ক্যানবেরা সফর - পর্ব ২
সেই সার্ভো থেকে বের হয়ে ইউরোয়া শহর বাইপাস করা নতুন ফ্রীওয়ে ধরে সামনে এগিয়ে গেলাম। মুজা কাকুরে খেপানোর জন্য বললাম নেক্সট ব্রেক মিনিমাম ৩০০ কিলোমিটার যাওয়ার পর, এর মধ্যে কোন থামাথামি নাই। কারো ১/২ নম্বর কিছু পাইলে যেন হাসি খুশি মুখ কইরা চাইপা রাখে। আর হ্যাঁ যেহেতু শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ তাই বিড়ি খাওয়া নিষেধ। এইটা শুনার পর কাকু তার সেই জগৎ বিখ্যাত ডায়ালগ "হায়রে........" দিলো। মামুরে বললাম অন বোর্ড ই-সিস্টেম ঠিকমত কাজ করতেছে, আশা করি সারা রাস্তায় সার্ভিস পাবো ;)।
ছবিঃ স্পীড ক্যামেরা
কাকুরে বললাম রাগ করেন কেন? শুধু মজা করলাম। বিড়ি খান কিন্তু কোন ছাই যেন ভিতরে না পড়ে। শুরুতে কাকু খুশি হইলেও পরে কিঞ্চিত বিরক্ত হইলেন, ১১০কিমি গতিতে ছাই সামলানো বেশ হেপা। তবে কাকু হাল ছাড়লেন না। চেষ্টা চালাইতে থাকলেন। আমি আর মামু রিয়ার মিররে দেখি আর মুচকি মুচকি হাসি।
ছবিঃ মামুর সৌদি ষ্টাইলে ফটোশট
ছবিঃ B500 (গ্রেট এ্যালপাইন রোড) এ্যাক্সিট, ওয়াংগারাটা
বেশ কিছু পুরানা বাংলা গান শুনলাম আমরা, এর মধ্যে ছিলো শ্রাবণের মেঘ গুলো, দূর পাহাড়ে, দৃষ্টি প্রদীপ জ্বেলে। কোরাস ধরে আমার প্রতিচ্ছবি, অদ্ভুত সেই ছেলেটি, এপিটাফ, মনে পড়ে গাইতে গাইতে ভিক্টোরিয়ার বর্ডার মুঁর্যে নদী পার করলাম। আমরা মামুর প্রথম ইন্টার এস্টেট জার্নি প্রতক্ষ্য করলাম। মামু দেখি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলো এইটা। কিছুক্ষনের মধ্যেই আমরা এ্যালবিউরী শহরতলীতে প্রবেশ করলাম। মুজা কাকু দেখি শহরের বর্ণনা দেওয়া শুরু করল। এর আগে অফিসের কাজে এই শহরে ৫/৬ বার আসা হয়েছে। কাকুর বর্ণনা দেখি হুবহু মিলে। হঠাৎ করে কাকু বলে ক্যানবেরা থেকে সীডনী তো ৩ ঘন্টার পথ। আমি বললাম সেই সদ্য সীডনী প্রত্যাবর্তনকারী বালিকা কি এই শহরের? কাকু অফ গেলেন। আরও একটু চাপাচাপির পর বললেন হ্যাঁ।
ছবিঃ এ্যালবিউরী ওভারপাস
ডেভেনপোর্ট, মিলদুরা, এ্যালবিউরী, সীডনী হিসাব মিলাতে যেয়ে খেমা দিয়ে কাকুরে বললাম লুলামীর একটা সীমা থাকা উচিত, মানুষ একটা পায় না আর উনি এইখানে ব্যবসা খুলে বসছেন। কাকু হাসে মামু মেজাজ খারাপ করে আর আমি ভদ্রলোক রাস্তায় মন দেই।
এ্যালবিউরী ছাড়ানোর ২০/২৫ মিনিট পর খেয়াল করি তেলের কাটা প্রায় নীচের ঘরে। মাথা গেলো খারাপ হয়ে। মোটামুটি আর ৮০/৯০ কিলোমিটারের মধ্যে কোন শহর বা সার্ভো নেই। যা তেল আছে তা দিয়ে আর রিজার্ভ মিলিয়ে বড়জোর ১০০কিমি যাওয়া যাবে। এর মধ্যে শুরু হল পাহাড়ে উঠা নামা রাস্তা।
ছবিঃ মেঘের কাছে
ছবিঃ আরও কাছে
উপরে উঠার সময় মিটারে একেকবার রিডিং দেখায় ডিসটেন্স টু এম্পটি ৭৫কিমি আবার নামার সময় রিডিং দেখায় ১০৫কিমি। ভয় পেলাম যদি এইখানে থেমে যাই কি হবে? মোবাইলের নেটওয়ার্ক নাই, দেখতে দেখতে হলব্রুক পৌঁছে গেলাম। সার্ভোতে ঢুকে মিটার রিডিং দেখলাম ডিসটেন্স টু এম্পটি ৩কিমি। পেট ভরে তেল নিলাম। মুজা কাকু এইবার ঝারি নিলেন "আরে বলছিলাম না এত টেনশনের কি আছে? সামনে কিছু না কিছু পাওয়া যাবে।" ফটোগ্রাফার মামু আশে পাশে ছবি নিতে ব্যস্ত হয়ে গেলো।
ছবিঃ হলব্রুক গ্যারিসন এন্ট্রান্স
ক্রমশ.......
আগের পর্বের লিংকঃ
ক্যানবেরা সফর - পর্ব ১
দারুণ হইতেছে। চলুক।
থেংকু আপু
মামুরে ভালোই পচাইছো দেখতাছি
মামু পাগলারে কইছে সাঁকো নাড়াইস না। আমার কি দুষ?
শাবনুর বিষয়ে জাতি আন্ধারে
ঐটা আসপে রয়ে সয়ে
আরে ব্বাহ.. চমৎকার সব ফটুক দেখতেছি। আরো কিছু ফটুক দেন।
আহা...
~
.............................
এম্নে গাড়িতে আয়েশ কইরা ভ্রমণ করতাম চাই
চইলা আসেন
খালি ইমো? কমেন্টস কই???
মজা পাইতেছি...
বিদেশী...
কুনটা
ভালো । চলুক ...
একবার জুরিখ থেকে বাইরোডে জেনেভা গেছিলাম। সেই কথা মনে পড়লো। একটা জায়গা ছিল মনে হচ্ছিল মেঘের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।
ভাইয়া এই রাস্তা তো কিছুই না। গ্রেট এ্যালপাইন রোড, স্নোয়ী মাউন্টেন রোড, মোনারো হাইওয়েতে মেঘ হাতে ধরা যায় আর মাউন্ট কজসিয়াসকো সামিট রোডে উঠার পর মেঘ রাস্তার চেয়ে নীচের লেভেলে চলে যায়। তখন বিমান থেকে মেঘ দেখার মত মনে হয়।
ভ্রমণ কাহিনী পড়তে খুব মজা লাগতেছে।ছবিগুলা জোশশশশশশশশশ।
থ্যাংকু আপু। সামনে আরও কাহিনী আছে
মন্তব্য করুন