ইউজার লগইন

ননসেন্স'এর ব্লগ

রোবট নাকি মানুষ... কি আমি?

আমি হয়তো মানুষ নই মানুষগুলো অন্যরকম!!!!
মানুষগুলোর আবেগ থাকে। তারা কষ্টপেলে কাঁদে, আনন্দে হাসে। শেষ কবে প্রাণ খুলে হেসেছি মনে নেই। চিৎকার করে কেঁদেছি সেটাও মনে নেই। আবেগ আমাকে খুব বেশি স্পর্শ করেনা, অনেকটা রোবোটিক।
আর যদি করে তবে লুকিয়ে চলি আমার আব্বার মতো... আমার আব্বা ছিলেন আবেগ লুকানোতে এক্সপার্ট... অথবা আমি ছিলাম বুদ্ধিহীন যে বুঝতেই পারতো না...

আমার এখনো মনে আছে, এইতো সেদিন যখন আব্বা অসুস্থ। তখন আমি চাকরী করি। প্রতিমাসে বাসায় কিছু টাকা পাঠাতাম। আর যখন ফোন করে বলতাম টাকা পাঠানোর কথা তখন তিনি খুবই চিন্তিত হয়ে পরতেন। বলতেন কতো আর কামাই করো? বাসায় কি টাকার দরকার? তোমার কষ্ট হবেনা তো?

বাবাকে নিয়ে

বাবা দিবসে বাবাকে শুভেচ্ছা জানানোর মতো অতটা আবেগী আমি কোনো কালেই ছিলাম না। বাবার প্রতি কতটা ভালোবাসা কাজ করতো সেটাও নির্ণয় করতে পারিনি কখনো। অন্যসবার যেমন বাবা থাকে তেমনই আমারও ছিলো। আমার বাবার প্রতি যতটা না ভালোবাসা কাজ করতো তার চেয়েও অনেক বেশি কাজ করতো শ্রদ্ধা। বাবাকে ভয় পেতাম প্রচন্ড। কক্ষনো তাঁর চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলার সাহস পাইনি, স্পর্ধাও দেখাইনি। সে যা ই বলতো তাই ছিলো আইন আমাদের ভাই-বোনদের কাছে। সবারই অনেক মজার স্মৃতি থাকে তাদের বাবাকে নিয়ে। যেমনঃ বাবার কাঁধে চড়ে মেলায় যাওয়া, বাবার আঙ্গুল ধরে রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো ইত্যাদি। আমার এসব কিছুই নেই। হয়তোবা এমন স্মৃতি আমারো ছিলো যেগুলো মনেনেই। ওই যে বললাম, কতটা ভালোবাসা যে ছিলো বাবার প্রতি সেটা কখনো নির্ণয় করতে পারিনি। আর বাবারই বা কতটা ভালোবাসা ছিলো সেটাও বুঝিনি কখনো। তবে কিছু স্মৃতি এখনো জ্বলজ্বল করে চোখের সামনে। যে স্মৃতিগুলো শুধুই বা

বাবা

নিজের মতো, নিজের ইচ্ছায় বাঁচতে শিখেছি সেই ২০০৭ থেকে। নিজের উপার্জিত অর্থে নিজে চলতাম আর পড়ালেখা করতাম। মনে আছে তিনটা টিউশনি করতাম। মাস শেষে বেশ ভালোই কামাতাম। ভালোই চলে যেতো।

ছোটোবেলা থেকেই ঠান্ডায় কাবু। টনসিল, সাইনাস, মাইগ্রেন সবই ছিলো। এখনো আছে। কান ঢেকে বেড় না হলে ভয়াবহ সমস্যা হতো। কিন্তু স্বভাবসুলভ ঘাউড়ামি করে কখনই মাফলার ব্যাবহার করতাম না। মাঝেমাঝে কানটুপি ব্যাবহার করতাম।

আমাদের পরিবারের একজন মানুষ ছিলেন। যার সাথে আমার দূরত্বই বোধহয় সবচেয়ে বেশি ছিলো। কক্ষনো ফোনে বেশি কথা হোতো না। কল করলেই বলতেন, "নে তোর মা'য়ের সাথে কথা বল।"
জানিনা অত্যাধিক স্নেহ করতেন বলেই হয়তো সচরাচর বেশি কথা বলতেন না।

তবে শীত এলেই প্রতি সপ্তাহে অন্তত তিনবার কল করতেন। প্রতিবারই একটাই কথা, "মনা, কান গলা পেঁচিয়ে বেড় হইস তো?" কত যে মিথ্যা বলেছি, "হুম, বেড়হই"।
কত যে বিরক্ত হয়েছি!!!

