ইউজার লগইন

৯০ এর ঢাকা ---- মধ্যবিত্তের চোখে (আপডেটেড)

নব্বইয়ের ঢাকায় বাচ্চারা স্কুলে টিফিনে খেতো বোম্বে সুইটসের রিং চিপস, বাসা থেকে নিয়ে যাওয়া ফুজি নুডুলস, কিংবা কেনা বার্গার। নানাধরনের উন্নত মিল্ক চকোলেট, ক্যাডবেরীও তখন বাচ্চাদের মেনুতে খুব জনপ্রিয়। সেসময় ঢাকায় মধ্যবিত্তদের কাছে আসে পিজা, শর্মা, হেলভেসিয়া মানে ফ্রাইড চিকেন। এর আগে বাইরে খেতে যাওয়া মানে ছিলো চায়নীজ কিংবা কাবাব। সেই সময় চায়নীজ রেষ্টুরেন্টের লোকেরা সিচুয়ান ষ্টাইল, থাই এগুলো নিয়ে আসেন। যদিও এখনো আমি ঢাকার চায়নীজ, সিচুয়ান ষ্টাইল আর থাই রান্নার মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য করতে পারি না। ডলসি ভিটার আইসক্রীম, ফ্রেঞ্চ ফ্রাইজ এগুলো জনপ্রিয়তা পায়। ছোট ছোট আইসক্রীম পার্লার, ফাষ্ট ফুডের দোকান গজিয়ে ওঠার সময় সেটা। গুলশানে একটি ফাষ্ট ফুডের দোকান হলো তখন “হট হাট” যাতে সেই সময়ের হট গার্লস আর বয়েসরা যেতেন। আর ধানমন্ডিতে ছিলো “খাই খাই”। ওয়েষ্টার্ন গ্রীলের জনপ্রিয়তাও তখন বেশ তুঙ্গে। উত্তরাতে লেকের মধ্যে বোটিং আর তারপর কাবাব খাওয়ার ব্যবস্থা ছিল। লিটার কোকের বোতল এবং লিটার বক্সের আইসক্রীম মধ্যবিত্তের ডাইনীং এ তখন অনেক স্বাভাবিক একটি ঘটনা। নিউমার্কেট গাওছিয়া্র খাবারের দোকানের কল্যানে অনেক মহিলারাই তখন বীফরোল, চিকেন প্যাটিস, জ্যামরোল, ভেজিটেবল রোল এগুলো শিখতে আগ্রহী হলেন। প্রায়ই নানা জায়গায় রান্নার কোর্স দেয়া শুরু হলো। আগ্রহী অনেক মহিলাই তখন এধরনের খাবার দোকানে সাপ্লাই দিয়ে সংসারের অর্থনীতির চাকা ঘুরিয়েছেন।

ক্রিকেট তখন খুবই জনপ্রিয় খেলা বাংলাদেশে। বিরানব্বই সালে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের খেলা টিভিতে দেখানো হচ্ছিল। পাকিস্তানী খেলোয়ার ইনজামামুল হক সেসময় তার আনপ্রেডিকটেবল ব্যাটিং এর জন্য খুবই জনপ্রিয়তা লাভ করেন। মধ্যবিত্তের কাছে ভারতীয় – পাকিস্তানী ক্রিকেট খেলোয়াররা সবসময়ই জনপ্রিয়তার দিক থেকে অষ্ট্রেলিয়ান ইংলিশদের থেকে এগিয়ে। সেসময় থেকে বাংলাদেশের ক্রিকেটের দিকেও খেলোয়ারদের নজর পরতে থাকে। ৯৭ এর আইসিসি ট্রফি জয়ের মতো উৎসবমুখর মুহূর্ত বোধহয় দেশে কম এসেছে। এবং নিরানব্বই সালে বাংলাদেশ সর্বপ্রথম বিশ্বকাপ ক্রিকেটে অংশগ্রহন করে। ক্রিকেটের পরে ফুটবলতো ছিলই। আবাহনী আর মোহামেডান ক্রেজ তখনও মধ্যবিত্তের হৃদয়ে। আজকাল যেমন ক্রিকেট ছাড়া অন্যকোন খেলা নিয়ে ঢাকায় আলোচনা হয় না সেরকম দুরবস্থা তখনো ফুটবলের হয়নি। আশির দশক থেকে অনেক দিন নিয়াজ মোর্শেদ বাংলাদেশের দাবাকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অংগনে তুলে রাখেন। সাতার আর শ্যুটিং নিয়েও তখন অনেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রাংগনে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

বাংলাদেশের সিনেমার বেহাল দশাকে ঠিক করতে তখন কেউ কেউ আর্ট ফ্লিমের সাথে সাথে মূলধারা সিনেমাতেও আগ্রহ প্রকাশ করেন। এই আগ্রহের সূত্র ধরেই তখন জনপ্রিয় ভারতীয় সিনেমা কেয়ামত সে কেয়ামত তাক এর বাংলা অনুবাদ তৈরী হয়, কেয়ামত থেকে কেয়ামত। মৌসুমী ও সালমান শাহ এর মতো সুন্দর, স্মার্ট ও গুনী শিল্পীর অভিষেক হয় আমাদের দেশের চলচিত্রশিল্পে। হাস্যকর মেকাপ, ড্রেসাপ, চুলের ষ্টাইলের পরিবর্তন ঘটাতে সাহায্য করেন এই দুই অভিনেতা অভিনেত্রী। প্রচুর মধ্যবিত্ত দর্শক সিনেমা হলে ফিরে যান এছবিটি দেখার জন্য। অনেক শিক্ষিত ছেলে মেয়ে সিনেমাকে পেশা হিসেবে নেয়ার চিন্তা করেন। মৌসুমী আর সালমান পরিনত হন সকল কিশোর – যুবতীর হার্টথ্রবে। ছিয়ানব্বই সালে অপ্রকাশিত কোন কারনে সালমান শাহ আত্মহত্যা করেন, তিনি তখন এতোটাই জনপ্রিয় ছিলেন যে তার মৃত্যুর দুঃখ সইতে না পেরে তার ভক্তও আত্মহত্যা করেন। সালমান মৌসুমীর পরেই ফেরোদৌস রিয়াজ এদের অভিষেক ঘটে। বাংলা সিনেমা যা প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিলো তা শেষ থেকে আবার শুরুর দিকে হাটতে শুরু করে।

নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশে ক্যাবল টিভির আগমন ঘটে। অনেকের বাসার ছাদেই তখন খুব সুন্দর বড় ডিশ এন্টিনা দেখা যেতো। অনেক সময় ছাদে কাউকে এন্টিনা ঘোরাতেও দেখা যেতো। তবে যাদের এন্টিনা ছিলো না তাদের জন্য বিটিভির মাধ্যমে প্রথমে সিএনএন তার সস্প্রচার শুরু করে। মধ্যবিত্তের জন্য আসে অন্যধরনের সমাধান। ভিডিও ক্লাবগুলো নিজেরা বিশাল ক্যাপাসিটির এন্টিনা কিনে বাসায় বাসায় মাসিক একটা মাসোহারা ঠিক করে ক্যাবল টিভির লাইন দিতে লাগলেন। এরপর ভারতীয় টিভি, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেল, ডিস্কোভারী, কার্টুন নেটওয়ার্ক সবই মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যে চলে এলো। এর প্রচন্ড প্রভাব পরলো মধ্যবিত্তের জীবন যাত্রায় বিশেষ করে পোষাক শিল্পে। শাড়ির মার্কেট আর পোষাকের ডিজাইন ভারতীয় টিভিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হতে লাগলো সাথে সাথে মধ্যবিত্ত মেয়েদের কাছে জীন্স, টিশার্ট, স্কার্ট, লংড্রেস অত্যন্ত জনপ্রিয়তা পেলো। যারা বাইরে যেতেন শপিং করতে তাদের বাদে মধ্যবিত্ত বাকি সবাই বংগবাজার, দোজা ইত্যাদি মার্কেট থেকে তাদের চাহিদা মেটাতেন। মুম্বাই টিভির কারনে হেয়ার স্টাইলে ডায়ানা-কাট, মাধুরী-কাট ছিল দেখার মতোন বেশি, আর ছেলেদের ক্ষেত্রে সামনে ছোট কিন্তু ঘাড় ছাড়াইয়ে চুল রাখা যা কিনা সঞ্জয় দত্তের স্টাইল ছিল অনেক দেখা যেত, ৯২-৯৩এর দিকে ছেলেরা জিনস আর কেডসের সাথে ব্যাপকহারে চুলে রাহুল কাট প্রয়োগ শুরু করে। মেয়েদের প্রসাধন ও রূপচর্চা একটা টপিক্যাল বিষয়ে পরিণত হয়। দশকের শেষদিকে চ্যানেল আই শুরু হলে কানিজ আলমাস আর ফারজানা শাকিল টিভিতে রুপচর্চার ব্যাপারে প্রচুর অনুষ্ঠান করেন।

ভারতীয় শাড়ি আর থ্রীপিসের সাথে প্রতিযোগিতা করে তখন দেশীয় ফ্যাশন হাউজগুলো মোটামুটি প্রতিষ্ঠিত। ভারতীয় কাপড় মানেই স্ট্যাটাস আর স্টাইল এধারনাটা কিছুটা তখন মার খায়। শুধু মেয়েদের জামা কাপড়ই নয় ফ্যাশন হাউজগুলো তখন ছেলেদের জন্যও ভালো ভালো পাঞ্জাবী তৈরী করছেন। তাদের তৈরী বিভিন্ন ফ্যাশনের গয়না, জুতো, ঘর সাজানোর জন্য বিভিন্ন রকমের কাঁথা স্টীচের, এপ্লিকের, বাটিকের চাদর, কুশন কভার তখন মধ্যবিত্তের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়। বিবিয়ানা, আড়ং, নিপুন, ভূষন, ভুবন, প্রবর্তনা এরা সেসময়ের উদাহরন। বিভিন্ন ফ্যাশন ম্যাগাজিনগুলো তখন ঈদ উপলক্ষ্যে প্রতিযোগিতার আয়োজন করতেন। তাদের এই আয়োজন ও পুরস্কার বিতরন ফ্যাশন হাউজগুলোর ঈদের বিক্রিকে অনেকটাই প্রভাবিত করতো।

সেই ক্যাবল টিভির যুগেও হুমায়ূন আহমেদের “কোথাও কেউ নেই” ধারাবাহিক নাটকটি মধ্যবিত্ত দর্শকদের প্রচন্ডভাবে আকর্ষন করে। এই নাটকটি নিয়ে মিছিল পর্যন্ত হয় ঢাকায়। বাকের ভাইয়ের চরিত্রে আসাদুজ্জামান নূর আর মুনা চরিত্রের সুর্বনা তখন ঢাকায় খুব জনপ্রিয়তা পান। পাড়ায় পাড়ায় বাকের ভাইদের মধ্যে লাল শার্ট পরার একটা প্রবনতা চোখে পরে সাথে চোখে কালো রোদচশমা আর হাতে নানা ধরনের ব্রেসলেট। নব্বইয়ের দশকে জাহিদ হাসান, শমী কায়সার, বিপাশা হায়াত, তৌকির নতুন প্রজন্মের প্রতীক ও আর্দশ ছিলেন। নোবেল- ফয়সা্লের বিজ্ঞাপন নিয়ে হৈহুল্লোড় শুরু হয়। তখনই হঠাৎ করে এক পর্বের নাটকের বদলে খন্ড নাটক বানানোর হিড়িক পরে। নাটক নিয়ে অকারনেই বাইরের লোকেশনে যাওয়া, নাটকে গান ঢুকিয়ে দেয়া এগুলোর শুরু হয়। বিটিভি ডিশের প্রভাবে প্যাকেজ প্রোগ্রাম নামের রেডিমেড কিছু কিনতে শুরু করে। তবে সে সময় ঢাকায় খুব ভালো ভালো মঞ্চ নাটক হতো। জাহিদ হাসান অভিনীত “বিচ্ছু” দেখার জন্য টিকিট পাওয়া মুশকিল ছিলো। হুমায়ূন আহমেদের লেখা “মহাপুরুষ”, তারিক আনামের পরিচালনায় “কঞ্জুস”, হাতহদাই, রক্তকরবী ইত্যাদি নাটকগুলো তখন মহিলা সমিতি আর গাইড হাউজে মঞ্চায়িত হতো। সে সময় টিভিতে ইংলিশ সিরিয়ালের পাশাপাশি এশিয়ান সিরিয়াল দেখানো শুরু হয়। এরমধ্যে অনেকগুলো খুবই দর্শক নন্দিত হয়েছিলো। একটির নাম মনে পড়ছে “এগেইনষ্ট দ্যা উইন্ড”। এর হিরোর নাম ছিল সম্ভবত, “ক্যানি”। আমার আর আমার ছোট বোনের দুইজনের হিরো। আমরা দুইবোন রোজ, ও আমার ও আমার বলে ঝগড়া করতাম, আমি গানও গাইতাম ক্যানি আমার ক্যানি, আমার প্রিয় ক্যানি, ক্যানি আমার চাই। আমার দাদু তেড়ে ওঠতেন তার নামাজের বিছানা থেকে, তোর লজ্জা নাই বলে। চশমা পরা দুঃখী দুঃখী চেহারার শুটকো হিরো ছিল “ক্যানি”। নব্বইয়ের দশক থেকেই বিটিভি তাদের সারাদিনের সম্প্রচার কাজ শুরু করেন। , ঈদে একটানা তিনদিন ব্যাপী অনুষ্ঠান দেখানো তখন থেকেই শুরু হয়। টিভিতে বাংলায় ডাবিং করা সিরিয়াল প্রচারের সূচনা হয় এ দশকে। প্রথমে সোর্ড অফ টিপু সুলতান।লাইন ধরে বিচিত্র বাংলায় ডাবড হয়ে আসতে থাকে ডার্ক জাস্টিস, আকবর দ্য গ্রেট, থিফ অফ বাগদাদ, সিন্দাবাদ, রবিন হুড ইত্যাদি। সিন্দাবাদের মিভ আর রবিন হুডের মেরিঅ্যানের পোশাকের নেকলাইন বিটিভি-নির্ভর মধ্যবিত্ত চোখকে বড় ধরণের ঝাঁকুনি দেয়। তবে মূলত গৃহকর্মীদের কারণে সবাই যেটা দেখতে বাধ্য ছিলেন তার নাম অ্যারাবিয়ান নাইটস বা আলিফ লায়লা। জাপানি সিরিয়াল "ওশিন" তুমুল হিট ছিল তখন।

