বইমেলা কড়চা ১
বইমেলা প্রাণের মেলা ,তাই প্রাণের তাগিদেই সেখানে ছুটে যেতে হয় ।ফেব্রুয়ারি মাস এলে বই মেলায় তাই না গেলেই নয় ।নতুন বইয়ের তীব্র মৌতাতে জায়গাটা ম ম করে , সেই গন্ধ শোঁকার জন্য প্রাণটাও তাই হামেশাই আইঁঢাই করে বৈকি ।তাই মাঝেসাঝে একেবারে প্লান প্রোগ্রাম কষে ,আবার কখনো সখনো একেবারেই ঝটিকা সফরে বইমেলায় ঢুঁ মেরে আসা হয় ।হতচ্ছাড়া পকেটের হতশ্রী অবস্থাকে পাশ কাটিয়ে গেলে বইমেলা সফরে আমি তাই নিখাদ অ্যাডভেঞ্চারের আমেজই পাই ।কিন্তু তারপরও কথা থেকে যায় ,কিছু অসঙ্গতি চোখে পড়ে যেগুলোকে এক তুড়িতেই উড়িয়ে দেওয়া হয়ে পড়ে নিতান্তই দুষ্কর ।
বইমেলার বাইরে বাহারি পণ্যের বিকিকিনি দেখে আমার প্রায়ই মনে হয় ,মানুষ রথ দেখতে এসে শুধু কলারই সওদা করছে ,রথ আর দেখছেনা ।এমনও হয় ,ভিতরে স্টলগুলো খাঁ খাঁ করছে ,বিক্রয়কর্মীরা বসে বসে ভেরেণ্ডা ভাজছে ,এদিকে বাইরে রকমারি জিনিসের সামনে উটকো মানুষের ভিড়ভাট্টায় চলাই দায় হয়ে পড়েছে ।সাদা চোখে অনেকে হয়তো এসব দেখে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলবেন ,বাহ ! বইমেলা তো আমাদের সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে ।কিন্তু বাইরের চটক দেখে যারা মেলার মূল সার্থকতা নিয়ে বেজায় আত্মপ্রসাদ লাভ করেন ,আমি অন্তত তাদের দলে নেই ।আমি লেখক নয় ,প্রকাশক নই ,এমনকি জাঁদরেল সমালোচক-সমঝদারও নই ,কিন্তু তারপরও একটা ব্যাপার নিয়ে মাঝে মধ্যেই মনটা খচখচ করে ,এই যে হাজারো মানুষের ভিড়ে মেলাঙ্গনে দুদন্ড দাঁড়াবার ফুরসত মেলেনা ,কিন্তু এদের মাঝে বইয়ের প্রকৃত ক্রেতা কয়জন ? সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে ছাড়াও বিশেষ দিনগুলোতে যেভাবে জনতার ভিড় উপচে পড়ে ,তাতে করে এই সওয়ালটি আরও বেশি করে আমাকে জেঁকে ধরতে থাকে ।মননশীল –ভাবুক পাঠকদের হিসেব তো দিল্লি দূর অস্ত ,মূলস্রোতের লেখকদের পাঠকগোষ্ঠী ক্রমবর্ধনশীল ,এমন দাবি কি আমরা হলফ করে করতে পারি ?“প্রচারেই প্রসার” আপ্তবাক্যে বিশ্বাসী লেখকদের বই হয়তো ভালোই বিকোচ্ছে ,দেদারসেও বিক্রি হচ্ছে ,কিন্তু একথাও আমাদের ভুলে যাওয়া চলবেনা ,তারা পাঠকদের লেখক নন ,বরং অনেকাংশেই মিডিয়ার লেখক ।তাই কর্পোরেট মিডিয়ার আশীর্বাদপুষ্ট লেখকের সামনে অটোগ্রাফ বা ফোটোগ্রাফশিকারীদের অসীমতক লাইন দেখে মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক ,এদের মাঝে পাঠকদের সংখ্যা বাছতে লাইন উজাড় হয়ে যাবে ,বরং সিংহভাগই হুজুগে ভক্ত –অনুরক্ত –শুভানুধ্যায়ী । এর ফলে যে লোকসানটা আড়ালে আবডালে কাজ করে চলেছে ,সেটা হল ,এসব অযাচিত লোকের গাড্ডায় আসল পাঠকেরা তাদের মনপসন্দ বই বিচারে নাচার হয়ে পড়ছে ;একটু ঘুরেফিরে ,একটু চেখেচুখে বই বাছাই করাটা হয়ে পড়েছে ভীষণ দুরুহ ।তাই ছুটির দিনগুলোতে অন্তত বই কিনতে বইমেলায় যাওয়ার কথা এখন আর কস্মিনকালেও ভাবা যায়না ,ভাবতে ভয় হয় ,পাছে কয়েক বছর পর আটপৌরে দিনগুলোতেও কিনা বইমেলায় পা দেওয়া দায় হয়ে পড়ে ।
চলবে...।
এইবার একটা মজার জিনিস দেখলাম, "পলান সরকার পুরস্কার"। যে সর্বোচ্চ সংখ্যক বই কিনবে, তাকে দেওয়া হবে। এই জিনিস ক্যামনে নির্বাচন করবে, কে জানে!!
