বাংলার মুখ
বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটা জন্মের সময় থেকেই সংখ্যালঘু হিন্দুরা নির্যাতন, হত্যা, লুন্ঠন, জ্বালাও পোড়াও, ধর্ষণের শিকার হয়ে এসেছে। ১৯৭১এ এই দেশে হিন্দুর সংখ্যা ছিল ৩৭%, স্বাধীনতার ৪১ বছর পর তা এসে দ্বাড়িয়েছে ৯% এ। দেশ স্বাধীন হল সেক্যুলার দেশ কল্পনায়। সেটা কল্পনাই রয়ে গেল। যাঁরা স্বপ্ন দেখেছিলেন তাঁদের সরিয়ে দেয়া হল ষড়যন্ত্র করে। ৭১এর বিরুদ্ধ বিল্পবের লোকেরা ক্ষমতায় পৌছে গেল। তাদের স্বপ্নে মুসলিম রাষ্ট্রের পতাকা। কিন্তু তারা দেখেনা তাদের মুসলিম রাষ্ট্রের বর্তমান অবস্থা। হিন্দু তথা সংখ্যালঘুদের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য এরা দায়ী।
আরো এক দল আছে। সেটা আওয়ামীলীগ। কি করে? একটা বাচ্চাও জানে যে সাইদির ফাঁসীই হবে। এবং কারা সবচেয়ে বেশী আক্রান্ত হবে তাও দুর্বোধ্য কিছু না। কিন্তু লীগ সরকার জামায়াত-বিএনপির এই দক্ষযজ্ঞের বিরুদ্ধে কোন প্রস্তুতি নেয় নি। হাসিনা তোমার যোগ্য নেতৃত্বের গুণ এটা। আর বিএনপির সাপোর্ট জামায়াতকে আরো বেশী করে শক্তিশালী করে। শুধুমাত্র সড়ক অবরোধের নামে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে একই কায়দায় দেশের ১০টি জেলার প্রধান সড়কের পাশের প্রায় ২০ হাজার ছায়াবৃক্ষ ধ্বংস করেছে জামায়াত-শিবির। এইসব ঘটনা আমাদের কাছে পরিষ্কার সুত্র দেয় যে এই দেশের প্রতি কোন মমত্ব জামায়াতের নেই। নেই বিএনপিরও, সেই সাথে দেশের প্রতি কতটুকু মমত্ব লীগ সরকারের আছে তাও এখন প্রশ্নবিদ্ধ। তাছাড়া এই সরকারের আমলে বিভিন্ন সময় ঘটে যাওয়া সংখ্যালঘু হামলার ঘটনার কোন বিচার তারা করে নাই।
নিউজে দেখলাম তিনটা গোয়েন্দা সংস্থার আগাম বার্তা থাকা সত্ত্বেও সরকার সময়মতো প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে জামায়াত-শিবির নির্বিঘ্নে সহিংসতা চালিয়েছে। এই ব্যর্থতার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দায়ী করে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এই নোটিশ ফোটিশ দিয়ে দায় এড়াতে পারবে না লীগ সরকার। সর্বশেষ ব্লগের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার জন্য ব্লগারদের ব্যক্তিগত পরিচয় ও তাদের ব্লগের আরকাইভ দেয়ার জন্য বিআরটিসি বিভিন্ন ব্লগ কতৃপক্ষকে নোটিশ নিয়েছে।
আজকের আমার এই পোষ্টের মূল উদ্দেশ্য নিচের লেখাটাঃ
এই পোড়া মুখ যে আমি আর সইতে পারি না
এই জোড়া হাতের আর্জি কি খোদার দরবারে যায় না?