কিছু সুপ্ত ভালোবাসা আর নির্লিপ্ত প্রকৃতি

সুপ্ত সামাজিকতার এই যুগে ভুল করে জন্ম নেয়া একটি ছেলে। অসামাজিক হলেও সামাজিক সাইটে তার একটি একাউন্ট আছে। সকলের অলক্ষ্যে থেকে সবার লেখা পড়ে বেড়ায়। ভালো লাগলে লাইক দিয়ে সহমত জানায়। এছাড়া ওই নিভৃতচারীই থেকে যায় সকলের অগোচরে।
তার ইনবক্সে কতশত জিজ্ঞাসু মানুষের ভীড়। সবাই পরিচিত হতে চায়। কিন্তু সে ভেবে পায় না, কোথা থেকে শুরুকরে কি বলবে। সবাই তার এই চুপচাপ থাকাকে তার দেমাগ মনে করে। বিরক্ত হয়ে সাথ ছেড়ে যায়।

কিন্তু এই ছেলেটিই এক কথায় দুই কথায় পরিচিত হয় প্রকৃতির সাথে। ওদের দুজনের খুব জমে। কিসের একটা অজানা টানে যে এরা ভালো সংগীতে পরিনত হয় তা কেউ জানেনা। প্রকৃতির নীরবতা সুপ্তকে বিমুগ্ধ করে। প্রবল বেগে কাছে টানে। এই টানকেই হয়তো সবাই ভালোবাসা বলে।

সাধারনের কাছে সুপ্ত একজন আহাম্মকই রয়ে যায়। যে তার আবেগ প্রকাশে ব্যার্থ। কিন্তু সুপ্ত তার হৃদয়ের কোথায় যেনো একটি দুর্বলতা অনুভব করে প্রকৃতির জন্য। হয়তো প্রকৃতি সেটা বোঝে, হয়তোবা বোঝেনা। তাতে কি ই বা যায় আসে?

২০১৪

২০১৩ চলে যাচ্ছে জীবন থেকে। প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির হিসাব কষবো না। আমি তো আর একাউন্টেন্ট নই, যে লেজার মেলাবো! তবুও কিছু কথা না বললেই নয়।

শুরু করেছিলাম এক নতুন উদ্দীপনা নিয়ে। চেয়েছিলাম নিজেকে প্রমান করতে। হয়তো পেরেছি হয়তোবা পারিনি। সেসব নিয়ে ভাবা এখন অরণ্যে রোদন বই কিছু নয়। আমার তো আর টাইম ম্যাশিন নেই, যে ফিরে গিয়ে পূর্ণতা নিয়ে আসবো!!!!

একজনকে ধন্যবাদ জীবনের সবথেকে দুঃসময়ে পাশে থাকার জন্য। কিন্তু মানুষ স্বার্থপর প্রাণী তাই হয়তো সুখের অসুখে ভোগে!!!

অনেকগুলা আপনজন পেয়েছি। যারা হাজারো পাগলামী সহ্য করে পাশে বসে থাকে। কষ্ট পেতে দেয় না। হয়তো ভালোবাসে বলেই শত -সহস্র স্বেচ্ছাচারীতা সহ্য করে। এদেরকে ধন্যবাদ দিয়ে ছোটো করার সামর্থ্য আমার নেই।

মিস করি খুবই কাছের একজন মানুষকে যে সর্বদা থাকতো ছায়া হয়ে আমার পাশে। বেদনার তুমুল আঘাত যে কক্ষনো আসতে দেয়নি কাছে। হয়তো সে আজ অনেক দূরে। তার সাথে আমার দিন রাতের সময়ের ব্যাবধান। তার জন্যই আসলে বন্ধু ছাড়া লাইফ ইম্পসিবল কথাটাকে সত্য মনেহয়।

সাপ্তাহিক হতাশা

শ্লার লাইফ! শ্লার চাকরী!!! ইটস সাক্স!!!