সম্ভবত এবারের বইমেলা থেকে আমার চেয়ে বেশি বই কেউ কেনে নাই। টাকার অঙ্কেই সেটা ১৭/১৮ হাজার। ক্যাশমেমো এখনো আছে... আগামী কয়েকদিনে আরো বেশকিছু কেনার আশা এবং ইচ্ছা আছে।
হেহে!! বই এর লিস্টি তো দেখছি ই !!!
আল্লাহ তো আবার আপনারে গরিব মানুষ বানাইছে!
গিফট করছেন কয়খান শুনি?!!
একটাও না। উল্টা আরো গোটাপাচেঁক বই গিফট পাইছি।
আরে বড় ভাই যে ,ওপাড়া ছেড়ে এপাড়ায় ?
তোমাগো লেগা আইসা পড়লাম
আপনার বই নিয়া গেলে নাকি কিছু মনে করেন না শুনলাম।
আমি এখন কাউরে ঘরেই ঢুকতে দেই না
বইয়ের দিকে তো তাকানোই নিষেধ
কোন অসুবিধা নাই ,আপনারে মেলাতেই হাতেনাতে পাকড়াও করব
সাড়ে সর্বোনাশ!!
আম্রারে একটু কিছু পড়তে দিয়েন।
নজরুল ভাই ,আম্রা স্টুডেন্ট মানুষ ,আপনার মত টেকা পয়সা না থাকতে পারে ,কিন্তু হিম্মত আমগো কম নাই
।
তাই কইতাসিলাম ,আম্রারে একটা দুইটা বই হাওলাদ দেওয়া আপনার মানবিক দায়িত্ব
আমারও টাকা নাই রে ভাই, আমি গরীব মানুষ। জীবনে এই একটা জিনিসই আমি আগ্রহ নিয়া কিনি। বইমেলার জন্য আলাদা একটা প্রিপারেশন থাকে।
কয়েকটা পয়েন্ট।
১. মঙ্গলবার মেলায় গেলাম। স্টলে বইকেনুয়াদের(যেহেতু কিনতেছিল, তাই কেনুয়া, বাসায় গিয়া পড়বে কিনা না জেনে তো পড়ুয়া বলতে পারি না) এতো ভিড়...জায়গাই পেলাম না। বাইরের স্টলগুলো ফাঁকা। এমনকি রাস্তা জুড়ে বসা হাজিবাজি দোকানগুলোও। তার বেশিরভাগই সস্তা খাবারের দোকান। বিকালের মধ্যেই বের হয়ে এসেছিলাম দেখে জানতে পারলাম, তখনো কোনো ভিড় ছিল না। সুতরাং তোমার অবজার্ভেশনের কয়েকটা দুর্বল পয়েন্ট আন্দাজেই বের করলাম(ভুল হতে পারে
)। আর সবার মতোই সন্ধ্যা ৭-৮টার আগে মেলা থেকে বের হও না। তাই মেলার প্রায় শেষ প্রহরে বের হয়ে দেখ বাইরে হাবিজাবি দোকানে মেলার চাইতে বেশি ভিড়। ব্যাপারটা হলো মেলায় ঘুরতে এসে বইপত্র কেনার পর কিছু হাবিজাবি খাওয়াটা খারাপ কিছু না। বন্ধুরা আসে, তুতো ভাই-বোনেরা আসে, পরিবার নিয়ে আসে অনেকে... শুধু বই কিনেই বাড়ি দৌড় দিবে এটা কেমন যেন শুনায়, তাই না?
২. মেলায় আসা সবাইকে পাঠক হতে হবে এটা ভাবাও ভুল। আমরা তিন তুতো ভাই-বোন গিয়েছিলাম, তাদের মধ্যে দুজন পাঠক, আরেকজন বোনের সাথে আসছে। আমি যেহেতু আগে একবার ঘুরে গিয়েছি, আমি শুধু নিজের টার্গেট করা বই কিনে বোনকে বই কেনা-বাছায় সঙ্গ দিলাম। এক অর্থে মেলায় আমিও কিন্তু বই কিনতে যাইনি, এখন আমার মতো নিয়মিত পাঠকেরা উপদেষ্টা হিসেবে না গেলে কি চলবে?