টিভি তখন মধ্যবিত্তজীবনে অনেক প্রভাব বিস্তার করে। অভিনেতা শাহরুখ খান থেকে ক্রিকেটার ইমরান খান, মাধুরী দীক্ষিত থেকে জেনিফার লোপেজ এর ছবি তখন নিউমার্কেটে ত্রিশ টাকা দরে বিক্রি হতে শুরু করে। কারো বাড়িতে গেলে কাউকে জিজ্ঞেস করার প্রয়োজ়ন নেই কে তোমার পছন্দের হিরো কিংবা খেলোয়ার। দেয়াল ভর্তি ভর্তি সাটা আছে টম ক্রুজ কিংবা রিকি মার্টিন। মধ্য নব্বইয়ে ওয়াকিটকির মতো বিশাল সাইজের মোবাইল ফোন তখন ঢাকার কিছু মধ্যবিত্তের হাতে ঘুরছে। যদিও নেটওয়ার্ক বা অন্যান্য সুযোগ সুবিধা তখন মোবাইলের জন্য খুবই অপ্রতুল কিন্তু অনেকটা শোঅফ বা স্ট্যাটাস সিম্বল হয়ে মোবাইল যন্ত্রটি কারো কারো হাতে ঘুরতো। নব্বইয়ের শেষ দিকে অবশ্য অনেকেই মোবাইল ব্যবহার করতে শুরু করেন। ভ্যালেইন্টাইন ডে, ফ্রেন্ডশিপ ডে, পহেলা ফাল্গুন এধরনের দিনগুলো উৎসব রূপে ঢাকায় নব্বই এর দশকেই জনপ্রিয়তা পায়। বাংলাদেশের একমাত্র ছুটি কাটানোর জায়গা কক্সবাজার সেসময় মধ্যবিত্তের কাছে ধরা দিলো। বিভিন্ন কারনে – অকারনে পরিবার পরিজন নিয়ে ঘট ঘট কক্সবাজার ছোটা তখন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে ছিল। নব্বই দশক থেকে ফ্ল্যাট কালচারের প্রচলন শুরু হয়, মার্কেট কালচারেরও। নিজেদের বাড়িঘর ভেঙ্গে ফ্ল্যাট বানানো আর রাস্তার পাশে বাড়ি হলে তাকে মার্কেট বানানো। প্রথমে ফ্ল্যাট মধ্যবিত্তদের ব্যাপার থাকলেও পরে ধানমন্ডি, গুলশান, বনানীতে এটা মহামারীরুপ নেয়। ফ্ল্যাটের কল্যানেই অনেক উচ্চ মধ্যবিত্ত তাদের আবাসস্থান পরিবর্তন করে গুলশান ধানমন্ডিতে নিজেদের আবাসিত করেন।

ঢাকায় বিভিন্ন উপলক্ষ্যে তখন খুব ওপেন এয়ার কনসার্ট হতো। ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে নবীন বরন উৎসব, ইডেনের নবীন বরন উৎসব, পহেলা বৈশাখ ইত্যাদি উৎসবগুলো ছিল মূখ্য। ছেলেদের কলেজে মেয়েদের যাওয়া মানা হলেও ছেলেরা মেয়েদের কলেজের কনসার্টের সময় আশপাশে ঘুরঘুর করতো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে আনন্দের ব্যাপার ছিল, একবার বি।এন।পি থেকে নবীন বরন দেয়া হতো, একবার আওয়ামীলীগ থেকে আর একবার থাকতো নিজস্ব বিভাগের তরফ থেকে। আওয়ামী আর বি।এন।পির মধ্যে আবার একটা প্রতিযোগিতা থাকতো কারা কতো দামী ব্যান্ডকে আনতে পারে। আমাদের সময় নিজস্ব নবীন বরন ছাড়াও পরস্ব নবীন বরনের কনসার্ট উপভোগ করার একটা রেওয়াজ চালু ছিলো। সেসুবাদে কোচিংমেট, কলেজমেট, স্কুলমেট, পাড়ামেট কে কোথায় ভর্তি হলো তার একটা খোঁজ পাওয়া যেতো। মাগনায় নির্মল বিনোদনের এরচেয়ে উৎকৃষ্ট উপায় আমাদের তখন জানা ছিল না। সংবাদপত্র জগতে বিষয়বৈচিত্র্য, রুচি সবকিছু মিলে ব্যাপক নতুনত্ব দেখতে পায় পাঠক। প্রিন্ট মিডিয়ায় কর্পোরেট পুঁজি বিনিয়োগের ব্যাপারটির সঙ্গেও আমাদের পরিচিতি ঘটে এই দশকে। পত্রপত্রিকার পাঠক সংগঠনগুলো সৃজনশীলতা চর্চা শুরু করেন।

সেই সময় সারা ঢাকা শহর জুড়ে ব্যাঙ এর ছাতার মতো ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের পাশাপাশি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিও গজাতে শুরু করলো। বড়লোকের ছেলেমেয়েরা বিদেশি লেটেষ্ট মডেলের গাড়িতে চড়ে ব্যাঙ্কক সিঙ্গাপুরী ব্র্যান্ডের সানগ্লাস চোখে দিয়ে সেখানে পড়াশোনা শুরু করে দিল। আমাদের যাদের মাসে পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সামর্থ্য নেই, তারা ষোল থেকে বিশ হাজার ছাত্র ছাত্রীদের সাথে প্রতিযোগিতা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে উলটা ভাব নেয়ার চেষ্টায় থাকি, ঢাকাতে যারা কৃতকার্য হয় না তারাই প্রাইভেটে পড়তে যায়। বলাতো যায় না রোজ বিশ টাকা রিকশা ভাড়া বাঁচানোর জন্য ইউনিভার্সিটির বাসে করে বাড়িতে চলে আসি আর সেই টাকায় টি।এস।সিতে দুপুরে একপিস ছোট মাংসের টুকরা দেয়া তেহারী আর কোক খেয়ে পাবলিক লাইব্রেরীতে গুলতানি করি। তখনই আন্ডারগ্রাডদের বিদেশে পড়তে যাওয়ার ট্রেন্ড শুরু হয়। আগে জানতাম লোকে পি।এইচ।ডি, এম, এস, পোষ্ট ডক করতে বিদেশে পড়তে যায়। কিন্তু সাধারন অনার্স, বিবিএ, কম্পিউটার সাইন্স মার্কা সাবজেক্টে অষ্ট্রেলিয়া, কানাডা, লন্ডন, এ্যামেরিকা নিদেন পক্ষে ইন্ডিয়া যাওয়ার চলও সেই নব্বইয়ের দশক থেকেই। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় এম সি কিউ পদ্ধতি চালু হয় বিরানব্বইল সাল থেকে।

