ইউজার লগইন

নাম নাই'এর ব্লগ

মন চলে আগে আগে, আমি পড়ে রই

দুনিয়ার মানুষের যেসব বিষয় নিয়ে বিরাট বিরাট আয়োজন, সেগুলো নিয়ে আমি কেন যেন কোনদিন আগ্রহ বোধ করিনাই তেমন একটা। কিন্তু ক্ষুদ্র, তুচ্ছ সব বিষয় নিয়ে ব্যাপক ভাবনা চিন্তা আর সময় খরচ করায় আমার কোন আলস্য নাই।

And reruns all become our history

বছরের প্রথম দিনে মনে হলো আমি অনেককাল কোন আনন্দ অনুভব করিনাই। জীবন খুব মেকানিকাল হয়ে গেছে, এটা করতে হবে, ওটা করতে হবে, করে ফেলার পর আবার কিছু একটা নতুন করতে হবে, এই চলছে। কোনকিছু নিয়ে আগের আমিটার মতোন বেপরোয়া রকম উত্তেজিত হয়ে উঠিনা, কোনকিছুর জন্য প্রবল আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা নাই, প্রিয় কিছু হারিয়ে ফেললেও মন একটুও টলছে না, কেমন একটা স্তব্ধতার মধ্যে জীবন চলছে, বিন্দুমাত্র তীব্রতার লেশ নাই। তবুও আমি আছি। আর এই থাকাটাকে কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছিনা। বোঝার জন্য খুব বেশি চেষ্টা করছি তাও বলা যায়না অবশ্য।

Then she gets you on her wavelength

গুগল কিপ ইদানিং হয়ে গেছে আমার আবোলতাবোল ভাবনার সিন্দুক। যখন যা মাথায় আসে তাই সাথে সাথে লিখে ফেলি। এমনভাবে অস্থির হয়ে যাই লেখার জন্য যেন লিখে ফেলার মধ্যেই আছে জগতের সমস্ত বিভ্রান্তির সমাপ্তি। এইযে ব্ল্যাক হোলের মতো সর্বগ্রাসী শূন্যতাটার সামনে দাঁড়িয়ে আছি, অক্ষরগুলো টাইপ করা শেষ হলেই যেন এখান থেকে উড়ে পালিয়ে যাওয়ার জন্য দুটো পাখা ম্যাজিকালি উদয় হবে আমার পিঠে। ওইসব হয়না, লেখা শেষ হলে আমি চুপচাপ সামনের অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে আরেকটা বিড়ি ধরাই।

বেশিদিন ডরম্যান্সি থাকে না। যতই শীতঘুম দেয়ার জন্য শরীর মন প্রস্তুত হয়ে যাক না কেন, জীবন তার বেয়োনেট নিয়ে হাজির হবে নানাবিধ প্যারা দেয়ার জন্য। মৃত্যু নিয়ে আগে যেরকম হাস্যকর মেলোড্রামাটিক অনুভূতি ছিল এখন বেশ একটা নির্লিপ্ততা কাজ করে, এক সময় এইসব অহেতুক সময়ক্ষেপন শেষ হবে ভাবতে ভালই লাগে।

কিছু শুনছিনা এখন

আসলে তো সবকিছুই শেষ হয়। সেটা কি আমি জানতাম না? জানি বলেই তো পৃথিবী এতো ক্লান্তিকর লাগে।

স্মৃতি হলো শীতকালীন বৈকাল হ্রদের মতোন। পর্যাপ্ত গরম কাপড় পরেটরে, গরম কফির ফ্লাস্ক নিয়ে একটা সুবিধামতোন জায়গা খুঁজে নিয়ে বসে ওর লক্ষ বছরের জমিয়ে রাখা গল্প শুনতে বেশ আরাম, কিন্তু তার বিভিন্ন কোণে কি আছে সেটা ভালোমতো দেখার জন্য পা বাড়ালেই পথ হারিয়ে অতল গহীনে ডুবে যাবার আশঙ্কা। ঠিক নানুবাড়ির বড় পুকুরটার শিকল দৈত্যের মতোন, এক টানে একেবারে ম্যারিয়ানা ট্রেঞ্চের তলদেশে। দম আটকে মরে যাওয়াটা ভয়ের না। তবে ফেরার পথ না পেয়ে অজানা জগতের সদস্য হয়ে যাওয়াটা ভয়ংকর। আর আমি তো খুব ভাল জানি সমস্ত অজানাকে কেমন ভয় আমার।