সারাটা সপ্তাহ অপেক্ষা করি এই একটা শুক্রবারের জন্য। সারাটা সপ্তাহ এই ফাত্রা রাজনীতির ফাপরে পইরা জীবন হাতে নিয়া অফিস করলাম। শুক্রবারে একজনের সাথে দেখা হবে এই আশায়।

ছয়টা দিন গোলাপি বেগমের পেইন সহ্য করলাম। আর যেই না তার পেইন শেষ হইলো অমনি শুরু হইলো তথাকথিত কর্পোরেট এর পেইন।

হঠাৎ করে তাদের শুক্রবারে খোলা রাখার সাধ জাগলো!!! যদি শুক্রবারে খোলাই রাখবি রে হাউয়ার পুত, তাইলে গত ছয়দিন এত্তো পেইন দিয়া অফিস করাইলি ক্যারে???

শালা ফাউলের গুষ্টি, গাছেরটাও খাইবো আবার তলারটাও কুড়াইবো। আর তাদের এই চিপায় পইরা আমাগো জীবন নষ্ট।

ভালোবাসার মানুষটাকে সারা সপ্তাহ জুড়ে আশায় রেখেছিলাম যে শুক্রবারে তোমায় নিয়ে ঘুরতে যাবো। আজ এটা শোনার পরে সে বললো, থাক ব্যাপার না। সবসময় যে প্ল্যান সাক্সেসফুল হবে তা তো নয়!!!!

শুনে ভালো লাগলেও, ঠিকই বুঝতে পেরেছি যে সে কষ্ট পেয়েছে। এই কষ্ট অপ্রাপ্তির কষ্ট। আর তার অপ্রাপ্তি আমায় অসহায় করে দেয়।

গুজব রিলোডেড

জব একটি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ শব্দ। ইহার আগে পিছে কিছু লাগাইলেই ভয়াবহ আকার ধারন করে।

যেমন ধরেন জব এর আগে যদি ব্লো লাগায়া দেই তাইলে পুরাই ১৮+ ব্যাপার ঘইটা যাইবেক।

আবার যদি আগে আ লাগায় দেই তাইলে সবাই অবাক হইযাবে।

আবার যদি গু আজমের গু কে আগে লাগায়া দেই তাইলে অবস্থা তো আরো ভয়াবহ! এতই ভয়াবহ যে এই গুজব এ গজব আইসা পরতারে। ওইত্তেরি, গ লাগাইলেও দেখি ঘটনা ঘইট্যা যায়!!!! Tongue

এইবার ভিন্ন কথায় আসি। মাঠেঘাটে বিভিন্ন সময় শিয়াল, কুত্তায় হাইগা দেয়। ওই গু মাঠের মাঝে একলা পইরা থাকে। কিছু অতি উতসাহি জব লেস মানুষ বেহুদা মাঠেঘাটে ঘুরাঘুরির সময় ওই গু কে পায়ে করে লোকালয়ে নিয়ে আসে। আর লোকালয়ে গু ছড়ানোকে নিজের জব মনে করে। আর ঠিক তখনই গুজবের সৃষ্টি হয়।

যাউকগা অতশত কতা কইয়া লাভ নাই। শুনলাম গুজব শোনা যাইতাছে। ব্যাচেলর গো নাকি ঢাকায় বাড়িভাড়া নিয়ে থাকতে দিবে না? এইডা নিয়ে নাকি আবার সবাই টেনশন ও করিচ্ছে? ক্যামনে কি রে মমিনুল হক? তুই বিয়া করস নাই বইলা কি ঢাহায় থাকতি পারবি না?

প্রথম প্রেমে মরে যাওয়ার গান - চিরকুট

গানটা এতই ভালো লেগেছে যে লিরিক্সটা শুনে শুনে লিখেই ফেললাম Smile

গানঃ প্রথম প্রেমে মরে যাওয়ার গান
কথাঃ সুমি
ব্যান্ডঃ চিরকুট

একটু তোমায় নিলাম আমি
এক চিমটি মেঘে থামি
জলের ছিটেয় নিলেম পাগলামি
একটু তুমি বুকের ভিতর
বেপরোয়া শ্রাবণ ভাদর
ভাসাও ডোবাও তোমার-ই আমি।

মরে যাবো রে মরে যাবো,
কি অসহায় আমি, একবার ভাবো।

তোমাকে ছেড়ে যাবো কোথায়?
তোমাকে ছেড়ে কি বাঁচা যায় ?
মেঘের-ই ওই নীলে তুমি জীবন দিলে,
এ বড় সুন্দর জ্বালায় আমায়
মেঘের-ই ওই নীলে তুমি জীবন দিলে,
এ বড় নির্মম পোড়ায় আমায়!