নব্বই দশকের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ছিলো ঢাকার জন্য “এরশাদ সরকারের পতন”। প্রতিবার ফাইন্যাল পরীক্ষার আগে এরকম একটা হরতাল, আন্দোলন, কার্ফিউ এর ঘটনা ঘটতো। এটা শীতকালে স্বাভাবিক বলে আমরা তখন জানতাম। ঢাকায় বন্যা আর হরতালের কারনে স্কুলে বিরাট ছুটি পাওয়া যেতো। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা আন্দোলন করবে, কেউ কেউ মারা যাবে, ছাত্ররা বাস পুড়িয়ে দিবে, এরশাদ মানুষের মিছিলে ট্রাক তুলে দিবে। তখন কিছুদিন স্কুল বন্ধ থাকবে, পরীক্ষার ডেট চেঞ্জ হবে, আব্বুরা বাসায় থাকবে আমরা ইচ্ছেমতো দুষ্টামী করতে পারবো না, কিন্তু আব্বু বাসায় থাকা উপলক্ষ্যে ভিডিও ক্লাব থেকে ভালো ভালো সিনেমা আনা হবে, পড়তে হবে না কারন পরীক্ষা অনিশ্চিত। আর আম্মি ভালো ভালো রান্না করবেন। যেকোন সময় যেকোন এ্যাডভাঞ্চার প্রিয় মেহমানও আসতে পারেন এই গলি, সেই গলির চিপা দিয়ে হরতালকারী আর পুলিশের দৃষ্টিকে ফাঁকি দিয়ে। আব্বুরা হয়তো তাসের আড্ডা বসাবেন। সিটি কলেজের সামনে, কিংবা নিউমার্কেটের সামনে নীলক্ষেতে টোকাইদের দিয়ে নেতারা টায়ার পুড়াবেন। সেই পোড়া গন্ধ কলাবাগান, শুক্রাবাদ পর্যন্ত আসবে। আমরা সবাই ছাদে দৌড়ে যাবো, সেই সময় সাইরেন বাজিয়ে পুলিশ সেখানে যাবে যাতে সাইরেনের আওয়াজ পেয়ে টায়ার পুড়ানেওয়ালারা দৌড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে পারে। কিন্তু সেবার যে এরশাদ সত্যিই সত্যিই ক্ষমতা ত্যাগ করবেন, দুই নেত্রীকে গৃহবন্দী করা বাদ দিয়ে সেটা ছিল অপ্রত্যাশিত। বাংলাদেশ একানব্বইতে সত্যি সত্যি স্বৈরাচারমুক্ত হলো, আসলেই কি? দৈনন্দিন জীবনে এরশাদ পরবর্তী সরকারদের সাথে আমি এরশাদ সরকারের খুব একটা অমিল পাই না।

আমরা যারা যুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্ম, যুদ্ধ – রায়ট যাদের কাছে ইতিহাসের বই, টিভির নাটক কিংবা সিনেমা মাত্র ছিল। তারা বিরানব্বইয়ে বাবরী মসজিদ ভাঙ্গার কল্যানে সেটা স্বচোখে দেখলাম। প্বার্শবর্তী দেশের তান্ডব আমাদের দেশকেও কিছুটা ছুঁয়ে গেলো। সারাদেশে কিংবা ঢাকায় কার্ফিউ ছিল তখন। বিটিভি সিএনএনের রায়টের সংবাদের সময় সেন্সর করে সিএনএন পযর্ন্ত অচল করে রাখতো। ধর্মের নামে মানুষ মারা কোন প্রাগৈতিহাসিক ঘটনা নয়। এটা এখনো ঘটে জানলাম তখন নতুন করে। খালেদা জিয়ার আমল তখন, তিনি আগের দিনের সাদা সূতীর শাড়ি বদলে নতুন ফ্রেঞ্চ ফ্যাশনে টিভিতে আসেন সাথে একটা ম্যাচিং ওড়না। খালেদা জিয়ার এই ওড়না ফ্যাশন তখন মধ্যবিত্ত খালাম্মাদের আক্রান্ত করে ফেললো। ম্যাডামের মতো ফ্রেঞ্চ না পাক তাতে কি, সূতী, সিল্ক, ম্যাচিং, কন্ট্রাষ্ট যে ধরনেরই হোক ওড়না তাদের শাড়ির ওপর শোভা পেতে লাগলো। সেই সময় আনন্দ বিচিত্রা একটি জরিপ চালায় তারকাদের মধ্যে, কাকে তারা সবচেয়ে সুবেশী মনে করেন। ষোলজন সম্ভবত খালেদা জিয়ার নাম করেন, এই ষোলজনের মধ্যে তারকা সুর্বনা ও চম্পা ছিলেন সম্ভবত যারা খালেদা জিয়াকে সবচেয়ে সুবেশী মনে করতেন। ৯১ সালের (সম্ভবতঃ) সবচেয়ে আলোচনাকারী ঘটনা ছিল শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে "ঘাতক দালাল নিমূর্ল কমিটি" গঠন করে গন আদালতের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যবস্থা করা। আন্দোলন তৈরী করা।

এই দশকেই যায় যায় দিন সাপ্তাহিকের নির্বাচিত কলামের লেখিকা তাসলিমা নাসরিনকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়। তিনি বির্তকিত ছিলেন তার ব্যাক্তিগত জীবন সাথে তার লেখার জন্য। আজো তার নির্বাসন জীবনের অবসান ঘটেনি। মৌলবাদী শক্তিকে রুখার বদলে সব সরকারই তাদের সাথে আঁতাত রাখেন। একজন নিরস্ত্র ভদ্রমহিলা যিনি লেখিকা, তাকে লেখা দিয়ে বধার বদলে শক্তিশালী পুরুষরা সবাই লাঠি সোটা দা নিয়ে ঢাকা কাঁপিয়ে মিছিল করেছেন। আমাদের অসহায় পুলিশ বাহিনী তাকিয়ে তাকিয়ে তা দেখেছে, কিছুই করতে পারেনি। সারা বিশ্ব এই বর্বর দৃশ্যটি দেখেছেন। কিন্তু আজো তিনি যা যা বলেছেন তার বিপক্ষে কোন যুক্তি নিয়ে এসে তার লেখাকে কেউ খন্ডন করেনি। ৯৮ সালে ভয়াবহ বন্যায় সারাদেশ ডুবে যায়। সারা বিশ্বের সংবাদ মাধ্যমে বাংলাদেশ আবার তার অসহায়তার জন্য কভারেজ পায়। নব্বইয়ের দশকে কম্পিউটার মধ্যবিত্তের ঘরে আসে। গেম খেলা চলতো তখন ভীষন ভাবে। অনেক শৌখিন ব্যবহারকারী তখন উচ্চমূল্যে অন্তর্জাল ব্যবহার করতেন। অর্ন্তজাল ব্যবহারের মধ্যে একটা জিনিস তখন প্রচন্ড জনপ্রিয় ছিল তাহলো চ্যাটিং। এম।এস।এন কিংবা ইয়াহুর মাধ্যমে চ্যাটিং।

তানবীরা
২১.১০.১০

এই লেখাটা লিখতে যেয়ে মনে হলো বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষা দিচ্ছি। সব গ্লোবাল পড়া আছে, মুখস্থ নাই কিছু। এখন নিজের কেদরানী দিয়া কি করে বিলাসীর চরিত্র অঙ্কন করা যায়। ইস্মৃতিতো বহু আগে থেকেই প্রতারনা করছে। এতোদিন ভরসা ছিল “গুগল”। কিন্তু ডিজ়িটাল বাংলাদেশের কোন সেক্টরের কোন তথ্য গুগল করে পাওয়া!!!!

কৃতজ্ঞতাঃ নুশেরা + জেবীন + নড়বড়ে

পোস্টটি ২০ জন ব্লগার পছন্দ করেছেন

রন্টি চৌধুরী's picture


অসাধারন লেখা।
অনেক স্মৃতি মনে পড়ল।

ভাঙ্গা পেন্সিল's picture


নুশেরাপুর অপেক্ষায় Big smile

এই দশকটা অনেক চেনা। ক্যাবল টিভিটা এসেই সব সর্বনাশ করলো...তা নইলে সবকিছুই ভাল থাকতো মনে হয় Sad

তানবীরা's picture


আমিও নুশেরার অপেক্ষায়। Big smile

ক্যাবল টিভি তোমার কি সর্বনাশ করলো, আমি না জাতি জানতে চায় Wink

ভাঙ্গা পেন্সিল's picture


ঘরময় সিরিয়ালের ঝন ঝন সাই সাই আওয়াজ Sad(

মজিবর's picture


খুব সুন্দর হয়েছে, বউ।

তানবীরা's picture


Cool Tongue Big smile

নুশেরা's picture


কেঠা??? Thinking

রশীদা আফরোজ's picture


মানে কী?

