নীল তারা
মাঝে মাঝে ভাবতে ইচ্ছে করে যদি ঐ আকাশের নীল তারাটা খসে পড়ে কোনদিন তবে এই মর্তবাসীদের মধ্যে কোন বিচলতা দেখা যাবে কী না? আমার মনে হয় হবে না, বরং অথযা কেউ যদি লক্ষ্য করেই ফেলে তবে বিশ্বলোক হয়ত তাকে পাগল বলে ধিক্কার দিতে দিতে ছুটে চলবে অলীক পানে। আর ঐ বেচারা হয়ত বিশ্ববাসীর দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে থাকবে আর ভাববে, 'বোকা লোকগুলো সময়ের মহাশূন্যে দিব্যি ঝাঁপিয়ে পড়ে মন নামক বস্তুটার আত্নহনন করছে। অথচ দিগন্তের ওপারে তাকিয়ে নীল তারাময় এই মধুক্ষণটা দেখার এক মুর্হূত অবকাশ করতে পারল না। কিন্তু ঘড়ির কাটা যদি মিনিট দশেকের জন্য থেমে যায় তো তারাই দুনিয়া জুড়ে হুলস্থুল ফেলে দেবে। কী ব্যস্ততা! তাদের জন্য একফোঁটা আফসোস।
মর্তবাসী হয়েও আজকাল এই মর্তবাসীদের দিকে তাকিয়ে একটু শান্তি পাই না, কেমন অদ্ভুত লাগে। অবিরাম ছুটতে ছুটতে মানুষগুলো কখন যেন মহাকাশযানের মত যান্ত্রিক করে তুলেছে নিজেদের দিন প্রবাহ। সামনে বিস্তর কাজ, হাতে সময় অল্প আর পিছনে অতীতের দৈন্যতা। জীবন যন্ত্রণায় বুদ্ধিহারা লোকেরা তাই গা ভাসায় গড্ডলিকা প্রবাহে। তাদের এখানে এই, সেখানে সেই। আজ এখানে তো কাল ঐখানে। দাড়াইবার সময় কোথায়? জীবন দৌড়ে সামনের আর পিছনের প্রটোকলে পড়ে প্রাণ আজ দিকহারা। পেছনের আধার দেখে আলোর খোঁজে দৌড়রত বেচারা পাশে তাকানোর সময় আর কোথায় পায় যেখানে ঐ নীল তারাটার বাস কিংবা সাত রংয়ের রামধনুটার জন্মস্থল অথবা একটা গন্ধহীন দুর্লভ পুষ্পের উপর একটা সুন্দর প্রজাপতি। তাদের জন্য দুঃখ, পৃথিবী অনেক কিছুই ছিল তার জন্য অথচ তার ভাগে বরাদ্দ রইল শূন্য!
যাদের অবস্থা এই দুঃসময়ের র্ঘূণি পাকের বৃত্তশালায় তাদের দলে আমি নাই। আমার মত লোক থেকে ভিন্ন, রং চোরা আমি নই তবে রংয়ের রঙিন দুনিয়ায় বড় অপক্ব, সব সাধারণ যেখানে পরিধিময় সেখানে আমার বিচরণ সীমিত। আর সময়ের বেলায় আমার কাছে তার হিসেব অসীম। বিশ্বলোকে যার কাছেই এর হিসাব সীমিত তার কাছেই যত ব্যস্ততা, যত ভ্রান্তি আর কাজের গড়বড়তা। যার সময়ের হিসেব অসীম তার বৃত্তে কালের যাত্রা গতিময়, কাজের র্কাযকারিতা নিরবিচ্ছিন্ন, প্রাণের তৃপ্তি দিপ্তিময়। তো কী দরকার এই অসম বিষয়টায় গা ভাসানোর। অবশ্য মতগুলো শুধু আমারই জন্য।
তো এভাবেই চলে যাচ্ছে দিন নিমর্ম দহনে, তবু প্রাণে বেজে চলে করুণ বেদনা কথা। কে জানে কী হচ্ছে এই ধরাধামে? এক সপ্তাহ হল আমার মামা মারা গেলেন, লোকটা এই দুনিয়া নিয়ে এত ব্যস্ত ছিলেন যে হয়ত নিজের দিকেও এক পলক তাকানোর সময় হাতে রাখত না। কিন্তু যাওয়ার সময় তো পেলেন মাত্র দুই টুকরা কাপড়! তবু কেন যে মানুষেরা এত এত এত এবং আরো বলে দৌড় করে, নিজেরাই জানে। যাক, সৃষ্টিকর্তা উনার সহায় হোক।
২১ মাঘ, ১৪২১ বঙ্গাব্দ।
এই সহজ কথা আমরা বুঝি না বলেই তো এত সমস্যা,এত যন্ত্রণা ।

সুদিন আসবেই সামনে!
এই সুদিন নাম ট্রেনটার অপেক্ষাতেই আছে কিন্তু কবে নাগাদ যে স্টেশনে এসে পৌঁছাবে এটাই বুঝতেছি না!
সুদিনের অপেক্ষায় দিন গেল।তবে এখনো বিশ্বাস করি খুব বেশি দূরে নয়।
মন্তব্য করুন