সিসিমপুরের অন্যদিক/ ওড টু মাই ফ্যামিলি -৫
[২৯ নভেম্বর ২০১১ তে প্রকাশিত জনপ্রিয় ব্লগার একজন মায়াবতী'র আমার সিসিমপুর-২ এ মন্তব্য হিসাবে লেখাটা শুরু করেছিলাম। একটু বেশি বড় হয়ে যাচ্ছিলো, বিধায় ব্লগ হিসাবে পোস্ট দিলাম। রেফারেন্সের জন্য লেখাটি পড়ে নিন। ]
তৃতীয় গল্পটি পড়ে শুধু মন খারাপ হলোনা, বরং কিছুটা হতাশ হলাম।
গরীব একজন আমার বাড়িতে কাজ করে বলেই তার আনন্দ-বেদনা নিয়ে হাসাহাসি করাটা আমার কাছে অস্বস্তিকর, বিশেষত যখন তাদের নিয়মিত সাপ্তাহিক ছুটির ব্যবস্থা নাই, বিনোদনের সুযোগ সীমিত, সঙ্গত কারনে ঘর থেকে বের হওয়া নিয়ন্ত্রিত, এবং তাদের নতুন বন্ধু তৈরী ও মতামত বিনিময় করার সুযোগ প্রায় নাই বললেই চলে। খেয়াল করে দেখবেন, এর প্রতিটি খুব সাধারন মানবিক চাহিদা। ওগুলো পূরনের উদ্দেশ্যেই আপনি বা আমি এখন ইন্টারনেটের দ্বারস্থ।
আমি ধারনা করছি "আম্মু রান্নাঘরের ম্যানেজার" গুলো অল্পবয়সী তরুনী। পাশের বাড়ির ব্যাচেলরদের দৃষ্টি আকর্ষন করার থেকে স্বাভাবিক চাহিদা আর কি হতে পারে তার জন্য? সে কারনে " বিশাল সাইজের বোতল [যেটা] দেখলেই ভয় লাগে [সেটা থেকে] একটা বিচ্ছিরি রকমের তিতা ভিটামিন ঔষধ [...] যেটা [আপনি] ভয়ে খা্ন না" সেটা তাদের উপরে প্রয়োগ করাটা আমার দৃষ্টিতে অত্যন্ত অমানবিক। বোতলটি কেন যত্ন করে রেখে দিয়েছিলেন সেটা আপনার বোধগম্য না হলেও, পাঠকের তা বুঝতে কষ্ট হয়না।
পরের দিন সকালের কাহিনী আরো করুণ।
আপনি যে তাদের অসহায়ত্বর সুযোগে বিনোদন কুড়াচ্ছেন, সেটা কি বুঝতে পারেছেন আপনি? নিজেকে অথবা নিজের ভাই বা বোনকে চিন্তা করুন মেয়েগুলোর জায়গায়। আপনার অফিসের বস যদি আপনাকে একই ভাবে তিতা ভিটামিন খাওয়ায়ে মজা নেয়, আর পরে সেটা বন্ধুদের মাঝে কৌতুক করে বলে, আমার দৃঢ় বিশ্বাস আপনার সেটা ভালো লাগতে পারেনা। শিক্ষিত মধ্যবিত্ত বলে হয়তো আপনি সেরকম চাকরির মুখে লাথি মারবেন। আপনার "রান্নাঘরের ম্যানেজারের" সেরকম হুজ্জত আছে বলে মনে হয়না। তাই তিতা/ঝাল যাই দেননা কেন, মাথাগুঁজে তারা দিনের পর দিন পড়ে থাকবে আপনাদের বাড়ীতেই, অথবা আপনার মতই অন্য কারো বাড়িতে। হয়তো একদিন কাজের ফাঁকে পাশের বাড়ির ব্যাচেলরের সাথে কথা হয়েও যাবে। প্রেম হওয়াও বিচিত্র না। তবে কাজের মেয়ে বলে সেখান ও হয়তো সম্মান পাবেনা মেয়েগুলো।
আমার খুব প্রিয় একজন মানুষের নাম রাবেয়া। সে আমার বন্ধু এবং সুহৃদ। মৌসুমকে জিজ্ঞেস করলে জানবেন, তার সাথে আমার সখ্য কত পুরানো। মেয়েটি আমাদের বাড়িতে কাজ করতো। পরে পাশের বাড়ির ড্রাইভারের সাথে প্রেম করে বিয়ে করে। বছর দুয়েক পরে এখন তালাকপ্রাপ্তা। গ্রামে সে বাড়ী করেছে, গরু, হাঁস ও মুরগীও আছে। মাঝে মাঝে আমাকে ফোন করে টুকটাক গল্প করে। আমি জানি যে তথাকথিত শিক্ষিত না হলেও সে অত্যন্ত মেধাবী মানুষ, খুব দৃঢ় আত্মসম্মান তার। মাঝেমাঝে যখন ঢাকায় আসে, সবসময় আমাদের জন্য হাতে থাকে মিষ্টি, বা ওর বাড়ির গাছের ফল পাকুড়। ওর কাছে থেকে শোনা অনেক গল্প নোটখাতার তোলা আছে। কখনো যদি লেখালেখিতে আসি, ব্যাবহার করবো। সেখানে আছে রাজশাহীর গন্ডগ্রামে্র ভয়ানক সুন্দরী মেয়েটির জীবন সংগ্রামের দলিল। আমার কোন কোন বন্ধুর মতে রাবেয়া দেখতে মেরিল স্ট্রিপের মত, আমার মা বলে ও নাকি মধুবালার কার্বনকপি। রাবেয়া আমাকে আরো বলেছে বাঁশবাগানের কোনায় লুকিয়ে তার নিজের চোখে দেখা "বাংলা ভাই" য়ের হাতে বাগমারার মানুষ নির্যাতিত হবার কাহিনী। আর প্রেম-অপ্রেমের কাহিনী তো আছেই। আমি আপনাকে নিশ্চিতভাবে বলতে পারি আপনার আমার মধ্যবিত্ত প্রেমের মত তার প্রেমও তীব্র-- আকাঙ্ক্ষা, ভালবাসা, পাওয়া, হারানো, সবই তার জীবনে সমান গুরুত্ববহন করে।
একজন মায়াবতীর লেখা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা না। যদি হতো তাহলে অন্যান্য ব্লগারবৃন্দ এত বাহবা দিতেন না। আমি ভেবে অবাক হচ্ছি যে কারো মনে হলো না যে কাশি বন্ধের পদ্ধতি হিসাবে তিতা অষুধ গেলানোর আইডিয়াটা স্বৈরাচারী এবং মেয়েগুলোর জন্য অসম্মানজনক। কাজের মেয়েগুলোর সাথে গল্প করে, তাদের বন্ধু হয়েও এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। তাতে মালিক-চাকর সম্পর্কের মধ্যেও একটি বন্ধুত্বের ডাইমেনশন তৈরি হতে পারে।
এই লেখা কোন ব্যক্তিগত আক্রমনের উদ্দেশ্যে নয়। আমাদের সমাজে এই অসম ক্ষমতা-সম্পর্ক নিয়া আলোচনা দরকার আছে বলে আমি মনে করি।
আপনি যেভাবে বিষয়টা দেখছেন এটি একটি দিক। মেইড সারভেন্টদের যারা তরুণী তারা যদি ড্রাইভার, দারোয়ান, দোকানদারের সাথে কোন সম্পর্কের মধ্যে প্রবেশ করে সেগুলো ইতিবাচক ফল না এনে নেতিবাচক ফলই দেয়। ড্রাইভার/দারোয়ানরা মৌসুমি প্রেমের মতো করে এগুলোতে জড়ায়। একদিন নানান ঘটণা ঘটিয়ে তারা বিদায় নেয়। অনেকসময় সেই ঘটণাগুলোর জন্য বাড়ির মালিকের জেলের ঘানিও টানতে হয়। বাস্তবতা আর আবেগ আসলে ভিন্ন। যে মেয়েটি আমার বাড়িতে কাজ করতে আসে তার দায়িত্ব পুরোই আমার। আমার বাড়িতে থাকাকালে তার কোন দূর্ঘটনা যদি ঘটে তার দায়ভার আমাকেই বইতে হবে। আমি আমার মেইডকে কীভাবে রাখি সেই গল্প এখানে প্রাসঙ্গিক নয় হেতু বললাম না। কিন্তু সে পাশের বাড়ির দারোয়ানের সাথে প্রেম করবে আর আমি তাতে সমর্থন করবো এটি ঢাকা শহরে যারা জটিল নাগরিক জীবন যাপন করে তাদের জন্য একটু বেশীই হয়ে যায়।
পোস্ট থেকে আমার নামটা সরালেন বলে ধন্যবাদ।
আপনার নামটি ভুল করে লেখা হয়েছিলো। আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
আমি ঢাকা শহরের জটিল জীবনযাপনের বাস্তবতা জানিনা আপনার এই অনুমান ভুল। আমার প্রবাস জীবন অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত-- জন্ম, শিক্ষা, বেড়ে ওঠা সবই ঢাকাতেই হয়েছে, ফিরে যাওয়াও ওখানেই হবে। এখনো বাবা/মা/ভাই/বোন আছেন ঢাকাতে, এবং বাড়ীতে সাহায্যের জন্য লোকজনও আছে। জানি বলেই এই "কাজের মেয়ে" নামক অপ্রিয় প্রসংগ নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছিলাম। আপনার দ্বায়িত্বশীলতার প্রতি কোন প্রশ্ন তুলিনি আমি। তবে দায়িত্বশীল গৃহস্থ সব কাজের মেয়ের কপালে জোটেনা, যাদের জোটে তাদের হয়তো রাতের বেলা তিতা অষুধ গিলতে হয়না।
"মেইড সারভেন্টদের যারা তরুণী তারা যদি ড্রাইভার, দারোয়ান, দোকানদারের সাথে কোন সম্পর্কের মধ্যে প্রবেশ করে সেগুলো ইতিবাচক ফল না এনে নেতিবাচক ফলই দেয়।"-- সম্পূর্ন একমত। তবে প্রশ্ন হলো লেতিবাচকতা কি শুধু তাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ? আমার জীবনের বহু সম্পর্ক এমন নেতিবাচক যে লেখা শুরু করলে উপন্যাস হয়ে যাবে। কাজের মেয়েদের সাথে কথা বলে তাদের এব্যাপারে বোঝানো কি একেবারেই অসম্ভব?