আসিফ's picture


সিরিজ ভালো লাগছে।
শূণ্য দশকের লেখা আসবে?

১০

অতিথি's picture


চমৎকার লেখা।

১১

শাওন৩৫০৪'s picture


বেইলি রোডের ফাস্ট ফুডের দোকান আর এম টিভিতে মালাঈকা!!!

১২

তানবীরা's picture


সবারগুলো নিয়ে একবারে আপডেট করে দিবো Big smile

১৩

মাহবুব সুমন's picture


তাসলিমার বিরুদ্ধে বিষেদাগার শুধু মোল্লা শ্রেণীই করে না, অনেক তথাকথিত প্রগতিশীল সুশীলও করে থাকে। মোল্লারা আনে ধর্ম আর সুশীলরা আনে তার লেখা কিছু বইয়ের মানকে লক্ষ্য রেখে। যদিও সুশীল গোত্র কেনো তাসলিমা দেশের বাহিরে সেটা নিয়ে মাঝে সাজে উহ আহ করে কিন্তু যখনই স্বদেশ আসবার প্রশ্ন তোলা হয় তখন ইনিয়ে বিনিয়ে সেটার বিরুদ্ধে মত দেয়।

১৪

জেবীন's picture


দারুন!...  Smile

ডলসিভিটার আইসক্রীম সাথে বুননে চক্কর দেয়া, কন্সার্টের চিল্লাচিল্লি আর ব্যান্ড মেম্বারদের জন্যে ক্রেজ, আবাহনী-মোহামেডানের খেলা নিয়ে উত্তেজনা আর হারু পাট্টিরে জ্বালানি, সঞ্জয় দত্ত - আমির - মাধুরী - দিব্যা ভারতী'র ভিউকার্ড - পোষ্টারের কাড়াকাড়ি,  হেয়ার স্টাইলে ডায়ানা-কাট, মাধুরী-কাট ছিল দেখার মতোন বেশি,  আর ছেলেদের ক্ষেত্রে  সামনে ছোট কিন্তু ঘাড় ছাড়াইয়ে চুল রাখা যা কিনা সঞ্জয় দত্তের স্টাইল ছিল অনেক দেখা যেত,  নোবেল- ফয়সাল- মৌ দের নতুন নতুন বিজ্ঞাপন নিয়ে হৈহুল্লোড়, বাসায় না বলে স্কুল থেকে দলবেধেঁ জীবনে প্রথম হল'এ গিয়ে সিনেমা "কেয়ামত থেকে কেয়ামত" দেখতে যাওয়া (তা যত না নতুন নায়ক কে দেখতে যাওয়া তার চেয়ে বেশি আমির''রের সাথে সালমান শাহ'র তুলনা করাই মুখ্য ছিলো), এম টিভি তে দারুন দারুন মিউজিক ভিডিও দেখার ধুম, ভিজে গুলোর উদ্ভট অঙ্গভঙ্গি!, "গীতমালা" নাম দেয়া ভিডিও ক্যাসেট ভাড়া আনা যাতে পাচঁমিশালী হিন্দি গানের বহর থাক্তো, ভাইদের সাথে ওয়ার্ল্ড কাপ দেখতে বসে খেলার চেয়ে ওয়াসিম আকরামের জন্যে মাথা আউলায়ে যাওয়া (এটাকেও ভালো মানছি, কারন খেলাটার প্রতি মনোযোগ এসেছিলো এর পর পরই), মুনা-বাকের ভাইয়ের মনের টানটা  মন থেকে উপলব্ধি করা (স্থুলভাবে না এনে প্রেমটা কি সিগ্ধভাবে দেখানো যায় এখনকার ডিরেক্টর দের শেখা উচিত),  ঢাকায় বন্যা আর হরতালের কারনে স্কুলে বিরাট ছুটি পাওয়া, দারুন দারুন কার্টুন দেখাতো বিটিভি, জাপানি সিরিয়াল "ওশিন" তুমুল হিট ছিল, যেটা দেখে ওদের কালচার জানতাম যা অনেক আজিব লাগতো...  Smile

কত্তো কি মনে পড়লো!!... 

১৫

তানবীরা's picture


ওশিন এর নামটা কিছুতেই মনে করতে পারছিলাম না। স্মৃতি এখন আমার প্রতারনা। সেসব দিনে আমার বিটিভির এশিয়ান সিরিয়ালগুলো বেশি ভালো লাগতো।

যোগ করে দিলাম, জেবীন।

১৬

নুশেরা's picture


পয়লাই খানাদানার কথাবার্তা দেখে উদাস লাগতেছে। তার উপর হট হাট। সেই ঊনিশশ আটানব্বই সালে একজনে সেইখানে খাওয়াইছিলো... স্মৃতি তুমি বেদানা

যাকগা, ভাঙ্গা আর তানবীরা ওয়েটিং Cool
পয়লা খেলাধূলা। একটু পিছানো যাক। '৮৭ সালে এশিয়া কাপ আর ৮৯-এ অনূর্ধ্ব ১৯ যুবকাপের হোস্ট হয়ে বাংলাদেশে বিদেশি ক্রিকেটারদের আসাযাওয়া বাড়ে। ক্লাব ক্রিকেটেও তারা ঢোকে, ফলে নব্বইয়ের দশকে এসে ৯২/৯৩-এর সার্ক ক্রিকেটে প্রচুর দর্শক হয়। আকরাম খানের বাংলাদেশ ভারতকে একটা ম্যাচে হারালে ধানপাট আর ফুটবলের মাটিতে ক্রিকেট গেড়ে বসে। ৯৬ (নাকি ৯৭?)-এর আইসিসি ট্রফি জয়ের মতো উতসবমুখর মুহূর্ত বোধহয় দেশে কম এসেছে। সেবারই প্রথম বিশ্বকাপের টিকেট পায় বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত নয়া কিছিমের কিছু জিনিস নব্বইয়ের দশকে নিজেদের আশেপাশে দেখতে শুরু করে। যেমন পেশা হিসেবে টিভি/ramp মডেলিং (ফকিরা মফস্বলে পর্যন্ত ঢাকা থেকে টিম এসে মডেলিং ওয়ার্কশপ করে যেতো), পত্রপত্রিকার আয়োজনে সুন্দরী প্রতিযোগিতা ইত্যাদি। মূলত ৯৩ সালে সু্স্মিতা সেন আর ঐশ্বরিয়া যথাক্রমে মিস ইউনিভার্স আর মিস ওয়ার্ল্ড হওয়া আর ঐ বছরেই ক্যাবল টিভি ঘরে ঘরে ঢুকা এই ধামাকার জন্য দায়ী। চট্টগ্রামের মেয়ে আনিকা তাহের মিস ওয়ার্ল্ডে ১২ তম প্লেইস পায়।

ডিশযুগ শুরু হওয়ার পয়লা দিকে যারা এইটা ঘরে নিতে পারে নাই তারা মাগনার বিবিসি আর সিএনএন দেখতো। সিএনএনের শোবিজ দেখার জন্য সারা সপ্তাহ হা করে বসে থাকতো।

ডিশের কারণে মুম্বইয়ের চ্যানেলগুলার লাইফস্টাইল প্রোগ্রাম দেখে দেখে এখানেও মেয়েদের প্রসাধন ও রূপচর্চা একটা টপিক্যাল বিষয়ে পরিণত হয়। দশকের শেষদিকে চ্যানেল আই পয়দা হইলে কানিজ আলমাস আর ফারজানা শাকিল টিভি স্টার হিসাবে উদয় হন।

