখবার কৌশল শিখে না। প্রয়োজন সামাজিক ভাবনাগুলোকে বদলানো, যে সমাজে নারীকে প্রলুব্ধ করতে ব্যর্থ হলে শক্তির জোরে বশ করবার শিক্ষা দেওয়া হয় সে সমাজের ভাবনা কাঠামো বদলানো প্রয়োজন। প্রয়োজন আমাদের সবারই পুরুষ কিংবা নারীর বদলে মানুষ হয়ে ওঠা।

পোস্টটি ৬ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

রায়েহাত শুভ's picture


বুঝলাম না রাসেল ভাই, এই লেখাটা পড়ে কেন সুমনের প্রতি উদ্ভুত ঘৃণার একটা অংশ আপনার দিকেও যাবে?

যতই আবেগাক্রান্ত থাকি, আমি একটা জিনিস মানি যে এক হাতে তালি বাজে না। আবার তালির মতো শব্দ করতে দু'টো হাতের দরকারও পড়ে না। মানে বুঝাতে চাচ্ছি যে, হয়তো সরাসরি রুমানা আপির পক্ষ থেকেও প্রভোকেশন থাকতে পারে সুমনের এরকম এগ্রেসিভ আচরন করবার জন্য। আবার আপির পরিবার থেকেও প্রভোকেটেড হতে পারে। আবার হয়তো সুমন কান নিয়েছে চিলে টাইপের খবরের পিছনে ছুটতে গিয়ে এরকম ভায়োলেন্ট হয়ে উঠেছে। ইউ উইল নেভার নো।

সবচে বড় কথা হ'লো একটা বিভৎস নির্যাতনের শিকার হয়েছে একজন মানুষ। এবং লজিকালি সেই নির্যাতনকারীর শাস্তি দাবী করা হচ্ছে।
আত্মরক্ষার জন্য খুন/যখম ছাড়া অন্য সব খুন/যখমের যেমন শাস্তি হওয়া উচিত, সেরকমই। আর এটাই কি স্বাভাবিক না?

রাসেল's picture


শাররীক আঘাত এক ধরণের অপরাধ, সেটার শাস্তি দাবি করা যায়, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই আঘাত দাতা এবং আহতের পারস্পরিক সম্পর্ক বিষয়গুলোকে অপরাধ বিবেচিত হওয়ার হাত থেেক বাঁচায়

পিতা পূত্রকে কষে থাপ্পড় লাগানোটা শাসন, সেখানে যদি ছেলে সামান্য আহত হয় এ নিয়ে কেউ মামলা মোকদ্দমা করে না।

শাসন করতে গিয়ে দেওয়া শাররীক আঘাত এবং হত্যা প্রচেষ্টার জন্য করা জখমের পরিমাণ একই হলেও দুটোর সামাজিক বিবেচনা দু রকমের। আমাদের সমাজে এই বিষয়গুলো কিভাবে মীমাংসিত হয়, সে প্রবনতাটা যাচাই করাও কি উচিত না?

মাহবুব সুমন's picture


পেছনের গল্পটা কখনোই জানা যায় না, জানতে চাওয়াও হয় না।

তানবীরা's picture


পেছনের গল্পটা খুবই নোংরা হয়তো, তাতে কি এই ঘটনা জাষ্টিফায়েড হয়, সুমন ভাই? একটা পাগলও বুঝবে, এমনি এমনি স্বামী স্ত্রীর ওপর ঝাপিয়ে পড়েনি। তার নিজের বিচার বুদ্ধি কই গেছিল? কে কইছে পরকীয়া করা বউ নিয়ে তারে সংসার করতে? নপুংশক।

@লেখক, এই ডিসক্লেমার দেয়ার মানে কি? পোষ্টে হিট বাড়ানো? ডিসক্লেমার - শিরোনামের সাথে লেখার মিল পেলাম না Puzzled

মিতুল's picture


ঘটনাটা যদি উল্টে যেত, তাহলে ?আমরা কি বলতাম ? উল্টো ঘটনা কি ঘটেনি, কখনই ?