আরো বড় কথা, ভিড়ের মধ্যে দর্শকদের বিভিন্ন পদও দেখতে পেলাম। অনেক মেয়ে মা কিংবা বাবার সাথে এসেছে। মা কিংবা বাবা হয়তো পাঠক না, মেয়ের খাতিরে এসেছে। সুতরাং মেলায় অহেতুক ভিড়ের পুরোটাই বাজে ভিড় এটা মানতে পারছি না।
৩. আমি মেলা থেকে কাউকে বইয়ের প্যাকেট হাতে নেই এমন বের হতে দেখিনি। পরিবার সাথে নিয়ে যারা এসেছে, তাদের কারো না কারো হাতে বেশ ভারি বোঁচকা। বন্ধুদের নিয়ে যারা এসেছে, তাদের অধিকাংশের হাতেও তা-ই।
৪. নন্দিত লেখকদের "নন্দিত" বিশেষণের প্রথম 'ন'য়ের উপর ই-কার দেয়ার সুযোগ আমরা কেউই ছাড়ি না, বেশিরভাগ সময়ে আমার সেটা ঈর্ষা মনে হয়। কেন জান? কারণ আমরা যারা টুক-টাক লেখালেখি করি, তারা বাদে খুব কম মানুষ ঐ 'ন'য়ের উপর ই-কার বসায়। কাউকে কর্পোরেট, তো কাউকে বুড়ো ভাঁড়...এমনি করে আমরা তুচ্ছ করতে থাকলেও তাদের বই কিন্তু মানুষ কম পড়ছে না। আমার আশে পাশে আমি যতো সাধারণ পাঠক দেখেছি, তারা সবাই কোনো না কোনো বিখ্যাত লেখকের ভক্ত, কেউ হুমায়ূন আহমেদ, কেউ জাফর ইকবাল, কেউ ইমদাদুল হক মিলন...তো কেউ মাঝেসাঝে আনিসুল হকের ভক্ত হয়ে যান। হয়তো যুক্তি দেয়া যায়, জনপ্রিয়তা দিয়ে ভাল লেখক বোঝা যায় না। কথা খুব সত্য, তবে জনপ্রিয়দের বই পড়লে মননশীল ভাবুক পাঠক হওয়া যাবে না, তা সত্য না। প্রত্যেকেই কোনো না কোনো জনপ্রিয় লেখকের বই পড়া দিয়ে শুরু করেন। যেমন আমার নিজে কিনে পড়া শুরু তিন গোয়েন্দা দিয়ে তারপর হুমায়ূন আহমেদ আর জাফর ইকবাল; আর ছোটবেলা ছিল হরেক পদের রূপকথার বই। সেগুলোর সাহিত্যমান নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়, তবে আজকে আমি যে এখনো পড়ি তার পেছনে ওগুলোর অবদান কম না।
তবে এই পোস্টটা যেই আক্ষেপ নিয়ে লিখেছ, তার কিছু কিছু আমি আন্দাজ করতে পেরেছি সেদিন। আমি কোথাও দাঁড়িয়ে বই নেড়েচেড়ে দেখতে পারিনি। অসম্ভব ভিড়... তাই বলে অন্যায় ভিড় বলে আমার মনে হয়নি।
৩ নং পয়েন্টে আমার ব্যক্তিগত একটা পর্যবেক্ষণ যুক্ত করি..
বইমেলায় সর্বাধিক বিক্রিত বই হিসেবে বাংলা একাডেমী প্রকাশিত ইংরেজি-> বাংলা ডিকশেনারি পুরস্কার পাওয়ার দাবি রাখে।
কাজেই ভারি বোঝা দেখেই বিভ্রান্ত হওয়ার কোন কারণ নাই।
সবই ভাই মার্কেটিং এর যুগ। ভারি বোঝার উপ্রে দেখি ডানোর এড। ফার্স্টে বুঝি নাই, চিন্তাইলাম মেলায় কি তাইলে ডানো বেচতাছে? দুধের বাচ্চারাও বই পড়তে আসা শুরু করছে নাকি?
পরে দেখি অন্যপ্রকাশের বইয়ের মোড়কেরও স্পন্সর আছে। মনে মনে বিভিন্ন ব্লগ ঘুইরা শেখা বুর্জোয়া-রক্তচোষা-কর্পোরেট...(কি কি যেন আরো শিখছিলাম
) ঐগুলা ভাবতে ভাবতে বাইর হইয়া গেলাম।
কালকে আরো একটা ব্যাপার ছিল, টার্গেট করা বই আগেই সব কিনছি, শুধু কনফু আর হিমুর বই দুইটা কিনলাম, বাকি সময় মেলায় আসা মানুষ দেখলাম। এক মেয়ে মাকে নিয়া আসছে। মেয়ে সেবার স্টলের অসম্ভব ভিড়ের মধ্যে বহুকষ্টে ঢুইকা জিজ্ঞাসা করে, "আপনাদের এইখানে কি চাচা চৌধুরী আছে?" আম্রা তো হো-হো কইরা হাসতে লাগলাম
১ ,২ পয়েন্ট নিয়ে আমার আসলে বলার খুব বেশি কিছু নেই ,তুমি নিজেই শেষমেশ আমার খেদোক্তির কারণ্টুকু অনুমান করে নিয়েছ ,তাই ওদিকে আর কথা না বাড়াই ।