৯২-৯৩এর দিকে ছেলেরা জিনস আর কেডসের সাথে ব্যাপকহারে চুলে রাহুল কাট প্রয়োগ শুরু করে। কোঁকড়া চুলের ছেলেরা এইখানে মর্মান্তিকভাবে ধরা খায়। মেয়েরা ডিভাইডার নামের এক আগাগোড়া সমান্তরাল অতি ঢিলা সালোয়ার পরা শুরু করে এবং ঐটা পরে হাঁটার সময় রাস্তার ধূলাবালু ঝাড়ার সোশাল সার্ভিসে অংশ নেয়। ম্যাট লিপস্টিক নামের এক বস্তু তরুণীদের অবশ্যব্যবহার্য তালিকায় ঠাঁই পায়। ইনিশিয়ালি সেটার অনেক দাম ছিলো, আর সস্তা ভার্সনটা দেখলে মনে হইতো রঙিন কাগজে "ছেপ" দিয়ে ঠোঁটে মাখানো হইছে।

টিভিতে বাংলায় ডাবিং করা সিরিয়াল প্রচারের সূচনা হয় এ দশকে। প্রথমে সোর্ড অফ টিপু সুলতান। আম্মিজান, আমার সারতাজ, স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে আপনি সম্বোধন এইসব শব্দাবলী ব্যাপক জনপ্রিয় হয়। লাইন ধরে বিচিত্র বাংলায় ডাবড হয়ে আসতে থাকে ডার্ক জাস্টিস, আকবর দ্য গ্রেট, থিফ অফ বাগদাদ, সিনবাদ, রবিন হুড ইত্যাদি। সিনবাদের মিভ আর রবিন হুডের মেরিঅ্যানের পোশাকের নেকলাইন বিটিভি-নির্ভর মধ্যবিত্ত চোখকে বড় ধরণের ঝাঁকুনি দেয়। তবে মূলত গৃহকর্মীদের কারণে সবাই যেটা দেখতে বাধ্য ছিলেন তার নাম অ্যারাবিয়ান নাইটস বা আলিফ লায়লা। সুপরিচিত সূচনা সঙ্গীতটির সময় পাড়া-মহল্লার কোন টিভি অফ থাকতো বলে মনে হয় না।

নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে মোবাইল ফোন নাজিল হয়, তবে এখনকার মতো এতো ব্যাপকভাবে না। অতি মালদার পার্টির হাতেই কাটা রাইফেলাকৃতির কিছু মডেল দেখা যেতো। সংবাদপত্র জগতে বিষয়বৈচিত্র্য, রুচি সবকিছু মিলে ব্যাপক নতুনত্ব দেখতে পায় পাঠক। প্রিন্ট মিডিয়ায় কর্পোরেট পুঁজি বিনিয়োগের ব্যাপারটির সঙ্গেও আমাদের পরিচিতি ঘটে এই দশকে। পত্রপত্রিকার পাঠক সংগঠনগুলো সৃজনশীলতা চর্চা শুরু করে। এই বিষয়ের উপর আলোকপাতের জন্য মেসবাহ য়াযাদ ভাইজানের অপেক্ষায় আছি Wink

১৭

ভাঙ্গা পেন্সিল's picture


মোবাইলের আগে ব্যবসায়ীরা(অথবা যারা খুব ব্যস্ত থাকতো) মনে হয় পেজার ব্যবহার করতো।

১৮

নুশেরা's picture


একদম ঠিক! ভাঙ্গার স্মরণশক্তি ভালো।

১৯

তানবীরা's picture


হট হাটের বেদানার কাহিনী জানতে চায় এই জনতা ঃ) Wink

আইসিসি ট্রফির কথা কি করে ভুললাম বলোতো? ডিভাইডার এখনো আমার অতি প্রিয় ঘর পোষাক। অনেক আরামদায়ক । Steve

আলিফ লায়লা, সিন্দাবাদ, আকবর দ্যা গ্রেট এগুলোর কথা কিছুতেই মনে করতে পারছিলাম না বরং বারবার হাম পাঞ্চ সিরিয়ালটার কথা মনে পড়ছিলো Tongue

মেসবাহ ভাই করবে আলোকপাত? ওনার এসব পোষ্ট পড়ার সময় থাকলেতো Sad

ধন্যবাদ সখি

২০

নুশেরা's picture


বাংলাদেশ ঐ আইসিসি ট্রফির টিকেট নিয়ে প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলে ১৯৯৯তে। খালেদ মাহমুদ সুজনের অলরাউন্ড পার্ফর্ম্যান্সে আকরাম খান বাহিনীর হাতে ওয়াসিম আকরামের পাকিস্তানের অবিস্মরণীয় হার। কাজেই সেটাও নব্বই দশকের তুমুল ঘটনা।

২১

তানবীরা's picture


৯১ সালের (সম্ভবতঃ) সবচেয়ে আলোচনাকারী ঘটনা ছিল শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে "ঘাতক দালাল নিমূর্ল কমিটি" গঠন করে গন আদালতের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যবস্থা করা। আন্দোলন তৈরী করা

এটাওতো ভুললাম প্রথমে Sad(

২২

নুশেরা's picture


তানবীরা, ব্যাপক কাভারেজ আসছে তোমার এই পর্বে। দুর্দান্ত।

তুমি খণ্ড নাটকের কথা বললে। এর পাশাপাশি আমার মনে পড়ে, বিটিভি ডিশের প্রভাবে প্যাকেজ প্রোগ্রাম নামের রেডিমেড কিছু কিনতে শুরু করে যেগুলো হার্ডবোর্ডের সেট থেকে বেরিয়ে আসার স্বস্তি দিয়েছিলো

২৩

তানবীরা's picture


খন্ড নাটকটাই যে কতো কষ্টে মনে করেছি। কিছুতেই টিভির কিছু মনে করতে পারছিলাম না। আসলে সে সময় আমি খুব একটা টিভি দেখতাম না, বই পড়ার নেশা বেশি ছিল আর আঁতেলও হয়ে গেছিলাম, টিভির নাটক, ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান এগুলো খুবই ছ্যাবলা লাগতো।

২৪

রায়েহাত শুভ's picture


প্রথমেই নুশেরান্টির মন্তব্যে ফকিরা মফস্বল শব্দ ব্যভারের লাইগা গর্বিত একজন মফস্বলের অধিবাসী হিসাবে তীব্রতর দিক্কার জানায়া রাখলাম...

আহা সিএনেন। আহা শোবিজ টুডে। আহা নিউজ প্রেজেন্টার বেটিনা লুশার। আহা আহা... Love Love Struck Love

আইচ্ছা একটা সিরিজ আছিলো না অন দ্য ফ্রিঞ্জ?