We're after the same rainbow's end

মাঝে মাঝে চারপাশটা কেমন অদ্ভুতুরে হয়ে যায়। ব‌্যাখ্যার অতীত কিছু ঘটনা একের পর এক ঘটতে থাকে, একটা আপাত নিস্তরঙ্গ জীবনকে একদম ভ্যাবাচ্যাকা ধরনের ওলটপালট করে দিয়ে।

বেশ কয়েকদিন ধরে আমি চেষ্টা করছিলাম অনেক পুরানো একটা আমি-র সাথে যোগাযোগ করতে। আমার গান শোনার একেকটা পর্যায় থাকে, জীবনের বিভিন্ন পর্বের সাথে বিভিন্ন গান একেবারে লেপ্টে থাকে। তো এবার একটা নির্দিষ্ট পর্যায়ের গান কয়েকদিন টানা শোনার পর একটা অতি আজব ব্যাপার হলো। হঠাৎ করে গানগুলি একসাথে হয়ে একটা পোর্টাল তৈরি করে ফেললো। পোর্টালের ওইপাশে গিয়ে দেখি পুরোন একটা অসম্ভব আনন্দের সময়ে পৌঁছে গেছি। তবে তারপর যেটা ঘটলো সেটা আজব বললেও আন্ডারস্টেটমেন্ট হবে। আমি আর ফেরার পথ খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তারপর...

লিখতে লিখতে টের পেলাম কি পরিমান মাথা খারাপ ধরনের কথাবার্তা এগুলি। এটাই কি আমার বুড়ো হওয়া? মাথা খারাপ বুড়ি? Sad

শব্দ তোমরা ক্লান্ত করেছো খুব

একটা দুর্ঘটনাময় সপ্তাহ গেল।

ল্যাপটপের কিবোর্ড একা একাই অনেক কিছু লিখতে শুরু করলো, কিবোর্ড পাল্টে আনার পর থেকে ব্লুটুথ মাউসটা ঝামেলা করা শুরু করলো, সে আর সহজে সংযুক্ত হতে চাচ্ছেনা। প্রতিবার অন করার পর ল্যাপটপ ব্লুটুথ আর মাউসের মধ্যে একটা সমঝোতা চুক্তি সাইন করাতে হয় বেশ কয়েক মিনিটের আলোচনা সভার মাধ্যমে। এর মধ্যে তিনটা সাবমিশন ছিল, এইসব যন্ত্রণায় একটা কোনমতে পার করতে পারলেও বাকি দুইটা বাদ দিতে হলো।

তারই কিছু রং নাও তুমি

আমার কয়েকটা Mode আছে। এগুলির একটার থেকে আরেকটা এতোটাই আলাদা, যে নিজেকে বেশি প্রকাশ করে ফেললে মনুষ্যসমাজ আমাকে ত্যাজ্য করে তাদের বানানো এসাইলামগুলিতে পাঠিয়ে দেবে। তাই চুপচাপ থাকি। কোনদিন কেউ যদি আমার ভিতরের খবর এতটুকুও আঁচ করতে পারে আমি উল্টোদিকে ঘুরে দৌঁড়! এভাবেই এতগুলি বছর এই পৃথিবী নামের তল্লাটে কাটিয়ে দিলাম।

Dancing in the dark

এবার সাহিত্যে নোবেল পাওয়া আনি এর্খনো-য়ের লেখা একটা বই পড়া শুরু করেছি। খুব বেশিদূর পড়ে ‌উঠতে পারিনি, তবে এরমধ্যেই একটা ভাল লেখা পড়ার যেই ঘোর, সেই ঘোরে পড়ে গেছি। গভীর প্রেমের গহীন বিষাদ, আকর্ষন, অবসাদ, মোহ, অপেক্ষা, শুধুমাত্র কুলছাপানো আবেগ না - তীব্র শরীরি চাওয়া তাও কতো অনায়াসে - যা শুধু মেয়েরাই জানে, আর সেটা আমি বুঝলাম কারন হতবাক হয়ে আবিষ্কার করলাম এই গল্পটা আমি যাপন করে এসেছি, আর এই গল্পটা আরেকটা মেয়েই লিখেছে। কি অদ্ভুত! মনে হচ্ছে কুন্ডেরা পড়ছি, কিন্তু এবার কোন ব্যাটা লিখছে না, লিখছে আমার জীবন যাপন করা একজন, তাই সেটা একদম অবিকল আমার ডায়েরির পাতার মতন যেন। নোবেল কমিটির একটা জাপটানি প্রাপ্য আমার থেকে, একে পুরস্কার না দিলে এর নামও জীবনে জানা হতো না।

