নিঃসঙ্গতার একশ বছর
গত রাতে ব্যাপক পূর্ণিমা ছিলো তবু অন্ধকারে ডুবে ছিলো সারা নগর! এর ১টা
কারণ হতে পারে তুমি এখন নাই বা তুমি কাল এ নগরে ছিলেনা। আমরা তো জানি তুমি
এলেই এমন জ্যোৎস্নায় ভেসে যায় শহর। তবে শুধু তুমি যে মূখ্য বিষয় তাও
কিন্তু নয়। রাতুল ও এর কারণ হতে পারে যেহেতু আমি তাতেও নিশ্চিত না। রাতুল
জ্যোৎস্না নামলেই সে জ্যোৎস্না হতে চাইতো, রোদ্দুর হতে চাইতো, কবি হবে এমন
শখও তার ছিলো। কিন্তু সে এসব কিছুই হতে পারে নি। তবে কিছু ১টা হয়েছিলো, কি
হয়েছিলো তা আমি জানি না, সে নিজেও জানতো না! তবে তোমাকে যেমন মনে পড়ছিলো
ঠিক রাতুল কে...। এমন ভয়াবহ জ্যোৎস্না ঝরলে বুঝি খুব কাছের জনদেরই মনে পড়ে?
আজ রাতুলের মৃত্যুর বয়স ২। আর তুমি দূর দূরাশয় ছায়া হয়ে গেছো। জানি
গতকাল তুমি এ নগরে ছিলে না। গতকাল সন্ধ্যা পর যখন আমি আকাশে তাকাই তখন
দেখি একটা চাঁদ। খুব সুন্দর একটা চাঁদ, আমাদের চিরচেনা সেই বুড়ি চাঁদ। তবে
নগরের ভেতরে প্লাস্টিক সাইন আর গাড়ির লাইটের জন্য আমি জ্যোৎস্না তেমন ভালো
করে দেখতে পারি নি। জ্যোৎস্না দেখবো বলে হেঁটে হেঁটে চলে গেছি
বুদ্ধিমন্তপুর পার হয়ে নন্দীপুর বা তার থেকে দূরে! পেছনে কোনো তাড়া ছিলো
না। সারা অঙ্গে জ্যোৎস্না মেখে কি থেকে কি ভাবছিলাম; আচমকা নীরব এক
যন্ত্রণা উঁকি দিলো সকল হীরকতাকে তাড়িয়ে! প্রথমে একটু আশ্চর্য হলেও পর
ক্ষনে বুঝতে সমস্যা হয় নি যে তোমার জন্যই; আজ এই জ্যোৎস্নায় তুমি নেই বলেই
যন্ত্রণাটা ফিরে এসেছে! জ্যোৎস্নার সাথে তোমার সম্পর্ক, আমি জানি। অন্তত
আমার কাছে সেটা ধরা দেয়।
চকিতেই জ্যোৎস্না কেমন ম্লান হয়ে আসলো! আমি ভুলে যাবার বহু ব্যর্থ চেষ্টা
করেছি, কাজ হয় নি। বরং টেনে নিয়ে এসেছে রাতুলকেও। আর মনে হতে শুরু হলো এক
এক করে; আমরা কোনো নিয়ম রাখলাম না অথবা বলা যেতে পারে প্রতিশ্রুতি পিষ্ঠ
করে দিয়েছি নিজেদের স্বার্থের জন্য। আমাদের স্বপ্ন আজো জ্যোৎস্নায় ভাসে
কেবল আমরা দিক ভ্রষ্ট, আমরা নষ্ট হয়ে গেছি সময়ের কালো ধোঁয়ায়!
এখন আর এই সকল ভাবতে চাই না। ভাবিও না। সত্যি। কিন্তু ঐ যে জ্যোৎস্না হলে কেমন করে ভেসে উঠে সব...। ক্যামন খাঁ খাঁ করে!
গতকাল যখন বাড়ি ফেরার পথ ধরি তখন রাত অর্ধেক চলে গেছে। রাতের ভেতর
হাঁটতে আমার ভালোই লাগে। ঘুমিয়ে থাকা শহরে আবার ঢুকে যাই হেঁটে হেঁটে।
ঢুকে যাই আমার চার দেয়ালে। যেখানে রাখা আছে অসংখ্য পুস্তক, তার মধ্যে
খুঁজে বেড়াই "নিঃসঙ্গতার একশ বছর"। সেই বইটিতে হয় তো খুঁজে পাবো পূর্ণিমা
থাকা সত্ত্বেও কেনো বিপুল অন্ধকারে ডুব দিয়ে ছিলো এ নগর।





লেখাটা প্রথমত ভালো লাগলো।
আপনি সংখ্যাবাচক শব্দগুলোকে সংখ্যাতেই প্রকাশ করেছেন। সাধারণত গদ্যে 'একটা' 'তিনটা' এরকম লেখা হয়। আপনি লিখছেন '১টা' '৩টা'। আশির দশকের লিটল ম্যাগ গল্পীরা এরকম লিখেছেন কিছু। সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ বা সেলিম মোরশেদের গল্পে পেয়েছি। আরো হয়তো কেউ কেউ লিখেছেন, এ মুহূর্তে মনে পড়ছে না। আপনার কোনো নিজস্ব ব্যাখ্যা থাকলে জানতে চাইছি। স্রেফ জানার জন্যই, আর কিছু না।
কিন্তু একশ বছর আবার বানান করে...আমি আপনার মন্তব্য পড়ে একটু কনফিউজড হয়ে গেলাম। এতো খুঁটিনাটি হিসাব করে লেখে সবাই!