নপুংশক এর কি কোন বিপরীত শব্দ আছে ?
কখনো শুনিনি।
বিশ্বাস করুন ,
আমি পুরুষ এইজন্যই চিৎকার করে কাঁদতে পারি না,
কাঁদলে সবাই ঐ একই কথা বলে,..”নপুংশক”

তানবীরা's picture


১. নপুংশক এর বিপরীত প্রজাতি এখনো তৈরী হয়নি, ভাববেন না প্রজাতি তৈরী হওয়ার সাথে সাথে নামও তৈরী হবে।

২. কোন মেয়ে তার স্বামীর এডাল্টারীর জন্যে তার চোখ তুলে নিয়েছে এরকম ঘটনা আমি এখনো শুনিনি, বরং সতীন নিয়ে মেয়েরা সংসার করে এটাই জানি।

৩. তবে কোন মেয়ে এঘটনা ঘটালেও আমি তাকে সমর্থন করতাম না, এটা আপনি জেনে রাখুন।

৪. এখানে কথা ছেলে আর মেয়ের না, এখানে কথা মানুষ - পশুর

৫. তবে অনেক সুশীল যারা মনের কথা মুখে আনে না, তাদের মধ্যে আপনি আলাদা, ভালো লাগলো দেখে। আপনি পুরুষ। আজকাল আমার মনে হয়, পুরুষ আর মানুষ বোধ হয় আলাদা প্রজাতি।

মিতুল's picture


”আপনি পুরুষ” কিংবা ”এটা পুরুষতান্ত্রীক সমাজ” এই কথাগুলো বলে প্রথমেই একটা সুবিধা নেওয়ার প্রশ্ন চলে আসে। এক্ষেত্রে “ মানুষ বা পশু” এধরনের শব্দচয়ন পুরু বিষয়টাকেই একটা কেমোফ্লেজ দেওয়ার চেষ্টা আছে।আমাকে পুরুষ বলে আপনিও নারী হয়ে যাচ্ছেন। আমি তো বলেছি, ‘সময় বড় অস্থির”। কর্মসুবাদে নারী অধিকার নিয়ে প্রচুর কাজ করার সুযোগ হয়েছে এবং তফাৎ টাও আমার কাছে স্পষ্ট। আমি আপনার সাথেই আছি। শুধু অনুরোধ দ্রুত কিছু বলে ফেলাটা খুব অন্যায়।যে প্রশ্নটা আমি সবসময় করি, ‘”আমরা যারা নারী অধিকার নিয়ে কাজ করি বা নারীর ক্ষমতায়ন এর লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রশিক্ষন প্রদান করি, তারা নিজেরা কতটুকু দক্ষ বা নিরপেক্ষ ? “ আমার অভিগ্গতা বলে, এই যায়গাটাতে হাত দেওয়ার প্রয়োজন আছে। কমলা ভাসিনের জেন্ডার এর সংগা শুধু পড়লেই বা পড়ালেই এর ব্যবহার নিশ্চত হয় না , এর জন্য নিজের ব্যক্তিগত জীবনে প্রয়োগেরও প্রয়োজন আছে। একটা সত্য ঘটনা বলে শেষ করছি , ”কোন এক জেলায় পারিবারিক নির্যাতন বিষয়ক একটা অভিযোগ বক্স খোলা হয়েছিল বছর খানেক আগে, উদ্দেশ্য ছিল ঘরে ঘরে যে সমস্ত নির্যাতন হয় তার একটা প্রাথমিক ধারনা পাওয়া, দিনশেষে দেখা গেল যত অভিযোগ এসেছে তার ৮০ ভাগ যুক্তিসংগত অভিযোগ করেছে পুরুষেরা। যথারীতি উদ্যোক্তাদের চোখ কপালে এবং নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা ঐ সংগঠনটি এখন সক্রিয়ভাবেই ভাবছে একটা পুরুষ সেল খোলার জন্য”।