দ্বায়িত্বশীলতা আর সহমর্মিতার সমন্বয় কি হতে পারবেই না? অযথা তিতা অষুধ খাওয়ানো আপনি কিভাবে সমর্থন করছেন!
আপনি ঢাকা শহরের নাগরিক বাস্তবতা জানেন না তা বলিনি। বলেছি, বাস্তবতা হচ্ছে নাগরিক জীবন এমন।
আপনার পোস্ট শুধু তিতা অষুধ সংক্রান্ত আলোচনা নিয়ে সীমাবদ্ধ থাকলে আমি এখানে কোন কমেন্ট করতাম না। কিন্তু আপনি মেইড সারভেন্ট এর প্রেম সমর্থন করা এবং নিজে কীভাবে মেইড মেইনটেন করেন সেই উদাহরণ টানলেন বলেই আমি কমেন্ট করেছি। আমার মতে ওগুলোর দরকার ছিল না। 'ভাল মানুষ', 'খারাপ মানুষ' কথাগুলো পুরোই রিলেটিভ ব্যাপার। এগুলো নিয়ে বিতর্ক করা অহেতুক।
আমাদের দেশে মেইডদের টর্চার করার ভয়াবহ ঘটণা অনেক ঘটে। এগুলো নিরাময়ের কোন রাস্তা দেখিনা। মানুষ খুব অদ্ভুত প্রাণী। দাসপ্রথার মত মেইড মেইনটেইন করার মত ঘৃণার আর কিছুই নাই। কিন্তু মায়াবতীর বিষয়টাকে আপনি খুব একচোখা ভঙিতে দেখেছেন।
মায়াবতীকে আমি পার্সোনালি চিনি। ও সুইট টাইপ একটা মেয়ে। ওর পোস্টগুলো পড়ে দেখেন, অদ্ভুত মায়াবী আর মায়ায় ভরা তার কথা। সে ফাজিল টাইপ কোন গৃহস্থ নয়। মজা করে মেইডদের শাসণ করেছে। এইটাকে স্রেফ মজা হিসেবেই দেখেন। এত সিরিয়াস হবার কিছু নাই। চারপাশে সিরিয়াস অনেক ইস্যু আছে।
মানুষ চেনা এতো সোজা নয় লীনা। চেনা চেনা লাগে তবু অচেনা
আমিও মায়াবতীকে পার্সোনালী চিনি। ওর মতো খান্ডারনী টাইপ মাইয়াই হয় না
এতো রাত অব্ধি জেগে থাকলে মুখতো লাল হবেই, যাও ঘুমাও গিয়া
স্কুল/কলেজ লাইফে আম্রা অনেক কিছুই করেছি যেটা বয়স বাড়ার সাথে সাথে হয়তো সঠিক মনে হয়নি। সময়ে অনেক কিছুই বদলে যায়। সঠিক এবং ভুল এর পার্থক্যটা সময়ের পথে হেটে যেতে যেতে শেখা হয়। যার ব্লগ নিয়ে কথা বললেন... একটু খুজলেই দেখবেন তার বড় বোনের ব্লগেই আবার এর উল্টা চিত্র পাবেন। মেইডদের জন্য মানবতা, মানবিকতার ঘাটতি পাবেন না।
ছোট একটা মানুষের এমন একটা পোস্ট নিয়ে এমন রিয়েকশন বেশীই মনে হইছে :)। হয়তো পরের কোন পোস্টে তাকেই মেইডের জন্য জানপরান দিয়ে দেয়ার কথা পড়বেন। এটাকে এমন সিরিয়াস ভাবে নেয়ার মত কিছু মনে হয় নাই।
ধন্যবাদ, টুটুল ভাই। একজন মায়াবতীর বড় বোন কে?
ছোটবেলা আমার একটা রাগ ছিল বাপমার উপর, তারা কোন কারনে বাসায় যেই মেয়েটা কাজ করতো ওর উপর রাগ হইলে আমাকে আইসা পিটাইতো। এইটা হয়তো ঝিকে মেরে বৌকে শিখানো মার্কা কিছু একটা হবে, গরীব বাসার মেয়ে, ঠেকায় পড়ে কাজ করতে আসছে, ওকে মারাটা অনৈতিক, এর থেকে নিজের মেয়ের দায়দায়িত্ব সম্পূর্ন নিজের, তাই ইচ্ছামতন পিটানো যায়। সেই থেকে বাসার কাজ করুয়ারা আমার কাছে মূর্তিমান বিভিষীকা। বড় হয়ে বাপমার জিনের সাথে যুক্ত হইছে নিজের পলিটিক্যালি কারেক্ট থাকতে চাওয়ার একটা ইন্সটিংক্ট...তাই আমার বাসায় যে কাজ করতে আসে সে মোটামুটি তার খুশি মতোন চলে। ফলসস্বরুপ, উনির আধা ধুয়ে যাওয়া বাসনকোসন ব্যবহার করার আগে নিজেই ধুয়ে নেয়া, মাঝে মাঝে নিজের-ই বাসা পরিস্কার করতে নেমে যাওয়া ইত্যাদি। যেহেতু শক্ত গলায় কিছু বলতে পারিনা ভয়ে, 'যদি পাওয়ার প্র্যাকটিস হয়ে যায়', তাই আমি মোটামুটি স্বেচ্ছায় এইসব মেনে নিছি। দেশে বাসার কাজ অসম্ভব কঠিন, একা একা কাজ করাটায় আমার কোন সমস্যা নাই, তবে সেটার জন্য যেই পরিমান সময় লাগবে ঐটা আমার নাই।
আমি নিজের কিছু বন্ধুর বাসায় থাকা লোকদের সাথে আমার যোগাযোগ আছে। আমি তাদের নিয়ে হাসাহাসিও করতে পারি, ঐটাতে আমার কোন সমস্যা হয়না, কারন সেই হাসাহাসিটা আমি আমার বন্ধুকে নিয়েও করতে পারি। আমার কাছে মেজারমেন্টটা ঐটাই। ঠিক এই কাজটা কি আমি আমার পরিচিত লোকজনদের সাথে করতে পারবো? যদি না করতে পারি, তাইলে এই কাজটা আমার করা ঠিক হয়নাই। মায়াবতীর ঘটনাটা আমার কাছে খারাপ লাগেনাই কারন আমার মনে হইছে এই কাজটা সে তার ছোট বোনের সাথেও করতে পারতো। এটা দুষ্টামিমাখা শাস্তিমূলক ব্যাপার, যেইটা আমার মনে হয়না পাওয়ার প্র্যাকটিস থেকে আসছে। ধর আগের ঘটনাটায় বাচ্চাটাকে বলা হইছে আসতে যাইতে বড়াপুর ছবিকে সালাম করতে হবে, সে বেচারা আবার এইটা বিশ্বাস করে পিচ্চিটাকে সালাম শিখানো শুরু করছে, আমার তো মায়াই লাগলো বাচ্চাটার জন্য। তোর ঐখানে আপত্তি লাগলোনা ক্যান? ওরা একি ক্লাসের বলে? গরীব বলে ওর সাথে দুষ্টামী করা যাবেনা, এক্সট্রা কেয়ারফুল থাকতে হবে? তাইলে আর সমঅধিকার কোথায় থাকলো?
