ব্যতিক্রম
সেদিন অফিস শেষে রাত ১০টায় বাড়ি ফিরতে মগবাজার অয়ারলেস মোড় থেকে সায়েদাবাদ যাওয়ার উদ্দেশে বলাকা বাসে উঠি।বাসটি চলতে চলতে কমলাপুরের কাছে এসে হঠাৎ থেমে যায়। পরে জানা গেলো বাসের চাকা পাংচার হয়েছে। অগত্যা চাকা পাল্টাতে হবে।এক-আধঘণ্টা সময়ের ব্যাপার।তাতে কী যাত্রীভর্তি বাসে এমন কোনো লোকের উপস্থিতি টের পাওয়া গেলো না, যাতে বাসের চালক বা কন্ডাক্টরকে কোনো টু শব্দ করে।বিষয়টি সত্যি অবাক করার মতো। কেননা, যেখানে নিত্যদিন যাত্রাপথে বাসের লোকদের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে যাত্রীদের বাগবিতণ্ডায় লিপ্ত হতে দেখা যায়।সেখানে এমন একটি ঘটনা বিস্ময়কর নয় কি? যাত্রীদের সবাই সুবোধ বালকের মতো চুপটি মেরে বসে থাকলো, যতোক্ষণ না চাকা বদলানোর কাজটি শেষ হলো।সেদিন দেখলাম, যাত্রীদের কেউ উত্তেজিত হলো না, বরং চাকা বদলানোর কাজে মোবাইলের টর্চের আলো দিয়ে উল্টো সহযোগিতা করলো।মাঝে মধ্যে এমন দু'একটি ঘটনা আমাদের আন্দোলিত করে।মনে প্রশ্ন জাগে- এখনো কী দেশে মানবতাবোধ ও বিবেকসম্পন্ন, কষ্টসহিষ্ণু তরুণ-যুবক আছে? বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় যেখানে শুনি সন্ত্রাসের পদধ্বনি, বিবেক-বুদ্ধি যেখানে প্রশ্নের মুখোমুখি, সেখানে এ ধরনের ব্যতিক্রম ঘটনা আমাদের আশার আলো দেখায়।ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিয়ে নতুন করে ভাবতে শেখায়। তাইতো বলতে ইচ্ছে করে- আমাদের দেশে এমন ছেলে সহসাই হবে, কথায় বড় না হয়ে কাজে বড় হবে। গুরুজনকে শ্রদ্ধা আর ছোটদের স্নেহ-মমতায় ভরে দেবে আর ভদ্র আচরণে পরিবারের সুনাম বজায় রাখবে। সেদিন বেশি দূরে নয়, এই এলো বুঝি।
এটা কি আসলেই ব্যতিক্রম?
আমার তো মনে হয়, রাত ১০টা পর্যন্ত গাধার খাটুনি খেটে কারো আর এনার্জি ছিলোনা ড্রাইভার-হেল্পারদের সাথে বকাবাহ্যি করার। যত তাড়াতাড়ি বাসায় গিয়ে রেস্ট নেয়া যায় এমন ভাবনা তাড়িত হয়ে সবাই আরো হেল্প করছে পাংচার হওয়া টায়ার বদলাইতে...
আমার মনে হয়, লোকাল সার্ভিসের যাত্রী হিসেবে আপনার অভিজ্ঞতা অপরিপক্ব। রাত ১০টায় একদিন বাসযাত্রী হওয়ার অনুরোধ থাকলো।
পাইবেন।
জবাবটি বৃত্তবন্দীর জন্য প্রযোজ্য।
মন্তব্য করুন