বেঁচে আছি ভুল করে
প্রত্যেকটি মানুষের জীবনে সবচে' সত্য হলো মৃত্যু! সকল জীবে'র জীবন খেয়ে মৃত্যু বাঁচে, আশ্চর্য হলেও মানতে হয় মৃত্যুর মৃত্যু হয় না! মৃত্যুর ক্ষুধা মেটে না! আমরা জানি মরতে হবে আমাদের। সবকিছু অস্বীকার করতে পারি কিন্তু মৃত্যুকে কিভাবে অস্বীকার করি। তবু আমরা বেঁচে থাকার জন্যে কত কি করি, অন্যকে খুন করি নিজে বেঁচে থাকার জন্যে। রঙিন রঙিন স্বপ্ন গাঁথি, অন্যকেও স্বপ্ন দ্যাখাই নিজেও স্বপ্ন দেখি।
সব সময়ই ভাবি মৃত্যু অনেক দূরে। এই মুহূর্তে না, আরো পরে আমরা মারা যাবো। এই যে ভবন ধ্বসে ২৫ জন মানুষ ও গতকাল ১২৫ (প্রায়) জন মানুষ আগুনে পুড়ে মারা গেলো তাদের মধ্যে অন্তত একজনও ভাবেনি কয়েক মুহূর্তে তারা আগুনে পোড়ে ছাই হবে। ভাবার কথাও না পক্ষান্তরে ভাবার কথা, আমাদের এই দেশে মৃত্যুকে সাথে নিয়ে আমরা চলি। যে দেশে মানুষের প্রাণটা কিচ্ছুই না, আগুন লেগে, রাস্তা পারাপার হতে, জাহাজ ডুবে, পিস্তলের গুলিতে, রাজনীতি করতে, গিয়ে ভবন ধ্বসে ইত্যাদি কারণে মারা যাচ্ছে অজস্র প্রাণ নিঃশেষ হয় সে দেশে আমরা যারা বেঁচে আছি এখনও তারা কি ভুল করে বেঁচে আছি না? যে কোনো মুহূর্তে অস্বাভাবিক মৃত্যুর হাতের থাবায় পড়তে পারি আমি- আপনি যে কেউ। তাতে আমাদের অবাক হবার কিছু নেই। সাধারণ মৃত্যু আমাদের মায়া করলেও বেপরোয়া গতির গাড়ি, আগুন, বন্দুকের গুলি , ইত্যাদি মায়া করবে না...





যখন কেউ আজকাল আমায় জিজ্ঞেস করে, কি খবর, আমি বলি বেঁচে আছি এইতো বড় খবর। সাড়া পৃথিবীতে রোজ যতো অপমৃত্যু হয় তারমধ্যে বেঁচে থাকাটাই সবচেয়ে বড় খবর আজকাল।
ঠিক!
মাসুম ভাইয়ের কাছ থেকে শোনা একটা গল্প বলি--
একটা বাচ্চা ছেলে একদিন স্কুলের খাতায় একটা ছবি এঁকেছে। সেই ছবিটা তার টিচারকে দেখানোর সাথে সাথেই টিচার তাকে গালে একটা থাপ্পড় বসিয়ে বলে, বেয়াদব ছেলে, এগুলো কি এঁকেছ? মনের দুঃখে ছেলেটি বাবাকে গিয়ে নিজের আঁকানো ছবিটি দেখায়। বাবাও রাগে অগ্নিশর্মা। সাথে সাথে ছেলেক ত্যাজ্য ঘোষণা এবং বাড়ি থেকে বহিস্কার। রাগে-ক্ষোভে-হতাশায় কাতর ছেলেটিকে দেখে মায়া হয় এক পুলিশ অফিসারের। তিনি জিজ্ঞেস করেন, কি হয়েছে বাবা? ছেলেটি তাকে সেই ছবিটি দেখিয়ে বলে এটি আমি এঁকেছি। আর যায় কোথায়? সাথে সাথে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে এবং পরদিন কোর্টে চালান করে দেয়। বিজ্ঞ জজ ছবিটি দেখে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন এবং ছেলেটিকে ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
১৪ বছর পর। ছেলেটি সবেমাত্র কারাগার থেকে বের হয়েছে। হাতে ধরা সেই ছবিটি। সে ভাবছে এই ছবিটি নিয়ে সে গীর্জার পাদ্রির কাছে যাবে। তাকে দেখিয়ে জিজ্ঞেস করবে, কি আছে এই ছবিতে যে কারণে তাকে সারাজীবন জেল খাটতে হয়েছে। ভাবতে ভাবতেই হটাৎ উল্টোদিক থেকে আসা একটা ট্রাক পিষে দিয়ে গেলো তাকে।
(শিক্ষা: রাস্তা পার হওয়ার সময় অবশ্যই ডানে-বায়ে দেখে পার হওয়া উচিত)
আপনার পোস্ট পছন্দ হইসে। মনে হইলো আপনার মন বেজায় খারাপ। তাই একটু গল্প শুনাইলাম। ভালো থাকবেন ভাই অপূর্ব।
আমি খুব আহত ভাই মীর দেশের এই অবস্থায়।
আমিও আপনাকে একটি গল্প শোনাই এবার, আমার ব্যক্তিগত গল্প।
আমার পরিবার ইংল্যান্ড থাকে সেই সুবাদে আমিও কিন্তু আমি আমার একমাত্র বড় ভাইকে আমি অনেক বুঝিয়ে দেশে থাকি, আমার পুরো পরিবার এর ইচ্ছা উপেক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেই দেশেই থাকবো। প্রায় দেড় বছর ধরে দেশে আছিও, এখন আমার ভাই বেড়াতে আসলো দেশে, আছে এখনও। দেশের এই ঘটনা আমাকে দ্যাখায় আর বলে তারপরও তুই দেশে থাকবি? যে দেশে এক দিনের নিশ্চয়তা নেই?
তার কাছে আমি হেরে গেছি আমার দেশের এইসব কিছু ঘটনার জন্য। হারি নি কি? আমারও তো বাঁচার সাধ জাগে!
এভাবেই তো আমরা বেচে আছি
এভাবেই আমরা বেঁচে আছি তবে এইসব দেখে দেশ ছেড়ে চলে গেলে খারাপ লাগবে ।
তবু আমরা বেঁচে আছি!
ভুল করে বেঁচে নাই রে ভাই, আমরা বেঁচে আছি ভুল করে মরে যেতে।
আপনার কষ্টটা ছুঁয়ে গেল
চারিদিকে মন খারাপ করা খবরের ছড়াছড়ি।
ভয়াবহ লেখা
ধন্যবাদ সবাইকে।
তবু আমরা বেঁচে থাকি
হুম!!
মন্তব্য করুন