কিছু কিছু ক্ষেত্রে ছাড় না দেওয়া হলে সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা করা যায়না। পলিটিকাল কারেক্টনেস বজায় রাখা ও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ন। যেমন যে লোকটা অন্ধ, তাকে কানা বললে তা অপমান। কিন্তু ধর, তুই যদি আমাকে কানা বলিস, আমার কিছু যায় আসে না। ঠিক এই কারনেই, নিজের বোন বা ভাগ্নির সাথে যে মজাটা করা যায়, কাজের মেয়ে বা গ্রামের গরীব প্রতিবেশীর সাথে তা করা বাঞ্ছনীয় না, আমার মতে।
আমি যখন ক্লাস এইটে পড়ি তখন আমাদের কেমিস্ট্রি ম্যাডাম ছিলেন হিন্দু। তার ছোট একটা মেয়ে(ফোর এ পড়ত তখন) তার ছুটির পরে আমাদের ক্লাসরুমে এসে বসে থাকত, মার জন্য অপেক্ষা। একদিন আমি খেলার মাঠ থেকে ফিরে দেখি আমাদের ক্লাসের কিছু ছেলেমেয়ে ওকে বিফ-বারগার খাওয়াচ্ছে, কিন্তু বলছে এটা চিকেন বারগার। বাচ্চা কিছু না বুঝে খাচ্ছে। আমাকে দরজায় ঢুকার সময় বলা হলো দুষ্টুমি করছি আমরা, তুই কিছু বলিস না। আইজ পল্লবী দাসের মেয়েরে গরু খাওয়ায়েই ছারুম। হিন্দুগিরি "---" দিয়ে বাইর হইবো। হা হা। হো হো। আমি মেনে নিতে পারিনি। দৌড়ে যেয়ে ওর হাত থেকে ওটা নিয়ে ফেলে দিয়েছিলাম। আমার বন্ধুরা এখনো আমাকে ক্ষমা করতে পারেনি ওদের "মজা" স্পয়েল করার জন্য। কারো কারো মতে আমার মা হিন্দু ছিলেন বলে হিন্দুদের জন্য আমার এত দরদ। হয়তো তাই হবে।
ওই গল্পটা মনে আছে তোর? ঐ যে, কিছু দুষ্টু ছেলের দল রোজ রোজ পুকুরের পাড়ে যেয়ে ব্যাঙগুলোর দিকে পাথর ছুড়ে মারতো।একদিন ব্যাঙদের সর্দার এসে হাতজোড় করে তাদের বললো বালক তোমাদের নিকট যা খেলা, আমাদের কাছে তা মৃত্যু।
আমি স্পেশাল কন্সিডারেশনে বিশ্বাসী না দোস্ত। গরীব বলেই তার জন্য বিশেষ বিবেচনা এইটা আমার কাছে ভুল পন্থা মনে হয়। অনেকটা পেট্রোনাইজিং-ও। এইটা আমার মত।
তুই যেই উদাহরন দিলি ঐটার সাথে তিতা ভিটামিন খাওয়ানোর আমি কোন মিল দেখতে পাইনাই। একটা হইলো রেইসিজম, আরেকটা পিওর প্র্যাংক। অষুধটা যদি ভিটামিন না হইয়া অন্য কোনকিছু হইতো তাইলে আমি আপত্তি করতাম, কিন্তু তিতা ভিটামিন খেয়ে ওদের জাত-ও যায়নাই, শারিরীক ক্ষতিও হয়নাই, কোনভাবে অপমান-ও হয়নাই বইলা আমি মনে করতেছি। বরং, থাক, ওরা গরীব মানুষ, আমার নিজের বোন হলে করতাম...এই ধরনের চিন্তা আমার কাছে খুবি পেট্রোনাইজিং লাগতেছে। বরং ওরাও বাসার সদস্য, পরিবারের সব সদস্যকে যেমনে দৌড়ের উপর রাখি ওদেররেও রাখবো - ব্যাপারটা আমার কাছে গ্রহনযোগ্যই লাগে।
আমি তোর কিছু কথার সাথে একমত, কিছু কিছু জায়গায় পলিটিক্যাল কারেক্টনেসের দরকার হয়তো আছে, যদিও পলিটিক্যাল কারেক্টনেসের লাইনটা কদ্দুর সেইটা নিয়ে আমি মাঝে মাঝেই বিভ্রান্ত হই।
তুই মনে হয় এটা জানিস যে আমি আমার নিজের বোন হলেও এরম কিছু করতাম না। পুরা ব্যাপারটা মধ্যে ক্ষমতা প্রদর্শনের মহড়া আছে।
আমি উদাহরনটা দিছিলাম "জাত যাওয়া" বুঝাইতে না। এটা বলতে যে মজা ছলে পাওয়ার প্রদর্শন হয়ে যায় আমরা বুঝতেও পারিনা। শিশুটা যদি মুসলিম হইতো তাহলে কোন হিন্দু ছাত্র তাকে ধরে শুয়োর খাওয়ানোর সাহস করতোনা। এবং কেউ যদি খাওয়াইতোও, তাহলে সেটা অন্যরা মজা হিসাবে নিতনা।
ঠিক তেমনি, মেয়েগুলো যদি কাজের মেয়ে না হয়ে বাড়ির মেয়ে হত, তাহলে ডাইনামিক্সটা ভিন্ন হত। তোর বাপ আর তোর অফিসের বস যদি তোকে দুইটা থাপ্পড় মারে, তার ইমপ্যাক্ট কি এক হবে?
ক্ষমতাচর্চার মধ্যে দিয়াই তো আমরা বড় হইছি দোস্ত। পারিবারিক ক্ষমতাচর্চা কতটা বাজে হইতে পারে এইটা তো তোরে অন্তত বুঝাবার কিছু নাই।
মায়াবতীর কাজটারে আমি এখনো ক্ষমতাচর্চা বলে মানতে রাজি না। বোনের সাথে সবার সম্পর্ক একরকম না। সম্পর্ক নানান ডায়মেনশনে হইতে পারে। আমি নিজে এই ধরনের প্র্যাংক করতাম না কারো সাথে কারন প্র্যাংক ব্যাপারটা আমার মধ্যে ছিলই না কোনকালে। কিন্তু তাই বলে অন্যের নির্দোষ প্র্যাংককে খারিজ করে দিতেও আমি পারিনা। হ, প্র্যাংকের শিকার হইতে কারোই ভাল লাগেনা, কিন্তু সেইটার যদি সুদূরপ্রসারি কোন প্রভাব না থাকে তাইলে ঐটা নিয়া বেশি সিরিয়াস হইতে আমি রাজি না। আর শারিরীক আঘাতের চরম বিপক্ষে আমি, তাই ঐটা আমি তর্কে আনতে চাইনা।
পেইট্রোনাইজিং এ্যাটিচুডের মধ্যে যেই পাওয়ার প্র্যাকটিস আমি দেখি সেইটা আমার কাছে কম বিপদের মনে হয়না, বরং কিছু ক্ষেত্রে বেশি-ই মনে হয়।
আমি মানতে পারলামনা যে বোন আর কাজের মেয়ের সাথে একই আচরন না করলে সেটা পেট্রোনাইজিং। কেন সেটা আগেই বলেছি। আমি যে শিশুটির উদাহরণ দিয়েছিলাম, সেটাও আমার ধর্মপ্রান মুসলমান বন্ধুদের চোখে প্র্যাঙ্ক ছিলো। এখনো আছে। শারিরীক আঘাতের বিপক্ষে তুই মেনে নিলাম, কিন্তু ধর মানসিক/ সামাজিক আঘাত? আমি যদি তোকে একটা গালি দেই (আমার গালি কিন্তু আবার থার্ড ডিগ্রি!), আর তোর কাজের মেয়ে একই গালি দেয়, এফেক্ট কি একই হবে?
