ভালোবাসা কারে কয়
টেনশন হচ্ছে?
- হুম
কেন?
- জানিনা
এতো বছর প্রেম করে, এতো চিন্তা ভাবনা করে একটা ডিসিশান নিলাম। আর তুই টেনশানে আধমরা হয়ে যাচ্ছিস। কেন? আমার উপর বিশ্বাস পাচ্ছিসনা?
- না
কেন? কি মনে হচ্ছে? বিয়ের পর আমি তোকে ফেলে চম্পট দিব?
- হুম
হা হা করে হেসে উঠলো রাতুল। তিতলী অবাক হয়ে ওর হাসির দিকে তাকিয়ে আছে। একটা মানুষের হাসি এতো সুন্দর হয় কিভাবে কে জানে?
- আমার মনে হচ্ছে বিয়ের পর তুই আমাকে আর ভালোবাসবি না। তখন শুধু অন্য মেয়েদের দিকে কুতকুত করে তাকায় থাকবি। আর সত্যিই যদি তাই হয় আমি কিন্তু তোকে জ্যান্ত মাটিতে পুঁতে ফেলবো।
এই কথা শুনে রাতুল আবারো তার ভুবন কাঁপানো হাসি হাসলো। আর তিতলী বিরক্ত হলো। এতো টেনশানের সময়ে একটা মানুষ এতো রিল্যাক্স থাকে কিভাবে কে জানে?
- ময়না, তোমার হাতটা একটু দিবা? ধরবো। শেষবারের মতো প্রেমিকার হাতটা একটু ধরে নেই। এরপরতো আর প্রেমিকার হাত ধরতে পারবোনা। কিছুক্ষন পর থেকে ধরতে হবে বউয়ের হাত।
তিতলী ভীষণ আবেগে তার হাতটা রাতুলের হাতের উপর রাখলো।
- মনে আছে তিতলী প্রথমবার যখন তুমি আমার হাত ধরেছিলে। তখনও আমরা ঠিক এইভাবেই রিকশায় বসে কোথাও যাচ্ছিলাম।
- হুম। আমার বাসায়। তুমি আমাকে পৌঁছে দিচ্ছিলে। আমার সবই মনে আছে।
- আমার হাত ধরতে তুমি খুব লজ্জা পাচ্ছিলে। ঘামে ভিজে যাচ্ছিলো তোমার হাত। আমরা দুজনে মিলে বেসুরো গলায় “পেহলা নাশা” গানটা গাইছিলাম। এখনো অবশ্য তোমার হাত খুব ঘামছে। তুমি নার্ভাস হয়ে যাচ্ছো।
তিতলী নার্ভাসভাব কাটানোর জন্য একটু হাসার চেষ্টা করতেই ওরা কাজী অফিসের সামনে চলে এলো। রিকশা থেকে নেমে কাজী অফিসে ঢুকতে যাওয়ার মুহুর্তে তিতলী বললো, চলোনা একটু চা খেয়ে আসি।
- কেন? তোমার কি ডিসিশানটা নেয়ার জন্য আরেকটু টাইম দরকার?
তিতলী হালকাভাবে হেসে বললো, না। আমার সাত বছরের পুরোনো প্রেমিকের সাথে শেষবারের মতো একটু চা খাওয়া দরকার।
চা খাওয়া শেষে ওরা কাজী অফিসে ঢুকলো। এবং পনের মিনিটের মাথায় রাতুল আর তিতলীর বিয়ে হয়ে গেল। বিয়ের পর থেকে তিতলী খুব লজ্জা পাচ্ছিল। সে রাতুলের দিকে তাকাতে পারছিলোনা। সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ছিপছিপে লম্বা এই ছেলেটা ওর স্বামী, এটা চিন্তা করতেই ও আরো বেশি লজ্জা পাচ্ছিলো। রাতুলও আর তেমন কিছু না বলে কাজী অফিস থেকে বের হয়ে একটা রিকশা নিলো ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে। রিকশায় বসে তারা অনেকক্ষন কেউ কিছু বললোনা। পরে রাতুলই নীরবতা ভেঙ্গে তিতলীর হাত দূটোকে খুব শক্ত করে ধরে বললো, “শোন মেয়ে, আমার এই জীবনটা আমি আজকে থেকে তোমার নামে লিখে দিলাম। আজকে থেকে তোমার সব কিছু দেখাশোনার দায়িত্ব আমার। তোমার ভাল লাগা, মন্দ লাগা, হাসি, কান্না, রাগ, ভালোবাসা সব কিছু। আমি থাকতে তুমি কখনো কষ্ট পাবেনা তিতলী। আমি তোমাকে কখনোই কষ্ট দিবনা। সারাজীবন বুকে আগলে রাখবো”।