৩ নং পয়েন্ট নিয়ে আমার দ্বিমত আছে ,আমি তো এমন অনেকজনকেই দেখি যারা স্রেফ ডেটিং করার জন্যই বইমেলায় যায় ।হ্যাঁ ,একটা কথা ঠিক ,আড্ডা মারার বা ঘোরাঘুরির ছলে অনেকেই একটা দুটো কিনে ফেলে ,কিন্তু যারা যায় সবাই বইয়ের ক্রেতা (পাঠক বললাম না কিন্তু) ,এমনটা ঢালাওভাবে বলা যায়না বলেই মনে হয় ।
৪.জনপ্রিয় লেখকদের ওপর আমার আমার যেটা কাজ করে সেটা অবিমিশ্র হতাশাই , তাদের প্রতি এই ক্ষোভ শুধুই এই নিখাদ হতাশাজাত । আর জনপ্রিয় লেখকের বই মননশীল ,এই কথাটাও ঠুনকো ,কারণ পাঠকের মস্তিষ্কের চাইতে তাদের পকেটে অনুরণন সৃষ্টি করাটাই তাদের উদ্দেশ্য ।হ্যাঁ ,তাদের কলমবাজি নিয়ে প্রশ্ন তোলার মত ধৃষ্টতা আমার নেই ,কিন্তু ওই ক্ষমতা যদি তারা বিভিন্ন স্বার্থে বিকিয়ে দেন ,তখনই সেটা আমার গাত্রদাহের কারণ হয় ।
তবে এই পোস্টটা যেই আক্ষেপ নিয়ে লিখেছ, তার কিছু কিছু আমি আন্দাজ করতে
পেরেছি সেদিন। আমি কোথাও দাঁড়িয়ে বই নেড়েচেড়ে দেখতে পারিনি। অসম্ভব
ভিড়... তাই বলে অন্যায় ভিড় বলে আমার মনে হয়নি।
আমিও বইমেলার ভীড় উপভোগ করি
তারপরেও মেলায় আমি মহামুগ্ধ। ডিসেম্বরের দিকে আরেকটা মেলা হয়। সেই মেলায় প্রাণ পাই না। সেখানে এসব বাড়তি কিছু থাকে না। প্রাণও থাকে না।
ডিসেম্বরের ওই নামসর্বস্ব মেলার কথা আমার মনেই থাকেনা ,হয়তো গোনার মধ্যে রাখিনা বলেই ।
একটা মেলার উদ্দেশ্যই হলো মানুষকে আকৃষ্ঠ করা। মানুষ সেখানে যাবে, পণ্য দেখে উৎসাহিত হবে কেনায়। মেলা করাই হয় এজন্য।
শুধু প্রকৃত ক্রেতাদের জন্য মেলা হলে মেলার উদ্দেশ্যই জলে যাবে। মানুষ মেলায় ঘুরতে যাবে, প্রেম করতে যাবে, সময় কাটাতে যাবে... আর এরই ফাঁকে হুট করে পছন্দ হয়ে গেলে বই কিনে ফেলবে একটা দুটো।
পরিবার নিয়ে মেলায় যাবে, বাচ্চারা আব্দার করবে একটা দুটো কেনার জন্য, কিনে দেবে। এটাই মেলা।
যুগলেরা যাবে, 'দেখ আমি কতো জ্ঞানী' ভাব নেবার জন্য প্রেমিক দুটো বই কিনে ফেলবে, এটাই বইমেলা। অথবা প্রেমিকাকে কিনে দেবে একটি কোনো বই... এটাই মেলা...
ভার্সিটির ক্লাসের অবসরে আইবিএ ক্যান্টিনে না গিয়ে বন্ধুরা দল বেঁধে মেলায় যাবে, আড্ডা মারতে মারতে কিনে ফেলবে একটা দুটো বই। এটাই মেলা। সেইসব আড্ডার মেয়েদের সঙ্গে টাঙ্কি মারতে যাবে অসহায় ছেলেদের গ্রুপ। তারাও মেয়েদের দেখিয়ে দেখিয়ে দুয়েকটা বই কিনে ফেলবে। এটাই মেলা।
হু.আ, ই.হ.মি, আ.হ... উনাদের চাঁদবদন দেখবে আর অটো্গ্রাফ নেবার উছিলায় দুটো বই কিনবে... এটাই মেলা।
শুধু পণ্ডিত গোছের লোকজন গম্ভীর মুখে মেলায় যাবে আর বই কিনবে। কাগজ উল্টানোর খসখস ছাড়া আর কোনো শব্দ হবে না। এই মেলা হওনের চেয়ে না হওয়াই ভালো।
আমি প্রতিবছর বইমেলার জন্য আলাদা বাজেট রাখি, বই কেনার জন্য। বইমেলার মাসে একদিন মেলায় না গেলে কান্দন আসে। এবছরও ছিলো, এবং এবার আমি সম্ভবত জীবনের রেকর্ড পরিমান বই কিনছি। আমার কিন্তু মেলার এই যে প্রাণপ্রাচুর্য্য... এটা ভালো লাগে। ঘুরতে ঘুরতে মেলায় এসেই তো বইয়ের প্রতি আগ্রহ হবে মানুষের।
পাঠক তৈরি হয়ে মেলায় আসবে না। বইমেলা তৈরি করবে পাঠক। এটা আমি মনে করি। উল্টো মনে করি যারা রেগুলার বই কেনেন, তারা পড়ার তাগিদে এমনিতেই কিনবেন। সারাবছরই কিনবেন। তাদের বই কেনার জন্য মেলার দরকার নাই। মেলাটা হওয়া উচিত আমজনতার।
শুধু বইক্রেতা আর পাঠকদের জন্য বইয়ের দোকান আছে। মেলা হচ্ছে আমজনতার জন্য। এটাই সত্য।
ঠিক এইকথাগুলো বলতে চাইছিলাম! গুছাইতে পারলাম না।
স্যালুট!