উত্তর "হ্যাঁ" হইলে আজই তোরে ফেসবুক থেকে ডিলিট করবো।
আরেক ধর্মের লোকরে লুকায়চুরায় ধর্ম ভাংগানির মজা নেওয়ার প্র্যাঙ্ক আর তিতা অষুধ খাওয়াইয়া ঠান্ডার চাপা বন্ধ করানির প্র্যাঙ্ক আমি এক-ই পাল্লায় মাপতে পারতেছিনা দোস্ত। তিতা অষুধ খাইয়া ঐ দুই মেয়ের মানসিক/সামাজিক কোন আঘাত লাগার কথা না। তাদের আপু তার ভাগ্নিদের সাথেও এইরকম করে এইটা তারা দেইখা অভ্যস্ত বইলাই মনে হয়।
গালি এইখানে কেউ দেয়নাই। আর কে গালি দিল তার সাথে আমার ক্লাস রিলেইট করতে লাগেনা। তুই আমারে গালি দিলে আমার কিছু আসবে যাবেনা, কিন্তু আমার অফিসের কলিগ দিলে আমার আসবে যাবে। কাজের মেয়ে যদি তোর মত বন্ধু হয় তাইলে ও গালি দিলেও কিছু আসবে যাবেনা।
আমার কাছে পেট্রোনাইজিং লাগে কারন ওদের আলাদাভাবে ট্রিট করার পিছনে এই ভাবনাটা কাজ করে 'ও একটা গরীব লোক', আমি ওর থেইকা ধনী, তাই আমার দায়িত্ব হিসাবে বর্তায় ওরে অন্য সবার থেকে আলাদাভাবে দেখা। আমি সবাইরে একি রকম ট্রিট করতে চাই, ভাবতে চাই 'ও একটা লোক'।
আলোচনা একি জায়গায় ঘুরপাক খাইতেছে দোস্ত। এইবার থামা দরকার মনে হয়।
এটা দায়িত্ব এড়ানো পজিশন। তুই নিলে আমার আপত্তি আছে, তবে তোকে বাধা দিবো না।
'গরীব'দেরকে ভাল রাখার দায়িত্ব 'ধনী'দের উপর ন্যাস্ত এই চিন্তা এইখানে নাই তাই এটা দায়িত্ব এড়ানো পজিশন লাগেনা আমার কাছে। তবে তোর আর আমার অবস্থান আলাদা হইতেই পারে।
তুই অযথাই কথা বাড়াচ্ছিস, মৌসুম।
গরীবদের ভাল রাখার চিন্তা ধনীর উপরে ন্যাস্ত এটা তোর নিজস্ব ব্যাখা। আমি কখনই সেটা বলিনাই। তবে দুনিয়ার সবাই এক, এই ধারনাটাও বিপদজনক। । এতে বঞ্চিতের কোন লাভ হয়না বরং তার অবস্থানকে বুঝা, এবং তাকে এম্পাওর করার চেষ্টা করাটাই প্রয়োজনীয়। এটা ধনী-গরীব-মধ্যবিত্ত সকলের দ্বায়িত্ব। এক্ষেত্রে বঞ্চিত লোকটি হতে পারে গরীব/ পঙ্গু/ নারী/ কৃষ্ণাংগ/ সমকামী/ অশিক্ষিত/ গ্রাম্য/ বৃদ্ধ/ শরনার্থী/ আদিবাসী, বা এরকম আরো অনেক কিছু। আর সবাই এক না বলেই আসলে দুনিয়াটা এত বৈচিত্র্যের।
মূল তর্কটা হচ্ছিল বাসায় যেই কাজের মেয়েটা থাকে ও গরীব মানুষের মেয়ে। তাই ওর ব্যাপারে আমার এক্সট্রা কেয়ারফুল থাকতে হবে এইটার পক্ষে বিপক্ষে। তুই জোড় দিচ্ছিস পলিটিক্যাল কারেক্টনেস, সিমপ্যাথি ইত্যাদির উপর। আমার জোড় দেয়াটা হইলো ইকুয়াল ট্রিটমেন্টের উপর। যেইখানে ওকে আরেকটা ফ্যামিলি মেম্বারের মতই ট্রিট করা হবে, আলাদাভাবে, এক্সট্রা নাইস হয়ে না। গরীবের এম্পাওয়ারমেন্ট তাদের সাথে এক্সট্রা নাইস হওয়ার উপর নির্ভরশীল না। মানুষ হিসাবে ওদের অধিকারের জন্য আমি ওদের সাথেই উচ্চকন্ঠ হতে রাজি আছি, কিন্তু ওদের সাথে এক্সট্রা নাইস হওয়াটা আমি নিজের দায়িত্ব মনে করিনা।
দুনিয়ার সবাই এক এইটা বলিনাই। কাকে ক্যামন ট্রিট করা হবে ঐটার মধ্যে যেই শ্রেনীগন্ধ আছে ঐটার কথা বলছিলাম।
আবারো মূল প্রসংগে, তুই যেই ইস্যু তুলছিস সেইটা প্রয়োজনীয়। অনেক বাসায় 'কাজের মেয়ে' নামক মানুষগুলার উপর চরম আকারের নিগ্রহ/নির্যাতন চলে। কিন্তু মায়াবতির উদাহরনটা এইখানে ফিট ইন করেনাই এবং ক্যানো করেনাই ঐটাই বলার চেষ্টা করতেছিলাম এতোক্ষণ ধরে।
কোন কথাই 'অযথা' না। আমার কথা আমি কইলাম তোর কথা তুই। রিজেক্শনের খেলায় তো নামি নাই। আমি আমার অবস্থান তোরে বুঝাইতে চাইতেছিলাম আর কি।
সামাজিক বা ঐতিহাসিক কারনে অনেক সময় ইকুয়াল ট্রিটমেন্ট সম্ভব না। সেটা তুই বা অন্য কেউ যতই জোর দিক না কেন। যেমন ধর, একজন আদিবাসী নারী আর আমি যদি একই সরকারী চাকরীর জন্য আবেদন করি, ঐতিহাসিক কারনে (আমার জন্ম, বেড়ে ওঠা, শিক্ষা, ভাষাগত দক্ষতা) হয়তো আমার সেই চাকরি পাওয়ার সুযোগ বেশি। আদিবাসী নারী পাবেনা এটা বলছিনা, মনে কর ১০ টা পোস্টে আমার মত ১০০ জন আর তাদের থেকে ৩ জন থাকলে তাদের জন্য কমপিট করা একটু হলেও কঠিন। এইজন্য কোটা পদ্ধতিতে তাদের অংশগ্রহন নিশ্চিত করা দরকার। যখন তাদের অংশগ্রহন প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়, তখন কোটা বাতিল করা হয়। এটা এক্সট্রা নাইসনেস না, বরঙ প্রয়োজনীয় নাইসনেস।
আমি এটা বলিনাই যে আমার কাছে যা খারাপ লাগবে তা দুনিয়ার সবার কাছেই লাগতে হবে। একজন মায়াবতী'র ঘটনা তাই তোদের অনেকের জন্য স্বাভাবিক হলেও, আমার কাছে সম্পূর্ন অগ্রহনযোগ্য। "শ্রেনীগন্ধ" সেটাতেই সবচেয়ে বেশি। আমার ধারনা কাজের মেয়ে না হয়ে ড্রাইভার বা দারোয়ান হইলে তাদের তিতা অষুধ খাওয়ানো হইতো না। এখানে গরীব এবং জেন্ডার দুইটাই বিবেচ্য।আর কাজের মেয়ে আর একজন মায়াবতী ইকুয়াল ট্রিটমেন্ট পায় এটা আমি বিশ্বাস করিনা। সেটা আমার বাপ-মা'র বাড়ীতেও হয়না, এবং আমি সে ব্যাপারেও ক্রিটিকাল। সুতরাং, স্নেহের পরশে আমাকে তিতা অসুধ খাওয়ানো অসুবিধা, কিন্তু কাজের মেয়েকে খাওয়াইলে তা কৌতুক।
যখন অন্য ব্যাপারে ইকুয়ালিটি নিশ্চিত হয়না, তখন শুধু মজা করার ইকুয়ালিটি অবশ্যই গ্রহনযোগ্য না।