যদি কোনদিন

ইদানিং মনোসংযোগ করা খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছে। অনেক চেষ্টা করেও কোন বইয়ে মন দিতে না পেরে ছোট গল্প পড়া শুরু করেছি। আমার জীবনে ছোট গল্প খুব কম পড়া হয়েছে। শেষ হইয়াও হইলোনা শেষ, এই ধরনের ব্যাপারগুলিতে আমার চরম অস্বস্তি। আমার সবকিছুতে ক্লোজার দরকার, নাহলে এতো অস্থির হয়ে থাকি যে বলার না। তবে এখন যেহেতু আমি বড়বেলা পার করছি, ছোট গল্প ভালই লাগছে। নিজেকে খুব বেশি কোথাও নিচ্ছিনা বলে টের পাচ্ছিনা পরিবর্তন আরো কতো কতো জায়গায় ঘটে গেছে। তবে খারাপও নেই, ভালও নেই, এই হলো বর্তমান স্টেট অফ মাইন্ড।

Don’t know why

একবার একজনের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে ফিরে এসেছিলাম। তারপর সেইজন আমাকে কত আনাচকানাচে খুঁজে বেড়িয়েছে, আমি সব খবর পেতাম, কিন্তু আর কখনোই তাকে ধরা দেইনি। এই আমিটা আমার খুব অচেনা। সাধারনত কারো প্রতি টান অনুভব করলে আমি সর্বস্ব বাজি রেখে আল্লাহর নামে চোখ বন্ধ করে দেই ঝাপ। ডিগনিটি, সেল্ফরেসপেক্ট, ফোরসাইট, জাজমেন্ট সব তখন আমাকে ছেড়ে গিয়ে দূরে দাঁড়িয়ে মজা দেখতে থাকে। যখন তারা ফিরে আসে তখন আমি মোটামুটি সর্বহারা। আগে ভয়ংকর রকম খারাপ লাগতো, এখন বুঝে গেছি আমার মনে অনেকগুলি বেইমান বাস করে। চাই আর না চাই এদের নিয়েই আমার আমৃত্যু থাকতে হবে। একবার মেনে নেয়ার পর সব সহজ হয়ে আসে, তাই খারাপ লাগার তীব্রতাও ধীরে ধীরে কমে এসেছে।

I’m just glad to see you again

জানালা খুলতে চাইনা এই কারনেই। হুড়মুড় করে কত কত প্রাচীন নক্ষত্রের আলোর বানে ভেসে যায় সবকিছু, কোনমতে খড়কুটো আঁকড়ে ধরে থাকি, আমার তো ভেসে যাওয়া চলবেনা!

নোরা জোনসকে প্রথম দেখি/শুনি এমটিভিতে। তখন ইউনিভার্সিটিতে পড়ি, প্রথম শুনলাম ‘Come Away With Me’ এবং গান শোনা মাত্র এ্যালবাম যোগাড় করে ফেললাম। তারপর টুপ করে এই মেয়ের প্রেমে পড়ে গেলাম, গভীর প্রেম। আমার গান শোনার সঙ্গীদের আবার আমার মতো এতো ভাল লাগেনি ওর গান। তাই শেয়ার করতে না পেরে নোরা জোনস হয়ে উঠলো একান্তই আমার নিজের। অনেকগুলি কারনের মধ্যে অন্যতম কারন, সবগুলি গানই একটা যাযাবর হৃদয়ের কথা বলে। এখনো কোথাও যদি ওর গান বাজতে শুনি, যত সিরিয়াস কথার মধ্যেই থাকিনা কেন, আনমনা হয়ে যাই।

Come on in
Did you have a hard time sleeping
‘Cause the heavy moon was keeping me awake
And all I know is I’m just glad to see you again..