তানবীরা আপনি বলেছেন , ”পুরুষ আর মানুষ বোধয় আলাদা প্রজাতি।”, আপনি নারী বলেই এই কথাটা বলতে পেরেছেন।

কোন নারী একই ঘটনা ঘটালে আপনি সমর্থন দিতেন না। আসলে শুধু আপনি না, ”অমরা বন্ধু” র কেউ ই সমর্থন দিত না বা দিবে না, এটা আমার বিশ্বাস।

খুব বেশীদিন আগের কথা নয়, পত্রিকায় পড়েছিলাম, স্ত্রী তার প্রেমিকের সাথে ষড়যন্ত্র করে নিজের বাচ্চাকে মেরে ফেলেছিল।আপনি নিশ্চয়ই তখন এইরকমই সরব ছিলেন।

ভাল থাকবেন। কোন কিছুই ব্যক্তিগত আক্রমন নয়।এখানে আপনি বলতে আসলে আমরা সবাইকেই বোঝাতে চেয়েছি।

আসলে যেকোন পরিবর্তন শুরুই হয় ঘর থেকে।রুমানা সুস্থ হয়ে উঠুন।হয়ে উঠুন প্রতিবাদী সকল সুস্থতা ও সত্যের পক্ষে।তানবীরা অপনার পাশে আছেন, আমিও।

তানবীরা's picture


মিতুল, আপনার প্রথম কমেন্টে আপনি নিজেকে পুরুষ বলে দাবী করলেন। এখন আমাকে নারী বলে আখ্যায়িত করলেন। তাই আলোচনার আমি এখানে সমাপ্তি টানলাম। যেদিন আপনি আপনাকে এবং আমাকে সমগোত্রীয় মানে "মানুষ" ভাববেন সেদিন আলোচনা হবে। এখন হবে শুধু সময় নষ্ট।

মিতুল's picture


আমি মনে হয় বোঝাতে পারিনি।
নারী- পুরুষের বিভেদ টানা যত সহজ, মেলানো এর থেকেও কঠিন।এর জন্য দক্ষতার প্রয়োজন রয়েছে।

আরেকটা সত্য ঘটনা না বলে থাকতে পারছি না ( অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি), কোন এক (নাম বলছি না) ফিমেইল জেন্ডার স্পেশালিষ্ট (পশ্চিমা) কে জিজ্ঞেস করেছিলাম , নারীর ক্ষমতায়ন , বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট ও ওদের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে। সহজ উত্তর উনার “আমরা আমাদের পরিবার ব্যবস্থাকে ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিয়েছি, এবার তোমাদেরটা নিয়ে মেতেছি”।কথা প্রসঙ্গে উনি বলতে দ্বিধা করেননি যে, কিছু থিওরি শুধু পরীক্ষা -নিরীক্ষার জন্যই এদেশকে বেছে নেয়া হয়। উনাকে আমার স্পষ্ট বাদীই মনে হয়েছে।

তানবীরা আপু, আমারা অবশ্যই সমগোত্রীয় মানে "মানুষ" ।
মানবতাই আমাদের ধর্ম।

আলোচনা শেষ। ধন্যবাদ ।

১০

রাসেল's picture


এখানে অনেকের ভেতরে একটা বদ্ধমূল ধারণা আছে কিছু কিছু ঘৃণা প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ এবং এটা সংক্রামক ব্যধির মতোই অনেক সময়। অনেক সময় ঘৃণাটা ফ্যাশন কিংবা নিজেকে আপটুডেট রাখার একটা প্রকাশ হয়ে দাঁড়ায়।

আমি হাসান সাঈদকে সে মাত্রার অপরাধী ভাবছি না, তাকে খামচে চোখ উপড়ে ফেলবার মতো ঘৃণার প্রকাশও করতে পারছি না বরং কিঞ্চিৎ সহানুভুতি প্রকাশ করছি হাসান সাঈদের জন্য সেটা অনেকের কোমল ভাবনাকে আক্রান্ত করতে পারবে। তবে দেখা গেলো হাসানের প্রতি সহানুভুতিটুকু অনেকের আমলে আসে নি।