হুম লেখে, এতো খুঁটিনাটি হিসেব করেই লেখে। ছোটগল্পের বা কবিতার প্রতিটা শব্দ এমনকী যতিচিহ্নও প্রশ্নসাপেক্ষ হইতে পারে। খুব খিয়াল কৈরা। সংখ্যাবাচক শব্দ নিয়ে একসময় খুব হৈ চৈ হইছিলো। কারো কারো মতে এটাই সত্যি প্রয়োগ।
তো এজন্যই আমি লেখকের ব্যাখ্যাটা জানতে চাইছিলাম
বস। কোনো দশকের কাউকে মাথায় রেখে এমন করে লেখা না। আসলে আমি এই সংখ্যা (১) ঢুকিয়েই লিখতাম। তাই মাঝে মধ্যে এখনো অঅগের অভ্যাসটা ঢুকে পরে! অঅর এটাকে অনেকে ইজি ভাবে নেয় না, বিশেষ করে ব্লগে (অন্য একটা ব্লগে আজকে এই বিষয় নিয়েই অনেকে বলছেন)। ব্লগ কে দোষ দেই; ছোট কাগজে লিখলে মন্তব্য করার সুযোগ থাকে না, ব্লগে লিখলে সেটা থাকে। আর ভুল গুলোও শুধরে নেয়া যায়।
ধন্যবাদ বস।
এই যাহ্, আমি তো ভাবলাম আপনি সচেতনভাবেই লিখেছেন। তাই জিগাইছিলাম। আমি কিন্তু এটারে ভুল কই নাই। এর পেছনে অনেক শক্ত যুক্তিও আছে। সেগুলো অযৌক্তিকও না।
দশকের ব্যাপারটা উল্লেখ করছিলাম আসলে উদাহরণ হিসেবে। সম্ভবত আশির দশকের গল্প লিখিয়েরাই এরকম সংখ্যা দিয়ে লেখা শুরু করেছিলো গদ্যে।
ব্লগের তো মজাই এটা। প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়। অনেক ধন্যবাদ। আরো লিখুন
লেখাটা বিষন্ন করে দিল। 'নিঃসঙ্গতার একশো বছর' বইটা বিষন্নতম বই। তবে ওখানে কেবল বৃষ্টি বৃষ্টি অঝোর অবিরাম বৃষ্টির কথা চোখে ভাসে।
ধন্যবাদ।
নিঃসঙ্গতার একশো বছর বইটা কার লেখা? আমি একটা পড়ছিলাম গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের Hundred years of solitude। এইটা কি ঐটার অনুবাদ? নাকি আপনের কল্পিত কোন গ্রন্থ?
আর হ্যা লেখাটা ভালো লাগলো...
আমি মার্কেজেরটা আন্দাজ করছিলাম পড়ার সময়...
মার্কেজেরটা পড়তে গিয়াতো নিঃসঙ্গতা এতো প্রকটভাবে আসে নাই আমার এর লেইগা বিকল্প চিন্তা আসছিলো আমার...
প্রিয়তে নিলাম সোহাগ। কোথায় যেনো হৃদয়টাকে ছুঁয়ে গেলো। তোমার কবিতাতো প্রায়ই পড়ি ফেসবুকে, শুধু বলবো "কীপ আপ দি গুড ওয়ার্ক"
অনেক ধন্যবাদ আপু।
ভাল্লাগছে
অদ্ভুত মায়া মায়া একটা লেখা। মন খারাপ করা লেখা তবু ভাল লাগলো।
আপনি দেখি সত্যি সত্যি সবগুলো পড়তেছেন বিষণ্ন বাউল? ধন্যবাদ এই অদমের ছাইপাশ পড়ে মন্তব্য করার জন্যে।
এবি তে আসছি তো খুব বেশি দিন হয় নি। সবসময় মনে হয়, না জানি কত্ত কত ভাল ভাল লেখা পোষ্ট হইছে আমি আসার আগে।
তাই, কারো লেখা পড়ে খুব ভাল লাগলে তার আগের লেখা গুলো পড়ে ফেলার চেষ্টা চালাই।
নিওয়ে, কবি লেখক রা এত বিনয়ী হতে নেই!
মন্তব্য করুন