স্মরণীয় সময়: বাংলাদেশের জয়
বিশ্বকাপের পর আর মাঠে যাওয়া হয় নাই... মধ্যে বিপিএল গেল... ক্যান জানি মন টানলো না ... খুব বেশী যে খেলা দেখি তাও না... মাঝে মাঝে ঢু মারি স্টেডিয়ামের পথে... বাঙালী জাতীর আনন্দের জায়গা খুব কম... মাঝে মাঝে দু/একটি ম্যাচে জয় আমাদের সত্যই আনন্দীত করে... উদ্বেলীত হই নতুন আশা নিয়ে। ফুটবলতো গেছেই... ভরষার জায়গা একটাই... ক্রিকেট। হকি নিয়ে কিছু করার সুযোগ ছিল... আমাদের বদমাইশ কর্মকর্তারা সেইটারেও খাইছে...
সরাসরি সাক্ষাৎ সেতো কবেই শেষ... ফোনাফুনিও শেষের পথে... এখন নেটানেটি’র যোগাযোগ মাধ্যম চলমান... দিন যে কৈ যাইতাছে কে জানে ... এত কিছুর পরও মাঠে বসে খেলা দেখার আবেদন একটুও কমে নাই। মাঠে ঢুকলেই মনে হয় পুরা মাঠটা চোখের সামনে চৈলা আইছে... সব কিছুই চোখের সামনে ধরা দেয়... তয় ঈমান... ঘড়ে বইসা টেলিভিশনে এই উত্তাপের অনেকটাই ম্লান। তো যা বলছিলাম... আধুনিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক/ব্লগ এ এক আজব জিনিষ... বন্ধুগো কাছে খালি “চাই” বইলা দুই কলম লেইখা ছাইড়া দেই... রাজন ফোন্দেয়...
রাজন: ভাই টিকেট পাইছেন?
আমি : না
রাজন : খারান দেহি কি করন যায়...
অনেক কাঠখড় পুরিয়ে আমাদের ব্লগার ভাইডি রাজন ঠিকি ম্যানেজ কৈরা ফেলে... উইপ্রে আন্তে যাওয়ার পথে ৪খান টিকেট সংগ্রহ করি... আসমানের চান হাতে পাই ... বাংলাদেশের খেলা বৈলা কথা
যাস্ট ১:১৭ মিনিটে মেইন গেট পার হয়ে স্টেডিয়ামের নিচের গেটে নিরাপত্তা প্রহরীগো লগে বাতচিত। বিশ্বকাপের মত হাই সিকিউরিটির খেলায় হেড ফোন নিতে পারছি... কিন্তু এখন দিব না ... খালি কি তাই লগে একটা লিপজেল ছিল সেইটাও
( ... দিলাম বিসর্জন ... অবশ্য কিছু করার ছিল না
... পরে একজন জানাইলো এই হেডফোন দিয়া আনসার ব্যাটা গান শুন্তাছে
। তয় একটা বিষয় লক্ষনীয় ছিল... প্রতিবার বিভিন্ন কোম্পানীর ৪/৬ এর প্লেকার্ড বিলানি হইতো... এইবার তেমন কিছু দেখলামনা...
২টায় যথারীতি খেলা শুরু.... টসে নির্ধারিত বাংলাদেশের বোলিং এবং ভারতের ব্যাটিং... বলিং শুরু... বল নিয়া ভো... দৌড়... লগে স্টেডিয়ামের দর্শকরাও... হোওওওও করে বোলারের পক্ষে সমর্থন... শেষে হাত্তালিতে শেষ... পরবর্তী বল... আবার... আবার.. আবার... এভাবেই চলে বলারদের সাথে দর্শকদের সহযোগীতা...