পোষ্টে হিট বাড়ানোর একটা লোভ ছিলো হয়তো, হিটখোর হয়ে উঠতেছি দিন দিন।

১১

মাহবুব সুমন's picture


তানবীরা আপু, এখানে কোনো কিছুই জাস্টিফাই করার চেস্টা করা হচ্ছে না। ভিক্টিম বা আসামী বা কোনো ঘটনাকেই। যে কোনো অপরাধেরই বিচার হওয়া উচিৎ। কিন্তু যখন আপনি এই সব অপরাধের পেছনের ঘটনা, বা সেই মুহুর্তের অবস্থা, বা যুক্ত মানুষগুলোর কথা নিয়ে ভাব্বেন ও কোনো কিছুতে একটা উপসংহারে আসবার চিন্তা করবেন তখন নিরাবেগ হয়েই সেটা করতে হয়।

একটা ঘটনাকে নিয়ে আমরা আবেক্রান্ত হচ্ছি যদিও সময়ে সেটা ভুলেও যাবো কিন্তু গরিব ঘরে যখন শত শত হচ্ছে তখন আমাদের আবেগ ঘরের চাঙগে থাকে।

রুমানা মন্জুরের ক্ষেত্রে যেটা ঘটেছে সেরকম ঘটনা প্রতিদিন অহরহ ঘটে, অনেক ঘটনা প্রকাশও পায়, কিন্তু আমাদের মধ্যবিত্ত বিবেকে সেগুলো তেমন একটা তাড়া দেয় না। এই ঘটনাতেও আমি তেমন আবেকাক্রান্ত হই নাই। আমি একটা ঘটনার কথা জানি, যেখানে ২ মাসের বিয়ে করা বউকে পিটেয়া আঢমরা করে তার এক চোখ নস্ট করে ফেলা হয়েছিলো, সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে সারা মুখ পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিলো। মেয়েটি মারাও যায়নি, কোনো বিচারও হয়নো কারন বিচার ব্যবস্থায় যাওয়ার ক্ষমতাও তার ছিলো না। কোনো নারী অধিকার নিয়ে সংস্থাও এগিয়ে আসে নাই, কারন বিবৃতি ডেয়া যতো সহজ, কোর্টে মামলা চালানো বা স্বাক্ষি দেয়ার জন্য সেই সংস্থাগুলো তেমন উৎসাহী না। মেয়েটি মামলা বা করায় পুলিশও কিছু করতে পারেনি।

১২

তানবীরা's picture


সুমন ভাই, আমার কোন কমেন্টে যদি আবেগীভাব প্রকাশ হয়ে থাকে, তাহলে সেটা মিসইন্টারপ্রিটেশন হয়েছে। আমি যা বলতে চেয়েছি ব্লগার লেখক স্বপন জাকারিয়া তা সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন। অনেকেই ফেসবুকে শেয়ার দিয়েছেন, আমিও দিয়েছি। আশাকরি পড়ে নিয়েছেন হয়তো এতোক্ষণে।

ভালো থাকবেন।

১৩

রাজিব's picture


ঘটনার পিছনের কারণটি জানার অনেক চেষ্টা করেছি, জানতে পারিনি। ভেবেছিলাম বোধহয় এই পোষ্ট থেকে যানতে পারবো। কিন্তু...