আশ্চর্য মেঘদল

আজকাল বাংলা লেখা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। বেশ কয়েকদিন ধরে একটা নস্টালজিয়ার মধ্যে আছি, তাই একটা কিছু লেখার জন্য মন একটু তাগাদা দিয়েই যাচ্ছে। কিন্তু আমার ব্রাউজারের অদ্ভুত আচরনের ফলে বাংলা লেখা এখন প্রচুর সময়সাপেক্ষ, এতো কষ্ট করতে এখন আর ভাল লাগেনা। বুড়ো হয়েছি।

আমি

আমি আবার অনেকদিন পর একটা কিপলিং ব্যাগের মালিক হয়েছি! কিপলিং-এর ব্যাগগুলির যিপার হল পৃথিবীর অন্যতম আরামদায়ক ব্যাপারগুলির মধ্যে একটা।

২০১৮

২০১৮ তে আমি যেই বইগুলি পড়বো – স্যাপিয়েন্স-টা শেষ করবো, হোমো ডিউস টা পড়বো। সেলফিস জিন পড়ে ফেলবো। কুদরত রঙ্গিবিরঙ্গী আর ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহল অনেকদিন ধরে জমিয়ে রেখেছি পড়বো বলে, এই বছর নিশ্চয়ই হয়ে যাবে। গত বছরের কলকাতা থেকে আনানো বইগুলির ধুলো ঝেড়েমুছে পড়তে হবে। হেমেন্দ্রকুমারের রামায়ণটা অবশ্য অবশ্যই এই বছর পড়ে ফেলবো। আর কিছু যখন ভাল লাগবে না তখন কিছু রাশান বই, আর কখনো গম্ভীর বই শেষ করে ঐসময়ের চটুল বেস্টসেলার। এই লিস্ট কিছুটা ফ্লেক্সিবল, মানে এখানে হঠাৎ পাওয়া কোন বই টুক করে ঢুকে যেতে পারে, তবে এই নামগুলো থেকে কোন বই বাদ যেতে পারবেনা। গত বছর আইস এ্যান্ড ফায়ার পড়তে যারপরনাই সময় নিয়েছি, এই বছর কোন বইয়ের ক্ষেত্রেই সেটা করা যাবেনা।

এই বছর আমি আরেকটা কাজ করবো, নতুন কিছু একটা শিখবো। ইউটিউব দেখে। লিস্টের টপে আছে ভিডিও এডিটিং আর বেইসিক কোডিং (হাহা)। দেখা যাক।

অনেেেেক

অনেেেেক দিন কিছু লিখিনা। কোথাও। এর মধ্যে কখনো যে লিখতে বসিনি তা না, কিন্তু চিন্তাভাবনা, কথাবার্তা সব কেমন যেন এলোমেলো হয়ে গেছে। এক লাইন লেখার পর মনে হয়, আরে এটা তো আগে কত কতবার করে লিখেছি আমি, এখানে, সেখানে, অন্য কোথাও। তারপর ব্যাকস্পেস চেপে ধরে থাকা যতক্ষণ না কালো অক্ষরগুলো একে একে কোথাও হারিয়ে যায়। গত কয়েকমাসে যতগুলো অক্ষর লিখেছি আর তারপর অদৃশ্য করে দিয়েছি ওরা নিশ্চয়ই কোথাও না কোথাও আছে। অস্তিত্ব তো ছিল ওদের, অন্তত কিছুক্ষণের জন্য হলেও, ছিল তো! কোনরকম সৎকার হয়নি যদিও, ব্যাকস্পেস নামক এনাইহিলিন গান চিরতরে দিয়েছে ওদের ভ্যানিস করে। হয়তো সেই ব্ল্যাকহোলে হারিয়ে যাওয়া বাক্যগুলোর কোন একটা পড়লে এখন আমি মুগ্ধ হতাম, কিংবা অনেক অনেক পুরোনো কোন স্মৃতি আবার মনে পড়ে যেত, কিংবা হয়তো এক্ষনি, এই এক্ষনি আমার মন অসম্ভব ভালো হয়ে যেত। খারাপ-ও হতে পারত হয়তো। কে জানে।