এশিয়া কাপ: বাংলাদেশ ভারত ম্যাচ
এশিয়া কাপ: দর্শকদের একাংশ
এশিয়া কাপ: দর্শকদের উৎকণ্ঠা
ঘটনা ১: আমাগো পেছনের সারিতে কয়জন বৈদেশি বইছে ... বাংলাদেশের জার্সি পইরা... গালে বাংলাদেশের পতাকা আকা... পয়লা খেয়াল করি নাই... মনে হইছে পিছনে কেউ রেডিউ শুন্তাছে... তাও ইংরেজি কোন চ্যানেল... বৈদেশিরা RJ’র কনটিনিউ টকটক কৈরা যাইতাছে... পুরাই মাথা ধরার অবস্থা... ভুল ভাঙল পিছনে চাইয়া... বৈদেশীরা টকটক করতাছে বদলুকজন হুদাই বাঙালী মেয়েদেরকে টকেটিভ কয় ... এরাতো এক ডিগ্রী বেশী
ঘটনা ২: গ্যালারীতে মারামারি লাগছে... একজনের সিট আরেকজন দখল করছে। যিনি দখল করছে উনি আবার কর্তৃপক্ষের লুক... মাঠে বাংলাদেশের দুই জন ফিল্ডার চাইয়া চাইয়া ঘটনা বোঝার ট্রাই দিতাছে... দর্শক্রা খেলোয়ারগো হাত নাইড়া বুঝাইতাছে যে, কিছু হয় নাই ... তুম্রা চিন্তাইও না... মন্দিয়া খেলাধুলা করো। তো যেখানে মারামারি লাগছে সেইখানে পুলিশ আর এশিয়া কাপ ম্যানেজম্যান্টের কুতুব্রা আইছে মিলমিশ করর্তে ... মিলমিশ শেষে দেখা গেল সিট দখলকারীরে ঘুষি দিয়া রক্ত বাইর কৈরা দিছে টিকেটওয়ালা ... পেছন থিক্কা একজন কইলো “আহারে... মাইর দিছে দিছে... ঘুষি দিয়া সানগেলাশটা ভাঙ্গন ঠিক হয় নাই”
ঘটনা ৩: কয়েকজন ভারতীয় আমাদের কাছেই বসছিল.... ব্যাপক লাফালাফি ঝাপাঝাপি... বাংলাদেশের ইনিংসের টাইমে তাগো খুজতে যাইয়া দেখি কেউ নাই ... এইডা খুউপ অন্যায়
... তাগো কাছে যাইয়া বাংলাদেশ বাংলাদেশ করার সুযোগ নষ্ট হইল
ঘটনা ৩: লাঞ্চ করতে যাইয়া দেখি খাওনের দাম চারগুন... তাও রক্ষা ... বিশ্বকাপে তো খাওনই পাই নাই ইভেন পানিও না .... পুরা কারালার ময়দান হইছিল ... দর্শকগো কথাবার্তায় কান পাতি...
এক পক্ষ: শচীনের আউট জরুরী... সেঞ্চুরী করতে দেওন যাইবো না...
অন্য পক্ষ: শচীনের সেঞ্চুরী করার ভাল... শচীনের দিনে ভারত হারে... ঘটনা সত্য প্রমানিত হইছে
ঘটনা ৪: সাকিব ধুম পিটানি দিতাছে... গ্যালারী গরম... ব্যাপক কোরাস... বাংলাদেশ বাংলাদেশ শব্দে মিরপুরের আকাশ বাতাস প্রকম্পিত... এরমধ্যে সাকিব আউট... থার্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় সারা স্টেডিয়াম... পিনপতন নিস্তব্দতা গ্যালারিতে... হার্টবিট শোনা যায় এমন অবস্থা... অপেক্ষা... অপেক্ষা... অপেক্ষা... শেষ হয় না... থার্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের বিলম্ব দেখে আশায় বুক বাধা শুরু হইতেছে... কনফিউশনে ব্যাটসম্যান্রা ফেভার পায়... ওহ নোওওওও... বিমর্ষ সব্বাই
ঘটনা ৫: মুশফিক ফর্মে... ৪/৬ এর বন্যা আবার শুরু... সব্বাই ধইরা নিছিলো যে সাকিব শেষ তো ম্যাচ শেষ... শেষ ৫ ওভার টেনশনে সব্বাই দাড়াইয়া... সে কি চিৎকার... এই ফিলিংস শুধু স্টেডিয়ামেই সম্ভব।
তবে এইবার DJ'র উপর বিরক্ত হইছি... পাব্লিক হাতের কাছে পাইলে ধৈরা থাপ্রাইতো... ওভার গ্যাপে ইংরেজী অথবা আননোন বাংলা বাংলা ব্যান্ডের গান বাজাইছে... যাতে পাব্লিক রেসপন্স নাই বললেই চলে... তার মধ্যে আইপিএলের মিউজিক থিম বার বার প্রচারের কারনটাও ঠিক বুঝি নাই... এইটা কি আইপিএলের খেলা ছিল? অথচ বিশ্বকাপের টাইমে জনপ্রিয় বাংলা ব্যান্ডের গানের ১/২ লাইন বাজানো হইছে প্রতি ওভার গ্যাপে... আর পাব্লিক রেসপন্সও সেইরম ছিল...
সবশেষে... এক অসাধারণ দিন পার করলাম ... একটা ইতিহাসের সাক্ষী... শচীনকে ১০০তম সেঞ্চুরীর জন্য অভিনন্দন জানাই ... আর বাংলাদেশ? নতুন কইরা আর কি কই...“সূর্যদয়ে তুমি... সূর্যাস্তেও তুমি ও আমার বাংলাদেশ প্রিয় জন্মভূমি...”
এই পোস্টটা সকালে একভাবে লিখছিলাম... পোস্ট দেয়ার আগেই হওয়া ... তবে মডু/ডেভুর বিচার চাইনা ... কারণ তাগোর কোন দোষ নাই... ভুলে আমিই ব্রাউজার ক্লোজ কইরা দিছিলাম
এই জয়ের জন্যই টিমটারে আমি মাথায় তুইলা রাখুম সারা জীবন
আমার এক বন্ধুতো সাকিবরে বিয়া করতে চাইছে
সেই বন্ধুর নাম কি রনি?
কাহিনি কি সত্য নাকি রনি!