"একজন আদিবাসী নারী আর আমি যদি একই সরকারী চাকরীর জন্য আবেদন করি, ঐতিহাসিক কারনে (আমার জন্ম, বেড়ে ওঠা, শিক্ষা, ভাষাগত দক্ষতা) হয়তো আমার সেই চাকরি পাওয়ার সুযোগ বেশি।" - কোটা পদ্ধতিতে অযোগ্য লোককে ক্যানো চাকরী দেয়া হবে? ঐ আদিবাসী নারী যদি শিক্ষা আর ভাষাগত দক্ষতায় অথবা অন্য কোন যোগ্যতায় চাকরীটা ডিজার্ভ করে আমার মনে হয় ও-ই চাকরীটা পাবে। ব্যাপারটা হল, (ধরে নিলাম) ওর জন্ম, বেড়ে ওঠা, শিক্ষা, ভাষাগত দক্ষতা ওর ঐতিহাসিক কারনে দূর্বল আমার থেকে। তো সেটা কি ওকে স্পেশাল কন্সিডারেশনে চাকরী দিয়ে আমি ঠিক করার চেষ্টা করবো নাকি আদিবাসীরা যাতে ওদের মৌলিক অধিকার ঠিকমত পায় সেটা নিশ্চিত করার জন্য রাস্তায় নামবো? আমি কাজের প্রয়োজনে যতো আদিবাসী মানুষের সংস্পর্শে আসছি ওরা কিন্তু কোটা পদ্ধতির সমালোচনাই করে বরং। ওরা চায় সিস্টেমের সংশোধন, কোটা পদ্ধতি নামক সমতলের মানুষের 'ওদের জন্য অনেক করছি' ধরনের সেল্ফ স্যাটিসফাইড পেট্রোনাইজেশন না।
আমি কোটা পদ্ধতির বিপক্ষে। সিস্টেমের সমস্যা ঠিক না করে কোটা বিষয় চালু করে রাখা মানে বৈষম্য টিকিয়ে রাখার আরেকটা পদ্ধতি বলে আমি মনে করি। আমার সাথে তোকে একমত হতে হবে সেইটা বলতেছিনা। তোর ভিন্ন অভিমত থাকতেই পারে।
আর তুই ধরেই নিচ্ছিস যে এটা পুরুষ কারো সাথে করা হতোনা, এই ধরে নেয়াটাই আমার কাছে সমস্যার মনে হচ্ছে। অনেক বাসায় ড্রাইভারকে কি পরিমান গালিগালাজ করা হয়, মাঝে মাঝে চড়থাপ্পড়-ও মারা হয় আমি জানিনা তোর ধারনা আছে কিনা, আমার নিজের চোখে দেখাই আছে এইরকম। শুধু নিজের বাসার অভিজ্ঞতা দিয়ে তো সবাইকে বিচার করা যায়না। তুই যেমন বললি, দুনিয়াতে হাজার রকম বৈষম্য, হাজার রকম মানুষ। সব মানুষের বিচারবুদ্ধি তো এক রকম না। কেউ মেয়ে বলে কাজের মেয়ের গায়ে হাত তুলবেনা বা কটু কথা বলবেনা, কিন্তু ড্রাইভার, দারোয়ান এরা পুরুষ বলে অকথ্য গালিগালাজ করতে অথবা দুই একঘা লাগায় দিতে হাত গুটায়ে রাখবেনা।
মায়াবতী ড্রাইভার, দারোয়ান এদের সাথে এধরনের মজা করতোনা এইটা তোর ধারনা। ধর আমি ধারনা করি করতো। ধারনা নিয়ে কি তর্ক করা যায় আসলে? সেইটা জাজমেন্টাল না অনেক? কারন ধারনা নিয়ে তর্কের কোন শক্ত খুঁটি নাই, আর সেটা অপ্রাসংগিক।
তিতা অষুধ যাকেই খাওয়াক, যেই কারনে খাওয়াইছে সেইটা মায়াবতী নিজে হইলেও আমার কাছে কৌতুক লাগতো। এই স্পেসিফিক ঘটনাটার মধ্যে আমি শ্রেনীগন্ধ পাইনাই। আমার অভিজ্ঞতা তোর থেকে ভিন্ন বলেই হয়তো।
আমি এবং আদিবাসী নারী যখন একই পদে এপ্লাই করেছে, তখন এটা ইমপ্লায়েড যে তার এবং আমার যোগ্যতা একই মাপের। তবে বাস্তবতা এটা যে এথনিক মাইনরিটি বলে তার চাকরি পাবার সম্ভাবনাটা আমার থেকে কম। একই ভাবে ড্রাইভারের থেকে কাজের মেয়েটা কর্মক্ষত্রে বেশি ভালনারেবল।
তুই যে সিস্টেম সংশোধনের পক্ষে আমিও সেটারই পক্ষে। তবে আমার এপ্রোচটা বটম আপ।
ইংরেজী শব্দ অনেক বেশী হয়ে গেসে। দুঃখিত।
একটু খেয়াল করে দেখলে এই ধারনাটা তুই উপরের দুয়েকজনের মন্ত্যবে পাবি, বিশেষ করে কাজের মেয়েকে কিভাবে তাঁরা ট্রিট করেন সেই সাফাই গাওয়াতে।
শর্মি আপু কিন্তু আমার একটা প্রশ্নের উত্তর এখনো দেননি -
রাবেয়ার বর্ণণা আপনার লেখাতে কেন এভাবে আসলো সেটাও জানতে ইচ্ছে করে।
ভালো লাগবে জানতে পারলে। ধন্যবাদ আপু।
জ্বি, সকলের সাথেই আমার সম্পর্ক ভাল। রাবেয়া'র সাথে বেশী ভালো।
রাবেয়া খুব সুন্দরী। সেটা এভাবে আমার মা অথবা বন্ধুরা বর্ননা করেছে।
দ্যাটস রিয়েলি গ্রেট
একজন মায়াবতীর তিন নম্বর গল্পটি পড়ে এমন কিছু খুঁজে পাইনি যাতে ব্লগে কুরুক্ষেত্রের আয়োজন অনিবার্য হয়ে উঠে । এবার ক্ষ্যান্ত দিন প্লিজ !
ভাল আলোচনা চলতেছে তো, আপনার কাছে এইটা কুরুক্ষেত্রের আয়োজন মনে হইলো?
চলে যাচ্ছিলাম এই কমেন্ট দেখে আবার ফিরে আসলাম।
কুরুক্ষেত্রের আয়োজন হয়নি তো ভাই। সমালোচনাও না। আলোচনা হচ্ছে। আপনিও যোগ দেন।
এখানে পাওয়ার প্রাক্টিসের কথা আসছে বার বার। পাওয়ার প্র্যাকটিস যে আমাদের দেশে নাই তা না। কাজের লোকের উপর শারিরিক/মানসিক নির্যাতনের বহু ঘটনা হর হামেশাই পেপার/ টিভিতে আসছে। তবে আমাদের মতো ছাপোষা মধ্যবিত্ত সংসারে পাওয়ার প্র্যাকটিস মালিক করে না। উল্টা মেইড করে। কিছু বলার নাই বলেছেন,
তাই মেইডদের পাওয়ার প্র্যাকটিস আমাদের মেনে নিয়ে সেভাবেই তাদের সাথে চলতে হয়। আমার আচরণকে আমি পাওয়ার প্র্যাকটিস হিসেবে মেনে নিতাম যদি আমি ঠান্ডা লাগেনি জেনেও তাদের ঠান্ডার ঔষধ খাওয়াতাম। আপনি খেয়াল করে থাকবেন যে আমি ভিটামিন ঔষধের কথা লিখেছি। যেটা সিরাপ ছিল। আর যেকোনো সিরাপ জাতীয় ঔষধই তিতা হয় বলেই আমি জানি।
সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।
আমার মন্তব্যে যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন, ক্ষমা চাচ্ছি । আসলে আমি সাড়াটা জীবন দেশের বাইরে । দেশে বউ কিভাবে সামলাচ্ছে জানিনা । বছরে মাত্র এক মাসের ছুটিতে গিয়ে সংসার সমুদ্রে ঝাঁপ দিয়ে সব কিছু জেনে নেওয়া ও সম্ভব না । বউ ও চায়না এই গোনা কয়টা দিন আমি সমস্যা নিয়ে পড়ে থাকি । সবার কাছে মাফ চাচ্ছি আবারো ।
