আমি সব দেবতারে ছেড়ে আমার মায়ের কাছে চলে আসি
সারাদিন সকল কাজ শেষে ‘আমি সব দেবতারে ছেড়ে’ আমার মায়ের কাছে চলে আসি। আমার আম্মু শুধু মা নয় আমার কাছে, আমার আম্মু একজন বন্ধু, আমার যাবতীয় কথা আমার আম্মুর সাথে ভাগাভাগি না করলে আমার অশান্তি লাগে। আমার রাগ দেখানোর জায়গা, আমার আনন্দ উপভোগ করার জায়গা আমার আম্মুর কাছে। আমি যে এতো বড় হয়েছি সেটা মনেই থাকে না যখন আমি আম্মুর কাছে থাকি, যখন আমি আম্মুকে ধরে শুয়ে থাকি, সেই ছোটবেলার মতোই বলি আমার পিঠে হাত বুলিয়ে দাও। জীবনের সাথে প্রায় যুদ্ধ করে নিজের চাওয়া-পাওয়া বিসর্জন দিয়ে আমার আম্মু আগলে রেখেছেন আমরা ভাই-বোনদের। কখনও বুঝতে দেননি বাবার শূন্যতা। এখনও এই যে এতো বড় হয়েছি তারপরও কি রকম যন্ত্রণা দিয়ে যাচ্ছি সেই যন্ত্রণাটাকেও ভালোবাসায়, ¯েœহে গ্রহণ করছেন আর মাথায় হাত রেখে বুঝিয়ে দিচ্ছেন, এভাবে যে আর কেউ হাত রাখতে জানেনা আম্মু, এই পরশ যে আর কারো হাতে নেই আম্মু, তাই বুঝি এখনও খাবার টেবিলে একা খেতে পারিনা যদি না আম্মু পাশে বসে না থাকেন। আমি খেয়ে হাতের কাছে হাজার হাত মুছার টাওয়েল থাকার পর ও কেনো জানি আম্মুর আঁচলটাই খুজি, আর সেখানে মুখ মুছি। কেউ কেউ দেখে হাসে আর বলে ‘এতো বড় ছেলে কি করে এসব’। প্রতি রাতই ভাবি কাল থেকে আম্মুকে আর কষ্ট দিবো না কিন্তু প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারি না। আম্মু জীবনে অনেক কষ্ট দিয়েছি কখনও সুখ দিতে পেরেছি কি না জানি না অথচ সব সময় দেখেছি আমাদের অসুখে বা কখনও কোন সমস্যা হলে আমাদের থেকে তোমাকেই বেশি কষ্ট পেতে আর ভাবতে দেখি আমাদের থেকে তোমাকেই বেশি! এই তো আমার দাঁতের অসুখের জন্যে ডাক্তারের কাছে যেতে হয়, আমি যতটা না কষ্ট পাই, আমার যতটা না ভয় হয়, তার থেকে বেশি তোমার হয়, তুমি আমার থেকে বেশি কষ্ট পাচ্ছো, আমার অসুস্ততা নিয়ে, আমার চেয়ে বেশি ভাবছো। মা হলে বুঝি সব সময় সন্তানদের থেকে কষ্টই বেশি পেতে হয়? সারাদিন, রাত, এই কাজ নয় সেই কাজ করছো তো আজো করছো, আমাদের খাওয়াটাই যেনো মূখ্য, আমরা খেলেই তুমি খুশি, তোমার খাওয়া কোন জরুরি না। আমরা একবার না খেলে তুমি হাজার বার বলো, মা তুমি না খেলে আমি বেশি হলে দুইবার বলবো তারপরই হয়তো রাগ উঠে যাবে, কিন্তু তুমি হাজার বার বলেও তোমার রাগ হয় না। আম্মু তোমার তুলনা শুধু তুমি। আম্মু তোমার কোন ব্যাখা হয় না।
আমি কিছুদিন যখন লন্ডনে ছিলাম তখন আমার সব থেকে বড় শূন্যতাটা ছিলো আমার আম্মুর অনুপস্থিতি। আমি ঘরে ফিরে আমার আম্মুকে যদি না দেখি সব কিছু যেনো খালি লাগে। আম্মু থাকলে পুরো বাড়িটাই যেনো ভরাট হয়ে ওঠে। তাই আমি কখনও আম্মু ছাড়া আমার জীবনের মুহূর্তগুলো ভাবতে পারিনা। আমি যতক্ষন ঘরে থাকি শুধু আম্মুর সান্নিধ্য চাই। সবাই বলে এইকথা, আমিও জানি। আমার আম্মুই তো আমার সকল সময়, আমার সুখ শান্তি। আমি শত বিষাদে ডুবলেও আমার আম্মুর মুখটি মনে করলে মনে হয় এর থেকে বেশি সুখ পুথিবী আর নেই। নেই-ই। মায়ের মুখের চেয়ে চেনা-জানা, প্রিয়, পবিত্র সুখ কি আছে আর তাই তো আমি ইচ্ছে করে অনেক সময় আমার আম্মুকে রাগিয়ে তুলি। আম্মুর বকাটা আমার অনেক পছন্দের। তখন আম্মু বলেন ‘বড় হবি কবে, তুই আর বড় হবিনা?’ আম্মু বিশ্বাস করো পৃথিবীর আর সবার কাছে আমি যদিও বড় হই, কিন্তু তোমার কাছে বড় হতে চাই না, তোমার কাছে আমি বড় হবো না কোনদিন; আমি এখনও চাই তুমি সেই ছেলেবেলার মতো ঘুম পাড়ানি গান গেয়ে আমাকে ঘুম পাড়িয়ে দাও, এখনও আমার মুখে তোমার হাতে ভাত তুলে দাও। আম্মু পৃথিবীর যেখানেই যখন থাকি তোমার ভালোবাসা আর আর্শিবাদ আমার সঙ্গী হয়ে থাকে, তোমার মুখ আমার ভালোলাগা হয়ে ভাসে। আম্মু তোমাকে অনেক ভালোবাসি কিন্তু বলতে পারিনা, বলা হয়ে ওঠে না। আম্মু তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসা।





খুব ভালো লাগলো। একদম মনের মতো…......
আমার মা রত্নগর্ভা না, তবুও তিনি সেরা। প্রতিটি মা -ই তার সন্তানের কাছে সেরা।
বছরের সব কটা দিন-ই এই মায়েদের...........................মা জাতির প্রতি কৃতজ্ঞতা.........
জগতের সব মায়েরা ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন
মন্তব্য করুন