তিতলীর চোখে পানি চলে এলো। সে বললো, “তুমি আমাকে এত ভালোবাসো কেন রাতুল? আমি আমার সারাজীবনের বিনিময়ে তোমাকে চেয়েছি। আমার আর কিচ্ছু দরকার নেই। আমি নামাজ পড়ে সবসময় তোমাকে চেয়েছি। এটাই ছিল সৃষ্টিকর্তার কাছে আমার একমাত্র প্রার্থনা। আমি আর কিছুই কোনদিন চাইবোনা। তুমি আমাকে ছেড়ে কখনো চলে যেওনা প্লীজ। আমি তাহলে বাঁচবোনা”।
-“না ময়না। আমি তোমাকে কোনদিনও ছেড়ে যাবোনা। কোনদিন কষ্ট দিবোনা। সারাজীবন বুকের মাঝে শক্ত করে ধরে রাখবো। এই যে ঠিক এইভাবে” বলে রাতুল তিতলীকে রিকশায় বসেই শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। আর তিতলী লজ্জা পেয়ে ওকে ছাড়ার চেষ্টা করতে করতে বললো, এই যে শুরু হয়ে গেলো গা ঘষ্টানী।
দুজনে খুনসুটি করতে করতে এক সময় ওরা ক্যাম্পাসে চলে এলো। এসে বেলালের দোকানে বসে চায়ের অর্ডার দিয়েই রাতুল প্রথম যে কথাটা বললো সেটা হচ্ছে, আমাদের বাসর কোথায় হবে? ওর মুখে এই কথা শুনে তিতলীর প্রায় ভিমড়ি খাওয়ার মতো অবস্থা। বাসর? মানে?
- আরে বাবা, পালিয়ে বিয়ে করেছি বলে কি বাসর হবেনা? হামলোগোকো হক বানতা হ্যায় ইয়ার।
- যাও। কোন বাসর টাসর হবেনা। বাসায় কি হবে সেই চিন্তায় আমি অস্থির। আব্বু আম্মুকে ম্যানেজ করব কিভাবে এই চিন্তায় আমার হাত পা কাঁপতেসে। আর তুমি আছো বাসর করতে ব্যস্ত।
- চিন্তা করো আর যাই করো বাসর আমার আজকেই করা লাগবে ব্যস। এখন তুমি বলো কোথায় করবো।
তিতলী সুন্দরভাবে হেসে বললো, “স্যার, আপনি আপনার বউকে নিয়ে কি গাছতলায় বাসর করবেন? আগে চলো বাসা ঠিক করি তারপর বাসর। আপাতত আমি বাসায় যেতে চাই, সবাইকে ঠান্ডা করতে চাই। তুমি আমাকে নামিয়ে দিয়ে আসো। আর তাছাড়া কালকে অফিস থেকে আমাকে ফিল্ড ভিজিটে যেতে হবে শ্রীমঙ্গল। সো আমার প্যাকিং করতে হবে”।
- তিতলী, তুমি সবসময় এতো আনরোমান্টিক কেন বলতো? বিয়ের পর তুমি ফিল্ডে যেতে চাচ্ছো। আমার কি হবে, আমি এই কয়টা দিন কি করবো একবারও চিন্তা করেছো?
- বোঝার চেষ্টা করো রাতুল। বাসাটা একটু ম্যানেজ করে নেই। আর এর মধ্যে একটা বাসা ঠিক করি। তারপর তুমি যত খুশী আমাকে বকা দিও।
অগত্যা কোন উপায় না দেখে রাতুল মন খারাপ করে তিতলীকে বাসায় পৌঁছে দিলো। মন তিতলীরও খারাপ হচ্ছিলো কিন্তু ও সেটা বুঝতে দিলোনা। রাতুল মাঝে মাঝে বাচ্চাদের মতো কিছু আচরণ করে বলে ওদের সম্পর্কটা তিতলী সবসময় খুব ম্যাচিওর্ডলি হ্যান্ডেল করে আসছে। তাই মন খারাপ হলেও ও অনেক কিছু রাতুলকে আঁচ পেতে দেয়না।
পরেরদিন ভোর সাতটায় বাস স্টেশনে পৌঁছে গেলো তিতলী। তাকে সাড়ে সাতটার বাস ধরতে হবে। অফিসের কাজে সে দিন সাতেকের জন্য শ্রীমঙ্গল যাচ্ছে। টিকেট আগে থেকেই কাটা ছিলো তাই কোন রকম ছুটাছুটি না করে সে চুপচাপ একটা বেঞ্চে বসে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো। একটু পরে হঠাত একটা কোনায় চোখ পড়তেই দেখলো রাতুল আরেকটা বেঞ্চে বসে তার দিকে তাকিয়ে হাসছে। এতো অবাক হল তিতলী যে আর বলার মত না। খুশীতে তার চোখে পানি চলে এলো। সে এগিয়ে রাতুলের কাছে গিয়ে বললো, কি ব্যাপার?
