বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে.....
আয় বৃষ্টি ঝেঁপে
ধান দিব মেপে।
লেবুর পাতা, করমচা
যা বৃষ্টি ঝড়ে যা।
খেজুর পাতা, হলদি
মেঘ নাম জলদি।
বহুদিন পর এই ছড়া কাটলাম আজ। মন থেকে। আবহাওয়া খবর বলছে বৃষ্টি হবে। আকাশে মেঘ ভর্তি। তবু ঝড়ছে না কেন?
ঝড়লে তো আর ফুল দেখতে যেতে হত না। বাঙালীরা অনেকে মিলে সাকুরা ফুল দেখতে যাবে। গাছ ভর্তি সাদা অথবা গোলাপী ফুল। বাতাসে পাপড়িগুলো যখন ঝড়ে পরে সত্যিই সুন্দর লাগে।
কিন্ত????
আমি অসামাজিক নই আগেই বলে রাখি। তবে যাওয়ার পর সৌজন্য সাক্ষাত যেমন হবে:
কিছু ভাবি:- কি গো, আমরা তো ভাবলাম তুমি আসবেই না। যাক সময় তাহলে করতে পারলে। ভাল আছো তো?
কিছু ভাবি:- ঘটনা কি এত দেড়ি? একলা মানুষ এত দেড়ি করলে চলে? আমাদের বাচ্চা আছে সময় লাগে। তোমার এত দেড়ি কেন?
তখনই কোন ভাবি ঐ ভাবির মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বলবে:- বিয়ে করবা কবে? কত দিন বিয়ে খাই না। এখন না করলে আর কবে করবা? বয়স ৩০ পেরোলে?
(সবার হা হা হি হি চলবে তখন। গা টেপাটেপিও শুরু হবে।) আর তখন কেউ সিরিয়াস হয়ে বলবে:- দেশে যাও না কেন? আমরা যখন প্রথম আসি, শুধু মনে হত দেশের কথা। তোমার কি মনে হয় না?
যে ভাবির সাথে লাস্ট দেখায় এখনকার চেয়ে একটু চিকন ছিলাম:- কি গো, এমন মোটা হচ্ছো কেন? ডায়েট করো। একবার মোটা হয়ে গেলে আর চিকন হতে পারবা না। আহারে, দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা কেউ বোঝল না।
যে ভাবির সাথে লাস্ট দেখায় এখনকার চেয়ে একটু মোটা ছিলাম:- তুমি এত শুকাও কেমন করে? আমরা এত চেষ্টা করি এক কেজি ওজন কমে না। বরং বাড়ে। কি খাও তুমি? সারাদিন কি কি করো? ভাইবারে ম্যাসেজ করে পাঠিয়ে দিও।
এর মধ্যে সেই হাসির শব্দে কোন ভাইয়ের আগমন। আমাকে দেখেই:- আরে তুমি কখন আসলা? কোন খোঁজ খবর নাই। দেশে গেছিলা নাকি?
(এরমধ্যে আরও ভাইয়ের আগমন)
কোন ভাই:- তুমি এত কিপ্টা, দেশে গেলে টাকা খরচ হবে তাই দেশে যাও না, না?
এখানে পিএইচডিরত কোন ভাই:- পড়াশোনার কি অবস্থা? পিএইচডি করার ইচ্ছা আছে নাকি নাই? পড়াশোনা করবা সিরিয়াসলি। আর যদি পড়াশোনা করতে ইচ্ছা না করে বিয়ে করে সংসার করো।বাচ্চা মানুষ করো।
( মনে মনে আমি: আপনি তো পড়তে পড়তে বুড়া হয়ে গেলেন। ছেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া শুরু করে দিছে , এহনও আপনার পিএইচডি নেয়া হয় না। বেশি পড়া আদু ভাই)
উপরে আমি:- (তেলেতেলে মার্কা হাসি দিয়ে ) আর পিএইচডি। এখন যা পড়ি এটাই শেষ করি।
তারপর শুরু হয় অন্য আড্ডা।
ক ভাবি: খ ভাবি আপনার হাতের ব্রেসলেট টা কি নতুন কিনলেন নাকি? কোথা থেকে নিলেন?
গ ভাবি: আরে, ঠিকই তো। আগে তো দেখি নাই। কত দিয়ে নিলেন ভাবি?
ঘ ভাবি:- ............
ঙ ভাবি:- .............
.
.
.
শেষ পর্যন্ত ভাবি মুখ খোলে:- টুনির বাপে দিল ভেলেন্টাইনস ডে তে। এমনই ঘুরতে গিয়েছিলাম নতুন একটা মল মার্কেট হয়েছে না? ঐটাতে। আরও কত সুন্দর সুন্দর। সব আনকমন। আপনার ভাই এটা ধরেই বসে আছে। পরে ভাবলাম, টাকা যেহেতু সে দিবে তার পছন্দেই কিনি।
আর তখনই শুরু হবে অন্য ভাবিদের তাদের সোয়ামিরদের বিরুদ্ধে কথা। কে বিয়ের পর একটা থ্রি পিস ও দেয় নি। কে একটা স্বর্ণের কিচ্ছুও দেয় নি। ইত্যাদি ইত্যাদি।
এর মধ্যে কেউ আবার ঠোঁটগুলোকে হাঁসের মত করে ন্যাকা কান্না করবে করবে ভাব ধরে নিজের বর'কে টেনে আনবে। বলবে:- দেখ তো , এটা ভাইয়া ভাবিকে ভেলেন্টাইনস ডে তে গিফট করেছে। ভাইয়া কত রোমান্টিক। আর তুমি আমাকে একটা ফুলও দিলে না।
তখন কয়েকজন একসাথে বলা শুরু করবে। কেউ বলবে:- আবার ফুল টাকির বাপ তো মনে হয় জানেই না ভেলেন্টাইনস ডে কবে।
তাল মিলিয়ে কেউ:- যখন দেশে ছিলাম, ফোনে ঠিকই উইস করত। কাছে আছি তো, তাই এখন আর মূল্য নাই।
..........................................................................
...........................................................................
বেচারী আমি তখন বাচ্চাদের খেলায় যোগ দিই। আল্লাহ্ আমাকে এই ভাবি আর ভাইদের হাত থেকে রক্ষা করুক।
আমি এজন্যই যেতে চাই না বাঙ্গালীদের দাওয়াতে। উপরের কথাগুলো মিথ্যা না। বাস্তব অভিজ্ঞতা। আবার দাওয়াতে না গেলে আমি অসামাজিক। আমি কই যাই.........
সাকুরা ফুল!!! আমি তো শুধু সাকুরা বারের কথা জানতাম
লেখা উমদা।
চেরি ফুলকে এখানে সাকুরা বলে। আসলে এই ফুলটাকে সাকুরা নামে প্রথম চিনে , পরে জেনেছি চেরি নামটা। বলার সময় সাকুরা নামটা আগে আসে।
আপনার তো দেহি স্যান্ডউইচ অবস্থা।
এরকম একটু অসামাজিক থাকতে পারলেই ভালো!
মন্তব্য করুন