১৪

কিছু বলার নাই's picture


অর্ধেক লেইখা পোস্ট করা হইছে মনে হইতেছে। কি বলতে চাইছেন ঠিক বুঝিনাই। এইটারে নারী/পুরুষ, স্বামী/স্ত্রী ইত্যাদি ঝামেলায় না ফেললেও সরাসরি এ্যাটেম্পট টু মারডার কেইসে ফেলা যায়। সেল্ফ ডিফেন্স-ও এইখানে খুব একটা জোড়ালো কোন দাবী হিসাবে আসবেনা কারন রুমানা মঞ্জুর যেইভাবে আহত হইছে আর সাঈদ হাসান যেইভাবে অক্ষত আছে তাতে ব্যাপারটা যে ডিফেন্সিভ না ঐটা বোঝা যায়। এই সমস্ত ক্ষেত্রে কি কারনে পিটাইলো ব্যপারটা অত গুরুত্বপূর্ন না মনে হয়।

১৫

রাসেল's picture


সেটা নারী পুরুষ ঝামেলা হিসেবেই বিবেচনা করা শ্রেয়, এখানে পারিবারিক কলহে শাররীক নির্যাতনের সামাজিক বৈধতা আছে, রুমানাকে এভাবে পিটিয়ে জখম করা হত্যা চেষ্টা অবশ্যই কিন্তু সেটা সম্পর্ক নির্মাণের ব্যর্থতার হতাশার প্রকাশও হতে পারে, এটা একটা বক্তব্য, খুব বেশী শক্তিশালী বক্তব্য নয় যদিও,

আমাদের এখানে বেড়ে উঠবার পর্যায়ে এইসব মৃদু এবং কঠোর শাররীক শাস্তির বন্দোবস্ত করে রেখেছেন আমাদের সমাজপিতারা, সুতরাং এখানে মাত্রাবোধ বিবেচনার ব্যর্থতার বিষয়টা বিবেচিত হইতে পারে। নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার কঠোর আইনটা রাষ্ট্রস্বীকৃত হলেও সমাজস্বীকৃত অপরাধ না হওয়ায় রুমানা এবং অন্য সবার ঘটনা ঘটবার পটভূমি নির্মিত হচ্ছে

১৬

রন্টি চৌধুরী's picture


লেখকের পোষ্টটা খুবই পছন্দ করলাম। এবং ডিসক্লেইমারটাও। এইরকম ভাবেও আমাদের চিন্তা করে দেখতে হবে। টক অফ দ্যা টাউন একটা ঘটনা ঘটল। আমরা সহানুভুতি আর ঘৃনা জায়গা জায়গা মত দেখিয়ে আবার চুপ।
পুরো দেশের মানুষের বেশীরভাগের মনেই কিন্তু একেকটা পিশাচের রুপ চলে আসছে ধীরে ধীরে। এক পিশাচ সাইদ তার বউকে কামড়ে ছিড়ে ফেলেছে। অনলাইনে পত্রিকা পড়ুয়া পাঠকরা দেখি কমেন্ট করছে সাইদকেও প্রকাশ্যে ছিড়ে ফেলা হউক। অসুস্থ চিন্তাভাবনা।

কাউকে কাউকে ভাবা উচিত, কেন এমনটা ঘটল। কেন সাইদ রুমানার উপরে এমন পৈশাচিক আচরন করতে গেল। সাইলোজিকাল মোটিভটা কি? সেটা কেন হল। সাইদের শাস্তি হউক। সাইদ শাস্তি পাবে তার কৃতকর্মের জন্যে।

আর আমাদের কাউকে না কাউকে এইরকম অশান্তির কারন বের করতে এবং সেটা পুনরাবৃত্তির এড়াতে কিছু একটা করতে হবে।

জাতিগতভাবে আমাদের চিন্তাচেতনা ভয়ংকর একটা জায়গায় এসে দাড়িয়ে গেছে। এখানে সাইদ রুমানার চোখ আঙুল দিয়ে তুলে আনতে চায়, একটা সিঙাড়া চুরির অপরাধে মানুষ দশবারো বছরের শিশুকে পিটিয়ে আধমরা করে ফেলে। চোর ধরলে পিটিয়ে মেরে ফেলে। রাস্তায় গাড়ি একসিডেন্ট করলে গাড়ির চালককে পিটিয়ে মেরে ফেলে। ছেলেধরা সন্দেহে মানুষ ভিক্ষুকদের মেরে ফেলে, খুনিরা খুন করে মানুষের দেহ টুকরো টুকরো করে ফেলে দেয়, সাধারন মানুষ আরেকজনকে খুন করে বটি দিয়ে লাশ কেটে ফেলে, পরকীয়া করে সাক্ষী সরাতে নিজের শিশুকে খুন করে মাথা কেটে গ্রীলের ফাক দিয়ে ফেলে দেয়।