আপনার গল্প শুনে কিন্তু এটাই মনে হয়েছে যে তাদের ঠান্ডা লাগেনি মোটেও, বরং তারা পাশের বাড়ির ব্যাচেলদের দৃষ্টি আকর্ষন করার জন্যই খুক-খুক কাশি দিচ্ছিলো। এবং বিষয়টি সম্পর্কে আপনই সম্পূর্ন ওয়াকিবহাল ছিলেন! আর ঠান্ডার ওষুধ খুঁজে পাননি বলেই তাদের ভিটামিন খেতে হয়েছিল! যাইহোক, আমার বোঝার ভুল হতে পারে।
ধন্যবাদ একজন মায়াবতী।
জ্বি আপু। এর মানে এটাও না যে আমি ওদের জন্য বিষ খুঁজছিলাম। ঠান্ডা না লাগলেও দেয়া যাবে, ওদের ক্ষতি করবে না এমন কিছুই খুঁজছিলাম।
আমরা যখন সব ভাইবোন একসাথে হই, তখন বেশ গান-বাজনা, হৈ হুল্লোর করি। ফেসবুকে আমার এমন একটা ছবি দেখবেন যেটাতে আমার মা, ভাইবোন সবাই মিলে আমরা গান করছি। আর আমার ঠিক পাশেই সেই কাশি দেয়া মেয়েটা আর বুয়া বসে আছে। ছবিটাতে যেমন মালিক-চাকর সম্পর্কের মধ্যের বন্ধুত্বের ডাইমেনশন খুঁজে পেতে পারেন আবার বলতে পারেন আমার বাসার কাজের লোক আমার সাথে বসে গান গাইলেই সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা পায় না। ছবিটা দেখার ব্যাপারে আপনি মৌসুম আপু, তানবীরা আপুর হেল্প পেতে পারেন। ফ্যামিলি ফোটো বিধায় ব্লগে দেয়া দরকার মনে করলাম না।
ধন্যবাদ।
হা হা হা, বিষ খুঁজছিলেন এটা ভাবিনি।
সেরকম মনে হয়ে থাকলে দুঃখিত।
যাইহোক, মৌসুম আপুর হেল্প নিয়ে ছবি দেখে মতামত জানাবো।
কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধটা কিন্তু শুভ এবং অশুভ'র লড়াই।
আপনি চান সেটা বন্ধ হয়ে যাক? আপনার মতামত ভালো পাইলাম না।
লেখা ভালো লাগছে।
লেখা ভালো লাগছে।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপু আমার লেখাটা পড়ার জন্য এবং আপনার মতামত জানানোর জন্য। তবে আপনি যেভাবে ব্যাপারটা দেখছেন আমি এমন করে দেখছি না। আপনি আমার লেখা পড়ে হতাশ হয়েছেন শুনে আমারও খুব খারাপ লাগছে। তাই আমার এই মন্তব্য করা। জানি না আপনার খারাপ লাগা তাতে কিছুটা কমবে কি না।
গরীব যে মেয়েটা আমার বাড়িতে কাজ করে তার আনন্দে তার সাথে হাসা এবং বেদনায় দুঃখ প্রকাশ করার কাজ আমি যথেষ্ট দায়িত্বের সাথেই করি।
এইজন্যেই তারা হিন্দি সিরিয়াল দেখে আমাকে দেখিয়ে দেয় কোন গলার মালা - কানের দুল তাদের জন্য কিনে আনতে হবে।
আমি তাদের আনন্দ-বেদনা, বিনোদন হিসাব করি আমি বা আমার মা তাদের কি খেতে দিলাম, কি কাপড় দিলাম, টিভি দেখতে দিলাম কিনা, ঈদ বা পহেলা বৈশাখের মেলায় অথবা অন্য কোনো উৎসবে তাদের বেড়াতে যেতে দিলাম কিনা, অল্প বয়েসী তরুণী হলে তাদের নিজের নাম লিখতে শেখানো, অক্ষর চেনানো ইত্যাদি বিষয়ে। অবশ্যই ড্রাইভার-দারোয়ান বা পাশের বাসার কারো সাথে প্রেম-ভালোবাসা করাতে উৎসাহ দিয়ে না।
পাখি নামে আমাদের বাসায় একটা মেয়ে কাজ করতো। আমি ডাকি পাখি আপা। আমার মা-বাবা ওর বিয়ে দেয়, আমাদের বাসাতেই। পাখি আপার বিয়েতে পাখি আপার মা-বাবা ছাড়াও আমার সব খালা-মামা-ফুপু সবাই এসেছিলেন। এই কিছুদিন আগে পাখি আপার বেবী হয় আমাদের বাসায় থেকেই। বেবীর বয়স একমাস হওয়ার পর উনি যেদিন চলে যাচ্ছিলেন আম্মুকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছিলেন আর বলে গেছেন, 'বাপের বাড়ির মত বেড়াই গেলাম।'
যে মেয়েটাকে আমি তিতা ঔষধ গিলিয়ে ভুল করে ফেলেছি সে মেয়েটা দু’ বছর ধরে আছে আমাদের বাসায়। ওর মা আসে মাঝে মাঝে মেয়েকে দেখতে। একবার আম্মু ওকে বলল অনেকদিন হয়েছে তুই আসছিস। বাড়ি যা। কয়েকদিন থেকে তারপর আবার আয়। মেয়েটা আম্মুকে জানায় সে বাড়ি যেতে চায় না।
আপনি একজনের কথা বললেন। আপনার বাসায় নিশ্চয়ই আরো অনেকে কাজ করেছেন এবং এখনো করছেন। সবার সাথে কি আপনার বন্ধুত্বের ডাইমেনশন তৈরি হয়েছে??
যা হোক, আমার পড়ার সময় আমি ওদের সাথে গল্প করে, বন্ধু হয়ে কিছু বুঝাতে যেতে চাই নি। তাছাড়া বুঝালেই বুঝার মতো ক্যাপাসিটি সবার থাকে না। তাই সে মূহুর্তে আমার এটাই ঠিক মনে হয়েছে।
বন্ধুস্থানীয় রুপে থেকে তাদের স্বাধীনতা দেয়ার পক্ষে কথা তুল্লেন বলেই একটা ঘটনা বলি।
আসমা নামের আমাদের বাসা একটি মেয়ে থাক্তো, ওকে লেখাপড়া শেখাইছি, নিজের আগ্রহে মেয়েটা পেপার পড়তো প্রতিদিন, ব্যবহারও বেশ চমৎকার, কেউ দেখলে বুঝতোই না কাজের মেয়ে। যত যাই হোক কড়া অনুশাসনেই রাখছিলেন আম্মা, ঠিক যেমনটা আমাদের রেখেছিলেন। তো একটা সময়ে পাশের বাড়ির বিবাহিত দারোয়ানের সাথে কিছু একটা গড়ে উঠে তার, অনেক বুঝানোর পরও যখন মানে নাই তখন আম্মা আর ওকে রাখে নাই। সে গিয়ে উঠে আমাদেরই একচেনাজনের বাসায়। অবারিত স্বাধীনতা। বিশ্বাসী বলেই আপু তাকে রেখেই অফিস করতেন, ঘরের সব দায়িত্ব তার ছিলো। এক ছুটিরদিনে উনার বাসায় হাজির হলো ৫জন ছেলেমেয়ে, কোন কোন কলেজের। জানা গেলো ফোনে একজনের সাথে পরিচয় হবার পর অন্যদের সাথেও চেনাজানা হয়েছে, এইবাসায় আরো আরোই আড্ডা দিয়েছে ওরা, ঘুরতে বেরিয়েছে! আর আসমা তেজগাঁ কলেজে পড়ে এটাই ওরা জানে! একই সাথে পাড়ার দোকান্দারের সাথে ছিলো ওর দারুন সম্পর্ক!
বুঝাইলেই যে বুঝবার মতো ক্যপাসিটি সবার হয় এটা আসলেই সত্য নয়! তাই মায়াবতীর অই সময়ে করা কাজকে অমানবিক কিছু না ভেবে দুষ্টামির ছলে শাসনই মেনে নিয়েছি!