ওশিনরে ছুটু বেলায় ভালা পাইতাম। বড় হওনের পর আর সইজ্য হইতো না।

আমাগো একটা রক্ত উচকানী সিরিজ আছিলো। থান্ডার ইন প্যরাদাইস। বিকিনি বেইব দেখতে পার্তাম। Tongue Tongue Tongue

২৫

নুশেরা's picture


মফস্বল বরাবরই ফকিরা কাউয়াঙ্কেল, এখন আরো ফকিরা হইছে। হোক, তাতে কী? মা দরিদ্র হইলে কি তারে নিয়া গর্ব করা যাবে না? আমি গর্বিত অ্যাজ আ ফইক্রা-মফস্বলী।

টু্ইন পিকস ছিলো একটা লেট নাইট সিরিয়াল, দুর্দান্ত মিউজিক ছিলো টাইটেলে

২৬

নড়বড়ে's picture


টুইন পিকসের মিউজিকটা যে কি ফাটাফাটি ছিল, কী রহস্যময়!! ক্যাসেটে রেকর্ড করে আনছিলাম। যারা শুনতে চান তাদের জন্যঃ

http://www.youtube.com/watch?v=7oDuGN6K3VQ

২৭

মীর's picture


এই পোস্টের আইডিয়াটাই ইউনিক। যে কারণে যা আসছে সবই অদ্ভুত। লাস্টে লিংকিং করে এক পোস্টে সব নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা যায় কি না.. (প্রস্তাবনা)

২৮

তানবীরা's picture


তোমার প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন করার মতো টেকি বুদ্ধি আমার নাই। তুমি চাইলে করে দিতে পারো, আমার আপত্তি নাই Laughing out loud

২৯

তানবীরা's picture


রন্টি, আসিফ, সুমন ভাই বৃত্তবন্দী সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ সহৃদয় মন্তব্যের জন্য।

৩০

জ্যোতি's picture


পোষ্ট এবং মন্তব্য পড়ে অনেক কিছু মনে পড়লো, আসলে যেনো চোখের সামন দেখতেই পাচ্ছি সব। তাতাপুর এই সিরিজটা দুর্দান্ত।এত কিছু মনে রাখেন কেমনে? Shock

৩১

তানবীরা's picture


যেগুলা মনে রাখার দরকার সেগুলাতো ভুলে যাই আর যেগুলো মনে না থাকলে ভালো থাকতাম সেগুলো অর্হনিশি মনে পরে Sad

৩২

শাওন৩৫০৪'s picture


৯০'র দশকের কথা তোমার মনে আছে?

৩৩

মুকুল's picture


যায় দিন ভালো...

৩৪

রশীদা আফরোজ's picture


সবার স্মৃতিশক্তি দেখে আমি তাজ্জব বনে গেলাম। বাহ বাহ!

৩৫

তানবীরা's picture


মুকুল আর রাশীদাকে তাজ্জব বানাতে পেরে আনন্দিত

৩৬

নড়বড়ে's picture


দুর্দান্ত !! এতদিনে ভালভাবে কমন পড়ল।

আমি মতিঝিলের দিকে বড় হইছি, ধানমন্ডি নিউমার্কেটের দিকটা অনেকটা অচেনা ছিল। মাঝে মাঝে আব্বার সাথে নিউমার্কেট যাইতে খুব ভাল লাগত, নিউ মার্কেটের ১নং গেটের সামনে থেকে টিনটিন কিনতাম ৬৫-৭০ টাকা করে। তখন পর্যন্ত ওইটাই সবচেয়ে দামি বই। আর রিকশা করে ঢাকা ভার্সিটির ভিতর দিয়ে যাইতে ভাল লাগত খুব।

আহা ৯৭ এর আইসিসি! সেমিতে জিতার পর রং খাইতে খাইতে স্কুলে গেছি, আহা! রেডিওতে সেমির খেলাটা শুনতেছিলাম, বাংলাদেশ প্রায় জিতে জিতে অবস্থা, এর মধ্যে কোরান পড়াইতে হুজুর হাজির। খেলা তো আর মিস দেয়া যায় না, তাই ড্রয়িং রুমে রেডিও লাগায়ে খেলা ছাড়লাম, আর পাশেই আমি আর ভাইয়া কোরান পড়তে লাগলাম। একটু পর হুজুর নিজেই হাসতে হাসতে বললেন, ঠিকাছে আজকে বাদ দাও Smile আর ৯৯ তে যেদিন পাকিস্তানরে হারাইল, তার পরদিন স্কুল হাফ করে ছুটি দিয়ে দিছিল। বিশ্বাস করবেন না, পাকিস্তানের সাথে সেই ম্যাচ পুরাটা রেডিওতে শুনছিলাম, কারণ স্কুল থেকে বাসায় এসে দেখি ওইদিন সকালেই টিভি নষ্ট হয়ে গেছে। আর ফুটবল নিয়েও মজা ছিল, যেদিন বিকালে আবাহনী মোহামেডান খেলা থাকত সেদিন অ্যাপ্লিকেশন করলে এক পিরিয়ড আগে ছুটি দিত। মনেই নাই শেষ কবে ছাদে ছাদে মোহামেডান কিংবা আবাহনীর পতাকা দেখছি।

আর ৯৬ এর অসহযোগ আন্দোলনের কথা মনে আছে? টানা এক-দেড় মাস স্কুল নাই, শেষদিকে নিজেরাই বিরক্ত হয়ে গেছিলাম। আমি আর আম্মা মিলে জনতার মঞ্চ দেখতে গেছিলাম, সেইরকম জমজমাট অবস্থা! গান কবিতা আবৃত্তি, রাজনীতি কই? তারপরে ছিল ৯৮এর বন্যা, বাসাবোতে এর বন্ধুর বাসার উঠানে নৌকা বান্ধা হইছিল, আমরা দেখতে গেছিলাম। তখনও স্কুল বন্ধ ছিল অনেকদিন।

৯০-৯১ এর শুরুর দিকে খালি কারফিউ থাকত। আর কারফিউ দিলেই ওর মধ্যে আমাদের এক অনাত্মীয় মামা এসে হাজির হইত কেমনে জানি, আব্বার সাথে আড্ডা দিত, কারণ আর কোন কাজ নাই। এইজন্য আমরা ডাকতাম কারফিউ মামা। কোথায় হারিয়ে গেছে সেইসব লোকজন!

ডিশ আসার পর সবচেয়ে বড় অবদান ছিল মনে হয় রেসলিং। খাইয়া-না খাইয়া রেসলিং দেখতাম। ঢাকার স্কুল কলেজে আলোচনার একটা বড় অংশ থাকত রেস্লিং নিয়া। আমার ফেভারিট ছিল স্টিভ অস্টিন Laughing out loud

৯০ এর মাঝামাঝি চিপা জিনসের একটা চল শুরু হয়, চিপা মানে সেইরকম চিপা। আর্কের হাসান এইরকম চিপা জিনস পরে গান গাইত, চিপা জিনসের চোটে ঠিকমত হাঁটতে পারত বলে মনে হয় না Laughing out loud

যাক, একটু বেশি নস্টালজিক হয়ে যাওয়ায় অনেক কথা লিখে ফেললাম, মাফ করে দিয়েন তানবীরাপু! Smile

৩৭

তানবীরা's picture


ভাগ্যিস নড়বড়ে একটু বেশি নষ্টালজিক হইলা নইলে এমন একটা চমৎকার কমেন্ট সমস্ত পাঠকরা মিস করতো। আর আমিও যা যা ভুলে গেছিলাম সেগুলো আবার মনে করে নিলাম Big smile

ভালো থাকা হোক

৩৮

নাজনীন খলিল's picture


কি করে যে এমন অবিকল মনে রেখেছো সব!
তোমার এই চমৎকার সিরিজটা পুরোনো অনেক কথা মন করিয়ে দেয়।
হ্যাটস অফ।(পুরো সিরিজের জন্যেই)।