ক্ষয়ে যাওয়া এই সিঁদুর কি সাখ্য দেয়না সংখ্যালঘুর জন্মপাপ
এই সমুদ্রনিমগ্ন আঁখি আমাকে জানায়
ইতিহাস থেকে ইতিহাসে ধর্মলেবাসে ধর্ষকাম ঘোড়সওয়ার
আজো দাপিয়ে বেড়ায়।
এই পোড় খাওয়া কালো মুখেরা -
কোন অপরাধ করেনা
কোন রাজনীতি করেনা
ভোটের হিসাবে গরমিল করেনা
তোমার মত সিঙ্গাপুর চিনেনা
প্রাসাদে তাদের বাড়ি হয় না
প্রমোদ ভ্রমনে হাওয়াই যায় না
দুবেলা আহারের তরে কাজ করে গতর জ্বালিয়ে
দিন শেষে তুলসী তলায়
দুই একটা প্রদীপ জ্বালায়
নিরাপদে থাকার আশায়।
হায় তাদের ঈশ্বর যখন তখন মাথা কাটা যায়
হায় তাদের বোনেরা মেয়েরা ধর্ষিত হয়ে যায়
তাদের বিশ্বাস নষ্ট, তাদের দর্শন নষ্ট
তাদের জন্মমাত্রই পাপ, তাদের জীবন নষ্ট।
আমি যে ভেসে যাই নীল কান্নার গাঙে
যখন মায়ের করুণ মুখ ফুটে ওই আর্তের গালে।
যখন তার বিশ্বাসের শাঁখাপলা ভাঙতে হয়
ভেঙে যায় আবহমান বাঙলার অসাম্প্রদায়িক স্বপ্ন,
খসে পড়ে প্রীতির শতাব্দীপ্রাচীন ভবনের পলেস্তরা
আঁধারের কষ্টের বুকে জেগে ওঠে কালো আলখেল্লার প্রেতাত্মারা
টুটি চেপে ধরে জ্ঞানমূর্খ মানবের নিশ্চুপ সম্মতির।
কখনো নিভেনা দরিদ্র সংখ্যালঘুর পোড়া ভিটে আগুনের শান
সে আগুনই পুড়িয়ে দেয় তোমার ঘরের কোরআন।
সভ্যতার পৃথিবীতে কে কবে কার পিতামহ
কোন ধর্মের হয়েছে কেউ জানে না
তবু মানব ধর্মের নামে তুমি মানব পোড়াতে পার না।
জনবৈজ্ঞানিক যে তথ্যটি উপস্থাপন করেছেন তার সাথে বহুমাত্রিক চলক সম্পর্কিত। রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি সব মিলিয়েই নেতিবাচক প্রবণতা তৈরি হয়েছে। তবে মোটাদাগে এর দায় অবশ্যই রাষ্ট্র কে নিতে হবে। রাষ্ট্র মানে তো বিমূর্ত কিছু নয়; ফলে যারা বিভিন্ন সময়ে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তাদের এ দায়। আমার এক সাবেক সহকর্মী সেদিন খুব দু:খ করে বল্লেন, এক পক্ষ মনে করে হিন্দুরা আমাদের ভোট দেবে না। সুতরাং নিপীড়ন দিয়ে যতখানি চাপে রাখা যায়। আরেক পক্ষ মনে করে রিজার্ভ ভোট ব্যাংক। চাপে থাকলে, নিরাপত্তাহীনতায় থাকলে এ ভোট ব্যাংক চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হয়ে থাকবে। এ প্রক্রিয়াতে যাদের পাশে দাড়াবার কথা কেউ পাশে দাঁড়ালো না। দাঁড়াতে পারলো না। এটা আমাদের সম্মিলিত লজ্জ্বা।
শুধুমাত্র ধর্মীয় পরিচয়ের জন্য কাউকে নিয়ে রাজনীতি করাটা খুবই গর্হিত কাজ।
কিছুই যেন বোলার নেই মন খারাপ করা ছাড়া!

লেখা ভাল লেগেছে। হাতজোর করে কাননার ছবিটা কষটকর
(
মন্তব্য করুন