দারুন বলছেন।
চরম মন্তব্য।
নজরুল ভাইয়ের এমন ডাকসাইটে কমেন্টের পর আর কিছু বলা চলেনা ,তবুও সামান্য দু চারটা কথা বলি
।
বইমেলা আমজনতার মেলা ,পাঠকদের মেলা ,এ সবই হক কথা ,কোন দ্বিধার অবকাশ এখানে নেই ।তারপরও কথা থেকে যায় ,একটা ব্যাপার লক্ষণীয় ,বইমেলা কিন্তু আমাদের এখানে ফি বছর হচ্ছে ,এবং সেটা অনেকদিনই হচ্ছে ,আর ক্রমেই এর সার্বজনীন রুপটি একটু একটু করে পরিস্ফুট হচ্ছে ।আজ যারা বই নেড়েচেড়ে দেখছে ,বা আলটপকা বই কিনে শোকেসবন্দীই করে রাখছে ,তাদের কাছ থেকে পরের বছর আমরা কি একটু বেশি পাঠমনস্কতার আশা করতে পারিনা ?কিন্তু বলতেই হচ্ছে ,এ আশা রীতিমত দুরাশায় পরিণত হতে চলেছে ,কারণ সে রকম কোন আভাস এখনো মিলছেনা ।বইমেলার এই যে বাড়তি ফায়দাটুকু ,তা হাসিল করতে আমরা কেন পেছপা হব ? আর যদি আমরা আমজনতার দোহাই পেড়ে এ কথাটি ভুলে যাই ,তাহলে একদিন বোধহয় এর জন্য জাতির চিত্তে যে উতরোল উঠবেনা ,তা বোধহয় হলফ করে বলা যায়না ।
বস্, আমিও তাইলে দুইটা কথা যোগ করি...
আপনার মন্তব্যে দুইটা ভাগ পাই, কেউ কেউ বই কিনে শুধু সাজিয়ে রাখার জন্য, আর কেউ কেউ কিনে পড়ার জন্য।
পড়নেওয়ালাদের নিয়া কথা নাই।
যারা সাজায়ে রাখার জন্য বই কিনে, তাদের নিয়ে কোনো বিদ্বেষ কি পাইলাম আপনার মন্তব্যে? ভুল হইলেও সেই অনুযায়ী কথা কই।
যারা সাজায়ে রাখার জন্য বই কিনে, তারা কিনুক না। ক্ষতির তো কিছু নাই, লাভই বেশি। কিছু বই তো বিক্রি হইতেছে। আপনি বলতে পারেন যারা সাজানোর জন্য বই কিনে, তারা জনপ্রিয়দের বই কিনে সাধারণত। নতুন ভালো লেখকদের বই কিনে না।
তাতেও আমি আপত্তি দেখি না। এখানে প্রকাশকের কথা চিন্তা করেন। এইটা তার ব্যবসা। আমি ব্যবসাটা দেখতে চাই। প্রকাশক যদি লাভে থাকে, তাইলে সে দুইটা অলাভজনক বই প্রকাশে উৎসাহী হইতে পারে। একটা প্রকাশক টার্গেট করতে পারে তিনটা জনপ্রিয় বই ছাপাবে ব্যবসার জন্য, আর একটা অন্তত বই ছাপাবে নতুন লেখকের, যা অজনপ্রিয় হইলেও ভালো বই হিসাবে থাকবে।
প্রকাশক ব্যবসায়ী, সে ব্যবসা পেলে নতুন লেখকের ক্ষেত্রে সাবসিডি দিতে পারবে। ব্যবসা না পেলে সে গুটায়ে যাবে। এটাই স্বাভাবিক। প্রকাশকের গুটায়া যাওয়াটা সব অর্থেই ক্ষতিকর। তারচেয়ে সে টিকুক। যদি প্রকাশক টিকে, একদিন না একদিন ভালো ফলই আইবো।
বইয়ের ব্যবসা ভালো হইলেই কেবল নতুন লেখকের সুযোগ তৈরি হবে। নয়তো না। আমি প্রথমত চাই বইয়ের ব্যবসা। ব্যবসা ভালো হোক। প্রকাশক তৈরি হোক, নতুন লেখকের সুযোগ তৈরি হবে।
আমি হুমায়ুন আহমেদদের দোষ দেই না মোটেই। তাদের কারণে বই বিক্রি বাড়ছে। তৈরি হচ্ছে পাঠক। হুমায়ুন আহমেদ দিয়ে তৈরি হওয়া পাঠক একসময় নিজেরে উচ্চতর করতে অন্য বই পড়া শুরু করে। এটা আমি অনেক দেখছি।
মোটকথা বইকেন্দ্রিক আগ্রহ বাড়ুক। সেটা যে কোনো বই দিয়াই। পাঠক বাড়লেই লেখকের জায়গা তৈরি হবে। নাইলে সবই গোল্লায় যাবে
ব্যক্তিগতভাবে বইকে "পণ্য " ট্যাগ দিতে আমার একটু আপত্তি আছে ,তারপরেও ধরেও যদি নিই ,বাণিজ্যের স্বার্থে বই একটা প্রোডাক্ট বৈ অন্য কিছু নই ,সেক্ষেত্রে কিছু কথা থেকে যায় ।এই যে দেদারসে বইয়ের বিক্রি বাট্টা ,তাতে করে বইয়ের দাম রীতিমত দিনকে দিন আকাশ ছুঁতে চাচ্ছে ।বইমেলাকে ঘিরে প্রকাশকদের মধ্যেও কিন্তু দুইটা ভাগ দেখা যায় ,একদল গতানুগতিক জনপ্রিয় ধারার লেখকদের পৃষ্ঠপোষকতা করেন ,আরেকদল মননশীল ধারার বা অপেক্ষাকৃত নবীন লেখকদের প্রাধান্য দিয়ে থাকেন ,আপনার কি মনে হয়না ,এই দ্বিমুখী ধারার স্রোতে প্রথমদের আখেরে লাভ খুব একটা খারাপ না হলেও দ্বিতীয় ধারার প্রকাশকদের নিয়মিত লোকসান দিতে হচ্ছে ,আর তার জন্য অবধারিতভাবে প্রচার ও প্রসারের তাগিদে এই ধারার বইগুলোও অনেকটা লোকচক্ষুর অগোচরেই থেকে যাচ্ছে ?
