সীসার রাজ্যে পৃথিবী নুডলসময়
বিগত বেশ কয়দিন যাবৎ নুডলসে সীসা পাওয়া গেছে শুনতে শুনতে ভাবলাম সীসার উপস্থিতি নিজে নিজে সনাক্ত করা যায় কিনা। আর করা গেলে সেটা কেমন কঠিন আর ব্যায়বহুল হতে পারে তা জানার চেষ্টা করলাম। উন্নত দেশ গুলোতে "লেড ডিটেকশন কিট" কিনতে পাওয়া যায় আর তা দিয়ে ১৫ মিনিটের মধ্যেই সীসার উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায়। আমাদের দেশে খোঁজ করে দেখলাম এমন কিছু পাওয়া যায় না (হয়তোবা আমার সোর্স ভালো না, অন্যরা খুঁজে দেখতে পারেন)। যাই হোক কাজের কথায় আসি। এখানে আমার এক বন্ধুর কাছে জানতে পারলাম সেই লেড ডিটেকশন কিট চাইলে নিজেই বাসায় বানানো যায়। তার কাছে যা শুনলাম তা হুবহু তুলে ধরলাম।
কি কি লাগবে
১) কটন সোয়াব / কান পরিষ্কার করার জন্য তুলা যুক্ত কাঠি
২) পরিষ্কার ডিসপোজেবল প্লাস্টিক কাপ
৩) সাদা রংয়ের পরিষ্কার ডিসপোজেবল প্লেট / থালা
৪) রাবিং এ্যালকোহল (ইথানল) বা নেইল পলিশ রিমুভার (এসিটোন)
৫) পানি (ডিস্টিল্ড) ৩০০ মিলি। ব্যাটারীর দোকানে / হার্ডওয়্যার শপে কিনতে পাওয়া যাবে।
৬) ভিনেগার
৭) লেড ইন্ডিকেটর / সীসা নির্দেশক: সোডিয়াম রোডিজোনেট (Sodium rhodizonate), এটা সাইন্টিফিক স্টোরে কিনতে পাওয়া যায়।
৮) ড্রপার ২ টি
এবার আসি কিভাবে সীসার উপস্থিতি সনাক্ত করব
১) কটন সোয়াব টি রাবিং এ্যালকোহল বা নেইল পলিশ রিমুভারে ভিজিয়ে নিন। এরপর নুডলস বারের উপর এক মিনিট ধরে ঘষে নিন। একই কাজ নুডলসের সাথে আসা মশলার সাথেও করুন। মশলা ঘষা লাগবে না। কটন সোয়াবে এমনি আটকে যাবে।
২) এবার কটন সোয়াবটি বাতাসে শুকাতে দিন যাতে অতিরিক্ত এ্যালকোহল দূর হয়ে যায়।
৩) প্লাস্টিকের কাপে চার ভাগের একভাগ পানি নিয়ে তাতে চিমটি পরিমান লেড ইন্ডিকেটর যোগ করুন। ইন্ডিকেটর দ্রবণ তৈরী হয়ে গেলো। কোন কেমিক্যাল খালি হাতে ধরবেন না।
৪) সাদা প্লাস্টিকের প্লেটে ড্রপার দিয়ে এক ফোঁটা ইন্ডিকেটর দ্রবণ নিন এবং তার সাথে এক ফোটা ভিনেগার যোগ করুন। পরিবেশের অবস্থা ভেদে দ্রবণটির রং একেবারে রং হীন (পানির মত) বা হলদে হবে।
৫) এবার শুকিয়ে যাওয়া কটন সোয়াব টি সাদা প্লেটে মেশানো দ্রবণে ডুবিয়ে দিয়ে অপেক্ষা করুন যেন কটন সোয়াব টি সব দ্রবণ শুষে নেয়।
এখন যদি পরীক্ষিত নমুনায় সীসা থাকে তাহলে ১-১০ মিনিটের মধ্যে (সীসার পরিমানের তারতম্যের ভিত্তিতে) কটন সোয়াব টি গোলাপী - লাল রং ধারণ করবে।
৬) এবার আরো নিশ্চিত হওয়ার জন্য ৪ ও ৫ নম্বর ধাপ বেশ কয়েকবার করুন যাতে করে (গোলাপী - লাল) রংয়ের রেন্জটি আরও ভালো ভাবে বুঝা যায়।
লেড ডিটেকশন দ্রবণের ব্যাপারে কিছু কথা:
ইন্ডিকেটর দ্রবণটি পরীক্ষা করার সময় বানাতে হবে আর এটি ৬ ঘন্টা পর্যন্ত ভালো থাকে। ভিনেগার মিশ্রিত ইন্ডিকেটর দ্রবণটি ৫ মিনিট পর্যন্ত ভালো থাকে, তাই খুব দ্রুত কটন সোয়াব টি এতে ডুবিয়ে নিতে হবে। উপরিউক্ত পরীক্ষাটি গুনগত মানের ভিত্তিতে করা এবং সর্বনিম্ন ০.১% পর্যন্ত সীসা সনাক্ত করতে পারে।
প্রতিবার পরীক্ষার সময় নতুন কটন সোয়াব ব্যবহার করতে হবে নতুবা ফলাফলে সমস্যা দেখা দিবে। কোন ভাবেই যেন এক দ্রবণে ব্যবহৃত ড্রপার অন্য দ্রবণে ডোবানো না হয়। এতে করে পুরো পরীক্ষাটি নষ্ট হয়ে যাবে।
সতর্কতা:
- কেমিক্যাল নিয়ে কাজ করার সময় সেফটি গগলস (নিরাপত্তা চশমা) আর ডিসপোজেবল গ্লাভসের ব্যবহার আবশ্যিক।
- কেমিক্যাল / কেমিক্যাল জাতীয় জিনিস সবসময় অপ্রাপ্ত বয়স্ক বাচ্চা ও খাবার থেকে দূরে রাখুন।
- গৃহস্থালী / রান্না / অন্য কাজে ব্যবহৃত জিনিষপত্র এইসব পরীক্ষার কাজে ব্যবহার করবেন না।
- পরীক্ষা শেষে কেমিক্যাল গুলো পানি প্রবাহমান এমন কোন ড্রেনে ফেলবেন।
ভাল জিনিস তো। কলেজের ব্যাবহারিক ক্লাসের কথা মনে পড়ে গেল। থ্যাংক্স শাতিল ভাই
হে হে ইন্টারের সেই লবন মেলানো যে কি পেরা দিছে, জীবনে ভুলবো না
হাহাহা আমি অবশ্য ভুলে গেছিলাম। আপনের কথায় মনে পড়লো
কালকে রসায়ন প্রাকটিকেল এক্সাম দিয়ে আসলাম, লবন শব্দটা শুনলেও এখন মাথা ঘুরাচ্ছে
ইয়ে মানে ব্যবহারিক পরীক্ষায় মামাকে আই মিন ল্যাবের মামাকে কিছু টাকা ঘুষ দিয়ে আগেই লবনের নাম জেনে নিয়েছিলাম
একখান কেলাস করলাম। কিছুই বুঝলাম না। এইটা প্র্যাকটিকেল ক্লাস। আমি হইলাম আর্টসের ছাত্র
এত কঠিন কথা কি কি বললা? ঘুম পাইছে পড়তে পড়তেই। নুডলস কি খাওন যাইব নাকি যাইব না সেইটা বলো।
আপা পরীক্ষা করে খান
খাইতে হলে এত কঠিন পরীক্ষা যদি দিতে হয়, তাইলে খাওয়ার মজা পামু কই? জীবন পরীক্ষাময়
মন্তব্য করুন