এই সবি খুবই অস্বাভাবিক। ভীষন রকম অস্বাভাবিক। আমাদের এই অস্বাভাবিকতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে আরও খারাপ অবস্থায় পড়ার আগেই।

১৭

রন্টি চৌধুরী's picture


এই প্রসঙ্গের একটু বাইরের একটা কথা।

হাসান সাইদকে সাংবাদিকদের সাথে ষ্টারেদের মত কথা বলতে দেয়া হল কেন? এর পেছনে কারন কি? রুমানা মন্জুরের বিরুদ্ধে সে মোক্ষম একটা অভিযোগ দাড় করানোর চেষ্টা বা আভিযোগ করল সে টিভি ক্যামেরার সামনে। এবং একজন স্ট্রেইট গিল্টিকে এভাবে টিভিতে কথা বলতে দেয়ার পেছনের কারন কি? হাসান সাইদ কি সরকার পক্ষের কোন প্রভাবশালী অংশের সাথে ঘনিষ্ট বা জড়িত বা এমন কিছূ?

১৮

জ্যোতি's picture


প্রভাবশালী কারও আত্নীয় বলেই হয়তো পশুটাকে টিভি ক্যামেরার সামনে এরকম করে বলতে দেওয়া হলো।

১৯

মিতুল's picture


বেশ কিছুদিন আগে একটা কিছু লিখেছিলাম, পোষ্ট ও করেছিলাম “ অন্ধকার কাব্য” নামে। ঘাবড়ে গিয়েছিলাম মন্তব্যগুলো পড়ে।এখন মনে হচ্ছে মন্দ হয়নি লেখাটা।
সবার জন্যই আবার এখানে দিচ্ছি,

“ প্রতিদিন সন্ধ্যায়
সবার অলক্ষ্যে নিঃশব্দে
একটি পথহারা প্রজাপতির সুন্দর ডানা দুটো আচমকাই ভেঙ্গে ফেলি।
সে সারারাত ব্যথিত থেকে
ডানা দুটো নিঁখুত জোড়া লাগায়
পরের সন্ধ্যায় আবার ডানা ভাংগি।
সারাদিন ব্যর্থতারই প্রতিশোধ নেই, বারবার“ দাবি পৌরুষের।

নারীত্ত্বেও কি শুদ্ধতা উপযুক্ত ?
কর্ষণের সন্ধানে বেহাত হওনি কেউ?
চেপে যাওনি কান্না পেতে অন্ধকার? ভাবনি গল্প, সাদা-কালোর কিংবা রঙ্গীন ফিসফাস? কখনই?
শুননি কোথাও, ” তুমি ভালবাসি নামধারী এক প্রকাশ্য পতিতা”।

এখানে ওখানে, সর্বত্রই
আশংকা, ধ্বংস করার অদম্য ইচ্ছা
আর সুখ বোধ
এবং মৃত্যু।

কিছু কি মিলে যায় ? সময় বড়ই অস্থির।

২০

শওকত মাসুম's picture


ঘটনা যদি থাকেও্ তা আমাদের জানতে হবে কেন?

২১

জ্যোতি's picture


পেছনের গল্প যাই হোক না কেন এমন নৃসংশতা কল্পনারও অতীত। ঘৃণ্য।

২২

একজন মায়াবতী's picture


সাঈদ যা করেছে সেটা অপরাধ এবং তার শাস্তি হওয়া প্রয়োজন কিন্তু তারও আগে প্রয়োজন এই মানসিকতাগুলো পরিবর্তন করা,

প্রয়োজন আমাদের সবারই পুরুষ কিংবা নারীর বদলে মানুষ হয়ে ওঠা।

সহমত।

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.