বই ,তার নান্দনিক উতকর্ষ বা অপকর্ষ যাই থাকুক না কেন ,এর বিক্রি নিয়ে আমার আপত্তি নেই ।আমার কথা খুব ধীরে হলেও এই চরিত্র পালটে ফেলে সামনে এগুতে হবে ,আজকে যারা হু আ র ভক্ত ,তারা যাতে অন্তত বইটি উল্টেপাল্টে দেখে ,নেড়েচেড়ে দেখে ,এতটুকু আশা করাটা বোধ হয় খুব বেশি বাতুলতা হবেনা ।
দোকানে বা মেলার বিচারে বই পণ্যই। খারাপ শুনতে হলেও এটাই সত্য।
দেদারসে বইয়ের বিক্রিবাট্টাতে বইয়ের দাম দিনকে দিন আকাশ কেম্নে ছুঁইলো বুঝলাম না। বিক্রি যতো বাড়বে দাম ততো কমবে।
বইয়ের দাম বাড়ার কারণ কাগজের দাম বাড়ছে অনেক। এখন দেশে নিউজপ্রিন্ট আর সাদাকাগজের দাম প্রায় সমান। সেবা প্রকাশনীর বইয়ের দামও তিনশ টাকা পর্যন্ত উঠছে।
যে বইগুলোর বিক্রি কম, সেগুলোর দায় কার? লেখকের? প্রকাশকের? নাকি পাঠকের?
মেলা থেকে হুমায়ুন মিলন আনিসুলদের বই সরায়ে নিলে কি অন্য বইগুলোর কাটতি বাড়বে বলে আপনার মনে হয়? আমি নিশ্চিত বাড়বে তো নাই, উল্টা লোকে মেলাতে যাইবোই না। এখন যাও এসব অজনপ্রিয় বই বিক্রি হয় শখানেক, তখন তাও হইবো না।
প্রকাশনা যাদের বাণিজ্য, মূলত বাংলাবাজার কেন্দ্রীক, তারা তিন ধরনের বই ছাপায়। প্রথম বাণিজ্যটা তাদের পাঠ্যপুস্তক ছাপানোতে, দ্বিতীয়ত জনপ্রিয় লেখকদের জনপ্রিয় বই, তৃতীয়ত অজনপ্রিয় লোকশানী বই। মুক্তধারার মতো প্রকাশনাও কিন্তু এই তিন স্তর ধরে রাখছিলো।
প্রকাশনা এখন বাংলাবাজার ছাড়ায়ে আজীজ মার্কেটতক আসছে। আজীজওয়ালারা শুধু তৃতীয় স্তরেই থাকতে চান। তাঁদেরকে স্যালুট। এই ধারাটা জনপ্রিয় হবে না এটাই স্বাভাবিক। এবাদুর রহমান বা শাহাদুজ্জামানের মতো লেখকরে ধারণ করার পাঠক কয়জন? এদের বহুল কাটতি আশা করাটাই বৃথা। যদি এবাদুর রহমানের বই এক হাজার কপি বিক্রি হয়, তাইলে দেশে কেয়ামত হয়ে যেতে বাধ্য। এতো জ্ঞানী পাঠক এক দেশে থাকলে কেয়ামত ছাড়া গতি কী?
পাঠক খালি হুমায়ুনদের বই কিনে, অন্যদের বই কিনে না। এটাকে ক্ষোভ হিসেবে লালন না করাই ভালো। পাঠকের পাঠরুচির উন্নতির তাগিদে আমরা কী করছি? কিছুই করি নাই। তারপরও আমরা কেম্নে আশা করি যে পাঠক মেলায় আইসা ভালো ভালো বই-ই শুধু কিনবে?
খুব বেশি মাথা ঘামাই না যদিও তবুও বইমেলাকে অন্যান্য "পণ্য"মেলার মতো মনে
করতে কেন যেন বাধে আমার। আমার মতে যারা বইকে ভালোবাসেন তাদের জন্যই বই
মেলা। বইতো কোন সাধারণ পণ্য নয় যে চোখে পড়ল, মনে হল এটাতো ঘরে রাখলে ভালো
দেখাবে আর কিনে ফেললাম বা দেখে পছন্দ হল নেড়েচেড়ে বাজিয়ে দেখলাম, বা কারো
সামনে ভাব দেখানোর জন্য কিনেই না হয় ফেললাম আবজাব কঠিন নামসমৃদ্ধ কোন বই যা
কিনা কখনো উল্টে দেখা হবে না। না, বইমেলা আমার জন্য পবিত্র একটা অকেশন যার
জন্য সারা বছর টাকা জমিয়ে ঝড়-ঝঞ্ঝা-পরীক্ষা-ক্লাস-বিলাসিতা-কয়েকদিনের
নাস্তা সবকিছৃ ত্যাগ করে উৎসবের আমেজে ঝাঁপিয়ে পড়া যায়। বইমেলা আমার জন্য
কোন পণ্য মেলা নয়।
আমাদের টেকনিকাল রাইটিংয়ের ক্লাসে আমাদের খুব পছন্দের এক স্যার আমাদের টিপস
দিচ্ছিলেন কিভাবে একটা পেপার পড়া উচিত একটা কনফারেন্সে। সেখানের একটা নিয়ম
ছিল এমন যে জেনারেল পাব্লিক, অর্থাৎ নন টেকনিকাল মানুষজন যেন বুঝতে পারে
এমন কথাবার্তা দিয়েই পেপার শুরু করা উচিত কিন্তু সবসময়ই মনে রাখতে হবে যে
আমাদের পেপারের মূল লক্ষ্য হল টেকনিকাল শ্রোতা। জানিনা উদাহরণটা এখানে কতটা
খাটল, তবে আমি যা বুঝাতে চেয়েছি তা হল - বইমেলার প্রতম প্রায়োরিটি হওয়া
উচিত "পাঠক" অবশ্যই "ক্রেতা" নয়। বইমেলা অবশ্যই ভীড় করে অটোগ্রাফ নেওয়া বা
সুন্দরী তন্বীদের বগলদাবা করে লেখকদের ফটোসেশন অথবা অতি স্মার্ট
ছাম্বাদিকদের "আজ বইমেলা কেমন লাগছে?" জাতীয় ন্যাকা ন্যাকা অবজেকটিভের
উত্তর দেওয়ার কোন অকেশন নয়। বইমেলা "বই পড়ার" মেলা "বই কেনার" মেলা অবশ্যই
নয়।
দূরো আমার কমেন্টকে কোন বাঘ আইসা কোবতের রূপ দিল???!!??