একটু রাত ডুবে আসে
একটু আলো নীভে আসে
তুমি দূরে একা লাগে
মধুর ওই চাঁদটাকে
অ্যালুমিনিয়াম লাগে
হাঁটি আমি চাঁদ ও হাঁটে।

মরে যাবো রে মরে যাবো,
কি অসহায় আমি, একবার ভাবো।

ভালো লাগে না, লাগে না রে
বাঁচাবে আজ বলো কে আমারে?
বুঝিনা, জানিনা মেনেও মানিনা,
সে ছাড়া নেই আমি ঘোর আঁধারে,
এপারে ওপারে খুঁজি যে তাহারে
সে ছাড়া নেই আমি, চাই তাহারে।

একটু তোমায় নিলাম আমি
এক চিমটি মেঘে থামি
জলের ছিটেয় নিলেম পাগলামি
একটু তুমি বুকের ভিতর
বেপরোয়া শ্রাবণ ভাদর
ভাসাও ডোবাও তোমার-ই আমি।

অসীম প্রতিক্ষা

দুই আংগুলের ফাঁকের ধুম্রশলাকাটি অবিরাম জ্বলছে। ধোঁয়াটে পরিবেশ। ছেলেটি একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ভেজা রাস্তায়।

রাস্তাটি সচরাচর ধুলোমাখা থাকে। তবে আজ আকাশের মন খারাপ। তাই ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। আর সেই কয়েক ফোটা জলে ধুলোমাখা পথঘাট কর্দমাক্ত।

গন্তব্যের দিকে ছুটে চলা প্রতিটি দ্রুতগতির গাড়ি রাস্তার কাদাজলে মাখামাখি। সাদা গাড়ির গায়ে কাদার মেটে রং সাথে হ্যালোজেন আলো এক মুগ্ধকর পরিবেশ।

ঘরের বাইরে মনোমুগ্ধকর পরিবেশ আর ঘরের ভেতরে ধোঁয়াটে আবেশ। সব মিলিয়ে একটি অতিসাধারণ রাত একজন নিভৃতচারীর কাছে। তার কাছে সকল রাতই অতিসাধারণ। ছেলেটির ধারনা তার রাতের দরকার নাই, কিন্তু রাতের তাকে প্রয়োজন। রাত তার কাছে শুধুই কিছু সময়ের ব্যাপ্তি, কিন্তু অনেকের কাছেই হয়তো নতুন কিছুর শুরু।

জীবন ও জন্ম

শ্রাবণ, একটা আধপাগল ছেলে। কখন কি করে তার কোনো ঠিক নাই। ইচ্ছে হলে বন্ধুবান্ধব নিয়ে গভীর রাতে চলেযায় রেস্টুরেন্টে খেতে। ইচ্ছে হলে ঝুম বৃষ্টিতে সুটেড বুটেড অবস্থায় ভিজতে নেমে যায়। ইচ্ছে হলে হাটে, শুধুই হাটে।

তার বন্ধুদের মতো, তারও একজন প্রেমিকা ছিলো, শ্রেয়া। তাদের প্রেম ছিলো সবার কাছে উদাহারন। সবাই হিংসা করতো তাদের ভালোবাসার সুখ দেখে।

একদিন শ্রাবণের কাঁধে মাথা রেখে শ্রেয়া বলেছিলো। বিশ্বাস করো শ্রাবণ, এই পৃথিবীতে আমার জন্ম শুধুই তোমার জন্য। হয়তো তোমার হবো বলেই আমার এ ধরনীতে আসা।

আজ শ্রেয়া, শ্রাবণের থেকে অনেক দূরে। শ্রাবণ যখন ঢাকায় প্রতিনিয়ত বাস্তবতার সাথে ঠোকর খাচ্ছে, তখন শ্রেয়া নাটোরে তার সুখের সংসারে আলো ছড়াচ্ছে। আজ সে আর শ্রাবণের প্রেমিকা নয়, অন্যকারো ঘরণী। সোজাকথায় পরস্ত্রী।

ইদানিং শ্রেয়া গল্পে গল্পে তার বান্ধবীদের বলে, জানিস আমার কেনো যেনো মনেহয় তোদের ভাইয়ার জন্যই আমার এই জন্ম!!!! ও আমাকে এত্তো ভালোবাসে। ওর ভালোবাসায় আজ আমি সম্পূর্ণ। আমার জীবনটা আজ সার্থক।

