রানা প্লাজার এক বছর!
আজ এক বছর হয়ে গেলো রানা প্লাজার বা এভাবেও বলা যায় ১১৩৪ টি প্রাণ গত বছরের এই দিনে লাশ হয়ে গিয়েছিলো। এই দিনটিকে নিয়ে আজ মিডিয়া, ফেসবুক সবাই কথা বলছে। কারণ আজ এক বছর হলো। মধ্যখানে আমরা সবাই (কিছু মানুষ ছাড়া) রানা প্লাজার এই হত্যাকাণ্ডটি ভুলেই গেসলাম। আমাদের কি এইটা মনে রাখার কথা! আমার কেউ তো রানা প্লাজায় নিহত বা আহত হয় নি, আমি মনে রেখে কি করবো। রানা প্লাজার এই মানুষদের নিয়ে সরকার ভালো ব্যবসা করেছে। ১১৩৪ টি প্রাণের থেকে রানা প্লাজার মালিক রানার প্রাণ অনেক মূল্যবান, সে জাবিন পেয়ে যায়। রানা প্লাজার সেই ধ্বংসস্তুপ এর ছবি, নিহত মানুষের ছবি দিয়ে আজ অনেকেই 'ইমোশনাল' লেখা লিখছেন ফেসবুকে। আমিও যে এইটা লিখছি কাল আর রানা প্লাজায় নিহতদের নিয়ে লিখবো না কিছু, গত এক বছরে একবারও লিখিনি। আবার যখন আরেকটি রানা প্লাজার মতো কোন একটি প্লাজা ধসে পড়বে, হাজারের থেকে বেশি শ্রমিক নিহত হবে তখন হয়তো আবার আমরা একদিন বা কয়েকদিন লিখবো, মিডিয়াও উত্তাল থাকবে। মানববন্ধ করবো রাস্তায় দাঁড়িয়ে- স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা চাই; বলে। কিন্তু সেই স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা এই দেশে আসে না। নিমতলীতে আগুন লেগে মানুষ ছাই হয়ে যায়। সেই নিমতলীর পরে কি আর আগুন লাগে নি?! আমরা মানুষের তো আসলে প্রতিবাদ করা আর কয়েক লাইন লেখা বা চায়ের ষ্টলে আড্ডা দিতে গিয়ে দু'একবার কথা বলি কোন একটি বিষয় নিয়ে। এই রাষ্ট্র কি করে? এই রাষ্ট্র নিজের জন্যে কুকুরের মতো যেখানে খাবার দেখে সেখানে মুখ দেয়, মানুষ মরলে তার কি, সে তো দিব্যি আছে। বরং মানুষ মরলে তার লাভ হয়। তহবিল অর্থে ভরে! আজ পর্যন্ত কোন গর্মেন্টস এর মালিক বা মন্ত্রী এমপি তো ই আগুনে পুড়ে, ভবনের নীচে পরে মারা যায় না। মরে তো পাব্লিক।
আগামী বছর যখন রানা প্লাজার ২ বছর হবে তখন হয় তো যেটুকু মনে ছিলো রানা প্লাজা নিয়ে সেইটুকুও ভুলে যাবো। মনে রাখবে তারা, যাদের সন্তান, ভাই, মা, পেটের জন্যে এই রানা প্লাজায় কাজ করতে আসতো। এর মধ্যে হয় তো নতুন আরেকটি দূর্ঘটনা ঘটবে, সবাই সেই দিকেই তাকিয়ে থাকবে। সেটা নিয়ে কয়েকদিন লিখবে। প্রতিবাদ জানাবে। এভাবেই একের পর এক ঘটনা ঘটতে থাকবে।
মন্তব্য করুন