৩৯

তানবীরা's picture


আপু, আপনি এমনি করে বললে সত্যিই লজ্জা পাই।

ভালো থাকবেন আপনি। Big smile

৪০

আশফাকুর র's picture


ভাল লাগল। আলিফ লায়লার সিন্দাবাদের একটা ডায়ালোগ ছিল সুলেমানি তরবারী উঁচিয়ে "হে আল্লাহ রক্ষা কর।" তখন বৃহস্পতি বার রাতে দেখাত। আমাকে আবার ঐ সময় সিলেটে প্রাইমারী স্কলারশিপের জন্য স্যারের কাছে পরতে হত রাতে। আব্বু আমাকে নিয়ে আসত। সিলেটে পায়রায় ভিতর দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি আমি আর পিছে আব্বুর নিরন্তর ডেকে যাওয়া আমাকে।
আমি আর আব্বু এক্স ফাইল দেখতাম। আব্বু তো বেশী হলে ১০ -১৫ মিনিট তারপর ঘুম..।আমি দেখতাম। এখন বুঝিনা কেন? কিন্তু এক্স ফাইল আর আলিফ লায়লা যে রাতে দেখতাম সে রাতে আমি আর একলা ঘুমাতে পারতাম না। চুপ চাপ গিয়ে আম্মুর পাশে শুয়ে থাকতাম। Smile
তবে পরে একুশেতে দুপুরে আমাজান নামে একটা সিরিয়াল দেখাত। আমি চুপিচুপি ঐটা দেখতাম। তবে আমার ছোট বোন মারাত্মক পেইন দিত আম্মুর কাছে নালিশ দিত "আম্মু ভাইয়ু নেনতা নেনতা মেয়ে দেকে"
বড় হয়া খুব খারাপ। লেখাটা প্রিয়তে গেল

৪১

তানবীরা's picture


ইউপ, বড়ো হওয়া খুবই খারাপ Sad

৪২

মেসবাহ য়াযাদ's picture


বাব্বাহ ! পুরো বাংলাদেশের ইতিহাস ! বাংলাদেশের কৃষ্টি-সংস্কৃতি-খানা-দানা-ফ্যাশন-গানা-বাজানা-সিনেমা.... কী নেই এ লেখায় ? আপনে পারেনও...। স্মৃতির জাবর কাটতে ভালই লাগে...। স্মৃতি জাগানিয়া লেখা... থ্যাংকু

৪৩

তানবীরা's picture


Glasses ধন্যবাদ

৪৪

মমিনুল ইসলাম লিটন's picture


কিছু বলতে চেয়েছিলাম । কিন্তু সবই েয বলা হয়ে গেছে।

৪৫

তানবীরা's picture


Sad(

৪৬

থিও's picture


৩ প্যারায় যেয়ে পাপ শেষ। খুক খুক

৪৭

থিও's picture


পাম*

৪৮

তানবীরা's picture


আপ্নে বসেন আমি বেলুন ফুলানোর ব্লাডারটা নিয়ে আসি Stare

৪৯

শওকত মাসুম's picture


আহা, কত কিছু মনে করাইয়া দিলেন।

৫০

তানবীরা's picture


হুমম, এখন আমারে কি খাওয়াবেন বলেন।

৫১

ঈশান মাহমুদ's picture


তানবীরা,আমার বড় লেখা পড়তে ক্লান্তি লাগে।তাই...পর পর দু'বার ব্যর্থ হয়ে আজ ধৈর্য ধরে পুরোটা শেষ করলাম...।পড়ে মনে হলো ধৈর্য ধরাটা ব্যর্থ হয়নি।প্রথমেই আপনার অসাধারণ স্মৃতিশক্তির প্রশংসা করছি...।হাঁ নব্বই'র দশক ছিল আমাদের জাতীয় জীবনের ব্যপক পরিবর্তনের সন্ধিক্ষণ।এ পরিবর্তন উত্তরণের না অধ:পতনের,ইতিবাচক না নেতিবাচক,সেটা তর্ক সাপেক্ষ,তবে পরিবর্তনের যেসব অনুষঙ্গ আপনার লেখায় খুঁজে পেলাম তাতে আবার নতুন করে স্মৃতিতাড়িত হলাম।স্মৃতি জাগানিয়া অত্যন্ত শ্রমসাধ্য এই লেখাটির জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

৫২

তানবীরা's picture


কেনো পান্থ ক্ষান্ত হও, হেরি দীর্ঘ পথ .........

আমিও জানি বড় ব্লগ অনেকেই পড়তে চান না। কিন্তু তারপরো এ লেখাটায় আমি অনেক কিছু বাদ দিয়েছি। একটি দশক ধরে রাখাতো আর সোজা কথা না। তাছাড়া আমি এসময়টায় সজ্ঞানে বড় হয়েছি।

আবার এধরনের লেখা যারা ভালোবাসেন তাদের অনেকেই কিন্তু লেখাটার প্রশংসা করেছেন। ভালো থাকবেন। Big smile

৫৩

রাসেল আশরাফ's picture


তাতপু@ বিসিএসের লিখিত পরীক্ষায় যদি রচনা আসে

৭০-৯০ দশকের ঢাকা

তাদের কিন্তু খুব কাজে দিবে।

এবার অনেক কিছু কমন পাইছি।

৫৪

তানবীরা's picture


কারো কাজে লাগলে ধন্য হবো Big smile

৫৫

সাহাদাত উদরাজী's picture


চুপচাপ পড়ে গেলাম। বলার কিছু নাই।

৫৬

তানবীরা's picture


ক্যান? Cool

৫৭

নাজমুল হুদা's picture


বাব্বা, এ যুগের ছেলেমেয়েরা এত্ত শার্প ! তারা এত কিছু জানে ! এদের স্মৃতিশক্তি এত প্রখর ! আমার তো ভিরমী খাবার মত অবস্থা । এদের সাথে তাল মিলিয়ে চলা বোধহয় সম্ভব নয় আমার মত বৃদ্ধের । তবু আছি এবং থাকবো । খুবই ভাল লাগলো । সবাইকে উৎসাহ দিতে পারব আর কিছু না পারলেও । সকলে তথ্য আদান-প্রদান করে যে তথ্য ভান্ডার গড়ে তুলছে, তা নিঃসন্দেহে অমূল্য ! অভিনন্দন সকলকে ।

৫৮

তানবীরা's picture


হাহাহাহাহা, ধন্যবাদ ।

৫৯

মেহরাব শাহরিয়ার's picture


সেইরকম স্মৃতি-জাগানিয়া লেখা । এই প্রথম আমার বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষা দিতে ইচ্ছে করছে

৬০

রাজসোহান's picture


সেইরকম

মন্তব্য করুন

(আপনার প্রদান কৃত তথ্য কখনোই প্রকাশ করা হবেনা অথবা অন্য কোন মাধ্যমে শেয়ার করা হবেনা।)
ইমোটিকন
:):D:bigsmile:;):p:O:|:(:~:((8):steve:J):glasses::party::love:
  • Web page addresses and e-mail addresses turn into links automatically.
  • Allowed HTML tags: <a> <em> <strong> <cite> <code> <ul> <ol> <li> <dl> <dt> <dd> <img> <b> <u> <i> <br /> <p> <blockquote>
  • Lines and paragraphs break automatically.
  • Textual smileys will be replaced with graphical ones.

পোস্ট সাজাতে বাড়তি সুবিধাদি - ফর্মেটিং অপশন।

CAPTCHA
This question is for testing whether you are a human visitor and to prevent automated spam submissions.

বন্ধুর কথা

তানবীরা's picture

নিজের সম্পর্কে

It is not the cloth I’m wearing …………it is the style I’m carrying

http://ratjagapakhi.blogspot.com/