- “আমার বউকে ছাড়া আমার এক মুহুর্ত যেখানে কাটতেসে না সেখানে সাত দিন কিভাবে কাটবে মহারাণী? আমি ডিসিশান নিয়ে নিয়েছি, পৃথিবী উলটে যাক, বাট আই এ্যাম গোয়িং উইথ ইউ। তোমার পাশের সিটের টিকেটও আমি অলরেডি কেটে ফেলেছি”।
রাতুলের এই সারপ্রাইজ দেয়ার অভ্যাসটাই তিতলী সবচেয়ে বেশী ভালোবাসে। সারপ্রাইজ দেয়ার কোন একটা সুযোগ সে মিস করবেনা। সাত বছর ধরে ওরা একে অপরকে চেনে। এর মধ্যে রাতুল ওকে কোন না কোনভাবে সারপ্রাইজ দেয়নি এমন দিন খুব কম। তিতলী সারপ্রাইজড হতে খুব ভালোবাসে বলেও হয়তো ও এই কাজটা আরো বেশি বেশি করে। মনে মনে তিতলী রাতুলের দিকে তাকিয়ে আবারো একবার বললো, “আমি এই পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি তোমাকে”।
তারপর তারা স্টেশনে বসে দুজনে দু কাপ চা খেয়ে গাড়িতে উঠলো। গাড়ির দুলুনীতে তিতলীর ঘুম পেয়ে যায়। তাই সে গাড়িতে একটু ঘুমিয়ে পড়লেই রাতুল ওকে পঁচাতে থাকলো। এভাবে ওরা মজা করে, খাওয়া দাওয়া করতে করতে, একটু ঘুমিয়ে শ্রীমঙ্গল পৌঁছে গেলো। শ্রীমঙ্গল পৌঁছে তিতলী আর অফিসের ঠিক করে রাখা হোটেলে না উঠে পাহাড়ের চুড়োয় চা বাগানে ঘেরা খুব সুন্দর দেখতে একটা রিসোর্টে রাতুলকে নিয়ে উঠলো। রিসোর্টে পৌঁছেই খাবার খেয়ে তিতলীকে শ্রীমঙ্গলের ফিল্ড অফিসে চলে যেতে হল একটা জরুরী মিটিং এ্যাটেন্ড করতে। যখন সে ফিরে আসলো রিসোর্টে তখন রীতিমতো সন্ধ্যা পেরিয়ে এসেছে। রুমে ঢোকার সাথে সাথেই রাতুল বললো, চল ময়না তোমাকে একটা জায়গায় নিয়ে যাই। তাই বলেই সে তাকে নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে গেলো। গাড়িতে করে কিছু দূর যাওয়ার পর সে গাড়ি থামিয়ে তিতলীকে নামতে বললো। তিতলী নামার পর সে ওর চোখে হাত রেখে ওকে আস্তে আস্তে ঢালুর দিকে কিছুদূর হাঁটিয়ে নিয়ে গেলো। এরপর একটা জায়গায় এসে দাঁড়িয়ে আস্তে আস্তে চোখের উপর থেকে হাত সরালো। তিতলী দেখলো, সামনে জমাট বাধাঁ অন্ধকার একটা ঝোপ, নীচে বয়ে চলেছে একটা সরু নদী। আর সেই ঝোপের অন্ধকার ভেদ করে জ্বলছে লক্ষ কোটি জোনাকী পোকা। এতো সুন্দর দৃশ্য ও কখনোই দেখেনি। সে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে জোনাক পোকার দিকে। এবার রাতুল বললো, ময়না উপরে তাকাও। উপরে তাকিয়ে সে দেখলো, লক্ষ লক্ষ তারা তার দিকে তাকিয়ে হাসছে আর তার আলোয় নদীর পানির নীচের বালিও চিকচিক করছে। তিতলী মুগ্ধ হয়ে শুধু বলতে পারলো, ওয়াও।