এসব শুনে শ্রাবণের খুব সাধ জাগে, ইশ যদি একটি বার জিজ্ঞাসা করতে পারতাম।

একটি উপচানো এসট্রে আর দুটি নির্ঘুম চোখ

গুমোট আবহাওয়া। কাল অফিস নেই। সবাই যার যার মতো উল্লাসে ব্যাস্ত। সুমিত বসে আছে সেই পুবের জানালাটি ধরে। ঘরের আলো নেভানো, তবে কম্পিউটার অন।

কম্পিউটারে অনবরত বেজে চলছে সেই গানটি, যে গানে সুমিতের প্রতিটি অলস দিনের সৃষ্টি হয়।
"সাচ এ লোনলি ডে,
এন্ড ইটস মাইন,
দ্যা লোনলিয়েস্ট ডে ইন মাই লাইফ।"

সুমিত আপন মনে একের পর এক সিগারেট ধরাচ্ছে আর মুগ্ধ হয়ে শুনে যাচ্ছে গানটি। গানটির আসলেই একটা অনন্য মাদকতা আছে, যা শ্রোতাকে ভাবনার জগতে নিয়ে যেতে পারে। এই গানের সাথে সুমিতের এমন অন্তরঙ্গ সম্পর্ক প্রায় বছর খানিকের।

সুমিত হঠাৎ করে কম্পিউটারের সামনে এসে বসলো। বসেই চালিয়ে দিলো,
"আই হ্যাভ এ প্রবলেম,
দ্যাট আই কেননট এক্সপ্লেইন......"

আর এই সমস্যার সাথেই সুমিতের দৈনন্দিন পথচলা। রোবটিক জীবন জাপন চলতে থাকে কোনো এক অজানাকে উদ্দেশ্য করে।

হয়তো কোনো এক শুভ্র সকালে কোনো এক অপরিচিতা সামনে এসে দাঁড়াবে।

নষ্ট জীবন

ধীরেধীরে রাত গভীর হয়,
সকলই ঘুমিয়ে যায়; শুধু জেগে রয়-
ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা কিছু ল্যাম্পপোস্ট
আর রাস্তার বেওয়ারিশ কুকুরগুলো,
তাদের সাথে জেগে থাকে
দুটি নির্ঘুম চোখ আর একরাশ কষ্ট।

কষ্টেরা দিনে ঘুমায় আর রাতে জেগে ওঠে,
হাতরে বেড়ায়, খোঁজে সুখের স্মৃতি;
ক্লান্ত হয়, অস্থির হয় তবুও খুঁজেফেরে
কোথায় কোন যায়গায় তার সৃষ্টি?

আর এভাবেই জীবন অতিবাহিত হয়,
কেটে যায় রাতের পর রাত,সপ্তাহ, মাস,বছর।
এভাবেই বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে যায় স্মৃতি,
স্মৃতিহীন জীবন থেমে রয়, তার নাম নষ্ট।

ধন্যবাদ

ধন্যবাদ আম্মাজান অনেক ঝামেলার মাঝেও আজকে শুধুমাত্র তোমার সৌজন্যে একটা ভালো সংবাদ পেলাম। তোমার জন্য একরাশ শুভকামনার সাথে কিছু বস্তুগত উপহারের ব্যাবস্থাও করবো।

তবে হ্যাঁ, তোমার পিতা মানে আমার শ্রদ্ধেয় দুলাভাইয়ের কাছে একটা ব্যাপক খানা-দানা পাওনা হয়ে গেলো। আমি জানি তিনি আমার এই স্ট্যাটাস দেখবেন আর মুখ চেপে হাসবেন। কারণ খানা-দানা তার অত্যন্ত পছন্দের বিষয়। শুধু উপলক্ষ দরকার। এইবার উপলক্ষের ব্যাবস্থা তুমি করছো আর খাওয়ার ব্যাপারটা আমি দেখুম। আহ ভাবতেই যেন কেমন লাগছে!