আবির, বি প্রাকটিকাল...
আমি সবকিছুতেই শিল্প এবং পণ্যের যৌথতা দেখি।
আমি বইমেলা ছাড়া পারতপক্ষে আর কোনো মেলায় যাই না। বাণিজ্যমেলায় জীবনে একবার গেছিলাম একটা কাজে আধাঘন্টার জন্য।
কিন্তু সেটা বিষয় না। কথা হইলো যে যে কাজে উৎসাহী সেটাই তার কাছে শিল্প। আপনি বই ভালোবাসেন, বই পণ্য হইলে আপনার হৃদয়ে লাগে।
কিন্তু আমি মনে করি অন্যদেরও তাই লাগে। যে লোকটা নাপিত, তার কাছে চুল কাটাটা একটা শিল্প। যে ফার্নিচার ডিজাইন করে, তার কাছে এটা একটা আর্ট... কারে আপনে ছোট কইরা দেখতে চান?
প্রতিটা কাজেই ক্রিয়েটিভিটি জড়িত, কাউরেই আমি ছোট করে দেখতে চাই না। আমার কাছে বই উত্তম, তাই আমি বই কিনি পড়ি... যদি অন্যগুলারে আমি পণ্য বলতে পারি, বইরেও পণ্যই বলতে চাই। এতে দোষের কিছু দেখি না।
বিক্রিযোগ্য যে কোনো কিছুই পণ্য। এটারে আলাদা মহিমা দিয়ে লাভ নাই।
লেখা এবং বই দুটো ভিন্ন জিনিস। লেখা পাঠকের, কিন্তু বই পণ্য। এটাকে অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই। আপনার খারাপ লাগলেও। আপনার একটা বই প্রকাশ হইলে, তারও প্রধান উদ্দেশ্য থাকবে তা বিক্রি হওয়া নিয়াই।
বই আগে বিক্রি হোক। পণ্য হিসেবেই হোক। তারপর আসে পড়ার হিসাব। বিক্রি না হইলে পড়ার হিসাবেও গড়মিল।
আমার এক তুতো ভাই ছোটবেলা থেকে কমিকস ছাড়া কিছু পড়তো না। মেট্রিকে হাজার বছর ধরে না পরে শুধু গাইড বই সলভ করে পার করছে। ইন্টারে রক্তাক্ত প্রান্তর তো পড়ার প্রশ্নই আসে না। তাকে কয়েকবার বইমেলায় নিয়ে যাবার পর একখানা হিমু পড়ানো গেছে। আরো কয়েকবার নিলে হয়তো একদিন রবীন্দ্রনাথও ধরবে, কে জানে?
আর সাজায় রাখা বই যে কিনে সে না পড়লেও অন্যরা চেয়ে-চিন্তে পড়ে। একজনে কিনলে সম্ভাবনাটাই এমন যে আরো দশজনে পড়বে(নিতান্তই নজরুল ভাইয়ের মতো কিপ্টা না হইলে
) তাই বই বিক্রিতে দোষ নাই। বইমেলাতে ভিড়টা আমার বরং ভাল লাগে, বাণিজ্য মেলার মতো বইমেলাতেও বিশাল প্রান্তর থাকলে ভাল হতো, সাথে বিশাল সব স্টল, যেন আরামসে নেড়েচেড়ে বই দেখে কিনতে পারতাম!
ঐ... আমি কিপ্টা না...
আমি পড়তে দেই... কিন্তু ফেরত দেওয়ার শর্তে...