রাতুল জিজ্ঞেস করলো, তুমি কি এখানে একটু বসবে? আমি দুই মিনিটের মধ্যে যাবো আর আসবো। ও রাজি হয়ে যাওয়াতে সে গেলো আর ঠিক দুই মিনিট পরে ফিরে এলো, হাতে একটা নীল পদ্ম। তিতলী খুব খুশী হয়ে নীলপদ্ম নিয়ে জিজ্ঞেস করলো, তুমি এটা কোথায় পেলে? রাতুল বললো, তোমার জন্য ম্যানেজ করেছি। আর তুমি যখন অফিসে গেছো আমি খুঁজে খুঁজে এই জায়গাটা বের করেছি। এখানে বসে তোমাকে ফুলটা দিবো বলে।
তিতলী শক্ত করে রাতুলকে জড়িয়ে ধরে বললো, ভালোবাসি, ভালোবাসি। রাতুল বললো, “আমি তোমাকে নীল পদ্ম এনে দিতে পারি, আমার জীবনটা তোমার নামে লিখে দিতে পারি শুধু তোমাকে কখনোই বোঝাতে পারিনা তোমাকে আমি কী পরিমাণ ভালোবাসি”।
এরপর ওরা রিসোর্টে চলে এলো। দুজনে খেলো। খাওয়ার পর বারান্দায় বসে মদের বোতল খোলা হল। তিতলীকে রাতুল বেশি দ্রুত খেতে নিষেধ করা সত্বেও সে খুব দ্রুতই চার পেগ শেষ করে পাচঁবারের জন্য গ্লাস তুললো। রাতুল কিছু না বলে ওর গ্লাসে আরেকটু মদ দিয়ে অধীর আগ্রহে তাকিয়ে থাকলো কি হয় দেখার জন্য। পাচঁ নাম্বার গ্লাস শেষ করে তিতলী বললো, রাতুল, আই থিঙ্ক আই এ্যাম ড্রাঙ্ক। শুনে রাতুলের সে কি হাসি! বললো, ও! রিয়েলি! নাও ইউ থিঙ্ক ইউ আর ড্রাঙ্ক। রাইট? বলে আর হাসে। তিতলীও কিছু না বুঝেই হাসে। এরপর রাতুল বললো, তোমার অনেক মদ খাওয়া হয়েছে আর খাওয়া লাগবেনা। লেটস ডান্স। এরপরে ওরা বেশ কিছুক্ষন মিউজিক ছেড়ে দিয়ে নাচলো।
পরেরদিন সকালেই তিতলীর অফিস। সে ঘুম থেকে উঠে রেডি হয়ে যখন বের হচ্ছে তখনও রাতুল ঘুমুচ্ছে। তিতলী আর ওকে ঘুম থেকে না জাগিয়ে কপালে একটা চুমু খেয়ে বের হয়ে গেলো অফিসের উদ্দেশ্যে। রাতুল ঘুম থেকে উঠে নাস্তা খেয়ে ঘুরতে বের হলো আজকে কোন জায়গায় নিয়ে তিতলীকে সারপ্রাইজ দেয়া যায় সেটা খোঁজার জন্য। ঘুরে টুরে বিকেল নাগাদ যখন সে রিসোর্টে ফিরে এলো তখন দেখলো সবাই বলাবলি করছে যে আজকে এখানে একটা এ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে। পাহাড়ী রাস্তায় গাছের সাথে বাড়ি খেয়ে একটা প্রাইভেট কার ঢাল বেয়ে খাদে পড়ে গেছে। প্রথমে সে ব্যাপারটাকে বেশি গুরুত্ব না দিয়ে রুমে ঢুকে গেলো, গোসল করলো, খাবার খেলো। এরপর তিতলীকে ফোন দিয়ে দেখলো যে ফোনে রিং হচ্ছে কিন্তু কেউ ফোন ধরছেনা। রাতুল ভাবলো তিতলী হয়ত মিটিংএ। এরপর সে বসে বসে টিভি দেখা শুরু করলো। অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে। তিতলী এর মধ্যেও আসেনি, ফোন বা মেসেজ কোনটাই দেয়নি বলে সে আবার ফোন করা মাত্রই ওপাশ থেকে একটা পূরুষ কন্ঠস্বর ভেসে এলো।
হ্যালো আপনি কে বলছেন?