পুরা নাম আশরাফুল ইনসান

আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে
খেলাতো লাইভ দেখি নাই, পরে এফবি'তে লিঙ্ক পেয়ে দেখলাম! আরে, তাতেই যেই মজা লাগছে, আপ্নের মাঠে যাওনটা তো হাজারগুন দারুন হবারই কথা!
মিছিলে চিল্লাইলেন কেমুন, ভাস্কর'দা যে বল্লো মিছিলে পড়ছিলো।
লেখা পুরাই মিল্যা গেছে আমার সাথে!
আপনের কাছাকাছি ই ছিলাম।
সাউথ ক্লাব হাউজ আপ ব্লক বি ৪!
খেলুয়ার দুইটা ছিল সাকিব আর মাশরাফি।
ইন্ডিয়ার কয়েকটাও উঁকি দিতাছিল!
মিয়া... আপ্নে তো আমার সামনেই ছিলেন... ক্লাব হাউজ.. ব্লক বি... এফ নাম্বার লাইন... বাকিটা ফটুক দ্রষ্টব্য
ছিলাম একটা বিয়ের দাওয়াতে। লোকজন খাওয়া ফেলে, আর ওয়েটাররা সার্ভিং থামিয়ে হা করে টিভির দিকে তাকিয়ে শেষ কয়েক ওভার। আর খেলা শেষ হবার সাথে সাথে সবার কি উল্লাস। ভুলতে পারবো না অনেক দিন...
এমন খেলা কি বার বার আসে? খাওনতো পরেও খাইতার্বা
...
ছবি আরো দেয়া উচিত ছিলো।
মুফাইলে এই কয়টাই তুলছি
যা লিখছেন না, পুরাই পাঙ্খা !! জটিল ! আপনারে ধারাভাষ্যে বসায়া দেওন যায় কিনা চিন্তাইতেছি ।
চালায়া যান, জাফর উল্লাহ্ র টাইম শেষ হইলে আপনারে আর পায় কে??

দোয়া রাইখেন বস...
আপ্নাগো দোয়া পাইলে সবি সম্ভব
রাজন পোস্ট না দিলেও টিকেট ম্যানেজ কর্তারে , জানলাম।
মাইয়ারা টকেটিভ তুমারে কে কইছে? আর পুলারা কি?
মারামারি করুক আর যাই করুক বাংলাদেশের বিজয়ে পুরা বাঙ্গালী জাতির মনে আনন্দের ঢেউ। এমন যেন থাকে সবসময়।
তুমারে ধইন্যা, মাঠে গিয়া বিজয় নিয়ে আসলা। আরেক্টা ধইন্যা এরম উমদা এক্টা লেখার জন্য।
সরি মাইয়ারা টকেটিভ না
... মাইনা নিলাম
তুমি মিষ্টি খাওয়াইতে চাইছিলা ... কৈ? কপে?
আপনে লিপজেল নিয়া কী করেন?
এই প্রশ্নটা আমিও জিগাইতে গিয়া ভুলে গেলাম।
ঘটনা কোনখানে বস?
প্রথমে যেইখানে বইছিলাম ... দুই পাশে দুই মেয়ে বসছিল.. ডরে চইলা আইছি
লিপজেল নাই বইলা
লিপজেল হারাইছেন বুঝলাম, কিন্তু মেয়েদের ডরাইলেন কেন?
মাঠে গিয়া খেলা দেহিনা বহুদিন... আপনের কল্যাণে মাঠের একটু স্বাদ পাওয়া গেলো। ধইন্ন..
লিপজেলের কারনে মন খারাপ কইরেন না...
মাঝে মাঝে মাঠে যাইয়েন... ভাল্লাগবো
ধইন্যা
খেলা আর লেখা দুইটাই উপাদেয় হৈছে! শ্রীলংকার লগে খেলার দিন মাঠে যাইয়েন বস। একখান ফাটাফটি জয় ছিনায়া আনা চাইই চাই
ধন্যবাদ বস...
শ্রীলংকার দিনের টিকেট আর পাওয়া যাবে না বস
... বাংলাদেশ টিম এখন ফর্মে
চিন্তাইয়েন্না বস... জয়ী আম্রা হবই ... ইনশাল্লাহ
লেখাটা পইড়া মজা পাইলাম। । ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ
ইতিহাসের স্বাক্ষী হৈলেন
হ আপা... আপ্নে গেছিলেন?
লীনাদি গেলেই হারবো।উনার না যাওয়াই ভালো।
লেখা পইড়া পুরা খেলা চোখের সামনে দেইখা ফেললাম
টিকেটের টাকা দেও এইবার
শশুর ভাই কি কইতেছেন ...টাকা দিমু আমি...হিহ!
এখন থিকা আপনারে বাংলাদেশের সব ম্যাচে মাঠে পাঠানি দর্কার। এবি'তে একটা ফান্ড খুলুম কিনা ভাবতেসি।
আজকের ম্যাচের একটা ক্লাব হাউজ টিকেটের দাম ৫০০০ টাকা
অনেকদিন পর একটা ফুল গিয়ারের ব্লগ পড়লাম
মন্তব্য করুন