আমার একটাই কথা... যে কোনো মূল্যে বই বিক্রি বাড়ুক। তার কুফলের চেয়ে সুফল বেশি
রক্তাক্ত প্রান্তরের কথায় মনে পড়লো... আমার স্বভাব ছিলো বড় ভাইদের সব বাংলা পাঠ্য তাগোর আগে পইড়া ফালানো। রক্তাক্ত প্রান্তর পড়ছিলাম মনে হয় সিক্সে থাকতে
আমারো একই স্বভাব আসিল ,হাজার বছর ধরে পড়ছিলাম ক্লাস সেভেনেই ,কেমন কেমন জানি লাগসিল অবশ্য ;)।
বইমেলায় গিয়া ভালই সময় কাটছে এইবার।
আমারো
পোষ্ট চলুক
নজরুল ভাইর সব মন্তব্যের সাথে একমত; লস-প্রোজেক্ট বেশি দিন চলে না চললেও খোড়ায় খোড়ায় চলে দায়সারা নিয়ম রক্ষার মতন; বই মেলা যে একটা প্রানের মেলা অপেক্ষার বিষয় হয়ে উঠসে এজন্য সবারি অবদান আছে- পড়নে ওয়ালা, কিননে ওয়ালা, ঘুরনে ওয়ালা সবাই;
শেষ কথাটার সাথে আমিও একমত
আমারতো মনে হয়, পাঠক বাড়ছে । আগের যে কোন সময়ের তুলনায়তো বটেই ।
মানুষ মেলায় যাচ্ছে, ভীর করছে, বই কিনতে অভ্যস্ত হচ্ছে--এইটুকুই নগদ প্রাপ্তি !
সবই ঠিক আছে ,কিন্তু নগদ লাভের আশায় না তলে তলে আমাদের ভেতরটাতে আবার ঘুণে ধরে না যায় !
লেখা আর মন্তব্য মিলে দারুণ প্রাণবন্ত আর উপভোগ্য একটা পোস্ট হয়ে গেলো। পাঠক-ক্রেতা-পাঠাভ্যাস সবই বাড়ুক।
ফাঁকিবাকি কমেন্ট চলবেনা ,আপনার নিজের ব্যখ্যা ,বিশ্লেষণ ,টিকা ,টিপ্পনী কই ??
আমি সত্যিই বইমেলা সম্পর্কে কথা বলার জন্য যোগ্য না। শারীরিক সমস্যার কারণে ভীড়ভাট্টার জায়গা এড়িয়ে চলতে হয় তাই কোন মেলাতেই তেমন যেতে পারিনি। অল্প বয়সে দুতিনবার গিয়েছিলাম বইমেলায়। গত দশ বছরে তিন বছর ফেব্রুয়ারির মৌসুম ঢাকায় কাটিয়েও বইমেলায় ঢোকা হয়নি, প্রবেশপথ পর্যন্ত গিয়ে ভীড় দেখে ফেরত চলে এসেছি। আমার বই কেনা চট্টগ্রামকেন্দ্রিক। পরিচিত দোকান; অনুরোধ করলে স্টকের বাইরের বইও এনে দিতো।
এবার চট্টগ্রামে গিয়ে দেখলাম চেরাগী পাহাড়ের মোড়ে প্রথমার শাখা খোলা হয়েছে ,আর বইয়ের দাম কি ভয়ানক
।
আপনি বইটই কিনতেন কোথা থেকে ? আমি আবার অমরবইঘর থেকেই বেশি কিনি ।
ঐ অ, এইরা কি দিসোস ???
একটা বইও তো ধার্দিতে দেখি না- দিলে নয় বুজতাম অনেক কিইন্যা ফেলাইসোস... ...
হালার্ভাই, তুমি আমার বই দ্রুত ফিরৎ দিয়া যাইবা নয়তো তুমার সানডে মানডে মায় থার্সডে পর্যন্ত পুরা হপ্তা কোলোজ কইরা দিমু!
ঐ মিয়া ,তুমার আমারে কিছু কিছু একটা দেওনের কথা ,ইয়াদে আছে তো ?
শেষের সমস্যাটার একটা সম্ভাব্য সমাধান দিতে পারতা। ব্যাপারটা আরেকটু ক্লিয়ার হতো আমার জন্য।
ঐটা পরের পর্বে দিচ্ছি
....২/৩ বছর পর, মেলায় যাইতে পাইরাই আমি মহা খুশী, বই কেনাকাটার জন্য দু:খ নাই.....
আপনি তো বিরাট হতভাগা
,আমি তো এইবারই আটবার গেলাম 
খাইছে আমারে ! এ যে দেখি, দায়ের চেয়ে কঞ্চি বড়... অবস্থা ! পোস্টের চেয়ে মন্তব্য ইয়া বড় বড় ! এইখানে মন্তব্য না করি ... ডরাইছি
এত অল্পতে ডরাইলে ক্যামনে চলবো ?
বছরে দুইবার বই মেলা হওয়া উচিত
... এই চত্বরে
হক কথা
।
কয়েক বছর পর আটপৌরে দিনগুলোতেও কিনা বইমেলায় পা দেওয়া দায় হয়ে পড়ে ।
কয় বছর পর তুমি গ্র্যজুয়েট স্টুডেন্ট হয়া বাসা-ভারসিটি দৌড়াদৌড়ি করবা। ১০ বছর হৈল বইমেলা যাইনা
১০ বছর !!!
এতদিন বইমেলায় পা না পড়লে আমি তো দমবন্ধ হয়ে মারা যাব
।
বইমেলায় ভীরের মধ্যে যাইতে একদমই ভাল লাগতনা। পাঁচবছর বইমেলা থেকে ২ মিনিটের হাঁটা দুরত্বে ক্লাশ করতাম, কিন্তু সব মিলিয়ে মনে হয় ২/৩ বারও যায়নি!!
মন্তব্য করুন