সবাই তোমার ফলাফলে অনেক খুশি। তাদের খুশিটা অনেকটা লাফালাফির পর্যায়ে চলে গেছে। বড়দের এইরকম শিশুসুলভ আচরন দেখতে ভালোই লাগে। অনেকটা বুড়ো বাবু স্টাইল।

তবে আমার উচ্ছাসটা তোমায় নিয়ে ভিন্ন ধরনের। আজ আমি নিজেই দেখে দিলাম তোমার খুব কাছের বান্ধবীর ফলাফল। এবং তারপর যা দেখলাম তাতে আমি মুগ্ধ। নিজের ভালো ফলাফলে তোমার যে আনন্দ তা অনেকটাই ম্লান হয়ে গেলো কাছের বান্ধবীর খারাপ ফলাফলে। আর তখনই বুঝলাম শুধুমাত্র ভালো ফলাফল নয় তুমি ধীরে ধীরে ভালো মানুষ হিসেবেও গড়ে উঠছো।

ফাদারহুড

মাসুম, মধ্যবয়সী একজন মানুষ। বিয়ে করেছিলেন মাস ছয়েক। বিয়ের আগের অগোছালো একজন মানুষ। জীবনজাপনে কোনো জীবনবোধ ছিলো না। প্রতিটি রাতের শুরু হতো নেশা দিয়ে। মদ, গাজা আর সিগারেটে কেটে যেতো প্রতিটি একাকিত্বের রাত।

একটি কাঠের চেয়ার; ঠায় দাড়িয়ে আছে অপরিষ্কার বারান্দায়। ধুলো জমে যার রং ই পাল্টে গিয়েছে। মাসুম ইফতার শেষে বারান্দায় দাড়িয়ে বিড়ি ফুকছে। কিছুটা অন্যমনস্ক ভংগিতে তাকিয়ে আছে ধুলোপরা ওই চেয়ারের দিকে। হঠাৎ ক্রিংক্রিং শব্দে মোবাইল বেজে উঠলো। বউ কল দিয়েছে বোধহয়!!!

পারেও মেয়েটা। অসীম ধৈর্য নিয়ে সর্বদা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিয়ের পরে এই মেয়েটা জীবনবোধই পাল্টিয়ে দিয়েছে।আজ বিকালে তো তার ডাক্তারের কাছে যাবার কথা। এই কলটা কি সেই আপডেট জানাবার জন্য নাকি গতানুগতিক? এই ভাবতে ভাবতে কলটি রিসিভ করলো মাসুম।

অস্ফুট স্বরে বললোঃ হ্যালো।

ওপাশ থেকে হাসির রিনিরিন শব্দে বললোঃ আসবা কবে?

কেন?

নাহ, এমনি। তোমার সাথে কথা আছে।

বলো।

না, মানে ডাক্তার বলছে সুখবর আছে।

প্রচন্ড মুডি মানুষটি হো হো করে হেসে বললোঃ তাই তো বলি বউ এত্তো লজ্জা পায় কেন?

কেউনা

একটি ৩*৩ রুবিক্স কিউব। পুরোটাই অবিন্যস্ত। যদি সাজাতে পারো তবেই পেয়ে যাবে জন্মদিনের উপহার। প্রতিটি তলেই তোমাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বার্তা দেয়া।

একটি নীলাভ পাঞ্জাবি। এটাকে যেমন জিন্সের সাথে মানাবে, তেমনি মানাবে সাধারন পায়জামার সাথে। পরলে পরীর মতো লাগবে।

একগুচ্ছ লাল গোলাপ। যা সুন্দরের সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দেয়। হাতে নিয়ে তোমায় মনেহবে স্বর্গের অপ্সরী।

কুপার্সের ব্ল্যাকফরেস্ট কেক। স্বাদে সৌন্দর্যে অতুলনীয়। তাতে একটি মোমবাতি জ্বালানো থাকবে। এক ফুঁ তে নিভে যাবে , আর তখনই প্লাস্টিকের ছুরিটা তাকে এফোঁড় ওফোঁড় করে দেবে। একটুকরো মুখে তুলে খাইয়ে দেবে অতি আপন একজন কেউনা।

কেউনা রা সবসময়ই কেউনা হয়েই থাকে। তাদের স্বাবেক প্রেমিকারা তাদের বুকে মাথা রেখে বলে , যদি কক্ষনো চলে যাই তবে ভেবনা ভালোবাসিনি। আর তারা তা মেনে নেয়। বন্ধুরা অনেক চাহিদার সময়ে দেবার মতো সময় করে উঠতে পারে না। প্রচন্ড কষ্টের সময়ে অনিচ্ছাকৃত ভাবে অনুপস্থিত থাকে। ঠিক যেমন অনুপস্থিত থাকে প্রচন্ড ভালোবাসার প্রেমিকা। ঠিক যেমন অনিচ্ছাকৃত ভাবে ছেড়ে চলে যায়।