আপনার কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ, জেবীন। ঘটনাটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। তবে সব কাজের লোক একই ভাবে স্বাধীনতার অপব্যাবহার করবে, এটা মেনে নিতে পারছিনা। আমি এরকম অনেককে দেখেছি যারা নিজের থেকে মালিকের বাড়ির সুরক্ষা আগে দেখেন।
তবে এটাও সম্ভব যে হয়তো আমার অভিজ্ঞতাটি ও বিচ্ছিন্ন।
আরে, নাহ, আপনার অভিজ্ঞতাটা ভিন্ন হতে যাবে কেন? সবকিছুরই হরেকরকম ফের আছে। আর, আপনার মতোই আমাদেরও একজন আছেন 'সুফিয়া'বু'। আমার খালা উনাকে ৯/১০ বছর বয়েসি হিসাবে '৭৫এর সময় কমলাপুরে এক মহিলার সাথে ভিক্ষা করা অবস্থায় পেয়েছিলেন। আমরা কখনো তাকে আত্নীয় ছাড়া কিছু ভাবিনি। আমি অনেক বড়ো হবার পর জেনেছিলাম উনি কুড়িয়ে পাওয়া কেউ! খালার বাসার সবকিছুই সুফিয়াবুয়াই দেখভাল করতেন। খালা তার শ্বশুড়বাড়ির গ্রামে উনার বিয়ে দেন জমিজিরাত সহ। আশ্চর্যজনকভাবে, উনার বিয়ে হয়ে যাবার অনেকপর, সেই মহিলার সাথে কাকতালীয়ভাবে দেখা হয়ে যায়, আর খুজঁতে খুজঁতে উনার ভাইওবোনের দেখাও পেয়ে যান, মামা-বাবা ততোদিনে মারা গেছেন। অনেকদিন দেখা নাই উনার সাথে, তবে তার আদর, হাসি দেয়ামুখ আমরা ভুলিনা কখোনোই।
তো সবকিছুরই নানান দিক আছে, আছে অনেকের দেখার দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতা।
ধন্যবাদ জেবীন। ঠিকই বলেছেন।
মাযাবতীর পোষ্ট থেকে কেন এই পোষ্ট আসলো সেটাই বুঝিনি।ছোট্র একটা মেয়ে দুষ্টুমি করেছে এবং তার দুষ্টুমির গল্পই সবার সাথে করেছে। সেটা নিয়ে এমন পোষ্ট আশা করা যায় না।
যে কাজটি মায়াবতী কাজের মেয়েটির সাথে করেছে ঠিক সেই কাজটিই যদি তার ছোট বোনের সাথে করত, তবে কি শর্মির মনে একই রকমের প্রতিক্রিয়া হত? আমার মনে হয় তা না হয়ে বরং মজাই পেতেন। মায়াবতীর গল্পে তার কৃত্রিম রাগের অনুশাসনের অন্তরালে মেয়ে দুটির প্রতি স্নেহের পরশ প্রকাশ পেয়েছে বলেই আমার মনে হয়েছে।
সবাই সবকিছু একই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখবে, এটা চিন্তা করাটা মনে হয় ভুল । মায়াবতি যেটাকে মজা হিসেবে দেখেছে, শর্মি সেটাকে গাম্ভির্যতার সাথে দেখেছে । আমার তাই মনে হচ্ছে । আমরা দুই বোন, আমাদের দুইজনের মানুষকে ট্রিট করার ভঙ্গিও আলাদা । এটাই স্বাভাবিক ।
তবে মায়াবতির তিতা অষুধের ব্যাপারটা আমার কাছেও মজা করাই মনে হইছে ।
পোস্টে লিখেছিলাম যে ব্যক্তিগত আক্রমন আমার উদ্দেশ্য নয়। “ব্যবচ্ছেদ” নামে তানবীরা’র যে পোস্টটা এখনো স্টিকি করা আছে, সেখানে মুক্তচিন্তা ও সমালোচনার জায়গা হিসাবে এবি পরিবারকে ধন্যবাদ দিয়েছে তিনি, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ন। গতকাল রাতে পোস্ট দেবার পরে কিছু প্রশ্ন উঠেছে। আমি আশা করেছিলাম সেগুলো আসবে। আমি কিছু বিষয়ে আমার অবস্থানের ক্ল্যারিফিকেশন দিতে চাই। আশাকরি এতে আমার অবস্থান-সংক্রান্ত বিভান্তি কিছুটা কাটবে।
প্রথমত, একজন মায়াবতী কে আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিনিনা। তাই এটাও জানা নাই যে তিনি একজন “ছোট্ট” এবং অসম্ভব “সুইট টাইপের” মেয়ে যিনি কিনা “দুষ্টুমির ছলে শাসন করে” বাড়ির কাজের মেয়েদের উপরে “স্নেহের পরশ” বুলিয়ে যান। জেনে অত্যন্ত আনন্দিত হলাম। আশারাখি ভবিষ্যতে তার সাথে ব্যক্তিগত ভাবে আলাপ হবে। আমার বিশ্বাস ছিলো বন্ধুত্বের জন্য বয়স গুরুত্বপূর্ন নয়। এখন মনে হচ্ছে “ছোট্ট” হলে অনেক বিষয়ে পার পাওয়া যেত। আমরা মডারেটর কে অনুরোধ করতে পারি যে ব্লগার প্রফাইলে বাধ্যতামূলকভাবে বয়স লিখতে হবে, এবং ১৮-র নিচে কেউ কিছু লিখলে তা নিয়ে সমালোচনা করা যাবেনা (আমি ধারনা করে নিচ্ছি একজন মায়াবতী অপ্রাপ্তবয়স্ক)। সেক্ষত্রে হয়তো এই ধরনের ঘটনা এড়ানো যাবে।
দ্বিতীয়ত, কেউ কেউ হয়তো ভেবেছেন যে আমি ড্রাইভার দারোয়ানদের সাথে কাজের মেয়েদের প্রেমকে সমর্থন জানাতে এই লেখা লিখছি। আমার পয়েন্ট সেটা ছিলোনা। আমি বলছিলাম যে “তিতা অষুধ খাওয়ায়ে” অথবা ঘরে তালা মেরে রেখে প্রেম নিয়ন্ত্রন করা যাবেনা। তাদেরকে বোঝানো যেত পারে এর নেতিবাচক দিকগুলো। আর সুস্থ কোন মানুষকে বোঝালে বুঝবেনা এটা মানুষের ক্ষমতাকে ছোট করা দেখা। যদি আপনার সন্তানটি আজ আপনার কথা না বুঝে ক্লাসমেটের সাথে প্রেমে পড়ে, তাকে কি আপনি স্কুল থেকে ছাড়িয়ে নেবেন? ঘরে বন্ধ করে রাখবেন? নাকি ধরে নেবেন যে সে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী?
তৃতীয়ত, মজিবরকে বলছি, ছোট বোনের সাথে ঘটনাটি ঘটলে হয়তো আমি এত বিচলিত হতাম না। কিন্তু কাজের মেয়ে আমার ছোটবোন না। তার প্রতি আমার দায়িত্ব অন্য পর্যায়ে। “কিছু বলার নাই” এর কমেন্টে এর উত্তর দিয়েছি।
আপু আমি যখন আমার ভাতিজি আর ভাগ্নেকে খাইয়ে দেই বা পড়াই তখন অনেক সময় ওরা পড়া ফাঁকি দেয়ার জন্য বলে ছোট মা আমার আঙ্গুল ব্যাথা করছে বা না খাওয়ার জন্য বলে আমার পেট ব্যাথা করছে। আমিও ভাব ধরে বলি কোন আঙ্গুলটা ব্যাথা করছে বলো, কেটে ফেলে দেই আর ব্যাথা করবে না। তারপর ওরাই আবার বলে না না ব্যাথা করছে না। আমার কাছে এই ঘটনা আর ঐ তিতা ঔষধের ঘটনা দুইটাই এক রকম।
আমি দুঃখিত যে আমার লেখালেখিতে অদক্ষতার কারণে আপনি আমাকে ভুল বুঝেছেন।
আমি অবশ্যই অপ্রাপ্তবয়স্ক না। যথেষ্টই বয়স্ক যার যে কোনো লেখা বা কমেন্ট নিয়ে আপনি এবং যে কেউ ইচ্ছে মতো সমালোচনা করতে পারেন। আমি আশা করি আমার কোনো লেখা বা কমেন্টে এমন প্রকাশ পায় নি যে আমি আমার সমালোচনা প্রেফার করি না। আর আমার আগের কমেন্টের আপনি কোনো রিপ্লাই করেননি। আপনার মতামত জানালে খুশী হবো।
হ্যা তাই বলে এমন না যে আমি মানুষের আঙ্গুল কেটে বেড়াই। হতেই পারে আমি কারো মতে খুবই খান্ডারনী টাইপ মাইয়া। তবে আমার কাছে আদরের সময় আদর আর শাসনের সময় শাসন করাটাই ঠিক মনে হয়। ছোটবেলায় এমন কিছু পড়েছিলাম হয়তো - মাতৃস্নেহের তুলনা হয় না কিন্তু সে স্নেহ যদি অন্ধ বা মাত্রাতিরিক্ত হয় তবে সেটাও সন্তানের জন্যে ভালো না।
আমি সবার মা হয়ে মাতৃস্নেহ তো বিলাই না। তাই আমার শাসন বা স্নেহ একটু খান্ডারনী টাইপ হয়তো।
ধন্যবাদ।
একজন মায়াবতী, আপনি আপনার লেখা লিখেছেন। পাব্লিক প্লেসে লেখা দিলে অনেক ধরনের আলোচনা সমালোচনা হয় লেখা নিয়ে। অনেকে অনেকভাবে অনেক কিছু ব্যাখা করে। আপনি বরং সেটা উপভোগ করুন। নিজের ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট নিয়ে আসার কোন দরকার নেই। আপনি যা আপনি তা। কে কিভাবে আপনার চরিত্র ব্যাখা করলো তা নিয়ে ব্যস্ত হওইয়া কি খুব জরুরী আপনার জন্যে?
ভালো থাকবেন।
প্রিয় একজন মায়াবতী, আপনই অদক্ষ লেখক একথাটি একেবারেই ঠিক না। আরো অনেক মুগ্ধ পাঠকের মত আমিও আপনার লেখা আগ্রহ নিয়ে পড়ি। সমালোচনা নিতে পারার সৎ সাহস আপনার আছে দেখেও ভালো লাগছে। আপনাকে চিনিনা আমি, তাই হয়তো ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। আমার আগের কমেন্টটি পড়লে আপনার করা প্রশ্নগুলোর জবাব পাবেন আশাকরি। ভালো থাকবেন।
ইয়েস!!!