- আমি তিতলীকে চাচ্ছিলাম। পুরো নাম তিতলী আহমেদ। উনি কি আছেন?
উনার নাম তিতলী কি না জানিনা। তবে উনার এ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে। উনার গাড়ি পাহাড়ের ঢাল বেয়ে খাদে পড়ে গিয়েছিলো। ড্রাইভার এবং প্যাসেঞ্জার দুজনেই স্পট ডেথ। উনার মোবাইলের ডিসপ্লে নষ্ট হয়ে যাওয়াতে কাউকে যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। আপনি উনার কে হোন?
- ও আমার স্ত্রী।
আপনি চলে আসুন এখানকার হসপিটালে। এক্ষুনি।
ফোনটা হাত থেকে ফেলে দিয়ে রাতুল মেঝেতে বসে পড়লো। এর মানে কি? কি বলছে লোকটা ?
সে তক্ষুনি হসপিটালে চলে গেলো। যেয়ে একটু খোঁজ নিয়েই জানতে পারলো এখানকার সবাই মোটামুটি দুর্ঘটনার কথা জানে। সবাই তাকে সাহায্য করার জন্য ব্যস্ত হয়ে গেলো। একটু ভেতরে গিয়েই দেখতে পেলো লোহার একটা খাটে তিতলীর নিথর দেহ পড়ে আছে। রাতুলের তিতলী। যার জীবনের এক এবং একমাত্র টার্গেট ছিলো রাতুলকে বিয়ে করা। রাতুল ওর মুখের উপর ঝুঁকে এসে ডাকলো, “তিতলী, এই তিতলী। ময়না, চোখ খোল। একবার তাকাও আমার দিকে। আমি আজকে আরো সুন্দর একটা জায়গা খুঁজে বের করেছি তোমাকে দেখাবো বলে। তুমি দেখবা না? তিতলী, আমি তোমাকে ছাড়া এক মুহুর্ত থাকতে পারিনা। তুমি এমন করতে পারোনা আমার সাথে। এতো বড় অন্যায় তুমি করতে পারোনা আমার সাথে। আমি তোমাকে যেতে দিবোনা। আমাকে এভাবে ছেড়ে যেতে আমি তোমাকে দিবোনা”, বলে রাতুল খুব কাদঁতে লাগলো।
তিতলীকে কবর দিয়ে রাতুল তার নিজের ঘরে ফিরে এলো। তার খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ বাকি আছে। এই কাজটাতে দেরি করলে চলবেনা। কাজটা তাকে খুব দ্রুত করে ফেলতে হবে। তিতলীকে ছাড়া বেচেঁ থাকা অর্থহীন। সে তার অর্থহীন এই লম্বা জীবন এতো সময় ধরে বয়ে বেড়াতে পারবেনা। তিতলীকে ছাড়া সেটা খুব ভারী হয়ে গেছে। আর তাছাড়া ওতো ভয় পাচ্ছে। মেয়েটা আবার অন্ধকারকে খুব ভয় পায়। “তোমাকে আর অপেক্ষা করাবোনা ময়না, তুমি ভয় পেওনা, এই যে আমি আসছি”, বলে রাতুল ছুড়ি দিয়ে তার হাতের রগের উপর জো্রে একটা টান দিলো।
বাহ আনন্দ বেদনার কাব্য।
থ্যাঙ্ক ইউ আপু
অনেক দিন পর এলেন । ভাল লাগছে । কিন্তু ওদের না মেরে কি গল্প শেষ করা যেতনা ? খুব খারাপ লাগছে ।
মরে যাওয়াই ভালো কাদের ভাই। বেঁচে থেকে লাভ কি বলেন?
মাইরা ফেললেন টপাটপ!
হুমম
পড়লাম। লেখক এ রকম খুনী হলে চলে?
খুনী হলে কি হয়?
হুমম
কি হইসে? মুখ কালো করে রাখসো ক্যান?
সর্বনাশ!!!!! সেই প্রেম আর নাই দুনিয়ায়।
সেটাতো জানি। কিন্তু চিন্তা করতে দোষ কি?
আমিও তাইই কই
স্বপ্ন দেখি আপু স্বপ্ন
মন্তব্য করুন