ইগারলি অয়েতিং ফর আ ক্যাচাল... )
ঢাকা উত্তর আর ঢাকা দক্ষিণের মত চলেন এবির ব্লগাররা দুই ভাগে ভাগ হই, দেন জামায়া ক্যাচাল করি... বহুদিন ক্যাচাল দিয়া ভাত খাইনা
ম্যান কতদিন পর আপনারে দেখতেসি
আগে খোঁজখবর নিই, আছেন-টাছেন কেমন? দিনকাল যায় কেমন? বয়ফ্রেন্ডটার কি অবস্থা?
এইতো খবর। ভালই আছি। আপনে কেমন। দেশে আসতেসি ১০-১১ তারিখে। নদী থেকে মাত্র ধরা মাছ খাওয়াইবেন বলসিলেন। তাই বললাম।
আচ্ছা সেটা হবে এখন। অবশ্য শীতকালে নদীতে মাছ পাওয়া যায় না। যাক্ বয়ফ্রেন্ডটারে নিয়া আইসেন কিন্তু।
আর আপনে যে বিষয়টা এই পোস্টে নিয়ে আসছেন, সেইটা নিয়েও আলোচনার দরকার আছে। যদিও মায়াবতীর লেখাটা (লেখাটা এমনিতে চমৎকার!) পড়ে আমার এই কথা মনে আসে নাই। আপনের লেখা পড়ে মনে হইসে। এবং এই লেখার কারণে আলোচনাটাও হয়ে গেছে। সো অল ক্রেডিট গো'জ টু য়ু।
বয়ফ্রেন্ড আমেরিকা থেকে আমদানী করতে হবে ক্যান? দেশে কি সুদর্শন, বুদ্ধিমান, চাকরীজিবী, ঘরোয়া, এবং নামাজী ছেলেদের আক্রা হইসে নাকি আজকাল? আহা, বড়ই ডিস্কারেজড হইলাম। কান্না পেয়ে যাচ্ছে প্রায়।
নদীর মাছ না থাকলে, পুকুরের মাছেও আপত্তি নাই।
ওহ্ আপনের ক্রাইটেরিয়ার সঙ্গে ১০০% কমপ্লিট মিল পেয়ে গেসি হাতের নাগালেই। সুদর্শন, বুদ্ধিমান, চাকুরিজীবী, ঘরোয়া ও নামাজী ছেলে = রাসেল ভাই। নিয়মিত নামাজ পড়ে কিনা জানি না। তবে গত রোজার ঈদে নামাজ পড়সিলো। এইবারও পড়ার কথা।
আর আমার কি পুকুর আছে নাকি? কোনো বাড়িই নাই। থাকি ঢাকা শহরে ভাড়া। পুকুর তো স্বপ্নাতীত ব্যপার।
থাকার মধ্যে ছিলো কয়টা নদী। তাও শীতের আগেই গেছে শুকায়ে। ইন্ডাস্ট্রিওয়ালারা খুব খারাপ তো আজকাল। তাও আপনে আসেন। দেখা যাক কি করা যায়। আমাদের সঙ্গে তো আরো দুইজনের যাওয়া কথা ছিলো। তাদের একজন ইন্তেকাল ফরমাইসে (ইন্নালি..জিউন)। তার নামের ব্লগটাও এখন আর নাই। আর নাম নাইএর মনে হয় ব্রেইন ড্যামেজ। সে কারো সঙ্গে কথা বলে না। নিজে নিজে লেখে। কিন্তু কারো কোনো কথার জবাব দেয় না। পুরাই গন!!!
বাহ, এই তো পেয়ে গ্যাছেন! আর ইয়ে, রাসেল ভাইয়ের একটা বায়োডাটা পাঠান দেখি, একটা হাফ আর একটা ফুল ছবিও দিবেন প্লিজ। সাথে মামা-চাচা-খালু-ফুপারা কি করেন এটা জানা অতীব জরুরি।
আর নামনাই এর কথা আর বইলেন না, পুরাই নচ্ছার একটা লুক। কত করে জিগাইলাম নাম কি, কিছুতেই বললো না। আমি আমার দুস্তরে নিয়া আসবো। ধানাই পানাই বাদ দ্যান, মাছে খাওয়াইতেই হপে।
রাসেল ভাইএর বায়োডাটা আমার কাছে নাই। আপনে তার ব্লগে গেলে কিছু তথ্য পাইতে পারেন। বাড়ি কই, কি করে..এইসব আরকি।
তার মানে আপনের দুস্ত জিন্দা আছে। জাইনা সুখ পাইলাম। আর চার্জনের যাওয়ার প্ল্যান, তিনজন যাওয়া কি ঠিক হবে? আরেকজন শুনলে কিন্তু সেন্টু খাইতে পারে।
আরে এইসব সেন্টু ফেন্টুর ধার ধারিনা আমি। তিনজনে এক রিকশায় করে চলে যাব, ভাড়াও বাঁচবে। আমার দুস্ত জিন্দা আছে, এবং এখন নানারকমের প্ল্যান প্রোগ্রাম হচ্ছে আগামী এক মাসে উপলক্ষে।
এই পোস্টে অনেকবার কমেন্ট করতে আইসা দেখি আমার কথা আরেকজন বলে দিসে।তাই আর কমেন্ট করা হয় নাই।
===============
এখন এসে দেখি আমার মান সুলেমান নিয়ে টানাটানি চলছে।কাজটা কি ঠিক? আমি গরীব হতে পারি তাই বলে কারো বয়ফ্রেন্ড হতে গেলে বায়োডাটা,হাফ ফুল ছবি সাথে বাপ দাদা চৌদ্দগুষ্ঠির কুষ্ঠি দেয়া লাগবে এ কোন যুগ আইলো এ দেখি পুরাই কলিকাল!!
==========
আর সবার পাতে দৈ দেয়ার কথা না বলে বললেই হয় আমার পাতে দৈ দেন।তাইলেই তো সবকিছু মিটে যায়।
দৈ দেয়ার ধাঁধাঁটা বুঝলাম না, খোলাসা করেন দেখি।
আপনার মান সুলেমার ধরে কে টানটানি করসে? কার এত বড় সাহস!!!
পোস্টে কমেন্ট করা উচিত ছিলো।
দেরী করে আসছি। আর কমেন্ট করা ঠিক হবে না
দেরীতে হইলেও চলিবে। It is better later than never.
লেখার সমালোচনা করলে যা হয়, অনেক সময় অনেক এক্সপ্রেশন ঠিক শব্দ দ্বারা বুঝানো যায় না। ফলে দেখা যায় কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হচ্ছে। এইটুকু বাদ দিয়ে এই পোস্টের কথা ও মন্তব্যগুলোকে ইতিবাচকভাবেই দেখছি। ইনফ্যাক্ট এই দেখার ভিন্নতাটুকুই এক ব্লগারের প্রাপ্তি। নিজের দেখার বা চিন্তাভাবনার সাথে অন্যেরটা মিলিয়ে দেখা যায়।
শর্মি আপা যেভাবে লিখলেন, মায়াবতী আপার পোস্ট পড়ার সময় আমার তেমনভাবে মনে হয় নি। কিন্তু এই পোস্ট পড়ার সময় মনে হলো- তেমনভাবেও ভাবা যায়। কোনোটিই সর্বজনীন ঠিক বা ভুল নয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সিদ্ধান্ত নিতে হয় নির্দিষ্ট প্রেক্ষাপটকে কেন্দ্র করে। মায়াবতী তার প্রেক্ষাপট থেকে কথা বলছেন, শর্মি আরেক প্রেক্ষাপট থেকে।
শর্মি আপার সমালোচনা মায়াবতী যেভাবে গ্রহণ করলেন (যদিও মাঝে মাঝে দুই তরফেই সামান্য ভুল বুঝাবুঝির আভাস পাওয়া গেছে), আমি হলে তেমনটি পারতাম কিনা সন্দেহ। তবে এটাও ঠিক, কমেন্ট যতো বড়োই হোক, এটা আলাদা পোস্ট না দিয়ে মায়াবতীর লেখাতেই দেয়া যেত।
এরকম যুক্তি-পারস্পরিক যুক্তির আরো লেখা, মন্তব্য, প্রতিমন্তব্য চাই- রাগ এবং ভুল বুঝাবুঝিকে সামলে রেখে। আমরা আমরাই তো!
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
কই কি অবস্থা?
এইতো, ভাল।
মন্তব্য করুন